মিত্র, মাই ফ্রেন্ড

উইকিপিডিয়া, মুক্ত বিশ্বকোষ থেকে
মিত্র, মাই ফ্রেন্ড
পরিচালকরেবতী
প্রযোজকসুরেশ চন্দ্র মেনন
চিত্রনাট্যকারসুধা কঙ্গারা প্রসাদ
শ্রেষ্ঠাংশেশোভনা
নাসের আবদুল্লাহ
প্রীতি ভিসা
সুরকারগান:
ভবতারিণী ইলাইয়ারাজা
চিত্রগ্রাহকফওজিয়া ফাতিমা
সম্পাদকবীনা পাল
প্রযোজনা
কোম্পানি
টেলিফোটো এন্টারটেইনমেন্টস লিমিটেড
পরিবেশকটেলি ফটো ফিল্ম
স্থিতিকাল১০৫ মিনিট
দেশভারত
ভাষাইংরেজি
হিন্দি
তামিল

মিত্র, মাই ফ্রেন্ড হলো ২০০২ সালে মুক্তিপ্রাপ্ত একটি ভারতীয় ইংরেজি চলচ্চিত্র, এটি পরিচালনা করেছে রেবতী যা তাঁর প্রথম পরিচালনা, কাহিনী লিখেছে ভি. প্রিয়া এবং চিত্রনাট্য রচনায় সুধা কঙ্গারা প্রসাদ। ভারত এবং মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে চিত্রায়িত হয়,[১] ছবিটির পরিচালনায় নিযুক্ত কর্মীবৃন্দ সকলেই নারী হওয়ার জন্যও খ্যাতি পায়।[২] চলচ্চিত্রটি ৪৯তম জাতীয় চলচ্চিত্র পুরষ্কারে বর্ষসেরা ইংরেজি ভাষার চলচ্চিত্রের পুরস্কার জিতে নেয়। সিনেমাটি একই অনুষ্ঠানে যথাক্রমে শোভনা এবং বীনা পাল শ্রেষ্ঠ অভিনেত্রী এবং শ্রেষ্ঠ সম্পাদকের পুরস্কার জিতে।[৩] রেবতী ভারতের ৩৩ তম আন্তর্জাতিক চলচ্চিত্র উৎসবে "বিশেষ জুরি পুরস্কার: রৌপ্য ময়ূর" লাভ করে।[৪]

কাহিনী সংক্ষেপ[সম্পাদনা]

"মিত্র, মাই ফ্রেন্ড" এমন একটি চলচ্চিত্র যেখানে তাদের পরিবারের দুর্দশার জন্য জীবন উৎসর্গ করে এমন মহিলাদের সঙ্কটের বিষয়ে তুলে ধরা হয়েছে। এটি একটি ছোট শহরের মেয়ের পরিবর্তিত পরিবেশে বাস করার সময় সাংস্কৃতিক পার্থক্যের অভিজ্ঞতা বর্ণনা করেছে।

লক্ষ্মী (শোভনা) এবং পৃথ্বী (নাসির আবদুল্লাহ) এর মধ্যে সাধারণ দক্ষিণ ভারতীয় রীতিতে বিবাহের মধ্য দিয়ে ছবিটি শুরু হয়েছে। প্রচলিত ভারতীয় রীতিতে তাদের বাবা-মা এই বিয়ের ব্যবস্থা করে। লক্ষ্মী তামিলনাড়ুর চিদাম্বরমের এক সাধারণ দক্ষিণ ভারতীয় মেয়ে; পৃথ্বী ক্যালিফোর্নিয়ায় কর্মরত একজন সফটওয়্যার ইঞ্জিনিয়ার। বিয়ের পর তারা যুক্তরাষ্ট্রে চলে যায়, সেখানে লক্ষ্মী ধীরে ধীরে তার নতুন পরিবেশের সাথে খাপ খাওয়াবার চেষ্টা করে। বিয়ে একটি সুখকর মিলন: পৃথ্বী কঠোর পরিশ্রম করে কাজ করে, লক্ষ্মী ঘর সামলায় এবং তারা একে অপরকে গভীরভাবে ভালবাসে। এক বছরের মধ্যে তাদের একটি মেয়ে দিব্যা (প্রীতি ভিসা) জন্মের সৌভাগ্য লাভ করে।

ছবিটি ১৭ বছর এগিয়ে যায়। দিব্যা এখন সাধারণ তরূণী: সে স্কুলে যায়, ফুটবল খেলে এবং মাঝে মাঝে পার্টিতে যোগ দেয় (সবসময় তার বাবা-মার জ্ঞাতসারে বা অনুমতি নিয়ে যায় না)। লক্ষ্মী খুব ভালোভাবে পার্টিতে অংশ নিতে পারে না এবং এ নিয়ে মা ও মেয়ের মধ্যে উত্তেজনা বেড়ে যায়। দিব্যা স্বাধীনতা কামনা করে এবং লক্ষ্মীকে দূরে রেখে নিজেকে প্রকাশ করে; লক্ষ্মী তার জবাবদিহিতা চায় এবং দিব্যার সুখের জন্য দিব্যাকে কিছুটা বাধা দেত্তয়ার মাধ্যমে এটি প্রকাশ করে। পৃথ্বী উভয় পক্ষকেই বোঝে এবং দিব্যার বেড়ে ওঠার সাথে মানিয়ে নেওয়ার চেষ্টা করে, তবে লক্ষ্মীর অনুভূতি সর্বদা উপলব্ধি করতে পারে না।

এক সন্ধ্যায় ব্যাপারটি আরও বেড়ে যায় যখন দিব্যা তার বাড়ির বাইরে তার প্রেমিক রবিকে চুমু খায়। লক্ষ্মী খুব রেগে যায় কারণ তাঁর ঐতিহ্যবাহী মূল্যবোধ বিয়ে ছাড়া শারীরিক ঘনিষ্ঠতার অনুমতি দেয় না। সে ক্রোধে ফেটে পড়ে এবং দেউড়ি থেকে রবিকে তাড়িয়ে দেয়। দিব্যা এই জাতীয় হস্তক্ষেপে ক্ষিপ্ত হয়ে উঠে। সে তার বাবা-মার বাড়ি থেকে বের হয়ে যায় এবং রবির সাথে একসাথে (বিয়ে ছাড়াই) বসবাস শুরু করে। লক্ষ্মী এটি দেখে বিহ্বল হয়ে পড়ে এবং পৃথ্বীও রেগে যায়, কারণ তিনি মনে করেন লক্ষ্মী তাৎক্ষণিকভাবে অভিনয় করেছে এবং পরিস্থিতি ভুল পথে চালিত করেছে। সে লক্ষ্মীর কাছ থেকে দূরে সরে যেতে শুরু করে। এই ঝড়ের মধ্যে লক্ষ্মী একটি ইন্টারনেট চ্যাট রুমে সে একজন "মিত্র" (সংস্কৃত: বন্ধু) এর সাথে সাক্ষাৎ হয়, যার সাথে সে ধীরে ধীরে তার চিন্তাভাবনা এবং অনুভূতিগুলি ভাগ করতে সক্ষম হয়। এই সম্পর্কের ফলে আরেক পরিণাম দেখা দেয়: "মিত্র" বলে যে লক্ষ্মী তার পরিবারে স্বাচ্ছন্দ্যের জন প্রতিশ্রুতিবদ্ধ থাকতে পারে বা নিজের জন্য সুখী হতে পারে। লক্ষ্মী এটাকে মেনে নেয় এবং খোদাই কর্ম, নাচ এবং কেশবিন্যাসে নিজের আগ্রহগুলি আবিষ্কার করতে শুরু করে; সে এর মাধ্যমে নিজের একটি নতুন পরিচয় এবং ব্যক্তিত্ব প্রতিষ্ঠা করে। সে তার নতুন প্রতিবেশী স্টিভ (একজন কম্পিউটার নিরাপত্তা বিষয়ক পরামর্শদাতা) এবং তার শিশু ব্রাদার পলের সাথে দ্রুত বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক গড়ে উঠে।

পৃথ্বী এই প্রতিবেশী এবং লক্ষ্মীর সকল নতুন বন্ধু থেকে তার দূরত্ব বজায় রেখে চলে। সে ব্যথিত হয় যে নতুন লক্ষ্মী এখন আর তার অনুরত, সনাতন স্ত্রী নয়: সে এখনও অনুরক্ত তবে এখন স্থান ধারণা এবং মৌন দূরত্ব জানে। যদিও সে অন্তরে খুশি যে সে ক্রমোন্নতি করছে, সে আবিষ্কার করেছে যে তার জন্য ক্ষণস্থায়ী জায়গা রয়েছে বিশেষত এমন সময়ে যখন সে তার মেয়ের অভাবজনিত শূণ্যতার বিরুদ্ধে লড়াই করছে। বিষয়গুলি তখনই মাথায় আসে যখন সে লক্ষ্মীকে স্টিভের সাথে হাসতে শুনে খারাপ কিছু অনুমান করে এবং কাজ সম্পর্কিত কোনও সুবিধাজনক অজুহাত দেখিয়ে কিছু দিনের জন্য বাইরে যায়।

লক্ষ্মী তখন ঘরে একা সেসময় হাসপাতাল থেকে ডাক পায়, এঅবস্থায় চলচ্চিত্রটির কাহিনী ঘুরে দাঁড়ায়। দিব্যা রবির সাথে সম্পর্ক ছিন্ন করেছে এবং এখন সে আহত। দিব্যা বুঝতে পারে যে সে অ-ভারতীয়দেরে সম্পর্কের অন্তর্নিহিত প্রতিশ্রুতির অভাব এবং খামখেয়ালী সামলাতে পারবে না; সে তার আগের সিদ্ধান্তের জন্য অনুশোচনা করে এবং ঘরে ফিরে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নেয়। মা এবং কন্যা কিছুক্ষণ ভাল সময় সময় কাটায় এবং লক্ষ্মী মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে নতুন জীবনে তাঁর আগমন সম্পর্কিত স্মৃতিবেদনাতুর গল্প করে। সে তার "মিত্র" এর সাথে সর্বত্র যোগাযোগ করে।

চলচ্চিত্রটি তার চরমসীমায় দাঁড়ায় যখন সে দিব্যা'র অনুরোধে "মিত্র" কে সান ফ্রান্সিসকোতে জেলে ঘাটায় ব্যক্তিগতভাবে দেখা করার জন্য আমন্ত্রণ করে। যখন দেখা যায় "মিত্র" পৃথ্বী ছাড়া আর কেউ নয় তখন সব উন্মোচিত হয়।

অভিনয়ে[সম্পাদনা]

  • শোভনা - লক্ষ্মী চরিত্রে
  • নাসের আবদুল্লাহ - পৃথ্বী চরিত্রে
  • প্রীতি ভিসা - দিব্যা চরিত্রে
  • ম্যাট ফিলিপস - স্টিভ চরিত্রে
  • ব্লেক অর্মসবি - পল চরিত্রে
  • শার্লি বেনেট - পাম চরিত্রে
  • ব্রায়ান জি. লাইনবগ - ব্রায়ান চরিত্রে
  • জেনিন পিবল - রাচেল চরিত্রে
  • মাইকেল বেইলি - রবি চরিত্রে
  • চ্যান্ড্রালম্যান - লক্ষ্মীর মা চরিত্রে
  • শ্রীনিনাসন - লক্ষ্মীর বাবার চরিত্রে
  • হোমাই বারনিয়া - পৃথ্বীর মা চরিত্রে
  • রামচানা আশরামি - পৃথ্বীর বাবা চরিত্রে
  • মিসেস লালাতিহে - পৃথ্বীর দাদী চরিত্রে
  • কার্তিক শ্রীনিবাসন - লক্ষ্মীর ভাই চরিত্রে
  • পুনম সিনহা - আত্মীয় চরিত্রে

সঙ্গীত[সম্পাদনা]

  1. "এহসাস" - হরিহরণ
  2. "গিব মি হগ" - সুনিথা সারথী
  3. "জানে ওয়াফা (দ্বৈত)" - কবিতা কৃষ্ণমূর্তি, সুখবিন্দর সিং
  4. "জানে ওয়াফা (পুরুষ)" - সুখবিন্দর সিং
  5. "কুঝালুধি" - বম্বে জয়শ্রী
  6. "মেরে স্বপ্নে" - কবিতা কৃষ্ণমূর্তি
  7. "পেয়ার চাহিয়ে" - শান
  8. "তোম তানা" - বসুন্ধরা দাস

পুরস্কার[সম্পাদনা]

শোভনার অভিনয় সমালোচকদের প্রশংসা অর্জন করে এবং ৪৯ তম জাতীয় চলচ্চিত্র পুরষ্কারে শ্রেষ্ঠ অভিনেত্রী বিভাগে পুরস্কার পায়।
৪৯তম জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার – ২০০১
ভারতের আন্তর্জাতিক চলচ্চিত্র উৎসব
  • ৩৩ তম ভারতের আন্তর্জাতিক চলচ্চিত্র উৎসবে "বিশেষ জুরি পুরস্কার: রৌপ্য ময়ূর"।[৪]

তথ্যসূত্র[সম্পাদনা]

  1. "Mitr-My Friend"The Hindu। ১৫ ফেব্রুয়ারি ২০০২। ২৭ ফেব্রুয়ারি ২০০৬ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ১৩ আগস্ট ২০০৬ 
  2. "Changing gears successfully"The Hindu। ৩ সেপ্টেম্বর ২০০২। ৭ মে ২০০৫ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ১৩ আগস্ট ২০০৬ 
  3. "Mitr-My Friend"Film Review। nilacharal.com। সংগ্রহের তারিখ ১৩ আগস্ট ২০০৬ 
  4. "Tame fare at the festival"www.frontline.in [স্থায়ীভাবে অকার্যকর সংযোগ]
  5. "49th National Film Awards – 2002"। Directorate of Film Festivals। পৃষ্ঠা 32–33। ২৪ ডিসেম্বর ২০১৩ তারিখে মূল (PDF) থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ১ ডিসেম্বর ২০১২ 

বহিঃসংযোগ[সম্পাদনা]

টেমপ্লেট:শ্রেষ্ঠ ইংরেজি ভাষার চলচ্চিত্র বিভাগে জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার (ভারত)