বিষয়বস্তুতে চলুন

বক্সা দুর্গ

স্থানাঙ্ক: ২৬°৪৫′১৭.৮৬″ উত্তর ৮৯°৩৪′৪৯.০৪″ পূর্ব / ২৬.৭৫৪৯৬১১° উত্তর ৮৯.৫৮০২৮৮৯° পূর্ব / 26.7549611; 89.5802889
উইকিপিডিয়া, মুক্ত বিশ্বকোষ থেকে

এটি এই পাতার একটি পুরনো সংস্করণ, যা InternetArchiveBot (আলোচনা | অবদান) কর্তৃক ২১:১৮, ১৬ ফেব্রুয়ারি ২০২৩ তারিখে সম্পাদিত হয়েছিল (১টি উৎস উদ্ধার করা হল ও ০টি অকার্যকর হিসেবে চিহ্নিত করা হল।) #IABot (v2.0.9.3)। উপস্থিত ঠিকানাটি (ইউআরএল) এই সংস্করণের একটি স্থায়ী লিঙ্ক, যা বর্তমান সংস্করণ থেকে ব্যাপকভাবে ভিন্ন হতে পারে।

বক্সা দুর্গ
আলিপুরদুয়ার জেলা, পশ্চিমবঙ্গ, ভারত
বক্সা দুর্গ
West Bengal
বক্সা দুর্গ পশ্চিমবঙ্গ-এ অবস্থিত
বক্সা দুর্গ
বক্সা দুর্গ
স্থানাঙ্ক২৬°৪৫′১৭.৮৬″ উত্তর ৮৯°৩৪′৪৯.০৪″ পূর্ব / ২৬.৭৫৪৯৬১১° উত্তর ৮৯.৫৮০২৮৮৯° পূর্ব / 26.7549611; 89.5802889
ধরনHill Fort / Prison
উচ্চতা৮৬৭ মিটার (২,৮৪৪ ফু)
ভবন/স্থাপনা/ক্ষেত্রের তথ্য
নিয়ন্ত্রকব্রিটিশ রাজ
জনসাধারণের জন্য উন্মুক্তহ্যাঁ
অবস্থাধ্বংসাবশেষ
ভবন/স্থাপনা/ক্ষেত্রের ইতিহাস
নির্মাতাব্রিটিশ সম্রাট
ব্যবহারকাল১৯৫১ সালে পরিত্যক্ত
উপকরণবাঁশ (মূল দুর্গ), পাথর
যুদ্ধভুটান যুদ্ধ

বক্সা দুর্গ হল ভারতের পশ্চিমবঙ্গ রাজ্যের আলিপুরদুয়ার জেলায় অবস্থিত একটি অধুনা-পরিত্যক্ত দুর্গ। বক্সা জাতীয় উদ্যানে ৮৬৭ মিটার (২,৮৪৪ ফু) উচ্চতায় এই দুর্গ অবস্থিত। জেলাসদর ও নিকটবর্তী শহর আলিপুরদুয়ারের থেকে এই দুর্গের দূরত্ব ৩০ কিলোমিটার (১৯ মা)।[] ভারততিব্বতের মধ্যে যে রেশম বাণিজ্য পথটি ভুটানের মধ্যে দিয়ে যেত, সেটির একাংশ রক্ষার জন্য ভুটান রাজারা এই দুর্গটি ব্যবহার করতেন। ১৯৫০ সালে চীন তিব্বত দখল করে নিলে, বহু শরণার্থী এই অঞ্চলে উপস্থিত হন। সেই সময় পরিত্যক্ত দুর্গটি শরণার্থী আশ্রয় শিবির হিসেবে ব্যবহৃত হয়েছিল।

ইতিহাস

বক্সা দুর্গ এর প্রবেশ পথ

বক্সা দুর্গ কবে তৈরি হয়েছিল তা জানা যায় না। ব্রিটিশরা এই দুর্গ দখল করে নেওয়ার আগে এটি ছিল ভুটানের রাজা ও কোচবিহার রাজাদের যোগসূত্র।

ব্রিটিশদের দুর্গ দখল

কোচবিহাররের রাজার আমন্ত্রণে ব্রিটিশরা এই দুর্গ দখল করে নেয়। ১৮৬৫ সালের ১১ নভেম্বর, সিঞ্চুলার চুক্তির অংশ হিসেবে আনুষ্ঠানিকভাবে দুর্গটি ব্রিটিশদের হাতে তুলে দেওয়া হয়।[] দুর্গটি আগে বাঁশের তৈরি ছিল। ব্রিটিশরা এটিকে পাথরের দুর্গে রূপান্তরিত করে। পরবর্তীকালে ১৯৩০-এর দশক অবধি দুর্গটি উচ্চ নিরাপত্তাযুক্ত কারাগার ও ডিটেনশন ক্যাম্প হিসেবে ব্যবহৃত হয়।[] আন্দামানের সেলুলার জেলের পর এটিই ছিল ব্রিটিশ ভারতের সবচেয়ে কুখ্যাত ও দুর্গম কারাগার।

বন্দী বিপ্লবীরা

বিনা বিচারে বন্দী করে রাখার জন্যে পাহাড়ের ওপর দুর্গম এই স্থানকে বেছে নেয় ইংরেজরা। ১৯৩৭ সাল পর্যন্ত এখানে মোট বন্দী ছিলেন ৫২৫ জন। বন্দী বিপ্লবীরা একবার জেলের ভেতরে রবীন্দ্র জয়ন্তী পালন করেন, এবং কবিকে জন্মদিনের অভিনন্দন জানান। স্বয়ং রবীন্দ্রনাথ তখন দার্জিলিং অবস্থান করছিলেন। এ কথা জানতে পেরে তিনি তার প্রত্যুত্তর দেন এই বলে "অমৃতের পুত্র মোরা কাহারা শোনাল বিশ্বময়, আত্মবিসর্জন করি আত্মারে কে জানিল অক্ষয়"। হিজলী জেলে গুলিচালনার প্রতিবাদে বক্সায় বন্দী বিপ্লবীরা অনশন করেছেন। প্রমথ ভৌমিক, জ্ঞান চক্রবর্তী, কৃষ্ণপদ চক্রবর্তী প্রমুখ অনুশীলন সমিতি ও যুগান্তর দলের জাতীয়তাবাদী বিপ্লবীদের এই দুর্গে ১৯৩০-এর দশক অবধি বন্দী করে রাখা হয়েছিল। পরবর্তীকালেও কবি সুভাষ মুখোপাধ্যায়, বিনয় চৌধুরী, সতীশচন্দ্র পাকড়াশী, ননী ভৌমিক, পারভেজ শাহেদী, চিন্মোহন সেহানবীশ প্রমুখ কমিউনিস্ট বিপ্লবী ও বুদ্ধিজীবী এই দুর্গে বন্দী ছিলেন ১৯৫০-এর দশকে[]

তিব্বতি শরণার্থী সমস্যা

চীনের তিব্বত দখলের আগে দ্রেপুং ছিল তিব্বতের সবচেয়ে বিখ্যাত বৌদ্ধ মঠগুলির একটি। এই মঠে ১০,০০০ সন্ন্যাসী বাস করতেন। ১৯৫৯ সালের মার্চ মাসে তিব্বতি জনতাকে অবদমিত করে এই মঠ দখল করে নেয়। মাত্র কয়েকশো সন্ন্যাসী ভারতে পালিয়ে আসতে সক্ষম হন। তিব্বতের বিভিন্ন প্রান্তের প্রতিনিধি এই সন্ন্যাসীরা প্রথমে বক্সা দুর্গের বনাঞ্চলে ঘেরা পূর্বতন জেলখানায় একটি সন্ন্যাসীদের পঠনপাঠনের কেন্দ্র ও শরণার্থী শিবির স্থাপন করেন।[]

১৯৬৬ সালে ভারতের বিদেশ মন্ত্রক বক্সা দুর্গে আশ্রয় নেওয়া শরণার্থীদের জন্য একটি ভাল বাসস্থানের ব্যবশা করে দেন। শরণার্থীরা প্রথমে নতুন জায়গায় যেতে অনিচ্ছুক হলেও, দলাই লামার বার্তা পেয়ে ভবিষ্যতের কথা ভেবে তারা রাজি হন। ১৯৭১ সালে তারা কর্ণাটক রাজ্যের বাইলাকুপে ও মুন্দগদে চলে যান।[]

ট্রেকিং

বক্সা দুর্গ থেকে নিম্নলিখিত ট্রেকিং পথগুলি গিয়েছে:

  • সান্তালাবাড়ি থেকে বক্সা দুর্গ ৫ কিলোমিটার (৩.১ মা)
  • বক্সা দুর্গ থেকে রোভার্স পয়েন্ট ৩ কিলোমিটার (১.৯ মা)
  • সান্তালাবাড়ি থেকে রুপাং উপত্যকা ১৪ কিলোমিটার (৮.৭ মা)
  • বক্সা দুর্গ থেকে লেপচাখা ৫ কিলোমিটার (৩.১ মা)
  • বক্সা দুর্গ থেকে চুনাভাতি ৪ কিলোমিটার (২.৫ মা)

পাদটীকা

  1. "Buxa Fort - About"। ১৩ মে ২০১২ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ৯ মে ২০১২ 
  2. Singh, Nagendra (১৯৭৮)। "Appendix VII – The Treaty of Sinchula"। Bhutan: a Kingdom in the Himalayas : a study of the land, its people, and their government (2 সংস্করণ)। Thomson Press Publication Division। পৃষ্ঠা 243। সংগ্রহের তারিখ ২০১১-০৮-২৫ 
  3. "West Bengal Forest Development Corporation"। ২২ এপ্রিল ২০১২ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ৯ মে ২০১২ 
  4. আনন্দবাজার পত্রিকা, উত্তরের কড়চা (৩ ডিসেম্বর ২০১৪)। "অবহেলায় বন্দী বক্সা"। আনন্দবাজার পত্রিকা। সংগ্রহের তারিখ ২৪.১২.১৬  এখানে তারিখের মান পরীক্ষা করুন: |সংগ্রহের-তারিখ= (সাহায্য)
  5. "About The Re-establishment of Drepung Gomang Monastic University in India"Drepung Gomang Monastery। ২০১৪-০৪-২৯ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২০১৪-০৪-২৯ 
  6. "Buxa Refugee Camp" (পিডিএফ)। ২৯ এপ্রিল ২০১৪ তারিখে মূল (পিডিএফ) থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ৯ মে ২০১২