কে এম হেমায়েত উল্লাহ আওরঙ্গজেব
কে এম হেমায়েত উল্লাহ আওরঙ্গজেব | |
---|---|
শরীয়তপুর-১ আসনের সংসদ সদস্য | |
কাজের মেয়াদ ৫ মার্চ ১৯৯১ – ২৪ নভেম্বর ১৯৯৫ | |
পূর্বসূরী | সরদার এ কে এম নাসির উদ্দিন |
উত্তরসূরী | শূন্য |
কাজের মেয়াদ ২৮ অক্টোবর ২০০১ – ২৭ অক্টোবর ২০০৬ | |
পূর্বসূরী | মজিবুর রহমান |
উত্তরসূরী | বি. এম. মোজাম্মেল হক |
ব্যক্তিগত বিবরণ | |
জন্ম | শরীয়তপুর জেলা, পূর্ব পাকিস্তান (বর্তমান বাংলাদেশ) | ২০ অক্টোবর ১৯৫৫
মৃত্যু | ৩ আগস্ট ২০১৩ মুন্সীগঞ্জ জেলা, বাংলাদেশ | (বয়স ৫৭)
মৃত্যুর কারণ | সড়ক দুর্ঘটনা |
জাতীয়তা | বাংলাদেশী |
রাজনৈতিক দল | |
দাম্পত্য সঙ্গী | তাহমিনা আওরঙ্গ |
সন্তান | ১ ছেলে ও ১ মেয়ে |
পিতামাতা | হাবিবউল্লাহ খান (পিতা), সামসিয়া বেগম (মাতা) |
কে এম হেমায়েত উল্লাহ আওরঙ্গজেব (২০ অক্টোবর ১৯৫৫ - ৩ আগস্ট ২০১৩) ছিলেন বাংলাদেশী রাজনীতিবিদ ও মুক্তিযোদ্ধা। তিনি বিএনপির জাতীয় নির্বাহী কমিটির সদস্য ও শরীয়তপুর জেলা বিএনপির সদস্য ছিলেন। এর আগে তিনি আওয়ামীলীগের রাজনীতির সাথে সম্পৃক্ত ছিলেন।[১][২][৩]
প্রারম্ভিক জীবন
[সম্পাদনা]কে এম হেমায়েত উল্লাহ আওরঙ্গজেব ১৯৫৫ সালের ২০ অক্টোবর শরীয়তপুর জেলার ডামুড্যা উপজেলার দক্ষিণ ডামুড্যা গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন। পিতার নাম হাবিবউল্লাহ খান এবং মাতার সামসিয়া বেগম। ছোটবেলায় পিতার কর্মস্থল ঢাকাতেই হওয়ায় তিনি প্রাথমিক, মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক পড়াশোনা ঢাকাতে করেন। তিনি ঢাকা কলেজ হতে এইচএসসি এবং ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় হতে সমাজবিজ্ঞানে সম্মানসহ মাস্টার্স পাশ করেন।
রাজনৈতিক জীবন
[সম্পাদনা]কলেজ জীবন থেকেই আওরঙ্গজেব ছাত্রলীগের সাথে সম্পৃক্ত হন। তিনি বাংলাদেশ ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য, আন্তর্জাতিক বিষয়ক সম্পাদক এবং দু’বার সাংগঠনিক সম্পাদক ছিলেন।
ছাত্র আন্দোলন করতে গিয়ে তিনি ১৯৭৫-৭৬ সাল এক বছর কারাবরণ করেন।
১৯৯১ সালের উপ-নির্বাচনে শরীয়তপুর-১ আসন আব্দুর রাজ্জাক ছেড়ে দেয়ায় আওরঙ্গজেব বাংলাদেশ আওয়ামীলীগের মনোনয়ন পেয়ে নির্বাচনে জয়লাভ করেন।[৪][৫][২] ১৯৯২ সাল হতে তাকে পুনরায় কারাভোগ করতে হয়। ১৯৯২ হতে ১৯৯৬ সাল দীর্ঘ পাঁচ বছর বছর কারাভোগের পর তিনি ১৯৯৬ এর তত্ত্বাবধায়ক সরকারের আমলে বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্টের রায় অনুযায়ী বেকসুর খালাস পান।
যুবলীগ থেকে বহিষ্কারের পর ২০০১ সালের অষ্টম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে তিনি স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে শরীয়তপুর-১ আসন হতে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন।[৬]
২০০৬ সালে তিনি বিএনপিতে যোগদান করেন।
২০০৮ সালের নবম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে বিএনপির প্রার্থী হয়ে শরীয়তপুর-৩ আসনে আওয়ামী লীগ নেতা আব্দুর রাজ্জাকের কাছে পরাজিত হন।
২০১১ সালে তিনি বিএনপির কেন্দ্রীয় নির্বাহী কমিটির সদস্য ও শরীয়তপুর জেলা বিএনপির সদস্য ছিলেন।[৭][২]
সমালোচনা
[সম্পাদনা]কে এম হেমায়েত উল্লাহ আওরঙ্গজেব ১৯৭৮ সালে বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর এক হাবিলদারকে গুলি করে হত্যা করে ভারত পালিয়ে যান, পরবর্তীতে ১৯৮১ সালে মে মাসে দেশে ফিরে আসেন।[১][৪]
স্বাধীন বাংলাদেশের শুরুতে আওরঙ্গজেব ছাত্র লীগ-যুব লীগের মাসেল ম্যান হিসেবে পরিচিত ছিলেন। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগে ‘শরীয়তপুর-মাদারীপুর গ্রুপটি’ কেন্দ্রীয় কমিটির সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক আওরঙ্গই নিয়ন্ত্রণ করতেন বলে বলা হয়। সন্ত্রাস, দখলদারিত্ব, চাঁদাবাজি নিয়ে ওই সময় আলোচিত-সমালোচিত ছিলেন তিনি। এক সময়ের যুবলীগ নেতা আওরঙ্গের নাম ’৮০ এর দশকের পুরোটা সময়ই ছিল আলোচিত। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্রলীগের অভ্যন্তরীণ কোন্দলে সব সংঘর্ষের সময় তার নাম উঠে আসত।[১][৩]
হত্যাসহ বেশ কয়েকটি মামলার আসামি আওরঙ্গ ২০০২ সালে ‘অপারেশন ক্লিনহার্টে’ গ্রেপ্তার হয়েছিলেন।[৩]
পারিবারিক জীবন
[সম্পাদনা]কে এম হেমায়েত উল্লাহ আওরঙ্গজেব আইনজীবী তাহমিনাকে বিয়ে করেন। তাহমিনা বিএনপির জাতীয় নির্বাহী কমিটির সদস্য। এই দম্পতীর একমাত্র ছেলে অর্জন ও এক কন্যা সন্তান।[৩][২]
মৃত্যু
[সম্পাদনা]কে এম হেমায়েত উল্লাহ আওরঙ্গজেব ২০১৩ সালের ৩ আগস্ট ঢাকা-মাওয়া সড়কে মেদেনীমন্ডল ইউনিয়নের খান বাড়ি এলাকায় সড়ক দুর্ঘটনায় নিহত হন।[৩][২]
তথ্যসূত্র
[সম্পাদনা]- ↑ ক খ গ মহিউদ্দিন আহমদ (২০১৬)। বিএনপি সময়-অসময়। বাংলাদেশ: প্রথমা প্রকাশন। পৃষ্ঠা ৩৬৮। আইএসবিএন 9789849176251।
- ↑ ক খ গ ঘ ঙ "সাবেক এমপি আওরঙ্গজেবের মৃত্যুবার্ষিকী সোমবার"। বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম। ৩ আগস্ট ২০২০। সংগ্রহের তারিখ ১০ নভেম্বর ২০২৪।
- ↑ ক খ গ ঘ ঙ "দুর্ঘটনায় নিহত আওরঙ্গ"। বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম। ৩ আগস্ট ২০১৩। ২৪ জুলাই ২০১৭ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২৪ জুলাই ২০১৭।
- ↑ ক খ খন্দকার কামরুল হক শামীম (৩ আগস্ট ২০১৫)। "আমার বন্ধু আওরঙ্গ"। দৈনিক বাংলাদেশ প্রতিদিন। সংগ্রহের তারিখ ১০ নভেম্বর ২০২৪।
- ↑ "৫ম জাতীয় সংসদে নির্বাচিত মাননীয় সংসদ-সদস্যদের নামের তালিকা" (পিডিএফ)। জাতীয় সংসদ। বাংলাদেশ সরকার। ১৭ সেপ্টেম্বর ২০১৮ তারিখে মূল (পিডিএফ) থেকে আর্কাইভ করা।
- ↑ "৮ম জাতীয় সংসদে নির্বাচিত মাননীয় সংসদ-সদস্যদের নামের তালিকা" (পিডিএফ)। জাতীয় সংসদ। বাংলাদেশ সরকার। ১৮ সেপ্টেম্বর ২০১৮ তারিখে মূল (পিডিএফ) থেকে আর্কাইভ করা।
- ↑ "দুর্ঘটনায় নিহত আওরঙ্গ"। bangla.bdnews24.com। বিডি নিউজ২৪। ৬ আগস্ট ২০১৩ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২৪ জুলাই ২০১৭।