হেমচন্দ্র গোস্বামী (মুখোশ শিল্পী)

উইকিপিডিয়া, মুক্ত বিশ্বকোষ থেকে
হেমচন্দ্র গোস্বামী
২০২৩ সালে হেমচন্দ্র গোস্বামী
জন্ম (1958-03-01) ১ মার্চ ১৯৫৮ (বয়স ৬৬)
মাজুলী জেলা, আসাম, ভারত
জাতীয়তাভারতীয়
পরিচিতির কারণমুখোশ শিল্পী, ভাস্কৰ্যশিল্পী
পুরস্কারপদ্মশ্রী (২০২৩)
২০২৩ সালে পদ্মশ্রী পুরস্কার গ্ৰহণের মুহূর্ত

হেমচন্দ্র গোস্বামী (জন্ম ১ মার্চ, ১৯৫৮) আসামের মাজুলি জেলার একজন ভারতীয় মুখোশ শিল্পী। [১] [২] তিনি আসামে মুখোশ শিল্পকে বিশ্ব পরিমন্ডলে প্রতিষ্ঠিত করতে অবদান রেখেছেন। ২০২৩ সালে ভারত সরকার হেমচন্দ্রকে মুখোশ শিল্পের ক্ষেত্রে অবদানের জন্য শিল্পকলার ক্ষেত্রে ভারতের চতুর্থ সর্বোচ্চ অসামরিক পুরস্কার পদ্মশ্রী দিয়ে সম্মান জানায়।[৩][৪]

প্রারম্ভিক জীবন[সম্পাদনা]

হেমচন্দ্র ১৯৫৮ সালের ১ মার্চ আসামের মাজুলি জেলার চামগুরি সাতরাতে জন্মগ্রহণ করেন। তার পিতার নাম ছিল রুদ্রকান্ত দেব গোস্বামী এবং মাতার নাম ছিল গগনেশ্বরী গোস্বামী। তিনি চামগুড়ি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে প্রাথমিক শিক্ষা লাভ করেন। পরে স্থানীয় চামগুড়ি সাতরা রাওয়ানাপার আদর্শ উচ্চ মাধ্যমিক বিদ্যালয় থেকে তার স্কুলের মাধ্যমিক শিক্ষা শেষ করেন। পরে আসামের গুয়াহাটির আর্টস অ্যান্ড ক্রাফ্টস সোসাইটি থেকে আর্টস অ্যান্ড ক্রাফটসে স্নাতক ডিগ্রি অর্জন করেন।[৫] শিল্পকর্মে হেমচন্দ্রের হাতেখড়ি দশ বছর বয়সে। এই বয়সেই তার শ্রীমাতা শঙ্করদেব দ্বারা প্রতিষ্ঠিত শিল্পকলা প্রতিষ্ঠানে শিল্পকর্মের প্রশিক্ষণ শুরু হয়। তার পিতা রুদ্রকান্ত দেব গোস্বামী ছিলেন একজন সত্রিয় শিল্পী এবং মুখোশ প্রস্তুতকারক। তাই পিতার নির্দেশনায় তিনি ছোটবেলা থেকেই মুখোশ তৈরির নৈপুণ্যে বিশেষ পারদর্শী হয়ে ওঠেন। এই শিল্পকলাকে তিনি সম্মান করতেন।[৬][৭]

কর্মজীবন[সম্পাদনা]

হেমচন্দ্র চামগুড়ি সাতরা রাওয়ানাপার আদর্শ উচ্চ মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের কারিগরি ও বৃত্তিমূলক বিভাগে শিক্ষকতা করতেন। পরে এখান থেকেই অবসর নেন। সাংস্কৃতিক পরিবেশে জন্ম নেওয়া হেমচন্দ্র ছোটবেলা থেকেই শিল্পের সঙ্গে যুক্ত হন। তিনি আসামের মুখোশ শিল্পকে বিশ্বের দরবারে পৌঁছে দেবার কাজে বিশেষ অবদান রেখেছেন।[৮] বিভিন্ন কর্মশালা পরিচালনার পাশাপাশি তিনি তার বাড়িতে অনেক যুবককে মুখোশ তৈরির কাজ শিখিয়েছেন। অনেক পরিবার মুখোশ তৈরির কাজ শিখে তারা চারু ও কারুশিল্পের মাধ্যমে আর্থিকভাবে স্বাবলম্বী হয়েছেন।[৯]

হেমচন্দ্র ডিব্রুগড় বিশ্ববিদ্যালয়, তেজপুর বিশ্ববিদ্যালয়, বিবেকানন্দ কেন্দ্র: গুয়াহাটি, নয়াদিল্লিতে ইন্দিরা গান্ধী কালচারাল সেন্টার ফর আর্টস এবং শান্তিনিকেতনে বিশ্বভারতী সহ সারা দেশে বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে বাঁশের মুখোশের ইতিহাস সম্পর্কে বক্তৃতা দিয়েছেন।[৫]

পুরস্কার ও সম্মাননা[সম্পাদনা]

২০১২ সালে তিনি লামেজো দা আনন্দ পুরস্কার পান।[১০] ২০১৪ সালে পেয়েছেন দামোদর দেব জাতীয় পুরস্কার।[১০] ২০১৮ সালে তাকে লুইতপোরিয়া লাইফ টাইম অ্যাচিভমেন্ট অ্যাওয়ার্ড দিয়ে সম্মান জানানো হয়।[১০] ২০১৯ সালে পেয়েছেন সঙ্গীত নাটক একাডেমি পুরস্কার।[৬] ২০২২ সালে আসামের প্রতিদিন টাইম কর্তৃক শিল্পকলায় শ্রেষ্ঠত্ব অর্জনের পুরস্কার পান।[১০] ২০২৩ সালে শিল্পের ক্ষেত্রে ভারতের রাষ্ট্রপতি দ্রৌপদী মুর্মু কর্তৃক নয়াদিল্লিতে তিনি পদ্মশ্রী পুরস্কারে ভূষিত হন।

তথ্যসূত্র[সম্পাদনা]

  1. sahu, Bharti (২৬ জানুয়ারি ২০২৩)। "मास्टर मास्क निर्माता हेम चंद्र गोस्वामी को पद्म श्री के लिए नामित किया गया"jantaserishta.com (হিন্দি ভাষায়)। ১৫ এপ্রিল ২০২৩ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ৯ জানুয়ারি ২০২৪ 
  2. "The Masketeers of Majuli"India Perspectives। ৪ নভেম্বর ২০১৯। ২০ সেপ্টেম্বর ২০২১ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ৯ জানুয়ারি ২০২৪ 
  3. "Revival of Assam's traditional masks gets Hem Chandra Goswami Padma award"Hindustan Times (ইংরেজি ভাষায়)। ২৬ জানুয়ারি ২০২৩। 
  4. "Three Assamese awarded Padma Shri পদ্মশ্ৰী সন্মান মাজুলীৰ মুখাশিল্পী হেমচন্দ্ৰ গোস্বামীলৈ"ETV Bharat News (অসমীয়া ভাষায়)। 
  5. "President of India conferred Padma Shri to Hem Chandra Goswami in field of Art from Assam - NE India Broadcast"NeindiaBroadCast। ২২ মার্চ ২০২৩। 
  6. Desk, Sentinel Digital (২৬ জানুয়ারি ২০২৩)। "Master Mask Maker Hem Chandra Goswami Named for Padma Shri"www.sentinelassam.com (ইংরেজি ভাষায়)। 
  7. Ravi, S. (২২ আগস্ট ২০১৯)। "Meet Hem Chandra Goswami, a master mask-maker from Majuli"The Hindu (ইংরেজি ভাষায়)। 
  8. "মাজুলীৰ মুখা শিল্প"। assamflash.com। ৪ ফেব্রুয়ারি ২০২১। ১৫ ফেব্রুয়ারি ২০২২ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ১৬ ফেব্রুয়ারি ২০২২ 
  9. "বুধবৰীয়া বুলনি"। দৈনিক অসম। ২৯ আগস্ট ২০১৮। 
  10. "The President of India conferred Padma Shri to Shri Hem Chandra Goswami in field of Art from Assam in Civil Investiture Ceremony"www.pib.gov.in