হিং

উইকিপিডিয়া, মুক্ত বিশ্বকোষ থেকে

হিং Ferula assa-foetida
হিং
হিং Ferula assa-foetida
হিং Ferula assa-foetida
হিং Ferula assa-foetida
বৈজ্ঞানিক শ্রেণীবিন্যাস
শ্রেণীবিহীন: Tracheophytes
জগৎ: plantae
বিভাগ: সপুষ্পক উদ্ভিদ
শ্রেণীবিহীন: Eudicots
শ্রেণীবিহীন: Asteroids
বর্গ: Apiales
পরিবার: Aoiaceae
গণ: Furula
দ্বিপদী নাম
Ferula assa-foetida
L.

হিং (বৈজ্ঞানিক নাম: Ferula assa-foetida) হল একটি বহুবর্ষজীবী উদ্ভিদ, যা তিন থেকে চার মিটার পর্যন্ত লম্বা হয়। মরুভূমিতে এই গাছটি অনায়াসে বেঁচে থাকতে পারে।[১]

হিং গাছের বৈশিষ্ট্য[সম্পাদনা]

জুলাই মাসে এই উদ্ভিদের ফুল ধরে। প্রজাতিটি হার্মাফ্রোডাইট (পুরুষ এবং মহিলা উভয় অঙ্গ রয়েছে) এবং এদের মধ্যে পতঙ্গ পরাগায়ন হয়ে থাকে। এই উদ্ভিদ স্ব-উর্বর। এই উদ্ভিদে জন্য হালকা (বেলে), মাঝারি (দোআঁশ) এবং ভারী (কাদামাটি) মাটি উপযুক্ত এবং ভাল-নিষ্কাশনের ব্যবস্থা রাখতে হয়। উপযুক্ত পিএইচ: অ্যাসিড, নিরপেক্ষ এবং মৌলিক (ক্ষারীয়) মাটি। এটি ছায়ায় বাড়তে পারে না। এটি শুষ্ক বা আর্দ্র মাটি পছন্দ করে। হিং গাছ বহুবর্ষজীবী উদ্ভিদ, এদের ফাপা কান্ড জল ধরে রাখতে সক্ষম। গাছের মূল্যবান অংশ হলো গাছের আঠা, যা শুকিয়ে হিং তৈরি করা হয়। গাছ দুই থেকে চার মিটার উঁচু হয়। এটি সাধারণত পাথূরে পাহাড়ি উঁচু ভূমিতে জন্মে থাকে। হিং একটি মসলা জাতীয় উদ্ভিদ এর ফুলগুলি থোকা থোকা আকারে ঝুলে থাকে কান্ড শাখা প্রশাখা সরল আকারে বিস্তার লাভ করে। এই গাছের ছালে আঠা যুক্ত পদার্থ থাকে সেটিই হলো মসলা যা ঔষধি ও রান্নাবান্নার কাজে ব্যবহৃত হয়। সুগন্ধিযুক্ত এই মসলায় ঔষধি গুনাগুনে ভরপুর। এদের দুইটি প্রজাতি হয়, লাল ও সাদা।

হিং নাম[সম্পাদনা]

অঞ্চল ভেদে হিং বিভিন্ন নামে পরিচিত যেমনঃ হিঙ্গু, হিং, হিংগার, কায়াম, ইঙ্গার প্রভৃতি। সংস্কৃত ভাষায় একে হিঙ্গু ও ফারসি ভাষায় আঞ্জাদান নামে পরিচিত। বৈজ্ঞানিক নাম - Ferula assa-foetida।[২]

প্রাপ্তিস্থান[সম্পাদনা]

পৃথিবীর বিভিন্ন দেশে হিং বা হিঙ্গু পাওয়া যায় তন্মধ্যে পাকিস্তান, আফগানিস্তান, পারস্য, পাঞ্জাব, মূলতান, ইরান, তুর্কিস্থান এবং ভারতের হিমাচল প্রদেশ, পাকিস্থানের সিন্ধুপ্রদেশে বেশি দেখা যায়।

বিবরণ[সম্পাদনা]

ভারতীয় উপমহাদেশে হিঙ্গুর ব্যবহারের প্রচলন রয়েছে অনেক প্রাচীনকাল থেকে। হিংয়ের কথা ভগবত গীতা, পুরানে উল্লেখ আছে। বৈদিক যুগেও হিমাচল প্রদেশ হিং এর আবাদ হত। পৃথিবীর ভিতরে একমাত্র ভারতেই ৭০ শতাংশ হিং ব্যবহৃত হয়। আফগানিস্তানের কাবুলিওয়ালারা হিং এর ব্যবসা করত। তারা বাংলাদেশেও এসেছিল ব্যবসা বাণিজ্য করতে, তার মধ্য হিং ছিল। বাংলার প্রত্যেকের রান্নাঘরে তখন এই মশলা পাওয়া যেত। ইরানি ও ভারতীয়রা তরকারির স্বাদ বাড়ানোর জন্য হিং ব্যবহার করে থাকে। পাকিস্তান ও আফগানিস্তানের অধিবাসীরা আচারে এর ব্যবহার করে। এই গাছের আঠা মূলত বিভিন্ন রোগের ওষুধ হিসাবে ব্যবহৃত হয়। আঠা সুগন্ধি যুক্ত। ভারতীয়রা বিভিন্ন ওষুধে এর মিশ্রণ যোগ করে। পেট ফাঁপা সমস্যা, হাঁপানি, এজমা, ব্রংকাইটিস, স্নায়ুরোগ, নিউমোনিয়া, আর্থারাইটিস এই সমস্ত রোগে হিং এর আঠা উপকারী। বর্তমানে ইরান, আফগানিস্তান, তাজাকিস্তান, তুর্কেমিনিস্তান অঞ্চলে হিং চাষ হচ্ছে বিশেষ করে মধ্য এশিয়ার অঞ্চল হিং চাষের জন্য বিখ্যাত। [৩]

তথ্যসূত্র[সম্পাদনা]

  1. "Ferula assa-foetida growing wild in Mount Telesm, Kermanshah, Iran"research gate.net (ইংরেজি ভাষায়)। সংগ্রহের তারিখ ২০২১-১০-২৭ 
  2. "হিং উপকারিতা ডোজ"myupchar.com। সংগ্রহের তারিখ ২০২১-১০-২৭ 
  3. "ভারতে হিংয়ের চাষ"krishijagran.com। সংগ্রহের তারিখ ২০২১-১০-২৭