হাসান (গায়ক)
এই নিবন্ধটির রচনা সংশোধনের প্রয়োজন হতে পারে। কারণ অবিশ্বকোষীয়গত সমস্যা রয়েছে। (জুলাই ২০১৯) |
সৈয়দ হাসানুর রহমান | |
---|---|
প্রাথমিক তথ্য | |
জন্ম | ঢাকা, বাংলাদেশ | ১৯ এপ্রিল ১৯৭৪
বাদ্যযন্ত্র | ভোকাল |
এর সদস্য | আর্ক, স্বাধীনতা, জন্মভূমি |
সৈয়দ হাসানুর রহমান (গায়ক হাসান হিসাবে পরিচিত) একজন ব্যান্ড সঙ্গীতশিল্পী। তার মোট গানের সংখ্যা ২০০ এর বেশি। তিনি ১৯৯৩ সালে ব্যান্ডদল আর্কে ভোকালিস্ট হিসাবে যোগ দেন এবং ব্যান্ডে থাকা অবস্থায় জনপ্রিয়তা অর্জন করেন। পরবর্তীতে ২০০২ সালে আর্ক ব্যান্ড ছেড়ে দিয়ে নতুন ব্যান্ড "স্বাধীনতা" গঠন করেন। ২০০৪ সালে তিনি "জন্মভূমি" নামের আরেকটি ব্যান্ড গঠন করেন। ২০১০ সালের শেষের দিকে তিনি আবার আর্কে যোগ দেন।[১]
ছেলেবেলা
[সম্পাদনা]ছোট বেলা থেকেই গায়ক হাসান (সৈয়দ হাসানুর রহমান) হামদ, নাত ও কবিতা আবৃত্তিতে পারদর্শী ছিলেন। কবিতা লেখার অভ্যাসও ছিল কিছুটা। শিশু কবি হিসাবে তার বেশ পরিচিতি ছিল। অভিনয়েও তিনি পিছিয়ে ছিলেন না। স্কুলের বিভিন্ন সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানে, রবীন্দ্র ও নজরুল জয়ন্তীতে তিনি অভিনয়, স্বরচিত কবিতা আবৃত্তিসহ বিভিন্ন প্রতিযোগিতায় অংশ নিতেন। পারিবারিক অনুমতি না থাকায় তিনি এগুলো একরকম লুকিয়ে লুকিয়েই করতেন। এই ধরনের কর্মকাণ্ড শুধুমাত্র তার স্কুলের মধ্যেই সীমাবদ্ধ ছিল। বাইরের অন্য কোন সংগঠনের সাথে তার জড়িত হবার সুযোগ ছিল না। এমনকি গান শোনা, কবিতার বই পড়া বা সাংস্কৃতিক চর্চার ক্ষেত্রেও ছিল প্রতিবন্ধকতা। বড় বোন হুসনা আফরোজ রেডিও ও টিভিতে নাটক করতেন। শুটিং এ যাবার সময় মাঝে মধ্যে ছোট ভাই হাসানকে সঙ্গে নিতেন। মূলত সেখান থেকেই তিনি সংস্কৃতির দিকে ঝুঁকে পড়েন। ৫ম ও ৬ষ্ঠ শ্রেণীতে পড়াকালীন তিনি নিজে গান লিখে সুরারোপ করার চেষ্টা করতেন।
১৯৮৯-৯০ সালের দিকে তিনি ইংরেজি গানের দিকে ঝুঁকে পড়েন। নিজেদের বাড়ীতে গান শোনা বা গাওয়ার সুযোগ না থাকায় স্কুলজীবনের শেষের দিকে বন্ধুদের বাসায় গিয়ে তিনি গান শুনতেন। প্রথম দিকে মাইকেল জ্যাকসন, জর্জ মাইকেল, স্কোরপিওন, আয়রন মেইডেন প্রভৃতি শিল্পীদের গান শুনতেন। ১০ম শ্রেণীতে পড়াকালীন তিনি কিছুটা হাইগ্রেড এর গান শোনা শুরু করলেন। এই সময় তার গানের প্রতি প্রবল আগ্রহ জন্মায়। ১৯৮৯-৯০ সালের দিকে তিনি বুলবুল ললিতকলা একাডেমীতে পল্লীগীতির উপর একটি সার্র্টিফিকেট কোর্সে ভর্তি হন। শুদ্ধ বাংলা উচ্চারণ ও পল্লীগীতির সুর আয়ত্ত করতেই তার এই পল্লীগীতি কোর্সে ভর্তি হওয়া। ছোট বেলা থেকেই তিনি সুরের প্রতি আকৃষ্ট ছিলেন।
ব্যক্তিগত জীবন
[সম্পাদনা]হাসানের বৈবাহিক জীবনের শুরু ২০০০ সালের আগস্ট মাসে। তার স্ত্রী ফারহানা মজিদ কুমিল্লায় জন্মগ্রহণ করেন। তাদের একমাত্র সন্তান হাসিন। পরিবারসহ তারা লালমাটিয়ায় নিজস্ব বাড়ীতে বসবাস করেন।
সঙ্গীত ক্যারিয়ার
[সম্পাদনা]হাসানের সঙ্গীত জীবনের উত্থান আকস্মিক। একদিন বাংলাদেশের ব্যান্ড সঙ্গীতাঙ্গনের শ্রদ্ধাভাজন ব্যক্তিত্ব আশিকুজ্জামান টুলুর সাথে তার পরিচয় হয়। হাসানের গান শুনে তিনি মুগ্ধ হলেন এবং তাকে প্রস্তাব করলেন যে, বিভিন্ন শিল্পীর কণ্ঠে ইংরেজি গানের সুরে বাংলা গানের একটা কমার্শিয়াল ক্যাসেট বের করা হবে, এ জন্যে তাকে গান গাইতে হবে। হাসান প্রস্তাব মেনে নিয়ে গান গাইলেন। প্রথম এ্যালবাম কপিয়ার অতটা জনপ্রিয়তা না পেলেও দ্বিতীয় এ্যালবাম কপিয়ার-২ তে মাইকেল জ্যাকসনের বিলি জিন গানটির বাংলা ভার্শন অপ্রত্যাশিতভাবে প্রচন্ড হিট হয়ে গেল।
হাসানের প্রথম ব্যান্ড হচ্ছে ‘আর্ক’। পরবর্তীতে আর্ক থেকে বের হয়ে তিনি স্বাধীনতা নামে একটি ব্যান্ড তৈরী করেছেন। আর্কের সঙ্গে প্রায় নয় বছর ছিলেন তিনি। আর্কে যোগ দেয়ার পর তাকে আর পেছনে ফিরে তাকাতে হয়নি। মূলত টুলু এবং পঞ্চম এর সাথে তার সঙ্গতে তিনি গানের প্রকৃত মর্যাদা অনুভব করেন।
১৯৯৬ আর্কের তাজমহল এ্যালবামের মাধ্যমে হাসান নতুনভাবে পাদপ্রদীপে আসেন। মূলত তার উত্থান এখান থেকেই শুরু। এই এ্যালবামে তার গাওয়া গানগুলি ছিলো নিজের লেখা এবং সুরে। এই এ্যালবামটি সুপার হিট হওয়ার পর তিনি একজন ব্যান্ড সঙ্গীত শিল্পী হিসাবে পরিচিতি লাভ করলেন। এটি ছিল কিছুটা পশ্চিমা ধাঁচের গাওয়া গান। এখানে তিনি অনুসরণ করেছিলেন পশ্চিমাদের কণ্ঠ, ভাব, সুর ইত্যাদি যেটা তখনকার বর্তমান যুগের ছেলে মেয়েদের কাছে বেশ গ্রহণযোগ্যতা পেয়েছিল। আর এই কারণেই হাসান খুব অল্প সময়ে অনেক বেশি পরিচিতি পেয়েছিলেন। আর্কের এ্যালবাম তৈরীর প্রায় দুই বছর পর ১৯৯৮ সালে তার ব্যান্ড আর্ক জন্মভূমি নামে আর একটি ক্যাসেট বের করলো। এই এ্যালবামটিও সুপার হিট হয়। এটি তাজমহলের চেয়ে অনেক বেশি দর্শক জনপ্রিয়তা পেয়েছিল।
হাসান তার আর্কের সাথে শেষ ভলিউম স্বাধীনতা। তারপর বের করেন একক অ্যালবাম ‘তাল’। পরবর্তী ৪ মাস আমেরিকাতে থাকার পর সেখান থেকে ফিরে এসে আর্কের নাম পরিবর্তন করে সমস্ত লাইনআপটা নিয়ে ২০০২ সালে নতুন আর একটি ব্যান্ড করলেন "স্বাধীনতা" । স্বাধীনতার ব্যানারে প্রথম এ্যালবাম হচ্ছে ‘কারবালা’।
হাসান মনে করেন তিনি তার গানের কথায় ও সুরে পুরাপুরি সন্তষ্ট না। তার মধ্যে অনেক ভুল রয়েছে। তিনি এমন কিছু গান করতে চান যেটা সাধারণ মানুষের হৃদয়ে স্থান করে নেবে, তখনই তিনি নিজেকে একজন স্বার্থক শিল্পী মনে করবেন। হাসানের একক এ্যালবাম হচ্ছে ‘তাল’। আর বাকীগুলি মিশ্রণ। তার মোট গানের সংখ্যা ২০০ এর বেশি।
আর্কের এ্যালবাম তৈরীর প্রায় দুই বছর পর ১৯৯৮ সালে তার ব্যান্ড আর্ক জন্মভূমি নামে আর একটি ক্যাসেট বের করলো। এই এ্যালবামটিও সুপার হিট হয়ে গেল। এটি তাজমহলের চেয়ে অনেক বেশী দর্শক জনপ্রিয়তা পেল। এটা ছিল তার জীবনের সবচেয়ে বেশী পাওয়া। এই ক্যাসেটটির মাধ্যমে হাসান নতুন একটা স্টাইলের প্রবর্তন ঘটালেন। এখানে ছিল তার নিজস্ব সুর, কথা ও স্টাইল।
হাসান মনে করেন ১৯৯৮ সাল থেকে বর্তমান সময় পর্যন্ত তিনি একটা সম্মানজনক স্থানে পৌঁছে গেছেন। তার এই জনপ্রিয়তা এখন কমে গেলেও তার দুঃখ পাওয়ার কিছু নেই
হাসান তার আর্কের সাথে শেষ ভলিউম স্বাধীনতা। | তারপর একটি একক এ্যালবাম বের করলেন ‘তাল’। পরবর্তী ৪ মাস আমেরিকাতে থাকার পর সেখান থেকে ফিরে এসে আর্কের নাম পরিবর্তন করে সমস্ত লাইনআপটা নিয়ে ২০০২ সালে নতুন আর একটি ব্যান্ড করলেন স্বাধীনতা ।স্বাধীনতার ব্যানারে প্রথম এ্যালবাম হচ্ছে ‘কারবালা’।
হাসানের একক এ্যালবাম হচ্ছে ‘তাল’। আর বাকীগুলি মিশ্রণ। তাঁর মোট গানের সংখ্যা ২০০ এর বেশী।[১] ওয়েব্যাক মেশিনে আর্কাইভকৃত ২ মার্চ ২০১৭ তারিখে
মিশ্র এ্যালবাম
[সম্পাদনা]১৯৯৯ সালে নগর বাউলের সাথে “বৃহস্পতি” নামে মিশ্র একটি এ্যালবাম করেন। এর পরের এ্যালবামগুলি হল আপন কষ্ট, বেষ্ট অফ হাসান, ফেরারী, হ্যালো কষ্ট, কন্যা মন দিলি না সহ অনেক এ্যালবাম তিনি করেছেন।
একক এ্যালবাম
[সম্পাদনা]- তাল,লাল বন্ধু নীল বন্ধু, ফেরারী, মেঘ দে পানি দে, হ্যালো কষ্ট, ভালবাসা মানে দুঃখ, তিন সত্যি
পুরস্কার ও মনোনয়ন
[সম্পাদনা]সাল | গানের নাম | বিভাগ | ফলাফল |
---|---|---|---|
২০০১ | তাল | শ্রেষ্ঠ কণ্ঠশিল্পী | মনোনীত |
তথ্যসূত্র
[সম্পাদনা]- ↑ "১০ বছর পর আবার 'আর্ক' :: রংবেরং :: কালের কণ্ঠ"। kalerkantho.com। ৪ মার্চ ২০১৬ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২৩ আগস্ট ২০১৫।