হাওয়া খানা, পুঠিয়া
হাওয়া খানা | |
---|---|
সাধারণ তথ্যাবলী | |
অবস্থান | তারাপুর |
ঠিকানা | পুঠিয়া উপজেলা |
শহর | রাজশাহী |
দেশ | বাংলাদেশ |
স্বত্বাধিকারী | বাংলাদেশ প্রত্নতাত্ত্বিক অধিদপ্তর |
হাওয়া খানা বাংলাদেশের রাজশাহী বিভাগে অবস্থিত অন্যতম প্রত্নতাত্ত্বিক স্থাপনা।[১] পুঠিয়ার বিখ্যাত চারআনি রাজার হাওয়া খানাটি ঐতিহাসিক পুঠিয়ার ১৭টি পুরকীতির একটি।[২]
অবস্থান
[সম্পাদনা]পুঠিয়া উপজেলা সদরের রাজ প্রাসাদ থেকে ৩ কিলোমিটার এবং পুঠিয়া বাজার থেকে ৩ কিলোমিটার পশ্চিমে তারাপুর গ্রামে হাওয়াখানাটি অবস্থিত। একটি বিশাল পুকুর এর মধ্যবর্তী স্থানে এই দ্বিতল ভবনটি অবস্থান করছে। অবস্থান: গ্রামঃ তারাপুর, ইউনিয়নঃ পুঠিয়া, উপজেলাঃ পুঠিয়া, জেলাঃ রাজশাহী [৩]
অবকাঠামো
[সম্পাদনা]১০ একর আয়তন এক দিঘির মাঝখানে অবসর বিনোদনের জন্য নির্মিত হয়ে ছিল চুন সুড়কি আর পাতলা ইটের গাঁথুনি দিয়ে। ভবনটির দৈর্ঘ্য ৪৫ ফুট, প্রস্থ ৪২ ফুট আর উচ্চতা ৩৪ ফুট। দরজা জানালা বিহিন ভবনটির প্রথম তলা পানির নিচে। দ্বিতীয় তলায় আছে পশ্চিম দেয়ালে ১টি অবশিষ্ট ৩ পাশে ৩ টি করে মোট ১০ টি দরজা।ভবনের চার পাশে আছে ৬ ফুট চওড়া বারান্দা। তৃতীয় তলায় ওঠার জন্য আছে ৩ ফুট চওয়া একটি সিড়িঁ। চুন সুড়কি আর পাতলা ইটের গাঁথুনি দিয়ে তৈরি তৈরি লাল রঙের দ্বিতল ইমারতের নীচতলা আর্চযুক্ত। ভবনটির প্রথম তলা পানির নিচে এবং দরজা জানালা বিহিন। এ ইমারতের দোতালায় উঠার জন্য দক্ষিণ পাশে সিড়ি আছে। তৃতীয় তলায় তিন পাশে ৩টি দরজা থাকলেও পশ্চিম দেয়ালে কোন দরজা নেই। ভবনের চার পাশে ৬ ফুট চওড়া বারান্দা আছে।
ইতিহাস
[সম্পাদনা]পুঠিয়া রাজবাড়ীর সদস্যরা রাজবাড়ী থেকে রথ বা হাতীযোগে, পুকুরে নৌকায় চড়ে এসে অবকাশ যাপন এবং পুকুরের খোলা হাওয়া উপভোগ করতেন। জলঘরে খাবার ছিটিয়ে পুঠিয়ার রাজা বাহাদুর দিঘির মাছ দেখতেন বলে জনশ্রুতি আছে। বিকাল বেলা স্নিগ্ধ হাওয়ার পরশ নিতে রাজাবাহাদুর ঘোড়ায় চেপে দিঘির পাড়ে গিয়ে ডিঙি নায়ে চড়ে দিঘির কাজল কালো জলে ভেসে গিয়েউতেন হাওয়াখানা ভবনে। কোন কোন সময় ডিঙ্গি নায়ে দিঘিময়ে ঘুরে বেড়াতেন রাজাবাহাদুর। এক সময় দিঘির চার পাশে বসত রথযাএা মেলা। পুঠিয়া রাজবাড়ী থেকে তারা হাওয়াখানা পর্যন্ত কান্দ্রা সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ের পাশ দিয়ে যে রা¯তা চলে গেছে, সে রা¯তার সাবেক নাম ’’রথগলি’’।পিতল ধাতু দিয়ে তৈরি চার আনি রাজার সে রথটি নওগা জেলার বদল গাছীতে নিয়ে যাওয়া হয়েছে। পুঠিয়া রাজবাড়ীর সদস্যরা রাজবাড়ী থেকে রথ বা হাতীযোগে, পুকুরে নৌকায় চড়ে এসে অবকাশ যাপন এবং পুকুরের খোলা হাওয়া উপভোগ করতেন। জলঘরে খাবার ছিটিয়ে পুঠিয়ার রাজা বাহাদুর দিঘির মাছ দেখতেন বলে জনশ্রুতি আছে। তবে ভবনটির সর্বশেষ ব্যবহারকারী রাজার নাম নরেশ নারায়ন রায়, যিনি কমর বেগম নামে এক মুসলিম মহিলাকে বিয়ে করার সময় ইসলাম ধর্ম গ্রহণ করে নূর্ন্নুবী রায় নাম ধারণকওে ছিলেন। সেখানে রাজা বাহাদুর স্ববান্ববে ফূর্তি আমদ, দাবা, তাস, পাশা, খেলতেন। কারো কারো মতেট এক, একটি মন্দির, রথযাত্রার সময় ঠাকুর সেখানে গিয়ে পূঁজা করতেন। দেশ বিভাগের সময় রাজা নরেশ নারায়ন রায় ওরফে নূরুন্নবী রায় পুঠিয়া ছেড়ে কলকাতা যাবার কালে গনি মন্ডল ও দেলজান মন্ডল নামে দুই কর্মচারীকে হাওয়াখানা দিঘিটি পওন দিয়ে যান। ফলে দিঘির মাঝমাঝি বাঁধ দিয়ে ভাগাভাগির কারণে হাওয়া খানাসহ দিঘির সৌন্দর্য্য হানি হয়েছে।এছাড়া প্রথম তলার স্নানাগার মাটি দিয়ে ভরাট করে ফেলা হয়েছে। দিঘির মাঝখানের বাঁধ তুলে দিয়ে সরকারী বা ব্যক্তিগত উদ্যোগে চার পাড়ে সংস্কার করে ছোট ছোট ডিঙ্গি নাও ভাসানো হলে এবং হাওয়া খানা ভবনটি সংস্কার করা হলে পুঠিয়ার তারাপুর হাওয়াখানা উত্তরাঞ্চলের পর্যটন কেন্দ্র গুলোর মধ্যে অন্যতম হবে বলে এলাকাবাসীর অভিমত।এছাড়া পুঠিয়ার আর্থ-সামাজিক উন্নয়নে ব্যাপক সাড়া ফেলবে বলে স্থানীয় পর্যটকদের ধারণা।হাওয়াখানা ভবনটি আশু সংস্কার প্রয়োজন।
চিত্রশালা
[সম্পাদনা]-
হাওয়া খানা
-
পাদদেশ
-
হাওয়া খানা
-
সিঁড়ি
-
পেছনের দরজা
-
ভেতরের ছাদ
-
হাওয়া খানা
আরও দেখুন
[সম্পাদনা]তথ্যসূত্র
[সম্পাদনা]- ↑ আলম, মোঃ বাদরুল (২০১৪)। "জগন্নাথ/রথ মন্দির"। পুঠিয়ার রাজবংশ ও পুরাকীর্তি। পৃষ্ঠা 33।
- ↑ "হাওয়া খানা"। ১৯ ডিসেম্বর ২০১৬ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২৫ সেপ্টেম্বর ২০১৬।
- ↑ "সংস্কার ও তদারকির অভাব : পুঠিয়া রাজপরগনার ইতিহাস ঐতিহ্য বিলুপ্তের পথে"। ১০ মে ২০১৫ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২৫ সেপ্টেম্বর ২০১৬।