বিষয়বস্তুতে চলুন

স্প্যামিং

উইকিপিডিয়া, মুক্ত বিশ্বকোষ থেকে
স্ক্রিনশটটি মেইলের একটি অংশবিশেষ প্রদর্শন করছে। যেখানে একটি স্প্যাম ফোল্ডারে অসংখ্য স্প্যাম ইমেইল দেখা যাচ্ছে। একজন ফরাসি ব্যবহারকারী হওয়ায় প্রদর্শিত লেখাগুলো ফরাসিতে দেখা যাচ্ছে।

ইলেকট্রনিক স্প্যামিং

[সম্পাদনা]

ইলেকট্রনিক স্প্যামিং হলো এমন বার্তা পাঠানো, যা গ্রাহকরা পেতে চান না। সাধারণত, এটি বিজ্ঞাপন বা প্রচারের উদ্দেশ্যে করা হয়। ইমেইল স্প্যাম সবচেয়ে বেশি পরিচিত, যেখানে ব্যবহারকারীদের অনুমতি ছাড়া (বিপুল সংখ্যক) অনাকাঙ্ক্ষিত ইমেইল পাঠানো হয়। তবে স্প্যাম শুধু ইমেইলেই সীমাবদ্ধ নয়; সোশ্যাল মিডিয়া, মেসেজিং অ্যাপ, ফোরাম, ওয়েবসাইটের কমেন্ট সেকশন, এমনকি মোবাইল ফোনের এসএমএসেও স্প্যামিং হতে পারে।

স্প্যাম কোথায় পাওয়া যায়?

[সম্পাদনা]

স্প্যামিং বিভিন্ন ডিজিটাল প্ল্যাটফর্মে দেখা যায়, যেমন—

  • ইমেইল স্প্যাম: অনুমতি ছাড়া বিপুল সংখ্যক অপ্রয়োজনীয় ইমেইল পাঠানো।
  • ইনস্ট্যান্ট মেসেজিং স্প্যাম: মেসেঞ্জার, হোয়াটসঅ্যাপ বা অন্যান্য চ্যাট অ্যাপে অবাঞ্ছিত বার্তা পাঠানো।
  • সোশ্যাল মিডিয়া স্প্যাম: ফেসবুক, টুইটার, ইনস্টাগ্রামে অনাকাঙ্ক্ষিত পোস্ট বা বিজ্ঞাপন
  • ওয়েবসাইট ও ব্লগ স্প্যাম: কমেন্ট সেকশনে অপ্রাসঙ্গিক লিঙ্ক বা বিজ্ঞাপন পোস্ট করা।
  • মোবাইল এসএমএস স্প্যাম: ফোনে অবাঞ্ছিত প্রোমোশনাল মেসেজ পাঠানো।
  • সার্চ ইঞ্জিন স্প্যাম: সার্চ র‍্যাঙ্ক বাড়ানোর জন্য অনৈতিকভাবে অপ্রাসঙ্গিক কনটেন্ট প্রকাশ করা।

নামকরণের উৎস

[সম্পাদনা]

‘স্প্যাম’ শব্দটি এসেছে মন্টি পাইথন স্কেচ নামক একটি কমেডি থেকে, যেখানে "Spam" নামে একধরনের মাংসের খাবার বারবার পরিবেশন করা হচ্ছিল, যা বিরক্তিকর হয়ে উঠেছিল। এই ধারণা থেকেই অনলাইনে অনাকাঙ্ক্ষিত বার্তা পাঠানোর প্রক্রিয়াকে স্প্যামিং বলা হয়।

কেন স্প্যামিং এত বেশি হচ্ছে?

[সম্পাদনা]

স্প্যামিং অর্থনৈতিকভাবে লাভজনক হতে পারে কারণ স্প্যামারদের জন্য এটি কম খরচে অনেক মানুষকে একসাথে বার্তা পাঠানোর সুযোগ তৈরি করে। তাদের আলাদা করে মেইলিং লিস্ট, সার্ভার, আইপি রেঞ্জ বা ডোমেইন পরিচালনার জন্য তেমন ব্যয় করতে হয় না। তাছাড়া, স্প্যাম পাঠানোর বাধা কম হওয়ায় দিন দিন এর সংখ্যা বাড়ছে।

২০১১ সালের এক হিসাবে দেখা গেছে, বছরে প্রায় ৭ ট্রিলিয়ন স্প্যাম বার্তা পাঠানো হয়েছিল। স্প্যামিং শুধু বিরক্তিকরই নয়, বরং এটি সংস্থাগুলোর উৎপাদনশীলতা কমিয়ে দেয়, সার্ভার ব্যান্ডউইথ নষ্ট করে এবং সাইবার নিরাপত্তা ঝুঁকি বাড়ায়। এজন্য বিভিন্ন সরকার ও ইন্টারনেট সেবাদানকারী প্রতিষ্ঠান স্প্যাম নিয়ন্ত্রণের জন্য কড়া ব্যবস্থা নিচ্ছে।

স্প্যামার কে?

[সম্পাদনা]

যে ব্যক্তি ইলেকট্রনিক স্প্যাম ছড়ায়, তাকে স্প্যামার বলা হয়। স্প্যামাররা সাধারণত অনলাইনে প্রতারণামূলক কার্যকলাপ, পণ্য বিপণন বা ম্যালওয়্যার ছড়ানোর কাজে যুক্ত থাকে।

স্প্যামিং প্রতিরোধে ব্যবস্থা

[সম্পাদনা]
  • স্প্যাম ফিল্টার ব্যবহার করা
  • অপরিচিত লিংকে ক্লিক না করা
  • বিশ্বস্ত উৎস থেকে ইমেইল বা মেসেজ খোলা
  • স্প্যাম রিপোর্ট করা

উপসংহার

[সম্পাদনা]

স্প্যামিং প্রযুক্তির অপব্যবহারের একটি উদাহরণ, যা ব্যবহারকারীদের জন্য বিরক্তিকর এবং ক্ষতিকর হতে পারে। যদিও অনেক দেশেই এটি অপরাধমূলক কার্যক্রম হিসেবে গণ্য করা হয়, তবুও এটি নিয়ন্ত্রণ করা এখনও বড় চ্যালেঞ্জ।

তথ্যসূত্র

[সম্পাদনা]