সূতিকাষষ্ঠী ব্রত
সূতিকাষষ্ঠী ব্রত বাংলার হিন্দুসমাজের অশাস্ত্রীয় বা মেয়েলি ব্রতগুলির অন্তর্গত একটি ষষ্ঠীব্রত। গ্রামীণ বাংলার বাঙালি হিন্দুঘরের সন্তানবতী মেয়েরা সন্তান জন্মের ছয় দিনের দিন সূতিকাগৃহে এই ব্রত পালন করে। অনুষ্ঠান পালনের পূজক হন ধাইমা নিজে। ব্রতের উদ্দেশ্য হল সন্তানের ভাগ্য নিরূপণ তথা গোষ্ঠীর মঙ্গল কামনা।[১]
ব্রতের বৈশিষ্ট্য
[সম্পাদনা]গ্রাম-বাংলার বসতবাড়ির আঁতুরঘর বা সূতিকাগারে এই ব্রত করা হয়। মেয়েলি ব্রত হওয়ার দরুন ব্রতপালনে কোন মন্ত্র বা পুরোহিতের প্রয়োজন হয় না।
শিশুর জন্মের তিন দিনের দিন বাড়ির বয়স্করা ভাগ্যগণনা করে কোষ্ঠী তৈরী করেন; তাঁদের বিশ্বাস, সূতিকাষষ্ঠীর দিন স্বয়ং বিধাতাপুরুষ এসে শিশুর অদৃষ্ট এবং কোষ্ঠী ঠিক করে যান৷
সূতিকাষষ্ঠী ব্রত পালনের প্রথম পর্যায়ে প্রয়োজনীয় উপকরণ অর্থাৎ আতপচালের পিটুলিগোলা, ছোট শাঁখ, কলাপাতা বা রেকাব, সোয়াসের চাল, তিনখানা হলুদ, সোয়া পরিমাণ পয়সা, অখণ্ড কলার ছড়া এবং কোষ্ঠীনির্মাণের খেলনি ও তালপাতা সংগ্রহ করতে হয়।
দ্বিতীয় পর্যায়ে বাড়ির দেওয়ালের উপর পরিষ্কার করে পিটুলি দিয়ে 'বসুধারা' সহ 'গৌরী-আল্পনা', ঘটে স্বস্তিক আল্পনা এবং ষষ্ঠীদেবীর আসনে 'হাতে পো কাঁখে পো' আল্পনা আঁকতে হয়।
তৃতীয় পর্যায়ে পূজার উপকরণগুলি কলাপাতা বা রেকাবের উপর রেখে আসনের আঁকা আল্পনার সামনে একটি অখণ্ড কলার ছড়া রেখে বিধাতাপুরুষের উদ্দেশ্যে নবজাতকের কোষ্ঠীনির্মাণের খেলনি ও তালপাতা দিতে হয়। ব্রত পালনের পর উদযাপনের সময়ে পূজার যাবতীয় দান-সামগ্রী ধাইমাকে দিতে হয়।
এইদিন অনেক বাড়িতে 'ষষ্ঠীমঙ্গল' যাত্রা অভিনয়ের রীতি আছে।[১]