আদা-হলুদ ব্রত

উইকিপিডিয়া, মুক্ত বিশ্বকোষ থেকে

আদা-হলুদ ব্রত বাংলার হিন্দুসমাজের অশাস্ত্রীয় বা মেয়েলি ব্রতগুলির অন্তর্গত একটি ব্রত। গ্রামীণ বাংলার বাঙালি হিন্দুঘরের সধবা মহিলারা চৈত্র মাসের সংক্রান্তিতে এই ব্রত পালন করেন। ব্রতিনী চৈত্র মাসের সংক্রান্তি থেকে সারা বৈশাখ মাস ধরে প্রতিদিন একজন সধবাকে মুষ্টি পরিমাণ ধান সহ আদা, হলুদ প্রদান করেন। এটি চার বছর পরপর পালন করতে হয়। ব্রতের উদ্দেশ্য হল সংসারে চিরতরে অন্নের অভাব দূরীকরণ।[১]

মেয়েলি ব্রত হওয়ার দরুন ব্রতপালনে কোন মন্ত্র বা পুরোহিতের প্রয়োজন হয় না।

ব্রতের বৈশিষ্ট্য[সম্পাদনা]

আদা হলুদ ব্রত পালনের প্রথম পর্যায়ে ব্রতিনীকে প্রয়োজনীয় উপকরণ অর্থাৎ ধান, ধনে, আদা, হলুদ, সন্দেশ বা এই জাতীয় মিষ্টান্ন ও কয়েকটি পয়সা সংগ্রহ করতে হয়।

দ্বিতীয় পর্যায়ে, চৈত্র মাসের সংক্রান্তি থেকে সারা বৈশাখ মাস ধরে প্রতিদিন একজন সধবাকে এক মুঠো পরিমাণ ধান, এক মুঠো ধনে, পাঁচটি আদা, পাঁচটি হলুদ, পাঁচটি সন্দেশ বা এই জাতীয় মিষ্টান্ন ও পাঁচটি পয়সা প্রদান করতে হয়।

ব্রতিনীকে একইভাবে দ্বিতীয় বছরে দুইজন সধবাকে, তৃতীয় বছরে তিনজন সধবাকে, চতুর্থ বছরে চারজন সধবাকে দিয়ে ব্রতপালন করতে হয়।

চতুর্থ বছরে ব্রত পালনের পর উদযাপনের সময়ে বৈশাখ মাসের সংক্রান্তিতে চারজন সধবাকে যত্ন সহকারে খাইয়ে লালপেড়ে শাড়ি, কড়, নোয়া, সিঁদুরচুপড়ি, মাথা ঘষা, আলতা ও দক্ষিণা দিতে হয়। এরপর ব্রতিনী প্রথম বছরের মূল সধবা মহিলাটিকে রুপোর সিঁদুরকৌটো, সোনা বাঁধানো নোয়া, পাখা, চিরুনি, আয়না, একটি গামছা ও একটি টাকা দক্ষিণা দেন।[১]

তথ্যসূত্র[সম্পাদনা]

  1. বাংলার লোকসংস্কৃতির বিশ্বকোষ, দুলাল চৌধুরী, আকাদেমি অব ফোকলোর, কলকাতা: ৭০০০৯৪, প্রথম প্রকাশ:২০০৪, পৃষ্ঠা: ২৪১