সামারার নৈরাজ্য

উইকিপিডিয়া, মুক্ত বিশ্বকোষ থেকে
৯ম শতাব্দীর মধ্য ও শেষভাগে আব্বাসীয় রাজবংশের বংশলতিকা।

সামারার নৈরাজ্য দ্বারা আব্বাসীয় খিলাফতের ৮৬১-৮৭০ খ্রিষ্টাব্দের সময়কে বোঝানো হয়। এসময়ের মধ্যে অভ্যন্তরীণ অস্থিতিশীলতা বিরাজ করছিল এবং মোট চারজন খলিফার পরিবর্তন হয়। খলিফারা বিভিন্ন বিদ্রোহী সামরিক গোষ্ঠীর হাতের পুতুলে পরিণত হন। নামটি তৎকালীন রাজধানী সামারা থেকে এসেছে। ৮৬১ সালে খলিফা আল মুতাওয়াক্কিল তার তুর্কি রক্ষীর হাতে নিহত হলে এই সময়ের সূচনা হয়। তার উত্তরসুরি আল মুনতাসির ছয় মাস শাসন করেন। ধারণা করা হয় যে তার তুর্কি সেনাপ্রধান তাকে বিষপ্রয়োগ করেছিলেন। তার পরে আল মুসতাইন খলিফা হন। তুর্কি সেনা নেতৃত্বের মধ্যে বিভক্তির কারণে তিনি ৮৬৫ সালে বাগদাদে চলে যেতে সক্ষম হন। এসময় কিছু তুর্কি সেনাপ্রধান ও তাহিরিরা তাকে সাহায্য করে। কিন্তু তুর্কি সেনাদের বাকি অংশ আল মুতাজকে নতুন খলিফা নির্বাচন করে এবং বাগদাদ অবরোধ করে। মুসতাইনকে বহিষ্কার ও পরে হত্যা করা হয়। আল মুতাজ সক্ষম ও শক্তিশালী ছিলেন। তিনি তার সামরিক প্রধানদের নিয়ন্ত্রণের চেষ্টা করেন এবং সেনাবাহিনীকে বেসামরিক প্রশাসনের বাইরে রাখতে উদ্যোগী হন। এসময় তার নীতির বিরোধিতা করা হয়েছিল। ৮৬৯ সালের জুলাই মাসে তাকেও ক্ষমতাচ্যুত ও হত্যা করা হয়। তার উত্তরসুরি আল মুহতাদিও খলিফার কর্তৃত্ব শক্তিশালী করার উদ্যোগ নেন কিন্তু ৮৭০ সালের জুন মাসে তাকেও হত্যা করা হয়। মুহতাদির মৃত্যু ও আল মুতামিদের ক্ষমতালাভের পর মুসা ইবনে বুগা কেন্দ্রীক তুর্কি অংশ খলিফার দরবারের প্রধান অংশ হয়ে উঠে। এর মাধ্যমে নৈরাজ্য সমাপ্ত হয়। পরবর্তী দশকগুলোতে খিলাফত অবস্থা উন্নয়নে সফল হলেও সামারার নৈরাজ্য অবস্থা আব্বাসীয় কেন্দ্রীয় শাসনকে বড় আকারের ক্ষতি সাধন করে।

সূত্র[সম্পাদনা]