সাইদ সিয়াম

সাইদ সিয়াম
জন্ম	(১৯৬৯-০৭-২২)২২ জুলাই ১৯৬৯ আল-শতি, গাজা উপত্যকা
মৃত্যু	১৫ জানুয়ারি ২০০৯(2009-01-15) (বয়স ৩৯) জাবালিয়া, গাজা উপত্যকা
জাতীয়তা	ফিলিস্তিন

সাইদ সিয়াম (আরবি: سعيد صيام‎‎ ‎ ২২ জুলাই ১৯৬৯ - ১৫ জানুয়ারি ২০০৯) মার্চ ২০০৬ সালে গঠিত ফিলিস্তিন সরকারের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী ছিলেন। সাইদ সিয়াম হামাসের শীর্ষস্থানীয় কমান্ডারদের একজন ছিলেন। ২০০৮-০৯ সালের গাজা যুদ্ধের সময়, জাবালিয়ায় ইসরায়েলি বিমান হামলায় সিয়াম নিহত হন। ২০০৪ সালের এপ্রিল মাসে আবদুল আজিজ আল-রান্তিসির মৃত্যুর পর সিয়াম ছিলেন হামাসের সবচেয়ে জ্যেষ্ঠ সদস্য এবং ইজরায়েলের হাতে নিহত হামাসের সবচেয়ে জ্যেষ্ঠ ব্যক্তি।

প্রাথমিক জীবন এবং শিক্ষা

সাইদ সিয়াম ১৯৫৯ সালের ২২ জুলাই গাজা শহরের কাছে আল-শাতি শরণার্থী শিবিরে জন্মগ্রহণ করেন। ১৯৪৮ সালে আরব-ইজরায়েলি যুদ্ধের সময় তার বাবা-মা আশকেলনের কাছে আল-জুরায় অবস্থিত গ্রামের বাড়ি থেকে সেখানে পালিয়ে যান। গাজা শহরে মাধ্যমিক শিক্ষার পর তিনি বিজ্ঞান ও গণিতে ডিপ্লোমা অর্জন করেন এবং এরপর আল-কুদস মুক্ত বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ইসলামিক শিক্ষায় স্নাতক ডিগ্রী অর্জন করেন।

হামাসের সদস্যপদ

সিয়াম কখন হামাসে যোগ দিয়েছিলেন তা অজানা, তবে তিনি প্রথম দিকের সদস্যদের মধ্যে একজন ছিলেন। সিয়াম ২০০৩ সাল পর্যন্ত জাতিসংঘ পরিচালিত বিভিন্ন বিদ্যালয়ে শিক্ষক হিসেবে চাকরি করেছেন। ১৯৮৭ থেকে ১৯৯১ সাল পর্যন্ত প্রথম ইন্তিফাদার সময় তাকে চারবার গ্রেপ্তার করা হয়। ১৯৯২ সালে ইসরায়েল তাকে ফিলিস্তিনি অঞ্চল থেকে দক্ষিণ লেবাননে বহিষ্কার করে এবং ১৯৯৫ সালে ফিরে আসার পর ফাতাহ অধ্যুষিত প্রিভেন্টিভ সিকিউরিটি সার্ভিস (পিএসএস) সিয়ামকে গ্রেপ্তার করে।

হামাস গাজা ভূখণ্ডে ইহুদি বসতিগুলোতে মর্টার এবং কাসসাম রকেট হামলার অন্যতম পথিকৃৎ হিসেবে সিয়ামকে উল্লেখ করেছিল, যার ফলে ২০০১ সাল থেকে ২০০৫ সালের সেপ্টেম্বর পর্যন্ত ইজরায়েল তাদের সরিয়ে নেওয়ার জন্য তাদের কার্যত ঘেরাও করে রাখে। তার যোদ্ধাদের মতে, সেই সময়ের মধ্যে সিয়াম তিনবার আহত হয়েছিল, যদিও এই আঘাতের কারণ প্রকাশ করা হয়নি। ইজরায়েলের আক্রমণে নিহত হামাসের শীর্ষ পাঁচ কর্মকর্তার মধ্যে সিয়াম ছিলেন দ্বিতীয়। ২০০৪ সালের শেষের দিকে আইডিএফের হত্যা করার অন্তত একটি প্রচেষ্টা তিনি এড়িয়ে গিয়েছিলেন। ২০০৪ সালে প্রতিষ্ঠাতা আহমেদ ইয়াসিন এবং আবদুল আজিজ আল-রান্তিসির হত্যার পর সিয়াম গাজায় হামাসের "সম্মিলিত নেতৃত্বের" অন্যতম সদস্য হয়ে ওঠেন।

সিয়াম ইয়াসিন এবং হামাসের সেক্রেটারি-জেনারেল খালেদ মিশালের ঘনিষ্ঠ ছিলেন, পরবর্তীকালে তিনি মস্কোতে কূটনৈতিক সফরে গিয়েছিলেন। ২০০৬ সালে সংসদ নির্বাচনের পর, সিয়াম ফিলিস্তিনি জাতীয় কর্তৃপক্ষের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী নিযুক্ত হন। মার্চ ২০০৬ সালে ফিলিস্তিনি সরকার গঠিত হয়। তিনি ১৩,০০০ সদস্যের পুলিশ ও নিরাপত্তা বাহিনীর নেতৃত্বে ছিলেন। তিনি যে কোন একক প্রার্থীর জন্য সর্বাধিক ভোট পেয়ে নির্বাচিত হওয়ার পর হামাসের সদস্য হিসেবে ফিলিস্তিনি আইন পরিষদের গাজা নির্বাচনী জেলার প্রতিনিধিত্ব করেন। ২০০৭ সালের জুন মাসে তিনি মোহাম্মদ দাহলানের পিএসএসকে প্রতিদ্বন্দ্বী করার জন্য আধাসামরিক সংস্থা এক্সিকিউটিভ ফোর্স তৈরি করেন। এটি গাজা দখলের ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে এবং গাজায় শৃঙ্খলা আনার জন্য অনেক গাজাবাসী তার প্রশংসা করে, এইসময় কিছু লোক তার বিরুদ্ধে নির্যাতনের অভিযোগ তুলে।

ব্যক্তিগত জীবন

তার ছয় সন্তান ছিল: দুইটি ছেলে এবং চারটি মেয়ে।

মৃত্যু

সাইদ সিয়াম, ১৫ জানুয়ারি ২০০৯ সালে জাবালিয়ায় তার ভাইয়ের ভাড়া বাড়িতে ইসরায়েলি বিমান হামলায় নিহত হন। হামলায় তার ছেলে, ভাই এবং হামাসের অন্য দুই কর্মকর্তাও নিহত হয়েছেন: স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের নিরাপত্তা পরিচালক সালেহ আবু শার্খ এবং হামাস মিলিশিয়ার স্থানীয় নেতা মাহমুদ আবু ওয়াতফাহ। সিয়ামের মৃত্যুর প্রতিক্রিয়ায় হামাসের মুখপাত্র সামি আবু জুহরি বলেছেন "আমাদের কিছু নেতার পতন হবে, আমাদের কিছু লোক মারা যাবে, কিন্তু প্রতিরোধের পতাকা নামবে না"। হামাস সদস্যরা আল-আকসা টিভিতে বলেছেন যে সিয়ামের "রক্ত হবে [ইসরায়েলের বিরুদ্ধে] আসন্ন বিজয়ের জ্বালানী"।

বহিঃসংযোগ

• এএফপি প্রবন্ধ ওয়েব্যাক মেশিনে আর্কাইভকৃত ২১ জানুয়ারি ২০০৯ তারিখে
• দ্য গার্ডিয়ানে সিয়ামের মৃত্যুর খবর।