সহস্রলিঙ্গ

উইকিপিডিয়া, মুক্ত বিশ্বকোষ থেকে
নদীতীরে ক্ষোদিত পাথরের চিত্র
বৈশ্বিক উষ্ণায়নের ফলে শিবকাশি নদী থেকে উঠে আসা শতাধিক শিবলিঙ্গ

সহস্রলিঙ্গ দক্ষিণ ভারতের কর্ণাটক রাজ্যের উত্তর কন্নড় জেলার শিরসি তালুকে শিরসি শহর থেকে ১৪ কিলোমিটার দূরে অবস্থিত একটি ধর্মীয় স্থান৷ স্থানটি শাল্মল নদীতে অবস্থিত এবং এটি নদীর প্রবাহভূমি ও নদীতীরে পাথরে ক্ষোদিত শতাধিক শিবলিঙ্গের জন্য বিখ্যাত৷[১] এটির স্থানাঙ্ক ১৪°৪৩′১১″ উত্তর ৭৪°৪৮′২৫″ পূর্ব / ১৪.৭১৯৮° উত্তর ৭৪.৮০৭০° পূর্ব / 14.7198; 74.8070

জনশ্রুতি[সম্পাদনা]

নেত্রবতীকুমারধারা নদীদুটির তীরে অবস্থিত উপ্পিনঙ্গাড়িতে রয়েছে এক হাজার শিবলিঙ্গ সহ মন্দির সহস্রলিঙ্গেশ্বর মন্দির৷[২] জনশ্রুতি রয়েছে, কুরুক্ষেত্রের যুদ্ধের পর রাজসূর্যদ্বার যাগ ধরে রাখার জন্য কৃষ্ণ পাণ্ডবদের পুষ্পমৃগ খোঁজার পরামর্শ দেন। বৃকোদর ভীম তা খোঁজার জন্য মহেন্দ্রগিরি অঞ্চলে রওনা দেন। যাত্রাপথে দিন বিশ্রামরত হনুমানের সাক্ষাৎ হলে তার যাত্রা বিলম্ব ঘটে। ভীম হনুমানের লেজ পেরিয়ে যেতে অপারগ হলে তিনি তাঁকে লেজ সরানোর অনুরোধ করেন। হনুমান তাকে লেজ সরিয়ে নেওয়ার পরামর্শ দিলেও তিনি বারংবার চেষ্টা করেও তা করতে অসফল হয়। পরে তারা দুজনেই একে অপরের দিব্যতা বিষয়ে অবগত হন। হনুমান ভীমের যাত্রার উদ্দেশ্য জানতে পেরে তার সুরক্ষার জন্য নিজের লেজের চুল নিয়ে যাওয়ার কথা বলেন৷ ভীম মহেন্দ্রগিরি পৌঁছে পুষ্পমৃগের সন্ধান পান। তবে একটি শর্তেই পুষ্পমৃগ তার সহিত যেতে রাজি হয় যে, সে ভীমকে অনুসরণ করে তখনই আসবে যদি ভীম "মনোবেগ" বা বায়ুর বেগে ধাবন করে৷ লঞ্জকেশ (ল্যাজের চুল)-এর ওপর আস্থা রেখে ভীম এই শর্তে রাজি হন৷ মৃগের আগে আগে বেগবান হওয়ার সময়ে যেখানেই ভীম গতি হারিয়ে ফেলছিলেন সেখানে তিনি একটি করে লঞ্জকেশ ঝরাচ্ছিলেন৷ অদ্ভুতভাবে ঝড়া ল্যঞ্জকেশের স্থানে একটি করে শিবলিঙ্গ উত্থিত হতে থাকে ফলে পুষ্পমৃগ নিজ আরাধ্য শিবলিঙ্গের পূজা করে তবেই পরবর্তী পথে অগ্রসর হতে পারলো৷ এই ঘটনার কারণে ভীম নিজ বেগ নিয়ন্ত্রণের পর্যাপ্ত সময় পান৷ উভয় উপ্পিনঙ্গাড়ির নিকট এসে উপস্থিত হলে ভীম দুরূহ পরিস্থিতিতে অবশিষ্ট এক সহস্র ল্যাঞ্জকেশ সেখানে ঝরালে এক সস্র শিবলিঙ্গ উত্থিত হয়৷ ফলে পুষ্পমৃগের সহস্র লিঙ্গ পূজার পূর্বেই ভীম নিরাপদে যাগমণ্ডপের নিকট এসে উপস্থিত হন৷ মনে করা হয় মন্দিরের সন্নিকটেই থাকা শিবলিঙ্গের সংখ্যা এক সহস্র৷ নদীগর্তে থাকা এই লিঙ্গগুলির একটি ফেব্রুয়ারি মাসের শুষ্ক সময়ে দৃশ্যমান হয়৷[৩] উপ্পিনঙ্গাড়িতে অবস্থিত লিঙ্গগুলি ক্ষোদিত নয় বরং প্রাকৃতিক বলে মনে করা হয়৷

ইতিহাস[সম্পাদনা]

এই শিব লিঙ্গগুলি ১৬৭৮ থেকে ১৭১৮ খ্রিস্টাব্দের মধ্যে শিরসি সাম্রাজ্যের রাজা সাদাশিব রায়বর্মার পৃষ্ঠপোষকতায় খোদিত হয়েছিল। এখানে বেশ কিছু শিবলিঙ্গর সঙ্গে সম্মুখ মুখী ষাঁড়ের ভাস্কর্যও রয়েছে। [৪]

ধর্মীয় গুরুত্ব[সম্পাদনা]

হিন্দু ধর্মাবলম্বীদের নিকট আরাধ্য দেবতা শিবের একটি প্রতীক হলো লিঙ্গশিবরাত্রির দিন এখানে বহু ভক্তের সমাগম ঘটে এবং তার সহস্রলিঙ্গে দেবতা শিবের প্রতি তাদের নৈবেদ্য নিবেদন করেন। [৫]

তথ্যসূত্র[সম্পাদনা]

  1. https://www.timesofindia.indiatimes.com/travel/destinations/sahasralinga-solving-the-mystery-behind-1000-carved-shiva-lingas-in-india-and-cambodia/amp_articleshow/70530685.cms
  2. https://rcmysore-portal.kar.nic.in/temples/SahsralingeshwaraUppinangadyTemple/History.htm
  3. https://www.inditales.com/sahasralinga-sirsi-thousand-shivalingas/
  4. A brief introduction to Sahasralinga is provided by the Local Municipal Corporation "Archived copy"। ২০১৫-১২-১৬ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২০১৫-০৭-৩০ 
  5. মহাশিবরাত্রি celebrations at Sahasralinga is mentioned by Staff Correspondent (২০০৫-০৩-০৯)। "Religious fervour marks Mahashivarathri"Online Edition of The Hindu, dated 2005-03-09। Chennai, India: 2005, The Hindu। ২০০৬-০৩-০৪ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২০০৭-০৪-১৫