সরলা বিড়লা
সরলা বিড়লা | |
---|---|
জন্ম | কুচমান সিটি, রাজস্থান, ভারত | ২৩ নভেম্বর ১৯২৩
মৃত্যু | ২৮ মার্চ ২০১৫ নতুন দিল্লি, ভারত | (বয়স ৯১)
জাতীয়তা | ভারতীয় |
পরিচিতির কারণ | শিক্ষা সংস্কারক |
দাম্পত্য সঙ্গী | বসন্ত কুমার বিড়লা |
পিতা-মাতা |
|
সরলা বিড়লা (২৩ নভেম্বর ১৯৩৩ - ২৮ শে মার্চ ২০১৫) [১] একজন ভারতীয় ব্যবসায়ী ছিলেন এবং ভারতীয় শিল্পপতিদের মধ্যে বিড়লা পরিবারের বিশিষ্ট সদস্যা ছিলেন। তিনি জনশিক্ষায় আগ্রহী ছিলেন এবং সেই জন্য তাঁর স্বামীর সাথে তাঁর পরিবারের একীভূত প্রায় ৪৫ টি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের সহ-প্রতিষ্ঠাতা হওয়ার কৃতিত্ব তাঁর রয়েছে।
জীবনী
[সম্পাদনা]সরলা বিড়লা একটি ঐতিহ্যবাহী মারওয়াড়ি হিন্দু পরিবারে জন্মগ্রহণ করেছিলেন। তিনি গান্ধীবাদী শিক্ষাবিদ এবং মুক্তিযোদ্ধা ব্রজলাল বিয়ানি এবং তাঁর স্ত্রী সাবিত্রী দেবী বিয়ানির কন্যা। তিনি রাজস্থানের কুচামান শহরে তাঁর মাতামহীর বাসায় জন্মগ্রহণ করেছিলেন। তাঁর পরিবার রাজস্থানের বাসিন্দা। তবে তাঁর বাবা মহারাষ্ট্রের আকোলায় বসতি স্থাপন করেছিলেন এবং সরলা সেখানেই বড় হয়েছিলেন। তিনি একটি স্থানীয় সরকারী বিদ্যালয়ে পড়াশোনা করেছিলেন এবং তাঁর শিক্ষার মাধ্যমটি ছিল মারাঠি । বিদ্যালয়ে ষষ্ঠ শ্রেণি থেকে ইংরেজি শেখানো হত এবং সরলা হিন্দী ভাষার মানক নিবন্ধনও শিখেছিলেন এই সময়ে। বেশ কয়েকটি কথ্য ভাষার মাঝে সরলা বড় হয়েছেন এবং এর ফলে নতুন ভাষাগুলিকে গ্রহণ করা তাঁর পক্ষে সহজ হয়েছিল। বেশ বয়স হয়ে যাবার পর তিনি সম্পূর্ণ নতুন ভাষা ফরাসি শেখার জন্য দৃঢ়সংকল্প করেছিলেন ।
জামনালাল বাজাজ এবং মহাত্মা গান্ধী তাঁকে জিডি বিড়লারপুত্র বসন্ত কুমার বিড়লার সাথে পরিচয় করিয়ে দেওয়ার পর তাঁরা ১৯৪১ সালের এপ্রিল মাসে বিবাহ করেন। [২] এই বিয়ের পরে সরলা বিড়লা একটি বৃহৎ পরিবারের কর্ত্রী হয়ে ওঠেন। প্রায়ই তাঁদের "বিড়লা সাম্রাজ্যের প্রথম দম্পতি" হিসাবে উল্লেখ করা হয়। [৩] তাঁদের এক ছেলে আদিত্য বিক্রম বিড়লা এবং দুই মেয়ে জয়শ্রী মোহতা এবং মঞ্জুশ্রী খৈতান। তাঁর একমাত্র পুত্র আদিত্য বিক্রম বিড়লা ১৯৯৫ সালের প্রথম দিকে মারা যান। তিনি কুমার মঙ্গলম বিড়লার ঠাকুমা ছিলেন।
মানবপ্রীতি
[সম্পাদনা]তিনি তার সামাজিক এবং প্রাতিষ্ঠানিক কার্যক্রমের মাধ্যমে উল্লেখযোগ্য অবদান রেখেছিলেন এবং তাদের কাজে সক্রিয় অংশগ্রহণ করেছিলেন। তিনি নিম্নলিখিত সংস্থাগুলির গভর্নর, অছি বা প্রতিষ্ঠাতা ছিলেন:
- বিড়লা প্রযুক্তি ও বিজ্ঞান ইনস্টিটিউট, পিলানী
- বি কে বিড়লা প্রকৌশল ও প্রযুক্তি ইনস্টিটিউট, পিলানী
- বি কে বিড়লা কলা, বিজ্ঞান ও বাণিজ্য কলেজ, কল্যাণ
- বি কে বিড়লা পাবলিক স্কুল, কল্যাণ
- মহাদেবী বিড়লা ওয়ার্ল্ড একাডেমি
- মহাদেবী বিড়লা শিশু বিহার
- বিড়লা একাডেমি অফ আর্ট অ্যান্ড কালচার, কলকাতা
- স্বর সংগম, কলকাতা
- সংগীত কালা মন্দির, কলকাতা
- সংগীত কালা মন্দির ট্রাস্ট, কলকাতা
- বিড়লা ভারতী, কলকাতা
কলকাতার বিড়লা একাডেমি অফ আর্ট অ্যান্ড কালচারে প্রদর্শিত তাঁর ভারতীয় শিল্পকলার সংগ্রহ ভারতের উল্লেখযোগ্য বেসরকারী সংগ্রহের মধ্যে রয়েছে। সংগীত কলা মন্দির এবং বিড়লা শিল্প ও সংস্কৃতি একাডেমি এই দুটি তাঁরা পতি এবংপত্নী মিলে স্থাপন করেছিলেন। [৪]
জীবন
[সম্পাদনা]সরলা জন্মগ্রহণ করেছিলেন ব্রজলাল বিয়ানর কন্যা হিসাবে। তাঁর বিবাহ ছিল তাঁদের বাবা-মায়ের তৈরি একটি আনুষ্ঠানিক বিবাহ, যমুনালাল বাজাজ এবং মহাত্মা গান্ধীর জন্য এটি সহজ হয়েছিল। [৫] সরলা স্মরণ করিয়ে দিয়েছিল:[৬]
- "আমি পুনে, ফার্গুসন কলেজে অধ্যয়নরত ছিলাম এবং আমি একটি বার্তা পেলাম যে ছেলেকে দেখতে আমাকে মুম্বইয়ের বিড়লা হাউসে যেতে হবে। আমি সেখানে গেলাম, আমি সেখানে এক রাতের জন্য ছিলাম এবং সেখানে অনেক ছেলে ছিল। আমি জানতাম না তিনি কোনজন । আমি সেখান থেকে পরে ফিরে আসি। দু-তিন মাস পরে, গান্ধীজী এবং আমার শ্বশুরমশাইয়ের কাছ থেকে আমার কাছে ফোন এসেছিল যে আমি যেন ওয়ারধায় আসি। আমি পুনে থেকে সেখানে গিয়েছিলাম এবং পিতা ( ঘনশ্যাম দাস বিড়লা ) আমাকে জিজ্ঞাসা করেছিলেন, 'তুমি বসন্তকে দেখেছ এবং তুমি এখনো উত্তর দিতে পারনি যে তুমি তাকে বিয়ে করতে প্রস্তুত কিনা।' আমি বললাম, 'না, আট-দশজন ছেলে ছিল, তাই আমি কোনজন তিনি তা জানতাম না।' তারপর আমি বলেছিলাম যে আমি কোন ছেলেকে না দেখে এবং না জেনে তাকে বিয়ে করব না। গান্ধীজি বলেছিলেন, 'ও ঠিক কথাই বলছে' এবং তারপরে তিনি বলেছিলেন যে আমরা তোমার জন্য দেখা করার ব্যবস্থা করব - তুমি দয়া করে আবার এস। তাই আমি বলেছিলাম, 'আমার যখন ছুটি পড়বে তখনই আমি আসব।' বাবা খুব ভাল ছিলেন, বললেন, ঠিক আছে। এরপর,যখন আমার ছুটি ছিল, আমি গিয়েছিলাম এবং আমরা ৮ ই নভেম্বর মিলিত হয়েছিলাম। "
বসন্ত কুমার বিড়লা একমত, "আমি আমার সহকর্মীদের বলেছিলাম, আমি শিক্ষিত একটি মেয়ে সম্পর্কে আগ্রহী ছিলাম এবং যেহেতু সে শিক্ষিত ছিল - এমনকি তাকে না দেখেও আমি তাকে পছন্দ করেছিলাম।"
একটি প্রগতিশীল পরিবারে বেড়ে উঠে সরলা ৭৩ বছর ধরে স্বামীর পাশে ছিলেন। ৯১ বছর বয়সেও পারিবারিক অনুষ্ঠানের সময় তিনি তাঁর স্বামীর হাত ধরে আছেন, এবং বিভিন্ন গ্রুপ সংস্থার বার্ষিক সাধারণ সভায় তাঁর সাথে আসছেন, এটি একটি পরিচিত দৃশ্য ছিল। [৭]
২৮ শে মার্চ ২০১৫ সালে তিনি ঘনশ্যাম দাস বিড়লার ১২১ তম বার্ষিকী উপলক্ষে একটি অনুষ্ঠানে যোগ দিতে দিল্লিতে ছিলেন। তিনি তাঁর হুইলচেয়ার এবং লিফট জড়িত একটি ছোট্ট দুর্ঘটনায় আহত হয়েছিলেন এবং বার্ধক্যজনিত হার্টের ব্যর্থতার ফলে মারা যান। মৃত্যুর আগে তার বয়স ছিল ৯১ বছর। [৮]
তথ্যসূত্র
[সম্পাদনা]- ↑ "Sarala Birla passes away"। The Hindu। ২৯ মার্চ ২০১৫। সংগ্রহের তারিখ ২৮ জুন ২০১৮।
- ↑ "Story of India's prominent family"।
- ↑ Unfolding the fascinating story of Birlas, Basant Kumar and Sarala Birla: Life Has No Full Stops released in Delhi, 9 September 2011
- ↑ Sarala Birla, Wife of BK Birla, passes away, DNA India, 28 March 2015
- ↑ Story of one of India's prominent business families, 5 March 2007, MoneyControl
- ↑ The Story Of Basant And Sarala Birla, Aaj Tak, 5 April 2015
- ↑ Sarala Birla A businessman's wife, who won hearts with her humanity, ET Bureau, 30 March 2015
- ↑ सरला बिड़ला की संदिग्ध परिस्थिति में मौत, Jagran, 28 March 2015