সন্তোষ কুমার সেন

উইকিপিডিয়া, মুক্ত বিশ্বকোষ থেকে
সন্তোষকুমার সেন
জন্ম(১৯১০-১০-২১)২১ অক্টোবর ১৯১০
দিল্লি, ভারত
মৃত্যু১৯৭৯
পেশাশল্যচিকিৎসক
পরিচিতির কারণপালমোনারি যক্ষ্মা এবং হৃদপিণ্ডের শল্যচিকিৎসা
পুরস্কার পদ্মভূষণ (১৯৬২)

অধ্যাপক ডা.সন্তোষকুমার সেন ( ১৯১০–১৯৭৯) ছিলেন আন্তর্জাতিক খ্যাতিসম্পন্ন ভারতীয় বাঙালি শল্যচিকিৎসক। ১৯৪৬ খ্রিস্টাব্দে তিনিই প্রথম ভারতে হৃদপিণ্ডের শল্যচিকিৎসা করেন।[১] দ্য অ্যাসোসিয়েশন অফ সার্জন অফ ইন্ডিয়া'র সভাপতি ছিলেন তিনি।[২] তিনিই প্রথম ভারতীয় শল্যচিকিৎসক যিনি ইংল্যান্ডের রয়্যাল কলেজ অফ সার্জনসের ফেলো নির্বাচিত হন।

জন্ম ও প্রারম্ভিক জীবন[সম্পাদনা]

সন্তোষকুমার সেন ১৯১০ খ্রিস্টাব্দের ২১ অক্টোবর দিল্লিতে জন্মগ্রহণ করেন। পিতা জে কে সেন।[১] দিল্লিতে প্রাথমিক শিক্ষার পর, তিনি লাহোর থেকে মেডিসিনে স্নাতক হন এবং ভিয়েনায় যান। ১৯৩৬ খ্রিস্টাব্দে এম.ডি ডিগ্রি লাভ করেন। লরেঞ্জ বোহলার সহ অনেক বিখ্যাত সার্জনের অধীনে অস্ত্রোপচারের অনুশীলন করেন। এরপর বার্লিনে কিছুদিন স্যুরব্রুখের কাছে একসঙ্গে করে ১৯৩৭ খ্রিস্টাব্দে এডিনবার্গ যান এবং বছরেই রয়্যাল কলেজ অফ সার্জনস হতে এফ.আর.সি.এস হন।

কর্মজীবন[সম্পাদনা]

১৯৩৮ খ্রিস্টাব্দে ভারতে ফিরে এসে তিনি নতুন দিল্লির আরউইন হাসপাতালে (বর্তমান লোক নায়ক জয় প্রকাশ নারায়ণ হাসপাতাল) অবৈতনিক শল্যচিকিৎসক হিসাবে কাজ শুরু করেন।[১] আরউইন হাসপাতালে থাকাকালীন, তিনি মৌলানা আজাদ মেডিকেল কলেজ প্রতিষ্ঠায় সহায়তা করেন। সেখানে তিনি প্রথম অনারারি ফ্যাকাল্টি সার্জন এবং স্নাতকোত্তর অধ্যয়নের প্রধান হিসাবে দায়িত্ব পালন করেন।[৩] ১৯৪৬ খ্রিস্টাব্দে তিনিই প্রথম হৃদপিণ্ডের শল্যচিকিৎসা করেন। তিনি লেডি হার্ডিঞ্জ মেডিক্যাল কলেজের লেকচারার, আরউইন হাসপাতালের মেডিকেল সুপারিনটেন্ডেট ও দিল্লির অ্যাডিশনাল সিভিল সার্জন হিসাবেও কর্মরত থাকেন। ১৯৪৭ খ্রিস্টাব্দে ভি পি চেস্ট ইনস্টিটিউটে লেকচারার পদে নিযুক্ত হয়ে আমৃত্যু তার সঙ্গে যুক্ত থাকেন। সিলভার জুবিলি টিউবারকিউলোসিস হসপিটালের অবৈতনিক শল্যচিকিৎসক ছিলেন। ১৯৫৫ খ্রিস্টাব্দে চাকরি ছেড়ে নিজে নার্সিংহোম স্থাপন করেন।[১] দিল্লির বিভিন্ন হাসপাতাল, চিকিৎসা প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে নানাভাবে যুক্ত ছিলেন। দিল্লির সার্জিক্যাল সোসাইটির প্রতিষ্ঠাতা সদস্যদের অন্যতম ছিলেন, বিশ্বের প্রাচীনতম মেডিকেল অ্যাসোসিয়েশন- দিল্লি মেডিকেল অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতির দায়িত্ব পালন করেছিলেন।[৪] তিনি ১৯৫৯ খ্রিস্টাব্দে 'দ্য অ্যাসোসিয়েশন অফ সার্জনস অফ ইন্ডিয়া'র সভাপতি হিসাবেও দায়িত্ব পালন করেন। তিনি ১৯৫৯ সালে অ্যাসোসিয়েশন অফ সার্জনস অফ ইন্ডিয়ার সভাপতি হিসেবেও দায়িত্ব পালন করেন।[৫]

সম্মাননা[সম্পাদনা]

ভারত সরকার অধ্যাপক ডা. সন্তোষকুমার সেনকে ১৯৬২ খ্রিস্টাব্দে দেশের তৃতীয় সর্বোচ্চ বেসামরিক পুরস্কার পদ্মভূষণে ভূষিত করে।[৬]

পারিবারিক জীবন ও জীবনাবসান[সম্পাদনা]

ড. সন্তোষকুমার সেন এক মহিলা চিকিৎসক সীতাকে বিবাহ করেন। তাদের এক ছেলে এবং দুই মেয়ে ছিল। ড. সেন ১৯৭৯ খ্রিস্টাব্দে প্রয়াত হন।

তথ্যসূত্র[সম্পাদনা]

  1. সুবোধ সেনগুপ্ত ও অঞ্জলি বসু সম্পাদিত, সংসদ বাঙালি চরিতাভিধান, প্রথম খণ্ড, সাহিত্য সংসদ, কলকাতা, নভেম্বর ২০১৩, পৃষ্ঠা ৭৬৪, আইএসবিএন ৯৭৮-৮১-৭৯৫৫-১৩৫-৬
  2. Anand, Ela (২০০৭)। A cut above : the remarkable life of Dr. S.K. Sen, surgeon extraordinaire, 1910-1979। New Delhi: Ela Anand & Ketaki Sood। আইএসবিএন 9788175258914ওসিএলসি 213495610 
  3. "History MAMC"www.mamc.ac.in। ২০১৮-০৫-২৪। ২০১৮-০৬-২৯ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২০১৮-০৫-২৪ 
  4. "Delhi Medical Association"delhimedicalassociation.com। ২০১৮-০৫-২৪। ২০১৮-০৫-২৪ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২০১৮-০৫-২৪ 
  5. "Past Presidents & Secretaries – The Association of Surgeons of India"asiindia.org (ইংরেজি ভাষায়)। ২০১৮-০৫-২৪। সংগ্রহের তারিখ ২০১৮-০৫-২৪ 
  6. "Padma Awards"Padma Awards। Government of India। ২০১৮-০৫-১৭। ২০১৮-১০-১৫ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২০১৮-০৫-১৭