শ্রমিক কর্মচারী ঐক্য পরিষদ

উইকিপিডিয়া, মুক্ত বিশ্বকোষ থেকে
শ্রমিক কর্মচারী ঐক্য পরিষদ
গঠিত১৯৮৩; ৪১ বছর আগে (1983)
সদরদপ্তরঢাকা, বাংলাদেশ
যে অঞ্চলে
বাংলাদেশ
দাপ্তরিক ভাষা
বাংলা

শ্রমিক কর্মচারী ঐক্য পরিষদ বাংলাদেশের ১৬ টি শ্রমিক ইউনিয়নের একটি জাতীয় ফেডারেশন যা বাংলাদেশের সম্মিলিত শ্রমশক্তির নব্বই শতাংশের প্রতিনিধিত্ব করে।[১][২][৩]

ইতিহাস[সম্পাদনা]

শ্রমিক কর্মচারী ঐক্য পরিষদ ১৯৮৩ সালের ১৩ এপ্রিল বাংলাদেশের ১২ টি জাতীয় শ্রমিক ইউনিয়নের সমন্বয়ে প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল। ১৯৮২ সালে বাংলাদেশের ৫ টি শ্রমিক ইউনিয়নের বৈঠকের সন্ধান পাওয়া যায়, যখন সামরিক আইনের আওতায় নিষিদ্ধ ঘোষিত ইউনিয়ন কর্মীরা শ্রমিকদের একীকরণের অধিকার ফিরিয়ে আনার চেষ্টা করেছিল। ১৯৮২ সালের শেষদিকে অংশগ্রহণকারী ইউনিয়নের সংখ্যা ১১ টিতে পৌঁছে ছিল। বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী শ্রমিক দলের সঙ্গে প্রান্তিককৃত বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল ১৯৮৩ সালে যোগ দেয় এবং তারা সম্মিলিতভাবে শ্রমিক কর্মচারী ঐক্য পরিষদ গঠন করে। জাতীয় প্রেসক্লাবে এই গঠনের কথা ঘোষণা দেওয়া হয়েছিল। তারা বাংলাদেশ সরকারের প্রধান সামরিক আইন প্রশাসকের কাছে শ্রম অধিকার সম্পর্কিত ৫ দফা দাবি পেশ করেছিল। ১৯৮৩ সালে, বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের সাথে জোটবদ্ধ বাংলাদেশ জাতীয় শ্রমিক লীগ শ্রমিক কর্মচারী ঐক্য পরিষদে যোগ দেয়।[৪]

জেনারেল হুসেন মোহাম্মদ এরশাদের নেতৃত্বে সামরিক সরকার প্রথমে দাবি উপেক্ষা করার চেষ্টা করেছিল। বাংলাদেশের ছোট ছোট শ্রমিক ইউনিয়নের সদস্যরা শ্রমিক কর্মচারী ঐক্য পরিষদকে অনুসরণ করতে শুরু করে। এরপর শিল্পমন্ত্রী গোলাম মোস্তফা এবং শ্রমমন্ত্রী আমিনুল ইসলাম শ্রমিক কর্মচারী ঐক্য পরিষদের প্রতিনিধিদের সাথে বৈঠক করে ও ১৯৮৮ সালের ২১ শে মে, জাতীয় ধর্মঘটের হুমকির মুখে সরকার শ্রমিকদের অধিকার বাড়ানোর জন্য শ্রমিক কর্মচারী ঐক্য পরিষদের সাথে একটি চুক্তি স্বাক্ষর করে। সরকার এই চুক্তি কার্যকর করেছে তা নিশ্চিত করতে পরিষদ ধর্মঘটে গিয়েছিল। ১৯৮৪ সালে, বাংলা শ্রমিক ফেডারেশনের কাজী জাফর আহমেদ এবং বাংলাদেশ ওয়ার্কার্স ফেডারেশনের সিরাজুল হোসেন খান হুসেন মোহাম্মদ এরশাদের নেতৃত্বে জাতীয় পার্টিতে যোগদান করেন এবং সরকারের মন্ত্রী হিসেবে নিযুক্ত হন। পরবর্তীতে তাদের নিজ নিজ সংগঠনটি শ্রমিক কর্মচারী ঐক্য পরিষদকে ছেড়ে গেছে।[৫] ধর্মঘটে অংশ নেওয়ার সময় তাজুল ইসলামকে বাংলাদেশ পুলিশ হত্যা করেছিল।[৬]

১৯৮৬ সালে জাতীয় শ্রমিক জোটের রুহুল আমিন ভূঁইয়া এবং জাতীয় শ্রমিক লীগের শাহ মোহাম্মদ আবু জাফর জাতীয় পার্টিতে যোগ দেন যা সংগঠনটিকে আরও দুর্বল করে দেয়। নব্বইয়ের দশকে শ্রমিক কর্মচারী ঐক্য পরিষদ শ্রম ব্যবস্থার উন্নতির জন্য বাংলাদেশ সরকারের সাথে একাধিক চুক্তি স্বাক্ষর করে এবং এই চুক্তি বাস্তবায়নে সরকারকে বাধ্য করার জন্য বেশ কয়েকটি ধর্মঘট পালন করে।[৫] শ্রম অধিকারের বাইরে সংগঠনটি ধর্মীয় সংখ্যালঘুদের বৃহত্তর অধিকারের জন্য প্রচারণা চালিয়েছে।[৭]

তথ্যসূত্র[সম্পাদনা]

  1. "Trade unions oppose provision of draft labour law"The Daily Star (ইংরেজি ভাষায়)। ১৯ সেপ্টেম্বর ২০১৮। সংগ্রহের তারিখ ১৪ আগস্ট ২০১৯ 
  2. "Sramik Karmachari Oikya Parishad forms a human chain"The Daily Observer। ৯ জুলাই ২০২১ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ১৪ আগস্ট ২০১৯ 
  3. Miller, Doug (২০১২)। Last Nightshift in Savar: The Story of the Spectrum Sweater Factory Collapse (ইংরেজি ভাষায়)। McNidder and Grace Limited। পৃষ্ঠা 60। আইএসবিএন 9780857160430 
  4. নজরুল ইসলাম খান (২০১২)। "শ্রমিক কর্মচারী ঐক্য পরিষদ"ইসলাম, সিরাজুল; মিয়া, সাজাহান; খানম, মাহফুজা; আহমেদ, সাব্বীর। বাংলাপিডিয়া: বাংলাদেশের জাতীয় বিশ্বকোষ (২য় সংস্করণ)। ঢাকা, বাংলাদেশ: বাংলাপিডিয়া ট্রাস্ট, বাংলাদেশ এশিয়াটিক সোসাইটিআইএসবিএন 9843205901ওএল 30677644Mওসিএলসি 883871743 
  5. নজরুল ইসলাম খান (২০১২)। "শ্রমিক কর্মচারী ঐক্য পরিষদ"ইসলাম, সিরাজুল; মিয়া, সাজাহান; খানম, মাহফুজা; আহমেদ, সাব্বীর। বাংলাপিডিয়া: বাংলাদেশের জাতীয় বিশ্বকোষ (২য় সংস্করণ)। ঢাকা, বাংলাদেশ: বাংলাপিডিয়া ট্রাস্ট, বাংলাদেশ এশিয়াটিক সোসাইটিআইএসবিএন 9843205901ওএল 30677644Mওসিএলসি 883871743 
  6. "A documentary on Comrade Tajul Islam"The Daily Star (ইংরেজি ভাষায়)। ২ মে ২০১৯। সংগ্রহের তারিখ ১৪ আগস্ট ২০১৯ 
  7. Bahadur, Kalim; Affairs, Indian Centre for Regional (১৯৮৬)। South Asia in transition: conflicts and tensions (ইংরেজি ভাষায়)। Patriot Publishers। পৃষ্ঠা 193–200। আইএসবিএন 9788170500230। সংগ্রহের তারিখ ১৪ আগস্ট ২০১৯