শরণার্থী ত্রাণ ও প্রত্যাবাসন কমিশনারের কার্যালয়

উইকিপিডিয়া, মুক্ত বিশ্বকোষ থেকে
শরণার্থী ত্রাণ ও প্রত্যাবাসন কমিশনারের কার্যালয়
গঠিত১৯৯২; ৩২ বছর আগে (1992)
ধরনসরকারি অফিস
সদরদপ্তরকক্সবাজার জেলা, বাংলাদেশ
যে অঞ্চলে
বাংলাদেশ
দাপ্তরিক ভাষা
বাংলা
শরণার্থী ত্রাণ ও প্রত্যাবাসন কমিশনার
জনাব মোহাম্মদ মিজানুর রহমান
ওয়েবসাইটrrrc.gov.bd

শরণার্থী ত্রাণ ও প্রত্যাবাসন কমিশনারের কার্যালয় দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয়ের অধীনস্থ বাংলাদেশ সরকারের একটি সংস্থা যা বাংলাদেশে রোহিঙ্গা শরণার্থীদের ত্রাণ সরবরাহ এবং তাদের মিয়ানমারে পাঠানোর পরিকল্পনা করার জন্য দায়িত্বপ্রাপ্ত।[১][২] সরকারের অতিরিক্ত সচিব জনাব মোহাম্মদ মিজানুর রহমান এই কার্যালয়ের দায়িত্বপ্রাপ্ত কমিশনার।[৩]

ইতিহাস[সম্পাদনা]

১৯৯১-৯২ সালে রাজনৈতিক, সামাজিক ও অর্থনৈতিক নির্যাতনের কারণে মায়ানমার হতে প্রচুর সংখ্যক রোহিঙ্গা মুসলমান বাংলাদেশে পালিয়ে এসে আশ্রয় গ্রহণ করে। বাংলাদেশ সরকার মায়ানমারের উদ্বাস্তুদেরকে মানবিক কারণে বাংলাদেশে প্রবেশের সুযোগ দেয় এবং তাদেরকে সার্বিক সহযোগিতা প্রদান করে। সরকার শরণার্থীদের জন্য বাসস্থান, ঔষধ, খাদ্য এবং বিশুদ্ধ পানির ব্যবস্থা করে। ১৯৯২ সালে গণনা পূর্বক ২,৫০,৮৭৭ জন শরণার্থীকে রেজিষ্ট্রেশন করা হয় এবং তাদের ২০টি ক্যাম্পে রাখার ব্যবস্থা করা হয়। ১৯৯৩ সালে ইউএনএইচসিআর এর সাথে সমঝোতা চুক্তি স্বাক্ষরের ফলে ফলে ইউএনএইচসিআর ও ডাব্লুএফপি এই কার্যক্রমে সম্পৃক্ত হয়।

শরণার্থীদের ত্রাণ ও প্রত্যাবাসন কার্যক্রম সুষ্ঠুভাবে পরিচালনার জন্য ১৯৯২ সালে শরণার্থী ত্রাণ ও প্রত্যাবাসন কমিশনারের কার্যালয় নামে একটি নতুন প্রশাসনিক কাঠামো সৃষ্টি করা হয় এবং ব্যবস্থাপনা কার্যক্রমে কর্মকর্তা ও দক্ষ জনবল নিয়োজিত করা হয়। ১৯৯২ সাল থেকে ২৮শে জুলাই ২০০৫ সাল পর্যন্ত সময়ে মোট ২,৩৬,৫৯৯ জন শরণার্থীকে মায়ানমারে প্রত্যাবাসন এবং ২০০৬ থেকে ২০০৯ ডিসেম্বর পর্যন্ত সময়ে ৯২৬ জন শরণার্থীকে তৃতীয় দেশে স্থানান্তর করা হয়।[৪]

১৮ সেপ্টেম্বর ২০২২ তারিখে শরণার্থী ত্রাণ ও প্রত্যাবাসন কমিশনার হিসেবে সরকারের অতিরিক্ত সচিব জনাব মোহাম্মদ মিজানুর রহমানকে নিয়োগ দেওয়া হয়।[৫]

২০২১ সালের জানুয়ারিতে, বাংলাদেশ পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় ঢাকায় মন্ত্রণালয়ের সাথে সমন্বয় করার জন্য কক্সবাজারে প্রত্যাবাসন শাখা প্রতিষ্ঠার জন্য শরণার্থী ত্রাণ ও প্রত্যাবাসন কমিশনার অফিসকে চিঠি দেয়।[৬]

সাম্প্রতিক ইতিহাসে দেখা যায় যে, মিয়ানমারে রাজনৈতিক, সামাজিক এবং অর্থনৈতিক শোষণ ও তীব্র বৈষম্যের কারণে বেশ কয়েকবার রোহিঙ্গারা বিতাড়িত হয়ে বাংলাদেশে প্রবেশ করে। ১৯৪২ সাল থেকে এ পর্যন্ত এরকম চারটি বড় আকারের অনুপ্রবেশ সংঘটিত হয়েছে। ১৯৭৮ সালে প্রায় ২,০০,০০০, ১৯৯১-৯২ সালে ২,৫০,০০০, ২০১৬ সালে প্রায় ৮৭,০০০ এবং অতিসম্প্রতি আগষ্ট, ২০১৭ থেকে জানুয়ারী, ২০১৮ এর মধ্যে প্রায় ৭,০০,০০০ রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠী বলপূর্বক বাস্তুচ্যুত হয়ে বাংলাদেশে প্রবেশ করে।

বাংলাদেশে আসা রোহিঙ্গাদের সংখ্যা ইতিপূর্বে প্রত্যাবাসনের কারণে হ্রাস পেলেও সাম্প্রতিক সময়ে ২০১৭ সাল থেকে আসা রোহিঙ্গাদের মিয়ানমার এখনো ফিরিয়ে না নেয়ায় এই সংখ্যা কমেনি। বর্তমানে প্রায় ৯,৬১, ৭২৯ বলপূর্বক বাস্তুচ্যুত মিয়ানমারের নাগরিক রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠী কক্সবাজার জেলার টেকনাফ ও উখিয়া উপজেলায় অবস্থান করছে। বাংলাদেশ সরকার আরআরআরসি অফিসের মাধ্যমে এই জনগোষ্ঠীকে মৌলিক সহায়তা দিয়ে যাচ্ছে।

তথ্যসূত্র[সম্পাদনা]

  1. "শরণার্থী ত্রাণ ও প্রত্যাবাসন কমিশনারের কার্যালয়"rrrc.gov.bd (ইংরেজি ভাষায়)। ২৭ ফেব্রুয়ারি ২০২১ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২৬ জানুয়ারি ২০২১ 
  2. Kamruzzaman, Md.। "Bangladesh: Another Rohingya dies in refugee camp"। Anadolu Agency। সংগ্রহের তারিখ ২৬ জানুয়ারি ২০২১ 
  3. হাবিবুল্লাহ, মুহাম্মদ (২৬ সেপ্টেম্বর ২০২৩)। "শরণার্থী ত্রাণ ও প্রত্যাবাসন কমিশনার"শরণার্থী ত্রাণ ও প্রত্যাবাসন কমিশনারের কার্যালয়। ২৬ সেপ্টেম্বর ২০২৩ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২৬ সেপ্টেম্বর ২০২৩ 
  4. "শরণার্থী ত্রাণ ও প্রত্যাবাসন কমিশনারের কার্যালয়"rrrc.gov.bd (ইংরেজি ভাষায়)। ২৭ ফেব্রুয়ারি ২০২১ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২৬ জানুয়ারি ২০২১ 
  5. হাবিবুল্লাহ, মুহাম্মদ (১৮ জুলাই ২০২৩)। "Refugee Relief and Repatriation Commissioner"Office of The Refugee Relief and Repatriation Commissioner। ২৬ সেপ্টেম্বর ২০২৩ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২৬ সেপ্টেম্বর ২০২৩ 
  6. "Dhaka cautiously optimistic about Rohingya repatriation from 2nd quarter of 2021"Dhaka Tribune। ১৯ জানুয়ারি ২০২১। সংগ্রহের তারিখ ২৬ জানুয়ারি ২০২১