রাশিয়ার জার পরিবারের হত্যাকাণ্ড
রুশ বিপ্লব (ফেব্রুয়ারি বিপ্লব) ১৯১৭ সালের ৮ - ১৬ই মার্চ সংঘটিত হয়েছিল যার ফলে রাশিয়ার জার সাম্রাজ্যের পতন হয়। রাশিয়ার তৎকালীন সম্রাট দ্বিতীয় নিকোলাসকে উৎখাত করে একটি অন্তর্বর্তীকালীন সরকার গঠিত হয়।
দ্বিতীয় নিকোলাস তার বাবা তৃতীয় আলেকজান্ডারের মৃত্যুর পর ১৮৯৪ সালে সিংহাসনে বসেন। বিয়ে করেছিলেন রানী ভিক্টোরিয়ার আদরের নাতনি আলেকজান্দ্রাকে। আলেকজান্দ্রা ও নিকোলাসের ঘরে জন্মায় তাঁদের চার কন্যা ওলগা, তাতিয়ানা, মারিয়া ও আনাস্থাসিয়া। সবার শেষ পুত্রসন্তান আলেক্সেই। ফেব্রুয়ারি বিপ্লবের পর জার পরিবারকে কোথায় বা কীভাবে বন্দী রাখা হবে সেই নিয়ে বিপ্লবীদের মধ্যে যথেষ্ট মতভেদ ছিল। কেউ কেউ তাদের নির্বাসনে পাঠাতে চাইলো আবার কেউ কেউ চাইলো পরিবারের সবাইকে হত্যা করতে, যাতে আর কোনোদিন একনায়কতন্ত্র মাথা তুলে দাঁড়াতে না পারে। কিন্তু তাদের পাঠানো হলো সবচেয়ে খারাপ আশ্রয় ইয়েকাতেরিনবার্গ, যেখানকার মানুষজনের কাছে জার চক্ষুশূল ছিলো।
জার পরিবারকে থাকতে দেওয়া হয়েছিল ‘ইপাতিয়েভ হাউস’ নামে এক বিশাল বাড়িতে। ১৬ জুলাই মধ্যরাতে পরিবারের সকল সদস্যদেরকে মৃত্যুদন্ড প্রদানের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয় এবং এই হত্যার সিদ্ধান্ত মস্কোতে লেনিনের কাছে টেলিগ্রামের মাধ্যমে পৌঁছায়। রাত্রি দেড়টা নাগাদ জার পরিবারের সবাইকে ঘুম থেকে তুলে বলা হয়, বাইরে বিদ্রোহ চলছে, তাই তাদের নিরাপত্তার জন্য বেসমেন্টে নিয়ে যাওয়া হবে। বেসমেন্টে নিয়ে গিয়ে জারকে মৃত্যুদণ্ড শোনানো হয় এবং সঙ্গে সঙ্গেই গুলি করে পুরো পরিবারটিকে খতম করে দেওয়া হয়। একই সঙ্গে জারের চার সহকারী কেও হত্যা করা হয়। হত্যার পর দেহগুলিকে বেয়নেট দিয়ে নৃশংসভাবে ছিন্নভিন্নও করা হয়েছিল। দেহগুলিকে অজ্ঞাত স্থানে পুঁতে ফেলা হয় এবং বহুবছর পর্যন্ত এই হত্যাকাণ্ডের খবর চেপে রাখা হয়।