রামের সুমতি

উইকিপিডিয়া, মুক্ত বিশ্বকোষ থেকে
রামের সুমতি
লেখকশরৎচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়
দেশব্রিটিশ ভারত
ভাষাবাংলা
বিষয়গল্প
ধরনশিশুতোষ
প্রকাশনার তারিখ
১৯১৪
পূর্ববর্তী বইবড়দিদি 
পরবর্তী বইপরিণীতা 

রামের সুমতি বাংলা সাহিত্যের অপরাজেয় কথাশিল্পী শরৎচন্দ্র চট্টোপাধ্যায় রচিত গল্প।[১] গল্পটি ১৯১৪ সালে প্রকাশিত হয়। এতে গল্পকার মানুষের সাথে মানুষের আত্মিক সম্পর্কের চিত্র তুলে ধরেছেন।[২][৩]

কাহিনী সংক্ষেপ[সম্পাদনা]

রামলাল গ্রামের এক দুরন্ত কিশোর। সব ব্যাপারেই তার দুস্টুবুদ্ধির কারণে গ্রামের সবাই ভীত থাকে। এমনকি তার দুরন্তপনার সংবাদ আশেপাশের গ্রামে ছড়িয়ে পড়ে। তার দুরন্তপনার একান্ত সহযোগী ভৃত্য ভোলা। অপরদিকে তার বৈমাত্রেয় বড় ভাই শ্যামলাল শান্ত প্রকৃতির। সে গ্রামের কাছারীতে কাজ করে ও পৈতৃক সম্পত্তি দেখাশুনা করে। তার স্ত্রী নারায়ণী যে বছর ঘরে আসে তখন রামের মা আড়াই বছরের রামকে তার হাতে দিয়ে মারা যান। সেই থেকে নারায়ণী রামকে কোলে পিঠে মানুষ করেছে। তাই রামের দুরন্তপনা ও বদমেজাজ ভৃত্য ভোলা, নৃত্যকালী এমনকি বড় ভাই শ্যামলালের উপর খাটালেও বউদিকে সে মান্য করে। বউদির জ্বর ভালো না হলে ডাক্তারকে শাসিয়ে আসে। তাদের সুখের সংসারে বিঘ্ন ঘটে নারায়ণীর মা দিগম্বরী আর ছোট বোন সুরধুনীর আগমনে। দিগম্বরী সব সময় রামের পিছনে লেগে থাকে। একদিন রাম পেয়ারা গাছে উঠে পেয়ারা খাওয়ার সময় দিগম্বরী তাকে কটাক্ষ করলে রাম তাকে উদ্দেশ্য করে পেয়ারা ছুড়ে মারে যা নারায়ণীর মাথায় লাগে। এই ঘটনার পর শ্যামলাল দুই ভাইয়ের সম্পত্তি ভাগ করে ও নারায়ণীকে রামের সাথে কথা বলতে নিষেধ করে দেয়। আপনজন শূন্যতায় সে তার ভুলগুলো বুঝতে পারে ও তার সুমতি হয়।

প্রধান চরিত্র[সম্পাদনা]

  • রামলাল - গ্রামের দুরন্ত কিশোর
  • শ্যামলাল - রামের বড় ভাই
  • নারায়ণী - শ্যামলালের স্ত্রী, রামের বউদি
  • নৃত্যকালী - রামের বাড়ির ভৃত্য
  • দিগম্বরী - নারায়ণীর মা, শ্যামলালের শ্বাশুড়ি
  • ভোলা - রামের একান্ত সহযোগী ও বাড়ির ভৃত্য
  • গোবিন্দ - রামের ভাইপো, শ্যামলাল ও নারায়ণীর ছেলে

চলচ্চিত্র[সম্পাদনা]

রামের সুমতি (১৯৪৭-এর চলচ্চিত্র)[সম্পাদনা]

রামের সুমতি গল্প অবলম্বনে ১৯৪৭ সালে ভারতে হিন্দি ও বাংলা উভয় ভাষায় চলচ্চিত্র নির্মিত হয়। চলচ্চিত্রটি পরিচালনা করে কার্তিক চট্টোপাধ্যায়। হিন্দি চলচ্চিত্রে রাম চরিত্রে অভিনয় করেন শাকুর ও বাংলা চলচ্চিত্রে রাম চরিত্রে অভিনয় করেন স্বগত, শ্যাম চরিত্রে জহর গাঙ্গুলি, নারায়ণী চরিত্রে মলিনা দেবী। এছাড়াও অন্যান্য চরিত্রে অভিনয় করেন ছবি রায়, প্রফুল্লবালা, রাজলক্ষী দেবী, শিশির ভট্টবল প্রমুখ।[৪]

রামের সুমতি (১৯৮৫-এর চলচ্চিত্র)[সম্পাদনা]

রামের সুমতি গল্প অবলম্বনে ১৯৮৫ সালে একই নামে বাংলাদেশে একটি চলচ্চিত্র নির্মিত হয়। চলচ্চিত্রটি পরিচালনা করেন শহিদুল আমিন। এতে রাম চরিত্রে অভিনয় করেন জয়, শ্যাম চরিত্রে প্রবীর মিত্র, ও নারায়ণী চরিত্রে ববিতা। এছাড়াও অন্যান্য ভুমিকায় অভিনয় করেন রওশন জামিল, সুচন্দা, সাইফুদ্দিন, আশীষ কুমার লোহ, সাদেক বাচ্চু, এটিএম শামসুজ্জামান প্রমুখ।

তথ্যসূত্র[সম্পাদনা]

  1. "গল্প  : রামের সুমতি"। শরৎ রচনাবলী। সংগ্রহের তারিখ ২৫ মার্চ ২০১৬ [স্থায়ীভাবে অকার্যকর সংযোগ]
  2. "রামের সুমতি"। রকমারি। সংগ্রহের তারিখ ২৫ মার্চ ২০১৬ 
  3. সিরাজুল ইসলাম চৌধুরী (১৩ নভেম্বর ২০১৫)। "শরৎচন্দ্রের রামের সুমতি"। দৈনিক আজেদী। সংগ্রহের তারিখ ২৫ মার্চ ২০১৬ [স্থায়ীভাবে অকার্যকর সংযোগ]
  4. "রামের সুমতি"। সাতদিন। ২২ নভেম্বর ২০২০ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২৫ মার্চ ২০১৬