রহিমা বানু
রাহিমা বানু বেগম (জন্ম: ১৯৭২)[১] প্রাকৃতিকভাবে "ভ্যারিওলা মেজর" ভাইরাস দ্বারা আক্রান্ত গুটিবসন্ত এর সর্বশেষ তালিকাভুক্ত ব্যক্তি। ভয়ঙ্কর জীবন বিনাশী মারাত্মক যেকোন রোগের মধ্যে এটি অন্যতম।[২][৩]
রোগ
[সম্পাদনা]১৬ অক্টোবর, ১৯৭৫ বানুর তিন বছর বয়সে বিষয়টি নজরদারিতে এসেছিল[৪] এবং সে বাংলাদেশের বরিশাল জেলা এর ভোলা দ্বীপ এর কুরালিয়া গ্রামে বসবাস করত।[৫] তার ক্ষেত্রে অসুস্থতার সংবাদ দিয়েছিল বিলকিছুন্নেছা নামের একটি আট বছরের মেয়ে,[৬] এবং এর জন্যে তাকে ২৫০ টাকা নগদ অর্থ প্রদান করা হয়েছিল।[৭] তার টেলিগ্রাম এর মাধ্যমে পাঠান তথ্য বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা'র রোগ নির্মূল করার প্রচারণার প্রধান ডি. এ. হেন্ডারসন, এর নিকটে পৌছায়।[৮] বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা দল দ্রুততার সাথে চলে আসে এবং বানু এর দায়িত্ব তাদের হাতে তুলে নিয়ে সম্পূর্ণরূপে সুস্থ করে তোলে এবং ২৪ নভেম্বর ১৯৭৫ তাকে ভাইরাস এবং বিপদমুক্ত ঘোষণা করা হয়।[৯] তার শরীর থেকে (চামড়ার উপরের আবরণ) ভাইরাস এর নমুনা আটলান্টার "সিডিসি" অফিসে সংরক্ষণ করা হয়, যেখানে তারা এধরনের আরও শত শত নমুনা সংরক্ষিত রয়েছে।[১০] উত্তমভাবে প্রতিষেধক নিয়েই একমাত্র সবাই এ দ্বীপে প্রবেশ করতো। এ দ্বীপ সবসময় তৎপর নিত্যনতুন আক্রান্তের অনুসন্ধানে।[১১] যে জীবাণু উপাদান (নমুনা) বানুর দেহের থেকে নেওয়া হয়েছিল সেটা আনুষ্ঠানিকভাবে "বাংলাদেশ ১৯৭৫" হিসাবে পরিচিত হয়, এবং ঘরোয়াভাবে রহিমা স্ট্রেন নামে পরিচিত।[১২]
পরবর্তী জীবন
[সম্পাদনা]সে তার পরিবারের জন্য আয়ের উৎস হয়ে উঠল বিভিন্ন মাধ্যমে স্থিরচিত্রের মডেল হিসাবে।[১৩] ২০০৯ সালের একটি সাক্ষাত্কারে বানু বলেন, তিনি ১৮ বছর বয়েসে একজন কৃষকের সাথে বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হয় এবং তিনি ৪ সন্তানের জননী। তিনি আরও বলেন যে, গ্রামবাসী এবং এমনকি তার শ্বশুরবাড়ির সবাই গুটিবসন্ত এ আক্রান্ত হবার জন্যে তাকে সবসময় দুর্বল ও সহানুভূতির দৃষ্টিতে দেখত।[১৪][১৫]
আরও দেখুন
[সম্পাদনা]- আলী ম্যাও ম্যলিন, সর্বশেষ প্রাকৃতিকভাবে"ভারিওলা মাইনর" ভাইরাস দ্বারা আক্রান্ত ব্যক্তি।[১৬]
- এডোয়ার্ড জেনার
- জ্যানেট পার্কার, গুটিবসন্ত এ সর্বশেষ মারা যাওয়া ব্যক্তি।
তথ্যসূত্র
[সম্পাদনা]- ↑ গুডফিল্ড, জুন (১৯৯১-০১-০১)। আ চান্স টু লিভ (ইংরেজি ভাষায়)। ম্যাকমিলান পাবলিশিং কোম্পানী। পৃষ্ঠা ৪। আইএসবিএন 9780025446557।
- ↑ টাকার, জোনাথান (২০১৬-১২-০৯)। এসকারেজ: দ্য ওয়ান্স এন্ড ফিউচার থ্রেট অব স্মলপক্স (ইংরেজি ভাষায়)। গ্রোভ প্রেস। পৃষ্ঠা ১১২। আইএসবিএন 9780802139399।
- ↑ পেনডারগ্রাস্ট, মার্ক (২০১০-০১-০১)। ইনসাইড দ্যা আউটব্রেক: দ্যা এলিট মেডিক্যাল ডিটেকটিভস অব দ্যা ইপিদেমিক ইনটেলিজেন্স সার্ভিস (ইংরেজি ভাষায়)। ইগটন মিফিন হারকোর্ট। পৃষ্ঠা ১৫৭। আইএসবিএন 0151011206।
- ↑ হাবার, পিটার (২০১৩-১১-১২)। দ্যা কিয়র ইন দ্যা কোড: হাউ ২০ সেঞ্চুরি ল ইজ আন্ডারমাইনিং ২১ সেঞ্চুরি মেডিসিন (ইংরেজি ভাষায়)। বেসিক বুক। আইএসবিএন 0465069819।
- ↑ কেলী, বব (২০১৫-০২-১৬)। সেঞ্চুরি ফর ডিজিজ কন্টোল এন্ড প্রিভেনশন (ইংরেজি ভাষায়)। আরকেডিয়া পাবলিশিং। পৃষ্ঠা ৬২। আইএসবিএন 9781439649466।
- ↑ গুদফিল্ড (২০১৩-০৬-২৯)। কুয়েস্ট ফর দ্যা কিলার (ইংরেজি ভাষায়)। স্প্রিংগার সাইন্স এন্ড বিজনেস মিডিয়া। আইএসবিএন 9781468467437।
- ↑ Image caption of U.S. Centers for Disease Control Public Health Image LibraryC image number 7762
- ↑ হেনডারসন, ডি এ (২০১০-১২-১৫)। "ইন্টারভিউ উইথ ডি এ হেন্ডারসন, সোর্সড এট হিস্ট্রি অব ভ্যাকসিনস ওয়েবসাইট"। কলেজ অব ফিজিসিয়ান অব ফিলাডেফিয়া। ৭ অক্টোবর ২০১০ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ১৫ অক্টোবর ২০১০।
- ↑ জর্ডান, এ কাসেম; তারান্তোলা, ডি; টুলচ, জে (১৯৮০-০১-০১)। দ্যা ইরাডিকশন অব স্মলপক্স ফ্রম বাংলাদেশ (ইংরেজি ভাষায়)। ওয়াল্ড হেলথ অর্গানাইজেশন, সাউথ-ইস্ট এশিয়া রিজিওনাল অফিস। পৃষ্ঠা ৪৮। আইএসবিএন 9789290221081।
- ↑ ম্যাককেননা, ম্যারিন (২০০৮-০৬-১৭)। বিটিং ব্যাক দ্যা ডেভিল: অন দ্যা ফ্রন্ট লাইনস উইথ দ্যা ডিজিজ ডিটেক্টিভ অব (ইংরেজি ভাষায়)। সিমন এন্ড এস্কাস্টার। আইএসবিএন 9781439104958।[স্থায়ীভাবে অকার্যকর সংযোগ]
- ↑ প্রেস্টন, রিচার্ড (২০০৩-০১-০১)। দ্যা ডেমন ইন দ্যা ফ্রিজার (ইংরেজি ভাষায়)। র্যন্ডাম হাউজ। পৃষ্ঠা ৯১। আইএসবিএন 9780345466631।
- ↑ ফেকার, ক্লে (২০০০-০১-০১)। দ্যা বেস্ট অ্যামেরিকান ম্যাগাজিন রাইটিং ২০০০ (ইংরেজি ভাষায়)। পাবলিক অ্যাফেয়ারস। পৃষ্ঠা ৮২। আইএসবিএন 158648009X।[স্থায়ীভাবে অকার্যকর সংযোগ]
- ↑ কটার, এস. এল.; গেসলার, জে. ই. (২০১৩-০৪-১২)। স্মলপক্স: অ্যা হিস্ট্রি (ইংরেজি ভাষায়)। ম্যাকফারল্যান্ড। পৃষ্ঠা ৩৭৪। আইএসবিএন 9780786468232।
- ↑ "এশিয়া মার্ক্স ৩০ ইয়ার সিনস ওয়াল্ড ডিক্লেয়ার্ড ফ্রী অব স্মলপক্স"। ভয়েস অব আমেরিকা। ২০০৯-১১-০২। ২০১৪-০১-১৪ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২০১৪-০১-১৩।
- ↑ See also Image caption of U.S. Centers for Disease Control and Prevention Public Health Image Library image number 7765
- ↑ গ্যারেট, লাউরি (১৯৯৪-১০-৩১)। দ্যা কামিং প্লেগ: নিউলি ইমারজিং ডিজিজেজ ইন অ্যা ওয়াল্ড আউট অব ব্যালান্স (ইংরেজি ভাষায়)। ম্যাকমিলান। পৃষ্ঠা ৪৫। আইএসবিএন 9781429953276।