মেরি ক্লাবওয়ালা যাদব

উইকিপিডিয়া, মুক্ত বিশ্বকোষ থেকে
মেরি ক্লাবওয়ালা যাদব
জন্ম১৯০৯
মৃত্যু১৯৭৫
পরিচিতির কারণসমাজসেবী
পুরস্কারপদ্মশ্রী, পদ্মভূষণ , পদ্মবিভূষণ

মেরি ক্লাবওয়ালা যাদব (১৯০৯ - ১৯৭৫) একজন ভারতীয় সমাজসেবী ছিলেন। তিনি চেন্নাই এবং সারা ভারত জুড়ে অনেকগুলি এনজিও প্রতিষ্ঠা করেছিলেন। ভারতে প্রাচীনতম সংগঠিত সামাজিক-কর্ম সংস্থা স্থাপনে তার অবদান রয়েছে। তার প্রতিষ্ঠিত সংগঠন গিল্ড অফ সার্ভিস অনেক ধরনের সেবামূলক কাজের সূচনা করেছিল। তার এই সংগঠন অনাথ আশ্রম, মহিলা সাক্ষরতা, প্রতিবন্ধী ব্যক্তিদের যত্ন এবং পুনর্বাসন ইত্যাদি সম্পর্কিত এক ডজনেরও বেশি ইউনিট পরিচালনার কাজে যুক্ত।[১]

প্রাথমিক জীবন এবং শিক্ষা[সম্পাদনা]

১৯০৯ সালে তৎকালীন মাদ্রাজ প্রেসিডেন্সির উটাকামুন্ডে মেরি ক্লাবওয়ালা জন্মগ্রহণ করেন। পিতা রুস্তম প্যাটেল এবং মাতা আল্লামাই মাদ্রাজ শহরের ৩০০-শক্তিশালী পারসি সম্প্রদায়ের সদস্য ছিলেন।[২] তিনি মাদ্রাজে স্কুলে পড়াশোনা করেন। ১৮ বছর বয়সে নোগি ক্লাবওয়ালার সঙ্গে তার বিবাহ হয়। ১৯৩০ সালে তাদের একটি পুত্র সন্তান হয়। নাম ছিল খুসরো। ১৯৩৫ সালে অসুস্থতার কারণে নোগি ক্লাবওয়ালা মারা যান। এর পর তিনি নিজেকে সামাজিক কাজে নিয়োজিত রাখেন। পরবর্তীকালে মেজর চন্দ্রকান্ত কে যাদবের সাথে তার পুনরায় বিবাহ হয়। চন্দ্রকান্ত কে যাদব ছিলেন একজন ভারতীয় সেনা কর্মকর্তা যিনি একই সাথে সামাজিক কাজের ক্ষেত্রেও কাজ করছিলেন।[৩]

কর্মজীবন[সম্পাদনা]

১৯৪২ সালে দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময় মেরি ক্লাবওয়ালা গিল্ড অফ সার্ভিস-এর সাহায্যকারীদের নিয়ে ভারতীয় আতিথেয়তা কমিটি প্রতিষ্ঠা করেন। এই সময় মাদ্রাজ এবং এর সংলগ্ন অঞ্চলে বিপুল সংখ্যক ভারতীয় সৈন্য মোতায়েন ছিল। ভারতীয় সৈন্যদের কাছে সুযোগ-সুবিধা ছিল খুব কম। মেরি ক্লাবওয়ালা জীবনের বিভিন্ন স্তরের এবং সম্প্রদায়ের মহিলাদের একত্রিত করে ভ্রাম্যমাণ ক্যান্টিন, হাসপাতাল পরিদর্শন, বহুমুখী চিকিৎসা এবং বিনোদনমূলক অনুষ্ঠানে তাদের যোগদানে উৎসাহিত করেন। আতিথেয়তা কমিটি দ্বারা শুরু করা যুদ্ধ তহবিলে জনসাধারণ উদারভাবে দান করেছিল। এই যুদ্ধ তহবিল প্রাক্তন সেনাদের এবং তাদের পরিবারবর্গদের নিজেদের পুনর্বাসনে সহায়তা করে। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পরেও তাদের এই প্রচেষ্টা ছিল অব্যাহত। বিজয়ী ১৪ তম সেনাবাহিনী মেরি ক্লাবওয়ালার এই অসাধারণ প্রচেষ্টার প্রশংসা করে তাকে একটি জাপানি তলোয়ার উপহার দেয়। জেনারেল কারিয়াপ্পা তাকে "সেনাবাহিনীর প্রিয়তম" বলে ডাকতেন।

১৯৫২ সালে তিনি মাদ্রাজ স্কুল অফ সোশ্যাল ওয়ার্ক শুরু করেন। এটাই ছিল দক্ষিণ ভারতে প্রথম সামাজিক কাজের স্কুল। মুম্বাইয়ের টাটা ইনস্টিটিউট অফ সোশ্যাল সায়েন্সেসের পরে মাদ্রাজ স্কুল অফ সোশ্যাল ওয়ার্ক প্রতিষ্ঠানটি ছিল ভারতে দ্বিতীয়।

১৯৫৬ সালে এক বছরের জন্য তিনি মাদ্রাজের শেরিফ নিযুক্ত হন।[৪] ১৯৬১ সালে মাদ্রাজ (বর্তমানে চেন্নাই) সফরে ডিউক অফ এডিনবার্গ এলে তিনি তাকে সম্মানিত করেছিলেন।[৫]

সম্মাননা এবং পুরস্কার[সম্পাদনা]

  • অর্ডার অফ দ্য ব্রিটিশ এম্পায়ার (এমবিই)-এর সদস্য (১৯৪১ নিউ ইয়ার অনার)[৬]
  • পদ্মশ্রী (১৯৫৫)
  • পদ্মভূষণ (১৯৬৮)[৭]
  • পদ্মবিভূষণ (১৯৭৫) - ভারতের দ্বিতীয় সর্বোচ্চ অসামরিক সম্মান।[৮]

তথ্যসূত্র[সম্পাদনা]

  1. "Guild of Service founder's role hailed"The Hindu। ৩০ সেপ্টেম্বর ২০০৯। সংগ্রহের তারিখ ৪ জুলাই ২০১২ 
  2. "Mary Clubwala sculpture unveiled"। ১৪ জুলাই ২০০৯। সংগ্রহের তারিখ ৪ জুলাই ২০১২ 
  3. "We care for Madras that is Chennai"। Madras Musings। সংগ্রহের তারিখ ২০২২-০৪-১১ 
  4. "dated December 20, 1956: New Sheriff of Madras"The Hindu। ২০ ডিসেম্বর ২০০৬। সংগ্রহের তারিখ ৪ জুলাই ২০১২ 
  5. "When Queen came calling"The Times of India। ৯ জুন ২০১২। ২৯ জুলাই ২০১৩ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ৪ জুলাই ২০১২ 
  6. "নং. 35029"দ্যা লন্ডন গেজেট (সম্পূরক) (ইংরেজি ভাষায়)। ৩১ ডিসেম্বর ১৯৪০। 
  7. "Padma Awards" (পিডিএফ)। Ministry of Home Affairs, Government of India। ২০১৫। ১৫ অক্টোবর ২০১৫ তারিখে মূল (পিডিএফ) থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২১ জুলাই ২০১৫ 
  8. "Padma Vibhushan Awardees"। Ministry of Communications and Information Technology। ৩১ জানুয়ারি ২০০৮ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২০০৯-০৬-২৮