মির্যা মাহদি খান আস্তারাবাদি

উইকিপিডিয়া, মুক্ত বিশ্বকোষ থেকে
মির্যা মাহদি খান আস্তারাবাদি
জন্মঅষ্টাদশ শতাব্দী
"সম্ভবতঃ" আস্তারাবাদ (বর্তমানে গর্গান)[১]
মৃত্যু১৭৫৯ থেকে ১৭৬৮ এর মধ্যে যেকোনো সময়[২]

মির্যা মাহদি খান আস্তারাবাদি (ফার্সি: میرزا مهدی خان استرآبادی) বা তার উপাধি মুনশিউল মামালিক (منشی الممالک) দ্বারাও পরিচিত, ছিলেন রাজা নাদের শাহ আফশারের (শাসন: ১৭৩৬-১৭৪৭) প্রধান সচিব, ঐতিহাসিক, জীবনীকার, উপদেষ্টা, কৌশলবিদ, বন্ধু এবং আস্থাভাজন। যিনি সাম্রাজ্য সম্পর্কিত বিভিন্ন সিদ্ধান্ত এবং আদেশ লিখেছেন এবং গ্রহণ করেছেন।

জীবনী[সম্পাদনা]

ছবিতে মির্যা মাহদি খানকে গোলাপি পোশাকে একটি বই হাতে। নাদের শাহ আফশার ঘোড়ার পিঠে দেখা যাচ্ছে; কিরকুকের যুদ্ধে উসমানীয় সেনাপতি টোপাল ওসমান পাশার মৃতদেহ শাহের সামনে শুইয়ে দেওয়া হয়েছে।

যদিও মির্যা মাহদি অষ্টাদশ শতকের ইরানের একজন বিশিষ্ট ব্যক্তিত্বে পরিণত হয়েছিলেন, কিন্তু তার জীবন সম্পর্কে খুব বেশি কিছু জানা যায় না।[৩] আস্তারাবাদের (বর্তমান গর্গান) নিবাসী ছিলেনন। তিনি খুব সম্ভবত মোহাম্মদ নাসিরের পুত্র ছিলেন। এবং সম্ভবত সাফাভিদের শেষের দিকে ইসফাহানে তার তরুণ জীবন অতিবাহিত করেছিলেন, যেখানে তিনি একজন সরকারী কর্মচারী হওয়ার অনুশীলন করেছিলেন।[৩]

শেষ সাফাভীয় রাজা সুলতান হুসেনের (শাসন: ১৬৯৬-১৭২২) রাজত্বকালে আফগানরা ইরান আক্রমণ করে। সামরিক প্রধান নাদের শাহ আফগানদের বহিষ্কার করলে মির্যা মাহদি খান সাফাভীয় আদালতে তাকে সমর্থন করেন।[৩] নাদেরের কাছে তার দীর্ঘ চাকরির সময় তিনি প্রথমে ১৭৩৬ সালে মুগান সমভূমিতে নাদেরের রাজ্যাভিষেকের আগ পর্যন্ত "রাজকীয় চিঠিপত্রের প্রধান" (মুনশিউল মামালেক) হিসাবে কাজ করেছিলেন।[৩] পরে, তিনি তার সরকারী জীবনীকার এবং ইতিহাসবিদ হন।[৩]

নাদেরের দাগেস্তান অভিযানের সময় তিনি তার সাথে ছিলেন। নাদেরের জাহাজ থেকে অবতরণ সম্পর্কে তিনি উল্লেখ করেছেন, "যে পতাকা বিশ্ব জয় করেছে, তারা ইরান ছেড়ে দাগেস্তানে যাচ্ছে"।[৪]

১৭৪৭ সালের প্রথম দিকে আস্তারাবাদিকে কেরডেন চুক্তি (১৭৪৬) অনুমোদনের জন্য মোস্তফা খান বিগডেলি শামলুর সাথে উসমানীয় সাম্রাজ্যের দূত হিসাবে পাঠানো হয়েছিল।[৩] যাইহোক, এই দূতাবাস বাগদাদে পৌঁছার পর নাদের শাহের মৃত্যুর কথা জানতে পারে, যার কারণে তাদেরকে বাধ্য হয়ে ইরানে ফিরে যেতে হয়েছিল।[৩] তার পরবর্তী কর্মজীবনের ভাগ্য সম্পর্কে সবকিছুই অজানা থেকে যায়।[৩] নাদেরের চাকরির সময় তিনি যে দার্শনিক ও ঐতিহাসিক কাজগুলো সংকলন করেছিলেন তা শেষ করতে সক্ষম হওয়ার দ্বারা অনুমান করা যায় যে, তিনি জনজীবন থেকে "স্পষ্টভাবেই" অবসর নিয়েছিলেন।[৩]

কাজ[সম্পাদনা]

তিনি তারিখ-ই-জাহাঙ্গোশে-ই-নাদেরি (নাদির শাহের যুদ্ধের ইতিহাস) এর মত ঐতিহাসিক বইয়ের লেখক ছিলেন। যেটি ইয়েল বিশ্ববিদ্যালয়ে অধ্যয়ন করা একটি বই এবং তাতে এই উপস্থাপনা রয়েছে: «তারিখে নাদিরি। নাদির শাহ আফশারের একটি ইতিহাস সংকলন, যিনি ১৭৩৬ থেকে ১৭৪৭ সাল পর্যন্ত ইরান শাসন করেছিলেন, তার সচিব এবং দরবারের ইতিহাসবিদ মাহদি খান আস্তারাবাদি (মৃত্যু ১৭৫৯) ফারসি ভাষায় লিখেছিলেএনন।» এই বইটি ১৯৯৬ সালে যুক্তরাষ্ট্রের নেভাল একাডেমির গবেষণার বিষয় ছিল। মির্যা মাহদি খান স্যার জেরার্ড ক্লসনের ভূমিকাসহ ১৭৫৯ সালে "দারেহ নাদারেহ" এবং "তুর্কি ভাষার জন্য ফার্সি নির্দেশিকা" লিখেছিলেন।

১৭৬৮ সালে ডেনমার্কের রাজা ক্রিশ্চিয়ান সপ্তম ইংল্যান্ড ভ্রমণ করেন। তিনি তার সাথে মির্যা মাহদি খান আস্তারাবাদির লেখা নাদের শাহের বইটি নিয়ে যান এবং প্রাচ্যবিদ ও প্রাচীন ভারতের ইতিহাস বিশেষজ্ঞ স্যার উইলিয়াম জোন্সকে (১৭৪৬-১৭৯৪) ফরাসি ভাষায় অনুবাদ করতে বলেন। এর ফলে ১৭৭০ সালে "Histoire de Nader Chah" (পুরোপুরি সঠিক নয়) বইটি প্রকাশিত হয়। উইলিয়াম জোন্সের এই অনুবাদটি পরে জার্মান এবং জর্জীয় ভাষায় অনুবাদ করা হয়েছিল।[৩]

তথ্যসূত্র[সম্পাদনা]

  1. Bosworth এবং অন্যান্য 1985, পৃ. 1240।
  2. Perry 1987, পৃ. 844-845।
  3. Perry 1987
  4. В. Г. Гаджиевю Указ. соч. С. 132.

উদ্ধৃতি[সম্পাদনা]

আরও পড়ুন[সম্পাদনা]

  • Fleet, Kate; Krämer, Gudrun; Matringe, Denis; Nawas, John; Rowson, Everett (সম্পাদকগণ)। "Mahdī Khān Astarābādī"অর্থের বিনিময়ে সদস্যতা প্রয়োজনEncyclopaedia of Islam, THREE। Brill Online। আইএসএসএন 1873-9830