মিনি সিনেপ্লেক্স
একটি মিনি থিয়েটার (ミニシアター mini shiatā) বা মিনি সিনেপ্লেক্স হলো জাপান ও বাংলাদেশের এক ধরনের স্বাধীন চলচ্চিত্র প্রেক্ষাগৃহ[১] যেটি কোনো বড় চলচ্চিত্র কোম্পানির সরাসরি প্রভাবের অধীনস্থ নয়। মিনি সিনেপ্লেক্স জাপানে উপলব্ধ বৃহত্তর, পরাধীন প্রেক্ষাগৃহের তুলনায় তুলনামূলকভাবে ছোট আকারের ও কম বসার ক্ষমতা, সেইসাথে তাদের প্রদর্শনী দ্বারা চিহ্নিত করা হয়, যার মধ্যে স্বাধীন বা শিল্পসম্মত চলচ্চিত্র রয়েছে।[২]
ইতিহাস
[সম্পাদনা]জাপানে
[সম্পাদনা]উৎস ও জনপ্রিয়তা বৃদ্ধি
[সম্পাদনা]১৯৭৪ সালে ইওয়ানামি হলে ইকুইপ ডি সিনেমা নামে পরিচিত একটি চলচ্চিত্র বিতরণ প্রকল্প চালু করা হয় যা ছিলো জাপানের টোকিওতে ইওয়ানামি শোটেন দ্বারা নির্মিত একটি বিনোদন স্থল।[২] মূলত একটি বহুমুখী হল হিসাবে ব্যবহৃত হওয়া ইওয়ানামি হল প্রথম মিনি থিয়েটারগুলোর মধ্যে অন্যতম হয়ে ওঠে যা ২২০ জনের বসিয়ে দেখানোর ক্ষমতা রাখে।[৩] প্রকল্পটির নেতৃত্বে ছিলেন ইওয়ানামি হলের মহাব্যবস্থাপক ইতসুকো তানাকনো ও চলচ্চিত্র প্রযোজক কাশিকো কাওয়াকিতা, যিনি ব্যাপক বিতরণের জন্য অনুপযুক্ত বলে বিবেচিত চলচ্চিত্রগুলো প্রদর্শন করতে চেয়েছিলেন।[২]
মিনি থিয়েটারগুলো ১৯৮০-এর দশকে জাপান জুড়ে জনপ্রিয় হয়।[২] সেই দশকে মিনি থিয়েটারগুলো প্রায়শই ইউরোপীয় স্বাধীন ও শিল্পসম্মত চলচ্চিত্র প্রদর্শন করে, যেমন ফরাসি নবকল্লোলের সময় নির্মিত চলচ্চিত্র, সেইসাথে হাঙ্গেরি, পোল্যান্ড ও বুলগেরিয়া থেকে উদ্ভূত চলচ্চিত্রগুলো।[২] মিনি থিয়েটারগুলো জাপানে তুলনামূলকভাবে অপরিচিত জাপানি চলচ্চিত্র নির্মাতাদের দ্বারা নির্মিত স্বাধীন চলচ্চিত্রও প্রদর্শন করে।[২] মিনি থিয়েটারের জনপ্রিয়তা ১৯৯০-এর দশক পর্যন্ত অব্যাহত ছিল[৪] এবং কিছু মিনি-থিয়েটার পরিচালনাকারী, যেমন থিয়েটার শিনজুকু ও ইউরোস্পেস চলচ্চিত্র নির্মাণে বিনিয়োগ শুরু করে।[৫]
একবিংশ শতাব্দীতে
[সম্পাদনা]টোকিও মেট্রোপলিটন এলাকার বেশ কিছু মিনি থিয়েটার ২০শ শতাব্দীর শেষের দিকে এবং ২১শ শতাব্দীর প্রথম দিকে বন্ধ করে দেওয়া হয়। মিনি থিয়েটার সিনে ভিভান্ট ১৯৯৯ সালে কার্যক্রম বন্ধ করে দেয় এবং সিনে সাইসন এবং গিঞ্জা থিয়েটার সিনেমা যথাক্রমে ২০১১ ও ২০১৩ সালে বন্ধ হয়ে যায়।[২] ৭ এপ্রিল, ২০২০-এ কোভিড-১৯ মহামারী জাপান সরকারকে টোকিও এবং অন্যান্য ছয়টি প্রিফেকচারের জন্য জরুরি অবস্থা ঘোষণা করতে প্ররোচিত করে,[৬] যার ফলে দেশব্যাপী চলচ্চিত্র প্রেক্ষাগৃহগুলো বন্ধ হয়ে যায়।[৭] ফলস্বরূপ উল্লেখযোগ্যভাবে মিনি থিয়েটারগুলোর রাজস্ব হ্রাস পায়।[৮]
মিনি থিয়েটারগুলোয় মহামারীর নেতিবাচক আর্থিক প্রভাবের কারণে জাপানি চলচ্চিত্র নির্মাতারা তাদের সমর্থন করার জন্য আন্দোলন সংগঠিত করেছে।[৭][৯] পরিচালক কোজি ফুকাদা ও রিউসুকে হামাগুচি মিনি থিয়েটারগুলোকে সহায়তা করার জন্য একটি অর্থ সংগ্রহ প্রচারণা শুরু করে প্রচারাভিযান তিন দিনে ১০০ মিলিয়ন ইয়েন অনুদান সংগ্রহ করে।[৯][১০][১১][১২]
বাংলাদেশে
[সম্পাদনা]বাংলাদেশে দুটি মিনি থিয়েটার আছে। দেশের প্রথম মিনি সিনেপ্লেক্স নারায়ণগঞ্জে ২০ সেপ্টেম্বর, ২০১৯ তারিখে স্থাপিত হয় সিনেস্কোপ নামে। সরকারি পৃষ্ঠপোষকতায় নির্মিত এই মিনি সিনেপ্লেক্সে ৩৫টি আসন রয়েছে। আরেকটি মিনি সিনেপ্লেক্স হলো সিরাজগঞ্জে অবস্থিত রুটস সিনেক্লাব, যা ২২ অক্টোবর ২০২১ সালে চালু হয়।[১] চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশন কর্তৃপক্ষ ডিসেম্বর ২০২০ তারিখে চট্টগ্রামে একটি মিনি সিনেপ্লেক্স স্থাপনের ঘোষণা দেয়।[১৩]
আরো দেখুন
[সম্পাদনা]তথ্যসূত্র
[সম্পাদনা]- ↑ ক খ আহমেদ জামান শিমুল (৫ মে ২০২২)। "সিনেমা ব্যবসার নতুন সম্ভাবনা মিনি সিনেপ্লেক্স"। সারববাংলা.নেট। সংগ্রহের তারিখ ২৫ জুলাই ২০২২।
- ↑ ক খ গ ঘ ঙ চ ছ Masuda, Miki (জুন ১০, ২০১৫)। "The Advent of "Mini Theater": The Diversification of International Films in Japan and a New Kind of Film Ephemera"। Columbia University Libraries। সংগ্রহের তারিখ এপ্রিল ১৬, ২০২০।
- ↑ । Look Japan, Ltd.। ১৯৯৭। আইএসএসএন 0456-5339 https://www.google.com/books/edition/Look_Japan/TZ5WAAAAYAAJ। সংগ্রহের তারিখ এপ্রিল ১৬, ২০২০।
|শিরোনাম=
অনুপস্থিত বা খালি (সাহায্য) - ↑ "ミニシアターが日本映画界に与えてきた影響を考える "世界の多様さ"を教えてくれる存在を失わないために"। Yahoo! Japan। এপ্রিল ১৬, ২০২০। সংগ্রহের তারিখ এপ্রিল ১৬, ২০২০।
- ↑ Schilling, Mark (১৯৯৯)। Contemporary Japanese Film। Weatherhill। পৃষ্ঠা 9। আইএসবিএন 978-0834804159।
- ↑ "Japan PM Abe declares nationwide state of emergency amid virus spread"। Mainichi Shimbun। এপ্রিল ১৬, ২০২০। এপ্রিল ১৬, ২০২০ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ এপ্রিল ১৬, ২০২০।
- ↑ ক খ "【国内映画ランキング】7都府県ほぼ全ての映画館が休業、小規模映画館を支援する動きなどがスタート"। Eiga.com। এপ্রিল ১৩, ২০২০। সংগ্রহের তারিখ এপ্রিল ১৬, ২০২০।
- ↑ Schilling, Mark (এপ্রিল ১৬, ২০২০)। "The race to save Japan's independent cinemas"। The Japan Times। সংগ্রহের তারিখ এপ্রিল ১৬, ২০২০।
- ↑ ক খ "ミニシアター支援、3日間で1億円達成 文化芸術活動では日本初"। Yahoo! Japan। Oricon News। এপ্রিল ১৬, ২০২০। সংগ্রহের তারিখ এপ্রিল ১৬, ২০২০।
- ↑ "ミニシアター・エイド基金、開始24時間で5,500万円突破!"। Cinema Today। এপ্রিল ১৪, ২০২০। সংগ্রহের তারিখ এপ্রিল ১৬, ২০২০।
- ↑ "ミニシアター支援、1億円突破 国内最速、3日で1万人以上"। Yahoo! Japan। Kyodo News। এপ্রিল ১৬, ২০২০। সংগ্রহের তারিখ এপ্রিল ১৬, ২০২০।
- ↑ Brzeski, Patrick (এপ্রিল ১৭, ২০২০)। "Japanese Filmmakers Launch Campaigns to Save Tokyo's Indie Cinemas"। The Hollywood Reporter। সংগ্রহের তারিখ জুন ২৮, ২০২০।
- ↑ কুতুব, আহমেদ (৫ ডিসেম্বর ২০২০)। "আগ্রাবাদে আধুনিক মিনি সিনেপ্লেক্স"। সমকাল। সংগ্রহের তারিখ ২৫ জুলাই ২০২২।[স্থায়ীভাবে অকার্যকর সংযোগ]