মধুর কপিলা

উইকিপিডিয়া, মুক্ত বিশ্বকোষ থেকে
মধুর কপিলা
জন্ম(১৯৪২-০৪-১৫)১৫ এপ্রিল ১৯৪২
জলন্ধর, ব্রিটিশ ভারত
মৃত্যু১৯ ডিসেম্বর ২০২১(2021-12-19) (বয়স ৭৯)
চণ্ডীগড়, ভারত
পেশালেখক, সাংবাদিক, শিল্প সমালোচক
ভাষাহিন্দি

মধুর কপিলা (১৫ই এপ্রিল ১৯৪২ - ১৯শে ডিসেম্বর ২০২১) ছিলেন একজন ভারতীয় ঔপন্যাসিক, সাংবাদিক, শিল্প সমালোচক এবং হিন্দি সাহিত্যের একজন পর্যালোচক।[১] তাঁর প্রকাশিত কিছু কাজের মধ্যে রয়েছে ভটকে রাহি (হিন্দি : भटके राही; অনু. ভবঘুরে), সাতওয়াঁ স্বর (হিন্দি : सातवाँ स्वर; অনু. সপ্তম স্বর) এবং সামনে কা আসমান (হিন্দি : सामने का आसमान; অনু. সামনের আকাশ)। তিনি সাহিত্যে আজীবন অবদানের জন্য চণ্ডীগড় সাহিত্য আকাদেমি পুরস্কার এবং পাঞ্জাব সঙ্গীত নাটক আকাদেমি থেকে সাংস্কৃতিক প্রতিনিধি পুরস্কারের প্রাপক ছিলেন।

প্রাথমিক জীবন[সম্পাদনা]

কপিলা ১৯৪২ সালের ১৫ই এপ্রিল তৎকালীন ব্রিটিশ ভারতের পাঞ্জাবের জলন্ধরে জন্মগ্রহণ করেন। শৈশবে হরবল্লভ সঙ্গীত সম্মেলনে হিন্দুস্তানি শাস্ত্রীয় সঙ্গীতের সাথে তাঁর পরিচয় হয়।[২][৩]

কর্মজীবন[সম্পাদনা]

মধুর কপিলা ১২ বছর বয়সে তাঁর লেখা শুরু করেছিলেন। তাঁর প্রথম উপন্যাস ভটকে রাহি (হিন্দি : भटके रही) একজন মহিলার গল্প, যে ১৯৪৭ সালে ভারত বিভাজনের সময়ের এবং দেশের স্বাধীনতার পরের অভিজ্ঞতা গল্পের মাধ্যমে বলেছিল।[২] সাংবাদিক রমেশ কপিলার সাথে বিয়ের পর ১৯৭৭ সালে তিনি চণ্ডীগড়ে চলে আসেন। এই সময়ে তিনি একজন শিল্প সমালোচক হিসেবে কাজ করেন। একজন মুক্ত (ফ্রিল্যান্স) সাংবাদিক এবং একজন শিল্প সমালোচক হিসেবে তিনি অনেক সংবাদপত্র ও পত্রিকায় অবদান রাখেন। দৈনিক ট্রিবিউন, দিনমান, পাঞ্জাব কেসরী, জনসত্তা, হিন্দি হিন্দুস্তান সংবাদপত্রে তাঁর ছোট গল্প এবং সাহিত্যিক কলাম প্রকাশিত হয়েছে। হংস, বর্তমান সাহিত্য, ভাগর্থ, নয়া জ্ঞানোদয় (ভারতীয় জ্ঞানপীঠ), দস্তক, ইরাবতী, হরিগন্ধা এবং আরও অনেকগুলি সাহিত্য জার্নাল এবং পত্রিকায় তিনি অবদান রেখেছেন।[৪] এছাড়াও রয়েছে কলা ক্ষেত্রায়া, যেটি দৈনিক ট্রিবিউনের একটি সাপ্তাহিক শিল্প ও সাহিত্যের কলাম, যেখানে তাঁর প্রথম উপন্যাস সাতওয়াঁ স্বর (হিন্দি : सातवाँ स्वर) ধারাবাহিক আকারে প্রকাশিত হয়েছে।[১] পরবর্তীতে একটি সাক্ষাৎকারে, মধুরা কপিলা লক্ষ্য করেছিলেন যে হিন্দি লেখক ও নাট্যকার ভীষ্ম সাহনি -র একটি সাক্ষাৎকার ছিল তাঁর প্রথম সাংবাদিকতার দায়িত্ব।[৫]

কপিলার প্রথম গল্প ১৯৬০ সালে জলন্ধর থেকে প্রকাশিত বীর প্রতাপ পত্রিকায় ছাপা হয়। তিনি পরবর্তীকালে তিনটি উপন্যাস প্রকাশ করেন, যেগুলি হলো ভটকে রাহি (হিন্দি : भटके राही; অনু. ভবঘুরে), সাতওয়াঁ স্বর (হিন্দি : सातवाँ स्वर; অনু. সপ্তম স্বর) এবং সামনে কা আসমান (হিন্দি : सामने का आसमान; অনু. সামনের আকাশ)।[৬][৭] তাঁর তিনটি ছোটগল্পের সংকলন হলো- বিচোঁ বিচ (হিন্দি : बीचों बीच; অনু. মধ্যিখানে), তব শায়দ (হিন্দি : तब शायद; অনু. হয়তো তখন)[৮] এবং এক মুকদমা অর (হিন্দি : एक मुक़दमा और; অনু. আরও একটি মামলা)।[৯] তাঁর শেষ প্রকাশিত উপন্যাস সামনে কা আসমান (হিন্দি : सामने का आसमान) সমাজের বিভিন্ন স্তরের তিনজন ব্যক্তির গল্প বলেছিল, যারা একটি থিয়েটারে একত্রিত হওয়ার পর নিজেদের অভিজ্ঞতা ভাগ করে নিয়েছিল।[২] তিনি ভারতীয় শাস্ত্রীয় গায়ক পণ্ডিত জসরাজের উপর একটি বইও লিখেছেন।[১০] তাঁর লেখাগুলি বিশিষ্ট হয়ে আছে তাঁর সহজ ভাষায় বর্ণনার জন্য, গল্পগুলি প্রায়শই একটি পুরুষ-শাসিত সমাজে কেন্দ্রীয় নারী চরিত্রগুলির অভিজ্ঞতা ও আবেগ নিয়ে লেখা।[১০]

কপিলা তিন দশকেরও বেশি সময় ধরে চণ্ডীগড় সঙ্গীত নাটক আকাদেমির সদস্য ছিলেন।[২][৩] তাঁর গল্প পাঞ্জাবি, তেলুগু এবং ইংরেজি সহ ভারতীয় ও বিদেশী ভাষায় অনূদিত হয়েছে। তাঁর গল্পের ইংরেজি অনুবাদগুলি "ফ্লোয়িং লাইক এ রিভার" সংকলনে অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে।[১১][১২]

পুরস্কার[সম্পাদনা]

মধুরা কপিলা করণ সিংয়ের কাছ থেকে চণ্ডীগড় সাহিত্য একাডেমি লাইফটাইম অ্যাচিভমেন্ট অ্যাওয়ার্ড (২০১১) গ্রহণ করছেন

২০১১ সালে, মধুরা কপিলা সাহিত্যে তাঁর অসামান্য অবদানের জন্য চণ্ডীগড় সাহিত্য একাডেমি পুরস্কার পান।[১৩][১৪] তিনি পাঞ্জাব সঙ্গীত নাটক অকাদেমি থেকে সাংস্কৃতিক প্রতিনিধি পুরস্কারের প্রাপকও ছিলেন। দ্য সানডে ইণ্ডিয়ান দ্বারা তাঁকে ২১ শতকের ১১১ জন হিন্দি মহিলা লেখকদের একজন হিসাবে উল্লেখ করা হয়েছিল।[১২][১৫]

ব্যক্তিগত জীবন[সম্পাদনা]

মধুরা কপিলা সাংবাদিক রমেশ কপিলাকে বিয়ে করেছিলেন, রমেশ কপিলা ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেসে কাজ করতেন। দম্পতির তিনটি সন্তান ছিল; দুই মেয়ে এবং একটি ছেলে।[৩] তাঁদের মেয়ে শ্রুতি কপিলা একজন লেখক যাঁর লেখা প্রকাশিত হয়েছে এবং তিনি কেমব্রিজ বিশ্ববিদ্যালয়ের ইতিহাসের সহযোগী অধ্যাপক।[১৬]

কপিলা ২০২১ সালের ১৯ ডিসেম্বর তারিখে ৭৯ বছর বয়সে চণ্ডীগড়ে নিজের বাড়িতে হৃদযন্ত্রের ক্রিয়া বন্ধ হয়ে মারা যান।[২]

গ্রন্থপঞ্জি[সম্পাদনা]

সূত্র:[২][১২]

উপন্যাস[সম্পাদনা]

  • ভটকে রাহি भटके राही 
  • সাতওয়াঁ স্বর सातवाँ स्वर। কৃতি প্রকাশন। ২০০২। আইএসবিএন 81-8060-066-1 
  • সামনে কা আসমান सामने का आसमान। ভারতীয় জ্ঞানপীঠ। ২০১০। আইএসবিএন 978-81-263-2002-8 

ছোটগল্প সংকলন[সম্পাদনা]

  • বিচোঁ বিচ बीचों बीच। অভিব্যক্তি প্রকাশন। ১৯৯৩। 
  • তব শায়দ तब शायद। শিলা লেখ। ২০০৪। 
  • এক মুকদমা অর एक मुक़दमा और। শিলা লেখ। ২০০৮। আইএসবিএন 978-81-7329-208-8 

আরও দেখুন[সম্পাদনা]

তথ্যসূত্র[সম্পাদনা]

  1. "Kapila, Sehgal novels discussed"The Times of India (ইংরেজি ভাষায়)। ২২ ডিসেম্বর ২০২১ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২২ ডিসেম্বর ২০২১ 
  2. "Fiction writer, art critic Madhur Kapila passes away"Hindustan Times (ইংরেজি ভাষায়)। ২১ ডিসেম্বর ২০২১। ২১ ডিসেম্বর ২০২১ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২১ ডিসেম্বর ২০২১ 
  3. "Madhur Kapila"veethi.com। ২১ ডিসেম্বর ২০২১ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২১ ডিসেম্বর ২০২১ 
  4. "‘Sahni was embodiment of Punjabi spirit’" ওয়েব্যাক মেশিনে আর্কাইভকৃত ৪ মার্চ ২০১৬ তারিখে The Tribune, Chandigarh, India 12 July 2003.
  5. "The Tribune, Chandigarh, India - Main News"www.tribuneindia.com। ৩০ এপ্রিল ২০২১ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২২ ডিসেম্বর ২০২১ 
  6. "Beyond the obvious: Madhur Kapila's new novel Samne Ka Aasman portrays life and its complexities" ওয়েব্যাক মেশিনে আর্কাইভকৃত ৩ মার্চ ২০১৬ তারিখে. Tanya Malhotra, The Tribune, Chandigarh, India - Lifestyle. 5 June 2013.
  7. "Roundabout: Painting the town with Words" ওয়েব্যাক মেশিনে আর্কাইভকৃত ১৩ জানুয়ারি ২০১৭ তারিখে. Hindustan Times, Nirupama Dutt | 26 April 2015
  8. ""Tab Shayad" released" ওয়েব্যাক মেশিনে আর্কাইভকৃত ৯ মার্চ ২০০৫ তারিখে. The Tribune,Chandigarh, 21 March 2004.
  9. "Spectrum: Hindi review" ওয়েব্যাক মেশিনে আর্কাইভকৃত ১৩ সেপ্টেম্বর ২০১৭ তারিখে. The Sunday Tribune, 11 July 2004.
  10. "The Tribune, Chandigarh, India - Chandigarh Stories"www.tribuneindia.com। ৩০ এপ্রিল ২০২১ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২২ ডিসেম্বর ২০২১ 
  11. Indian Literature (২০১৩)। "Flowing like a River"। Sahitya Akademi: 170–175। জেস্টোর 43856753 
  12. "Our Contributors"। ২০১৩: 243–250। আইএসএসএন 0019-5804জেস্টোর 43856769। ২২ ডিসেম্বর ২০২১ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২১ ডিসেম্বর ২০২১ 
  13. "An effort to make the city a literary hub" ওয়েব্যাক মেশিনে আর্কাইভকৃত ১৩ জানুয়ারি ২০১৭ তারিখে. India Today, Vikas Kahol. 2 February 2011
  14. "Awards of Recognition" ওয়েব্যাক মেশিনে আর্কাইভকৃত ৩০ ডিসেম্বর ২০২১ তারিখে. Times of India, Amit Sharma
  15. "111 Hindi Female Writers" ওয়েব্যাক মেশিনে আর্কাইভকৃত ২২ অক্টোবর ২০১৬ তারিখে. The Sunday Indian, Ashok Bose
  16. Kapila, Shruti (২ নভেম্বর ২০২১)। Violent Fraternity: Indian Political Thought in the Global Age (ইংরেজি ভাষায়)। Princeton University Press। আইএসবিএন 978-0-691-21575-4। ৩০ ডিসেম্বর ২০২১ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২২ ডিসেম্বর ২০২১ 

বহিঃসংযোগ[সম্পাদনা]