মঙ্গল গ্রহবাসী

উইকিপিডিয়া, মুক্ত বিশ্বকোষ থেকে

মঙ্গল (গ্রহ) এ বসবাসকারী বহিরাগত মানুষ অথবা সেখানকার অধিবাসীদের মঙ্গল গ্রহবাসী হিসেবে অভিহিত করা হয়। যদিও মঙ্গল গ্রহে প্রাণের চিহ্নের খোজে অনুসন্ধান এখনো জারি রয়েছে, তবুও অনেক কল্পবিজ্ঞান লেখক এই গ্রহে বহির্জাগতিক প্রাণ কেমন হতে পারে তা নিয়ে ব্যাপক কল্পনা করেছেন।

কল্পকাহিনীতে মঙ্গল গ্রহবাসী[সম্পাদনা]

'মঙ্গল গ্রহবাসী" শব্দটি প্রথম মুদ্রিত হয়েছিল ১৮৭৭ সালের শেষদিকে। এই শব্দটির প্রায় যুগপৎ আবির্ভাব ঘটেছিল ইংল্যান্ডমার্কিন যুক্তরাষ্ট্র] এ সেই বছরের আগস্টে প্রকাশিত আসাফ হল নামক ম্যাগাজিনে মঙ্গল গ্রহের চাদগুলির সবিস্তার বিবরণসংবলিত নিবন্ধগুলিতে।[১]

মুদ্রণজগতে মঙ্গল গ্রহবাসী শব্দটির পরবর্তী ব্যবহারের অনুপ্রেরণা জুগিয়েছিল ১৮৮১ সালে প্যারিসে আয়োজিত আন্তর্জাতিক বিদ্যুৎ প্রদর্শনী অনুষ্ঠানটি। চার মাস ব্যাপী এই প্রদর্শনীতে অনেক মানুষ ভীড় জমিয়েছিল বেশ কিছু প্রযুক্তিগত বিস্ময় প্রত্যক্ষ করতে যেমন, বৈদ্যুতিক বাতি এবং টেলিফোন। এক দর্শনার্থী এখানে এসে ভেবে অবাক হয়ে এসেছিলেন যে পরের ২০০ বছরে এ জাতীয় উদ্ভাবন কি রূপ নিতে পারে। তিনি এসব নিয়ে তার জল্পনা কল্পনা ব্যক্ত করেছিলেন The Year of Grace 2081 শীর্ষক একটি প্রবন্ধে।[২] মঙ্গল গ্রহবাসীদের কথা এখানে উঠে এসেছে শেষের দিকে। পৃথিবীতে আন্তর্জাতিক সংঘাতের বিরতিকালে মানব সম্প্রদায় মঙ্গল গ্রহবাসীদের সাথে যোগাযোগ স্থাপনের চেষ্টা করে। লেখকের ভাষ্যে, "কিছু সময়ের জন্য মার্জিত বার্তা আদান প্রদানের পর", মানব সম্প্রদায় গৌরবের দোহাই দিয়ে মঙ্গল গ্রহবাসীদের সাথে যুদ্ধের সিদ্ধান্ত নেবে।

সাহিত্যে '"মঙ্গল গ্রহবাসী"' শব্দটির প্রথম প্রকাশ হয় এলেরিয়েল([[১৮৮৩]}) নামক উপন্যাসে। ১৫ বছর বাদে প্রকাশিত আরেকটি উপন্যাস, এইচ.জি.ওয়েলস কর্তৃক লিখিতদ্য ওয়ার অফ দ্য ওয়ার্ল্ডস উপন্যাসে মঙ্গল গ্রহবাসীদের বর্ণনা করা হয়েছে প্রযুক্তিগতভাবে উন্নত অক্টোপাস-সদৃশ বহির্জাগতিক জাতি, যারা পৃথিবীতে হামলা চালায়, কারণ মঙ্গল গ্রহ তাদের জীবনধারণের পক্ষে বেশিই ঠান্ডা হয়ে গিয়েছিল।

জ্যোতির্বিদ ও ব্যবসায়ী পারসিভাল লওয়েল কর্তৃক তার মার্স এন্ড ইটস ক্যানালস বইটিতে এরকম অনুমান করেছেন যে এক বিপন্ন মঙ্গল গ্রহবাসী প্রজাতি এককালে কৃত্রিম নালার একটা বিস্তৃত জাল তৈরী করেছিল যাতে পানি গ্রহটির মেরু-অঞ্চলীয় বরফশৃঙ্গ, প্ল্যানাম অস্ট্রাল এবং প্ল্যানাম বোরিয়াম থেকে তাদের বসতির দিকে প্রবাহিত হয়। মঙ্গল গ্রহের এই পানিবাহী নালিকার উপপ্রমেয়টি প্রথম প্রস্তাবিত হয়েছিল জিওভান্নি স্কিয়াপারেল্লির প্রতিফলক দূরবীনে দেখতে পাওয়া প্রতিচ্ছবির উপর ভিত্তি করে। প্রতিচ্ছবিটি অস্পষ্ট হলেও, স্কিয়াপারেল্লির মতে তিনি মঙ্গলের উপরিভাগে কতগুলি লম্বা ও সোজা দাগ দেখেছিলেন; কিছু জ্যোতির্বিদ বিশ্বাস করে ফেলেছিলেন যে এই দাগগুলি মঙ্গল গ্রহবাসীদেরই তৈরী। লওয়েল এই ধারণা থেকে অনুপ্রাণিত হয়ে তার অন্য একটি বই মারস এস দ্য এবোড অফ লাইফয়ে এই মঙ্গল গ্রহবাসীদের নিয়ে খেয়ালী বৃত্তান্ত দিয়েছিলেন।[৩] এই বৃত্তান্ত একেবারেই প্রমাণসাপেক্ষ না হওয়া সত্ত্বেও, লওয়েলের লেখা পাঠকের কল্পনায় স্পষ্ট প্রতিচ্ছবি জাগিয়ে তুলেছিল।

লওয়েলের লেখায় অনুপ্রাণিত হয়ে এডগার রাইস বারোজ ১৯১১ এর গ্রীষ্মে নিজের একটি গল্প লেখা আরম্ভ করেন। গল্পে এক মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের গৃহযুদ্ধের যুদ্ধপ্রবীণ জন কার্টার পৃথিবীতে কোন এক গুহার ভেতর দিয়ে যাবার সময় মঙ্গল গ্রহে চলে গিয়েছিলেন এবং সেখানে দুই যুদ্ধরত মঙ্গল গ্রহবাসী প্রজাতির সংঘর্ষে জড়িয়ে গিয়েছিলেন।

যদিও "মঙ্গল গ্রহবাসী" শব্দটি মঙ্গল গ্রহের যেকোনো জীবকেই বলা হয়, এই লিখাগুলি এবং তদপরবর্তী সাহিত্যকর্মগুলিতে মঙ্গল গ্রহবাসীদের মনুষ্য-সদৃশ একজাতীয় হিসেবে কল্পনা করা হয়েছিল। কল্পবিজ্ঞানে,মঙ্গল গ্রহবাসীদের নিয়ে বাধাধরা কিছু কল্পনা করা হয়েছে; মনুষ্য-সদৃশ প্রাণী হিসেবে; অতিমানবিক ক্ষমতাসম্পন্ন জীব হিসেবে; মানুষের থেকে কম বুদ্ধিসম্পন্ন মনুষ্য-সদৃশ জীব হিসেবে; মঙ্গল গ্রহবাসী পরিচয়ে উপনিবেশবাসী মানুষ হিসেবে; কিংবা উচ্চ বুদ্ধিসম্পন্ন বিলুপ্ত জাতি হিসেবে।

মঙ্গল গ্রহবাসী হিসেবে ঔপনিবেশিক মানুষ[সম্পাদনা]

রবার্ট এ হাইনলাইন এর অনেক মঙ্গল গ্রহবাসী চরিত্রই জন্মসূত্রে মানূষ এবং এই গ্রহেই লালিত পালিত। রেড প্ল্যানেট উপন্যাসটিতে, ছেলেরা মঙ্গলগ্রহের এক মানব উপনিবেশে আবাসিক বিদ্যালয়ে পড়াশোনা করে। স্থানীয় মঙ্গল গ্রহবাসীরা তাদের সহ্য করে উপনিবেশের শাসক কর্তৃক এক মঙ্গল গ্রহবাসী বাচ্চাকে ভয় দেখানোর আগ পর্যন্ত। স্থানীয় ঐ মঙ্গল গ্রহবাসীরা মানুষদের মঙ্গল গ্রহ থেকে চলে যেতে বললেও, এক মানব ডাক্তার তাদের পুনর্বিবেচনা করার জন্য পরাভূত করেন।

হাইনলাইনের ১৯৫৬ সালের উপন্যাস ডাবল স্টার উপন্যাসটিতে, মানুষ সমগ্র সৌরজগতে উপনিবেশ স্থাপন করেছে এবং মঙ্গলগ্রহের এক রাজনীতিবিদ এক স্থানীয় মঙ্গল গ্রহবাসী প্রজাতিদের (দ্বিতীয় শ্রেণীর নাগরিক) ভোটাধিকার নিয়ে কাজ করছেন।

ফিলিপ কিন্ড্রিক ডিক এর উপন্যাস মারশিয়ান টাইম স্লিপ এ, মঙ্গল গ্রহে একদল ঔপনিবেশিক মানুষ গ্রহটির দুরূহ পরিবেশের খাপ খাইয়ে নিতে লিপ্ত। তারা এক আদিবাসী গোষ্ঠী, যাদের ডাকা হয় "ব্লিকমেন", তাদের সাথে নৈমিত্তিক বর্ণবাদযুক্ত আচরণ করে থাকে। দি থ্রি স্টিগমাটা অফ পামার এল্ড্রিচ এ, মঙ্গল গ্রহে স্থানীয় কোনো প্রাণের অস্তিত্ব নেই। সেখানকার অনুর্বর আবাসে, মানুষ "ক্যান ডি" ও "চিউ জি" নামের ওষুধ তৈরী করে।

টোটাল রিকল (১৯৯০) একটি কল্পবিজ্ঞান একশন চলচ্চিত্রটি আপাতদৃষ্টিতে একজন সাধারণ নির্মাণকর্মী নিয়ে তৈরী যিনি কিনা মঙ্গল গ্রহের এক মুক্তিকামী যোদ্ধা এবং সেই গ্রহ থেকে পৃথিবীতে পাঠানো হয়েছে। সে পরে এক বহির্জাগতিক হস্তশিল্পের থেকে জানতে পারে যে সেটা ঐ গ্রহে মানুষের পূর্বে প্রাণেরপ্রমাণ বহন করে। চলচ্চিত্রটির নির্দেশনায় ছিলেন পল ভেরহোভেন আর অভিনয়ে অন্যতম ছিলেন আর্নল্ড শোয়ার্জনেগার

ফিউতুরামা, একটি মার্কিন অ্যানিমেশন চলচ্চিত্র, যেখানে চরিত্রকাররা কল্পনা করেছিলেন মানব উপনিবেশের পরবর্তীকালের মঙ্গল গ্রহকে, যা পরবর্তীতে মার্কিন দখলে চলে যায়।

দ্য মার্শিয়ান (২০১৫) রিডলি স্কট কর্তৃক পরিচালিত এবং ম্যাট ডেমন কর্তৃক অভিনীত একটি কল্পবিজ্ঞান সিনেমা যেটা কিনা অ্যান্ডি উইর এর ই লেখা একই নামের একটি উপন্যাসের উপর ভিত্তি করে তৈরী। চলচ্চিত্রে দেখানো হয় একজন মার্কিন নভোচারীকে যিনি ২০৩৫সালের মঙ্গল গ্রহে একা আটকে পড়েছিলেন।

পৃথিবীকে হামলাকারী হিসেবে মঙ্গল গ্রহবাসী[সম্পাদনা]

এইচ জি ওয়েলসের দ্য ওয়ারফ দ্য ওয়ার্ল্ডস (১৮৯৮) এবং এর বিভিন্ন এড্যাপ্টেশন ১০০ বছরেরও বেশি সময় ধরে কল্পবিজ্ঞান লেখকদের ওপর ব্যাপক প্রভাব বিস্তার করে আসছে। ওয়েলস এর মঙ্গল গ্রহবাসী প্রযুক্তিগতভাবে উন্নত প্রাচীন একটি সভ্যতা। তাদের বড়, বাদামী হৃষ্টপুষ্ট শরীর এবং ইংরেজি ভি অক্ষরের ন্যায় প্রতীয়মান মুখের দু'পাশে আটটি করে মোট ষোলটি সাপের ন্যায় কর্ষিকা থাকায় তাদেরকে সেফালোপড এর মত দেখাতো। মঙ্গল গ্রহ তাদের বসবাসের জন্য অধিক শীতল হতে থাকায় তারা পৃথিবীর ওপর হামলা চালায়। লন্ডনসহ দক্ষিণ ইংল্যান্ড এ তারা ক্যামেরা সদৃশ বস্তু থেকে ভয়ানক উত্তপ্ত রশ্মি দ্বারা আক্রমণ চালায়; রাসায়নিক যুদ্ধেও তারা সামিল হয়, যেখানে ব্যবহৃত হয় বন্দুক-সদৃশ্ নল থেকে নির্গত "কালো ধোয়া"। অবশ্য পরে পৃথিবীর জীবাণু ঐ মঙ্গল গ্রহবাসীদের মেরে ফেলে এবং পৃথিবীবাসী বেচে যায়।

ওলাফ স্টাপলেডন তার লাস্ট এন্ড দ্য ফার্স্ট মেন বইয়ে ওয়েলসের ধারণারই পুনরাবৃত্তি করিয়েছেন যেখানে মানুষ ও মঙ্গল গ্রহবাসী সহস্র বছর ধরে যুদ্ধে লিপ্ত এবং অবশেষে মানুষই সেই যুদ্ধে জয়ী হয়।

এইচ জি ওয়েলসের দ্য ওয়ারফ দ্য ওয়ার্ল্ডস (১৮৯৮) এবং এর বিভিন্ন এড্যাপ্টেশন ১০০ বছরেরও বেশি সময় ধরে কল্পবিজ্ঞান লেখকদের ওপর ব্যাপক প্রভাব বিস্তার করে আসছে। ওয়েলস এর মঙ্গল গ্রহবাসী প্রযুক্তিগতভাবে উন্নত প্রাচীন একটি সভ্যতা। তাদের বড়, বাদামী হৃষ্টপুষ্ট শরীর এবং ইংরেজি ভি অক্ষরের ন্যায় প্রতীয়মান মুখের দু'পাশে আটটি করে মোট ষোলটি সাপের ন্যায় কর্ষিকা থাকায় তাদেরকে সেফালোপড এর মত দেখাতো। মঙ্গল গ্রহ তাদের বসবাসের জন্য অধিক শীতল হতে থাকায় তারা পৃথিবীর ওপর হামলা চালায়। লন্ডনসহ দক্ষিণ ইংল্যান্ড এ তারা ক্যামেরা সদৃশ বস্তু থেকে ভয়ানক উত্তপ্ত রশ্মি দ্বারা আক্রমণ চালায়; রাসায়নিক যুদ্ধেও তারা সামিল হয়, যেখানে ব্যবহৃত হয় বন্দুক-সদৃশ্ নল থেকে নির্গত "কালো ধোয়া"। অবশ্য পরে পৃথিবীর জীবাণু ঐ মঙ্গল গ্রহবাসীদের মেরে ফেলে এবং পৃথিবীবাসী বেচে যায়।

ওলাফ স্টাপলেডন তার লাস্ট এন্ড দ্য ফার্স্ট মেন বইয়ে ওয়েলসের ধারণারই পুনরাবৃত্তি করিয়েছেন যেখানে মানুষ ও মঙ্গল গ্রহবাসী সহস্র বছর ধরে যুদ্ধে লিপ্ত এবং অবশেষে মানুষই সেই যুদ্ধে জয়ী হয়।

উইলিয়াম ক্যামেরন মেঞ্জিস এর ইনভেডারস ফ্রম মার্স (১৯৫৩) চলচ্চিত্রে ওয়েলসের মঙ্গল গ্রহবাসীদের কর্ষিকাকে ক্ষুদ্র সবুজ মানব ধারণার সাথে একীভূত করে তৈরি করেছেন এক মাস্টারমাইন্ড মঙ্গল গ্রহবাসী, যে কিনা লম্বা, সবুজ বর্ণের মানব সদৃশ মিউট্যান্ট দের দাস বানিয়ে ফেলে। ১৯৮৬ সালে এই চলচ্চিত্রটি পুনর্নিমিত হয়।

২০০৯ সালে রণকৌশল ভিডিও গেমসের মোটামুটিয়াবে সূচনা হয় স্তালিন ভার্সাস মার্শিয়ানস এর হাত ধরে, এবং সেখানে সেই সবুজ বর্ণের বামনদের পুনরায় আবির্ভাব ঘটে। সোভিয়েত ইউনিয়ন এর রাষ্ট্রপতির ভূমিকায় এখানে খেলোয়াড়কে মঙ্গল গ্রহবাসীদের হাত থেকে পৃথিনীকে বাচাতে হয়।

১৯৪৮ সালে ওয়ার্নার ব্রস.তাদের এনিমেটেড চলচ্চিত্রে মার্ভিন দ্য মার্শিয়ান নামক নতুন এক খলনায়কের আবির্ভাব ঘটায়, যে গড়নে খাটো, চিকন, এবং অতিরিক্ত বড় চোখ, হাত আর পা বিশিষ্ট। এর বড় গোলাকৃতি মাথাটি হয় সম্পূর্ণ কালো অথবা তার হেলমেটের কারণে ঢাকা থাকে। তার পোশাকের নকশা রোমান পুরাণের যুদ্ধের দেবতা, মার্সের পোশাকের নকশার আদলে তৈরী। মার্ভিনের চলচ্চিত্রে অভিষেক ঘটে হেয়ারডেভিল হেয়ার এ, যেখানে মার্ভিন চেষ্টা চালায় পৃথিবীকে ধ্বংস করবার, কারণ সেটা "তার শুক্রগ্রহ দেখতে পাওয়ার পথে বাধা দেয়"।

সুপারম্যান এর একটি গল্প "ব্ল্যাক ম্যাজিক অন মার্স" (১৯৫০) এ মঙ্গল গ্রহবাসীদের ধারণা আরও গুরুতরঃ এখানে সুপারম্যান যেসকল মঙ্গল গ্রহবাসীদের মুখোমুখি হয় তাদের নেতৃত্বে ছিল মার্টলার, এডলফ হিটলার এর গুণ্মুগ্ধ ভক্ত।

বার্কেলি ব্রিথেড এর ছবি সংবলিত বই মার্স নিডস মমস (২০০৭) এ, মঙ্গল গ্রহবাসীরা খাটো, মোটা, শুঁড়বিশিষ্ট মাওনব সদৃশ জীব যাদের শরীরের বর্ণ সবার ভিন্ন। এই গল্পে, এক পাচ বছর বয়সী বালক তার মা'কে নতুনভাবে উপলব্ধি করবার চেষ্টা করে যখন তার মাকে তিন মঙ্গল গ্রহবাসী অপহরণ করে নিয়ে যায়। এই গল্পটি একই নামে সিনেমায় রূপ দেয় সাইমন ওয়েলস আর তার স্ত্রী ২০১১ সালে।

সভ্য মানব সদৃশ জাতি হিসেবে মঙ্গল গ্রহবাসী[সম্পাদনা]

দ্য অল স্টোরি কর্তৃক বরোজের আন্ডার দ্য মুনস অফ মার্স এর প্রকাশনার এক বছর বাদেই, ১৯১১ সালের এপ্রিল মাসে মডার্ন ইলেকট্রিকস প্রকাশ করতে আরম্ভ করে হিউগো গারনসব্যাকের নিজের লেখা রোমান্স কাহিনী, রালফ ১২৪সি ৪১+ যেটার ঘটনাক্রম স্থান পেয়েছে পৃথিবীতে। গারনসব্যাকের মঙ্গল গ্রহবাসীরা পৃথিবীর মানুষদের সাথে বসয়াস করে চলেছে, যাদের বর্ণ সবুজ ও চোখ বিশালাকৃতির, এবং মানুষদের থেকে লম্বা ও শক্তিশালী। ধারাবাহিকটি বই হিসেবে ১৯২৫ এর আগে প্রকাশিত হয়নি।

১৯২৩ সালে প্রকাশ পায় দ্য ডিক্লাইন অফ মার্স, একটি উপন্যাস যা একইসাথে একটি কল্পবিজ্ঞান এবঙ্ একটি রাজনৈতিক কল্পকাহিনী। এর লেখক আলেকজাই নিকোলায়ভিচ তলস্তয়, একজন সোভিয়েত, এই উপন্যাসে বলেন এক সোভিয়েত প্রকৌশলীর গল্প যে কিনা একটি রকেট বানায় ও তাতে করে মঙ্গল গ্রহে যাবার জন্য তার সহকারীকে আমন্ত্রণ জানায়। সেখানে তারা মানব সদৃশ মঙ্গল গ্রহবাসীদের একটি জাতিকে প্রত্যক্ষ করে যারা কোন আদিম মঙ্গল গ্রহবাসী ও আটলান্টিস এর মানুষদের উত্তরসূরি। এই মঙ্গল গ্রহবাসীরা এক শ্রেণীগত সমাজে বসবাস করে, যেখানে শ্রমিকরা শাসকগোষ্ঠীর বিরুদ্ধে জেগে ওঠে, কিন্তু সেই বিপ্লব ব্যর্থ হয়। তখন মঙ্গল গ্রহ এক জলবায়ু পরিবর্তনের মধ্যে প্রবেশ করে, যার ফলে মঙ্গল গ্রহবাসীদের অস্তিত্বের জন্য বিপর্যয় নেমে আসে।

তথ্যসূত্র[সম্পাদনা]

  1. "Brown, Peter Jensen. "The World's First Martian""।  এখানে তারিখের মান পরীক্ষা করুন: |সংগ্রহের-তারিখ= (সাহায্য);
  2. Early Sports 'n Pop-Culture Blog.। "Brown, Peter Jensen. "The Future as Seen from the Dawn of the Electrical Age""।  এখানে তারিখের মান পরীক্ষা করুন: |সংগ্রহের-তারিখ= (সাহায্য);
  3. Caplinger, Michael (April 1995).। ""Life on Mars""msss.com। সংগ্রহের তারিখ 4 August 2013.  এখানে তারিখের মান পরীক্ষা করুন: |সংগ্রহের-তারিখ= (সাহায্য)

আরও দেখুন[সম্পাদনা]