ভট্টদেব

উইকিপিডিয়া, মুক্ত বিশ্বকোষ থেকে
বৈকুণ্ঠনাথ ভাগবত ভট্টাচার্য
জন্মবৈকুণ্ঠনাথ ভট্টাচার্য
২৩শে মার্চ ১৫৫৮
বিচানকুচি , বাজলি, বড়পেটা, আসাম (ভারত)
মৃত্যু৩ জানুয়ারি ১৬৩৮(1638-01-03) (বয়স ৭৯)
ব্যাসকুচি, বড়পেটা
ছদ্মনামভট্টদেব
পেশাসাহিত্যিক
ভাষাআদি অসমীয়ার[১] অসমীয়া ভাষা[২]
জাতীয়তাভারতীয়
সময়কালমধ্যযুগ

ভট্টদেব (১৫৫৮-১৬৩৮) (অসমীয়া : বৈকুণ্ঠনাথ ভাগৱত ভট্টাচাৰ্য), (জন্ম নাম : বৈকুণ্ঠনাথ) অসমীয়া গদ্যের জনক হিসাবে স্বীকৃত।[৭] যদিও গোপাল চরণ দ্বিজ কর্তৃক শঙ্করদেবের সংস্কৃত রচনা ভক্তিরত্নাকর-এর অসমীয়া অনুবাদ ভক্তিরত্নাকর-কথা ভট্টদেবের রচনার আগেই প্রকাশিত হয়েছিল,[৮] কিন্তু ভট্টদেবের লেখাগুলি অসমীয়া গদ্যের উচ্চ এবং মর্যাদাপূর্ণ শৈলীর বিকাশে প্রভাব ফেলেছিল। ভট্টদেব এবং গোপাল চরণ দ্বিজের ১৬ শতকের রচনাগুলিকে ভারতীয় ভাষায় গদ্যের প্রাচীনতম উদাহরণ হিসাবে বিবেচনা করা হয়।[৯] সংস্কৃত ব্যাকরণ ও সাহিত্যে ভট্টদেবের পাণ্ডিত্য, এবং ভাগবতের উপর তাঁর কর্তৃত্ব তাঁকে ভাগবত ভট্টাচার্য উপাধি এনে দিয়েছিল।[১০]

জীবনী[সম্পাদনা]

বাজালির (কামরূপ অঞ্চল) বিচানকুচিতে কামরূপী এক ব্রাহ্মণ পরিবারে ভট্টদেবের জন্ম হয়। তাঁর বাবা ও মায়ের নাম ছিল যথাক্রমে চন্দ্র ভারতী এবং তারা দেবী।[১১] শিক্ষা সমাপ্ত করার পর তিনি দামোদর দেবের শিষ্যত্ব গ্রহণ করেন এবং পরে বড়পেটাতে পাটবৌসি সত্রের প্রধান হিসাবে তাঁর উত্তরাধিকারী হন। কিছুকাল পরে তিনি ব্যাসকুচি সত্র প্রতিষ্ঠা করেন, পরবর্তীকালে সেখানেই তাঁর মৃত্যু হয়। তিনি কথা ভাগবত এবং কথা গীতার রচনার জন্য সবচেয়ে বেশি পরিচিত, যদিও স্বর্ণমালিকা এবং প্রসঙ্গমালার মতো কিছু ছোটখাট লেখাও তিনি লিখেছেন।[১২][১৩][১৪]

কাজ[সম্পাদনা]

দামোদরদেবের অনুরোধে ভট্টদেব সংস্কৃত ভাগবতকে অসমীয়া গদ্যে অনুবাদ করা শুরু করেন। দামোদরদেব এটিকে সাধারণ মানুষের কাছে উপলব্ধ করতে চেয়েছিলেন। ভট্টদেব কথা ভাগবতকে একটি আলোচনামূলক শৈলীতে উপস্থাপন করেছেন যেটির লেখ্য মর্যাদাপূর্ণ এবং ভারসাম্যপূর্ণ।[১৫] তিনি কথা গীতায় সংলাপের একই অনুভূতি বজায় রেখেছেন। যদিও তিনি ছোট ছোট বাক্য, জনপ্রিয় শব্দভাণ্ডার এবং কথোপকথনের অভিব্যক্তিপূর্ণ চলিত ভাষা ব্যবহার করেছেন,[১৬] কিন্তু এইসঙ্গে তিনি ব্যাপকভাবে সংস্কৃত শব্দগুচ্ছও ব্যবহার করেছেন এবং তাঁর ভাষার ব্যবহার উন্নততর।[১৭] ভাগবত এবং গীতা শেষ করার পরে, তিনি ভক্তিরত্নাবলীকে মার্জিত গদ্যে রূপান্তরিত করে উপস্থাপন করেছিলেন। উপনিষদ, পুরাণ এবং সংহিতা থেকে সংগ্রহ করা ভক্তিমূলক সংস্কৃত শ্লোকের একটি বইও তিনি সংকলন করেছিলেন, যেখানে ভক্তির সমস্ত উপাদান ব্যাখ্যা করা হয়েছে। ভক্তি-বিবেক লেখাটি বৈদিক সাহিত্য থেকে পুরাণ সাহিত্য পর্যন্ত ভট্টদেবের ব্যাপক জ্ঞান এবং পাণ্ডিত্য প্রকাশ করে। ভট্টদেবের অবদান শুধু গদ্য সাহিত্যেই সীমাবদ্ধ ছিল না, তিনি কবিতাও লিখেছিলেন।[১৮]

আরও দেখুন[সম্পাদনা]

তথ্যসূত্র[সম্পাদনা]

  1. "It was in his (Bhattadeva's) hands that Assamese prose was hardened, nourished and was fitted for the expression of high spiritual matters" (Barua 1953, পৃ. 129).
  2. "..it was Bhattadeva who gave a distinct shape to Assamese prose... In all these writings traces of the Kamrupi dialect are quite distinct" (Goswami 1970, পৃ. 7)
  3. (Barua 1953, পৃ. 129)
  4. (Barua 1953, পৃ. 129)
  5. (Sarma 1987, পৃ. 480)
  6. (Sarma 1987, পৃ. 480)
  7. (Sarma 1987)
  8. (Saikia 1997)
  9. (Saikia 1997)
  10. "Bhattadeva had a profound grammar and literature which earned for him the title of Bhagavata Bhattacharya" (versed in the Bhagavata). (Barua 1953)
  11. (Sarma 1987)
  12. Sarma, Satyendranath (১৯৭৬)। Assamese literature। Otto Harrassowitz Verlag। পৃষ্ঠা 63। 
  13. None, Ayyappappanikkar (১৯৯৭)। Medieval Indian literature: an anthology: Volume 2। Sahitya Akademi। পৃষ্ঠা 16। 
  14. George, K. M. (১৯৯৭)। Masterpieces of Indian literature: Volume 1। National Book Trust। পৃষ্ঠা 2184। আইএসবিএন 978-81-237-1978-8 
  15. (Barua 1953)
  16. (Barua 1953)
  17. (Sarma 1987)
  18. The Assam Quarterly: Volume 2। Assam Academy for Cultural Relations। ১৯৬২। 

গ্রন্থপঞ্জি[সম্পাদনা]

  • বড়ুয়া, বি. কে. (১৯৫৩), "আদি অসমীয়া গদ্য", কাকতি, বাণীকান্ত, প্রারম্ভিক অসমীয়া সাহিত্যের দিক, গৌহাটি: গৌহাটি বিশ্ববিদ্যালয় 
  • গোস্বামী, উপেন্দ্রনাথ (১৯৭০), কামরূপী বিষয়ে একটি অধ্যয়ন: অসমীয়া উপভাষা, গৌহাটি: হিস্টোরিক্যাল অ্যাণ্ড অ্যান্টিকোয়ারিয়ান স্টাডিজ বিভাগ 
  • সাইকিয়া, নগেন (১৯৯৭), "অসমীয়া", পানিকার, কে. আয়াপ্পা, মধ্যযুগীয় ভারতীয় সাহিত্য, , নতুন দিল্লি: সাহিত্য আকাদেমি, পৃষ্ঠা ৩–২০ 
  • শর্মা, সত্যেন্দ্রনাথ (১৯৮৭), "ভট্টাচার্য, বৈকুণ্ঠনাথ ভাগবত", দত্ত, অমরেশ, ভারতীয় সাহিত্যের এনসাইক্লোপিডিয়া, নতুন দিল্লি: সাহিত্য আকাদেমি