ব্যবহারকারী:Mahfuz.R.Hossain

উইকিপিডিয়া, মুক্ত বিশ্বকোষ থেকে

ব্যাটল অব লা ফোর্বি- ১২৪৪ বা হিরিবিয়া যুদ্ধ বা গাযা যুদ্ধ

৬৩৭ খ্রিস্টাব্দে হযরত উমর (রাঃ) কর্তৃক জেরুজালেম বিজয়ের ইতিহাস আমরা সবাই জানি। তার ৪৬৩ বছর পর ১০৯৯ সালে ক্রুসেডারদের হাতে জেরুজালেমের পতন হয়। তখন জেরুজালেম ছিল শিয়া ফাতেমীয় সম্রাজ্যের অধীন এবং ফাতেমী শাসক ছিলেন আল মুসতালী। জেরুজালেম পতন হলেও তিনি ছিলেন নির্বিকার।

একই সময়ে বাগদাদে আব্বাসীয় খলিফা ছিলেন মুস্তাজির। জেরুজালেম উদ্ধারের জন্য তিনি যেখানেই মুসলিম শাসক পেয়েছেন, সেখানেই ছুটে গেছেন। জেরুজালেম মুসলমানদের হাতছাড়া হয়ে যাবার পর থেকে বহু মুসলিম সুলতান জেরুজালেম মুসলমানদের অধিকারে নিয়ে আসার জন্য চেষ্টা করেছেন। ১১৮৭ সালে আল্লাহ্ সুবহানাহু ওয়া তা'আলার অনুগ্রহে সুলতান সালাহ্ উদ্দিন আইয়ুবী সফল হন। জেরুজালেম মুসলমানদের অধিকারে আসে। কিন্তু এর মাত্র ৪৩ বছর পর ১২২৯ থেকে ১২৪৪ সাল পর্যন্ত ১৬ বছরের জন্য মুসলিমরা আরেকবার জেরুজালেমের নিয়ন্ত্রণ হারান। ১১৯৩ সালে সালাহ্ উদ্দিন আইয়ুবীর ইন্তেকালের পর আইয়ুবীদের শাসনে দূর্বলতা দেখা দেয়। তাঁর ভাই আল আদিল সালতানাতকে কিছুটা সংহত করেন। ১২১৮ সালে তিনি মারা গেলে আবারও আইয়ুবী সালতানাতে দূর্বলতা জেগে ওঠে।

আল আদিলের পুত্র আল - কামিল ক্ষমতায় থাকাকালে ১২২৮ সালে ষষ্ঠ ক্রুসেড আরম্ভ হয়। এ সময় সিরিয়ায় ক্ষমতা নিয়ে আল - কামিলের সাথে আপন ভ্রাতুষ্পুত্র আল নাসির দাউদের যুদ্ধ চলছিল। নাসিরকে হটাতে কামিল ক্রুসেডারদের সঙ্গে চুক্তি করেন। চুক্তির শর্তানুযায়ী তিনি ১০ বছরের জন্য জেরুজালেম-সহ অনেক গুরুত্বপূর্ণ এলাকা ক্রুসেডারদের দিয়ে দেন।

১২৩৮ সালে আল - কামিল মারা গেলে তার পুত্র দ্বিতীয় আল - আদিল ক্ষমতায় বসেন। তিনিও তার পিতার ন্যায় অযোগ্য এবং অথর্ব ছিলেন। এই সুযোগে ১২৩৯ - ১২৪১ সাল নাগাদ ক্রুসেডাররা জেরুজালেম পুরোপুরি দখলে নিয়ে নেয়। চরম অথর্ব দ্বিতীয় আদিলকে ১২৪০ সালে তার ভাই আস সালিহ্ নাজিমুদ্দিন আইয়ুবী ক্ষমতাচ্যুত করেন।

আস সালিহ্ আইয়ুবী ছিলেন সুলতান সালাহ্ উদ্দিন আইয়ুবীর বংশধরদের মধ্যে শ্রেষ্ঠ সুলতান। ক্ষমতায় বসেই তিনি জেরুজালেম পুনরুদ্ধারের প্রস্তুতি নিতে শুরু করেন। ১২৩১ সালে মোঙ্গলদের হামলায় তছনছ হয়ে যাওয়া খোয়ারিজম সম্রাজ্যের সৈন্যদের তিনি নিজ বাহিনীতে নিয়োগ দেন। তাঁর প্রস্তুতির সবচেয়ে বড় চমক ছিল মিশরের মামলুকরা।

আস সালিহ্ আইয়ুবী যুদ্ধে মামলুকদের ব্যবহার করেন। মামলুকদের সেনানায়ক ছিলেন ১৯ বছর বয়সী রুকন উদ্দিন বাইবার্স। ১২৪৪ সালের ১৫ জুলাই তাঁরা জেরুজালেমে অবরোধ করেন এবং ২৩ আগস্ট দ্রুত দখল করে নেন। এতে সমগ্র ক্রুসেডার জগৎ নড়ে বসে এবং তারা জেরুজালেম উদ্ধার অভিযান ঘোষণা করে।

এ সময় ক্রুসেডারদের দলে যোগ দেয় সিরিয়ান আইয়ুবী আমির আস সালিহ্ ইসমাইল, আল নাসির দাউদ ও আল মনসুর ইব্রাহিম। তারা আস সালিহ্ নাজিমুদ্দিন আইয়ুবীর পতনের বিনিময়ে জেরুজালেমকে ক্রুসেডারদের হাতে তুলে দেয়ার চুক্তি করে। আল নাসির দাউদ প্রায় ২,০০০ অশ্বারোহী-সহ ৩,০০০ সেনা নিয়ে নিজে উপস্থিত হন ক্রুসেডার জোটের যুদ্ধের ময়দানে।

১২৪৪ সালের ১৭ই অক্টোবরে চূড়ান্ত যুদ্ধ অনুষ্ঠিত হয়, যা ইতিহাসে লা ফোর্বি যুদ্ধ বা হিরিবিয়া যুদ্ধ বা গাযা যুদ্ধ নামে পরিচিত।  ১২৪৪ সালের ১৭ - ১৮ অক্টোবর মুসলিমদের (সুলতান আস সালিহ্ আইয়ুবী) সাথে খ্রিষ্টান মিত্রবাহিনীর মধ্যে যুদ্ধ হয়েছিল। যুদ্ধে আইয়ুবিদের বিজয় সপ্তম ক্রুসেডের দিকে নিয়ে যায় এবং পবিত্র ভূমিতে খ্রিস্টান শক্তির পতনকে তরান্বিত করে।

লা ফোর্বির যুদ্ধ (ম্যাথিউ প্যারিসের ক্রনিকা মাজোরা থেকে)

তারিখঃ  ১৭ অক্টোবর - ১৮ অক্টোবর, ১২৪৪

স্থানঃ ফিলিস্তিনগাজার উত্তর-পূর্বে হিরিবিয়া (লা ফোরবি) গ্রামের কাছে

ফলাফলঃ আইয়ুবীদের তথা মুসলমানদের বিজয়

যুদ্ধের পক্ষসমূহ -

মুসলিম সম্মিলিত খ্রিষ্টান বাহিনী
১. আইয়ুবী সালতানাত

২. খোয়ারিজমিয়ান সৈনিক

৩. মার্সেনারি সৈনিক

১. কিংডম অব জেরুজালেম

২. নাইট টেম্পলাররা

৩. টিউটনিক নাইটস

৪. সেন্ট লাজারাসের আদেশ

৫. আল্ট্রেজর্ডেন

৬. আইয়ুবী সালতানাতের হোমস

৭. আয়ুবী সালতানাতের দামেস্ক

৮. আইয়ুবী সালতানাতের ক্রাক

যুদ্ধের প্রধান সমরকৌশলী -

মুসলিম পক্ষ সম্মিলিত খ্রিষ্টান বাহিনী
১. রুকন উদ্দিন বাইবার্স

২. হুসাম আল-দীন ইবনে আবি আলী

১. ব্রায়েনের চতুর্থ ওয়াল্টার (POW)

২. Guillaume de Chateauneuf (POW)

৩. আরমান্ড ডি পেরিগর্ড †

৪. Hugues de Montlaur †

৫. আস-সালিহ ইসমাইল

৬. আন-নাসির দাউদ

৭. আল-মনসুর ইব্রাহিম

সামরিক শক্তি -

মুসলিম পক্ষ সম্মিলিত খ্রিষ্টান বাহিনী
৫,০০০ অশ্বারোহী ও ৬,০০০ বেশি পদাতিক

মতান্তর ১০,০০০ সৈনিক

১১,০০০ মতান্তর ১৬,০০০

হতাহত ও ক্ষয়ক্ষতি -

মুসলিম পক্ষ সম্মিলিত খ্রিষ্টান বাহিনী
অজানা প্রায় ৭,৫০০

প্রেক্ষাপট -

১২৪৪ সালের আগস্টে খোয়ারিজমিয়ানদের দ্বারা জেরুজালেম দখলের ফলে খ্রিস্টান এবং মুসলিম উভয় পক্ষের মধ্যেই ব্যাপক শঙ্কা দেখা দেয়। দামেস্কের আমীর আল - মনসুর ইব্রাহিম, হোমসের আমীর এবং ক্রাকের শাসক আন - নাসির দাউদ, টেম্পলার, হসপিটালার, টিউটনিক নাইটস, অর্ডার অফ সেন্ট লাজারাস,[১] এবং জেরুজালেমের অবশিষ্ট বাহিনীর সাথে মাঠে নামতে যোগ দেন মিশরের আইয়ুবী সালতানাতের বিরুদ্ধে।

ফিলিস্তিনের গাজার উত্তর-পূর্বে একটি ছোট গ্রাম লা ফোর্বির কাছে দুই সেনাবাহিনীর মুখোমুখি হয়।  মিত্রপক্ষে আইয়ুবী সালতানাতের আল - মনসুর ইব্রাহিম দামেস্ক থেকে সৈন্যদের একটি বিচ্ছিন্ন দল ও প্রায় ২,০০০ সদস্যদের অশ্বারোহী বাহিনী সহ ৩,০০০ সেনা সদস্য নিয়ে ব্যক্তিগতভাবে উপস্থিত ছিলেন।   সামগ্রিক খ্রিস্টান শক্তির কমান্ড ছিল ব্রায়েনের  ওয়াল্টার (চতুর্থ), কাউন্ট অব জাফা ও অ্যাসকালনের নিকট। এছাড়াও উপস্থিত ছিলেন জেরুজালেমের প্যাট্রিয়ার্ক ন্যান্টেসের রবার্ট এবং জেরুজালেমের কনস্টেবল মন্টফোর্টের ফিলিপ। খ্রিস্টান সেনাবাহিনীতে প্রায় ১,০০০ অশ্বারোহী এবং ৬,০০০ পদাতিক সৈন্য ছিল।  প্রায় ২,০০০ পাহাড়ী বেদুইন নিয়ে গঠিত ট্রান্সজর্ডানীয় বাহিনী সানকুর আল-জাহিরি এবং আল-ওয়াজিরির অধীনে ছিল। টিউনিক নাইট, নাইট টেম্পলার, নাইটস হস্পিটালার, কিংডম অব জেরুজালেম, কিংডম অব ত্রিপোলি, সিরিয়ান আইয়ুবীদের ক্রুসেডার বাহিনী গঠিত হয়েছিল। জোটের সেনা সংখ্যা ছিল ১৬ হাজারের অধিক।

আস - সালিহ্ নাজিমুদ্দিন আইয়ুবী খোয়ারিজম ও মামলুকদের নিয়ে গঠিত বাহিনী নিয়ে এগিয়ে আসেন। তাঁর সৈন্য সংখ্যা ছিল প্রায় ১০ হাজার। মিশরীয় সেনাবাহিনী রুকন উদ্দিন বাইবার্স নামে ১৯ বছর বয়সী এক মামলুক অফিসার দ্বারা পরিচালিত হয়েছিল যা তার সম্মিলিত খ্রিষ্টান বাহিনীর তুলনায় শক্তির দিক থেকে বেশ কিছুটা নিম্নমানের ছিল।

দামেস্কের আমীর আল - মনসুর ইব্রাহিম মিত্রদের তাদের শিবিরকে শক্তিশালী করার এবং প্রতিরক্ষামূলক পদক্ষেপ নেওয়ার পরামর্শ দিয়েছিলেন। তিনি শৃঙ্খলাহীন খোয়ারিজমিয়ানদের ছত্রভঙ্গ হওয়ার জন্য এবং মিশরীয় বাহিনীকে যথেষ্ট অসুবিধায় ফেলে দেওয়ার জন্য অপেক্ষা করেছিলেন। কিন্তু সেনা সংখ্যার আধিক্যের কারণে সম্মিলিত খ্রিষ্টান বাহিনীর সেনাপতি ওয়াল্টার (চতুর্থ) যুদ্ধে অপেক্ষা করতে ইচ্ছুক ছিলেন না, যা আউটরেমারের খ্রিস্টানদের জন্য একটি বিরলতা ছিল। সম্মিলিত খ্রিষ্টান বাহিনীর ডানবাহু ছিল  উপকূলের কাছাকাছি, কেন্দ্রে ছিল হোমসের এবং দামেস্কের আমির, বাম দিকে বেদুইন বাহিনী।


যুদ্ধ -

১২৪৪ সালের ১৭ই অক্টোবর গাযার নিকটে লা ফোর্বি নামক স্থানে ১৭ অক্টোবর দুই বাহিনী মুখোমুখী হয়। ১৭ই অক্টোবর সকালে যুদ্ধ শুরু হয়। সুসংগঠিত ক্রুসেডাররা একযোগে মুসলিম বাহিনীর উপর প্রবল বেগে একের পর এক আঘাত হানতে থাকে, আর মিশরীয় বাহিনী সারি বিন্যাস রক্ষা করে তাদের প্রতিরোধ ব্যুহ রক্ষা করার চেষ্টা চালিয়ে যায়। এভাবে সারাদিন মিশরীয় সেনাবাহিনী হামলা প্রতিহত করে তাদের অবস্থান ধরে রাখার চেষ্টা করে। ১৮ অক্টোবর সকালে, রুকন উদ্দিন বাইবার্স নতুন করে যুদ্ধ শুরু করে, বাইবার্স সম্মিলিত খ্রিষ্টান বাহিনীর কেন্দ্রে হোমস্ ও দামেস্কের সৈন্যদের বিরুদ্ধে খোয়ারিজমের সেনাদের আক্রমণে পাঠায়। তাদের প্রচণ্ড আক্রমণে কেন্দ্রের প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা ভেঙ্গে যায়, তারপরে তারা মিত্রবাহিনীর বাম দিকে ঘুরে বেদুইনকে টুকরো টুকরো করে ফেলে। হোমস ও দামেস্কে  আমীরের অশ্বারোহীরা বাইবার্সের এই ভয়াবহ আক্রমণের বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়ানোর চেষ্টা করে, কিন্তু তারা প্রায় ধ্বংস হয়ে গিয়েছিল; আল - মনসুর ইব্রাহিম তার সেনাবাহিনীর মাত্র ২৮০ জন জীবিত সৈনিক নিয়ে যুদ্ধের ময়দান ত্যাগ করেন।


সামনে মিশরীয়দের দ্বারা এবং পাশে খোয়ারিজমিয়ানদের দ্বারা আক্রান্ত হয়ে ক্রুসেডাররা মামলুকদের উপর ঝাঁপিয়ে পড়ে এবং প্রাথমিকভাবে তারা সফলও হয়েছিল। তাদের প্রচন্ড আক্রমণে মামলুকরা পিছনে হটতে বাধ্য হয়। এরপর খোওয়ারেজমীরা পেছন থেকে তাদের উপর হামলা শুরু করলে তারা রুকন উদ্দিন বাইবার্স এর কৌশল বুঝতে পারেন। ততক্ষণে তাদের উপর কচুকাটা শুরু হয়ে গেছে। খ্রিষ্টান বাহিনীর আক্রমণ ধীরে ধীরে গতি হারিয়ে ফেলে, কারণ খোয়ারিজমিড উপজাতিরা খ্রিস্টান বাহিনীর পিছনে এবং পাশের অংশে আক্রমণ করেছিল, যেগুলি অসংগঠিত পদাতিক বাহিনী দ্বারা রক্ষা করা হয়েছিল। সুসজ্জিত নাইটরা পরাজয় এড়াতে বিরতিহীনভাবে যুদ্ধ করেছিল, কিন্তু এক সময় তাদের প্রতিরোধ ভেঙে পড়ে। [২]

সাত হাজারেরও বেশি ক্রুসেডার মারা যায়। ব্রিয়েনের ওয়াল্টার (চতুর্থ), চ্যাস্টেলনিউফের উইলিয়াম, মাস্টার অব হসপিটালস্ এবং কনস্টেবল অব ত্রিপোলিসহ ৮০০ বন্দিকে নেওয়া হয়েছিল। নাইটলি অর্ডারের সৈন্যদের মধ্যে মাত্র ৩৩ জন টেম্পলার, ২৭ জন হসপিটালার এবং তিনজন টিউটনিক নাইট বেঁচে ছিলেন; মন্টফোর্টের ফিলিপ এবং জেরুজালেমের প্যাট্রিয়ার্ক ন্যান্টেসের রবার্ট অ্যাসকালনে পালিয়ে যান।[৩]  যাইহোক, আরমান্ড ডি পেরিগর্ড, [৪] গির্জার উপাসক, গির্জার তত্ত্বাবধায়ক হিউগুস ডি মন্টলাউর, সেইসাথে টায়ারের আর্চবিশপ, লিডা এবং রামলার বিশপ (সেন্ট জর্জ), এবং বোহেমন্ড, লর্ড অফ দ্য বোট্রন এবং তার ছেলে জন, সবাই নিহত হয়। সিরিয়ার আন - নাসির দাউদের বাহিনী প্রায় ধ্বংস হলেও তিনি জীবিত পালাতে সক্ষম হন।


ফলাফল -

১২৪৫ সালে লিয়নের প্রথম কাউন্সিলে পোপ ইনোসেন্ট (চতুর্থ) একটি নতুন ক্রুসেডের (সপ্তম) আহ্বান জানিয়েছিলেন। কিন্তু ফ্রাঙ্করা আর কখনও পবিত্র ভূমিতে প্রধান ক্ষমতা সংহত করতে পারেনি। কিংডম অব জেরুজালেম লা ফোর্বির যুদ্ধের পরে সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছিল। সম্মিলিত খ্রিষ্টান বাহিনী হাত্তিনের যুদ্ধ এর পর থেকে এত বড় সৈন্যবাহিনীকে মাঠে নামাতে সক্ষম হয়নি এবং আর কখনও আক্রমণাত্মক অভিযান পরিচালনা করতে সক্ষম হয়নি।  এটি আইয়ুবীদের জন্য কোন স্থায়ী সাফল্য বয়ে আনেনি।

যদিও হাত্তিনের যুদ্ধ জেরুজালেমের পতনের দিকে পরিচালিত করার জন্য অত্যন্ত প্রতীকী গুরুত্ব বহন করে, কিন্তু লা ফোর্বির যুদ্ধই সত্যিকার অর্থে খ্রিস্টান শক্তির পতনকে চিহ্নিত করেছিল। ১১৮৭ সালে সালাহ্ উদ্দিন আইয়ুবী জেরুজালেম পুনঃদখল করলেও খ্রিস্টান শক্তি টিকে ছিল। কিন্তু ১২৪৪ সালের লা ফোর্বি যুদ্ধের পর খ্রিস্টান শক্তি নিঃশেষ হয়ে যায়।

এ অভিযানের মধ্যদিয়ে আবির্ভূত হন মুসলিম ইতিহাসের অন্যতম সেরা সমরনায়ক রুকন উদ্দিন বাইবার্স; যিনি পরবর্তী দুই দশক ধরে মোঙ্গল আর ক্রুসেডারদের শক্ত হাতে দমন করেন। আর, সেই ১২৪৪ সাল থেকে ৬৭৪ বছর ধরে জেরুজালেম মুসলমানদের অধিকারে ছিল। উসমানীয় খিলাফতের পতনের সঙ্গে ১৯১৭ সালে মুসলমানরা জেরুজালেমের অধিকার হারায়, যা আজও পুনরুদ্ধার করা সম্ভব হয়নি।


তথ্যসূত্র -

[১]  Marcombe, David (2003)। বয়েডেল প্রেস।  পৃষ্ঠা 13-14।  আইএসবিএন 1-84383-067-1।

[২]  Dougherty, Martin J. (2007)।  ক্রুসেডের যুদ্ধ।  লন্ডন: অ্যাম্বার বুকস।  পৃষ্ঠা 176-77।  আইএসবিএন 978-1-905704-58-3।

[৩]  Runciman 1987, p.  227।

[৪]  Barber 2012, p. 145.


এছাড়াও দেখুন -

  • Barber, Malcolm (2012). The New Knighthood (10th ed.). Cambridge University Press.
  • Robert Payne (1985). The Dream and the Tomb. Stein and Day/Publishers. ISBN 0-8128-6227-9.
  • Joseph Drory (September 2003). "Al-Nasir Dawud: A Much Frustrated Ayyubid Prince". Al-Masaq. 15 (2): 161–187. doi:10.1080/0950311032000117467.
  • Humphreys, R. Stephen (1977), From Saladin to the Mongols: The Ayyubids of Damascus, 1193–1260, Albany, New York: State University of New York Press, ISBN 0-87395-263-4
  • Runciman, Steven (1987), A History of the Crusades Volume III, Cambridge University Press