বিষয়বস্তুতে চলুন

ব্যবহারকারী:রায়হান রিয়াদ মল্লিক/ফুলবাড়ীয়া'র লাল চিনি

উইকিপিডিয়া, মুক্ত বিশ্বকোষ থেকে
ফুলবাড়ীয়া'র ঐতিহ্যবাহী লাল চিনি
ধরনখাবার
উৎপত্তিস্থলবাংলাদেশ
অঞ্চল বা রাজ্যফুলবাড়ীয়া, ময়মনসিংহ
পরিবেশনফাল্গুন, চৈত্র ও বৈশাখ মাস
প্রধান উপকরণআখ, গুড়
খাদ্য শক্তি
(প্রতি ১০০ গ্রাম পরিবেশনায়)
৩৭৭ কিলোক্যালরি (১৫৭৮ কিলোজুল)
পুষ্টিমান
(প্রতি ১০০ গ্রাম পরিবেশনায়)
আমিষ০ গ্রাম
স্নেহ পদার্থ০ গ্রাম
শর্করা৯৯.৯৮ গ্রাম

ঐতিহ্যবাহী খাবার।

উৎপাদন প্রক্রিয়া[সম্পাদনা]

লাল চিনি'র এক মাত্র কাঁচামাল হলো আখ। আখের রস আগুনে জাল দিয়ে লাল চিনি তৈরি করা হয়। আমন ধান কাটার পর চাষীদের যখন তেমন কোন কাজ থাকে না তখনই তারা লাল চিনি তৈরি শুরু করে। পৌষ মাসের মাঝামাঝি থেকে শুরু করে একটানা ফাল্গুন মাস পর্যন্ত আঁখ মাড়াই ও লাল চিনি তৈরির কাজ চলে। আঁখ মাড়াইয়ের পূর্বে চাষীরা লাল চিনি তৈরীর জন্য জ্বালঘর তৈরী করে। লাল চিনি তৈরীতে প্রথমে ৩ শলা বিশিষ্ট লোহার চাপ যন্ত্রের সাহায্যে সেলু মেশিন অথবা যন্ত্রে বিদ্যুৎ চালিত মটর সংযোগ দিয়ে আবার কেউ কেউ চাপ যন্ত্রটি গরু-মহিষ দ্বারা ঘানি টেনে আঁখ মাড়াইয়ের মাধ্যমে রস বের করে। জ্বালঘরে চুলায় দেয়া লোহার বড় কড়াইয়ে পরিমান মতো কাঁচা আঁেখর রস দিয়ে আধাঘন্টা পরিমান জ্বাল দিতে হয়। এক পর্যায়ে ঘন গরম সর আগুনের চুল্লী থেকে নামিয়ে পাত্রটিতে লাল চিনি তৈরীর কারিগর কাঠের তৈরী হাতল দিয়ে দ্রুত ঘর্ষন শুরু করে। আস্তে আস্তে ঠান্তা হতে থাকে এবং এক পর্যায়ে ঘন জ্বাল দেয়া সর মিহি লাল দানায় রূপ নেয়। প্রতি কাঠায় ৪৫ থেকে ৫০ টিন আখের রস হয়। প্রতিটিনে ১৫ থেকে ১৬ কেজি কাঁচা রস হয়। ১টিন কাঁচা আখের রস থেকে লাল চিনি পাওয়া যায় ৪ থেকে ৫ কেজি। হাতে তৈরী এই লাল চিনি কৃষক রোদ্রে শুকিয়ে বাজারজাত করে।

উপকারিতা[সম্পাদনা]

লাল চিনি উৎপাদনের পর অপরিশোধিত থাকে।তাই আখের সব গুণাগুণ যেমন ম্যাঙ্গানিজ, ম্যাগনেসিয়াম, শর্করা, ক্যালসিয়াম, পটাশিয়াম, লৌহ, অ্যামাইনো অ্যাসিড, জিঙ্ক, থায়ামিন, রিবোফ্লবিন, ফলিক এসিড, অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট ঠিক থাকে। লাল চিনি মোলাসেস নামক এক প্রকার আঠাল উপাদানের জন্য চিনি লাল বা বাদামি রং ধারণ করে। এ মোলাসেস আখ থেকে চিনি উৎপাদনের প্রক্রিয়ায় উপজাত হিসেবে উৎপন্ন হয়। আর এই লাল চিনির মোলাসেস অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট হিসেবে কাজ করে, এতে বিদ্যমান ফলিক এসিড দেহে রক্ত সঞ্চালন বৃদ্ধি করে, এ চিনি দেহে রক্তকণিকা তৈরিতে সাহায্য করে, ক্ষুধামান্দ্য দূর করে, হজমে সহায়তা করে, আয়রনসমৃদ্ধ হওয়ায় প্রসব-পরবর্তী সময়ে মায়েদের জন্য উপকারী, ত্বক পরিচর্চায়ও এর ব্যবহার হয়ে থাকে।


তথ্যসূত্র[সম্পাদনা]

https://www.kalerkantho.com/print-edition/priyo-desh/2019/03/18/748437