ব্যবহারকারী:মোঃ মহসিন হোসাইন/ডুমুর/যজ্ঞডুমুর/জগডুমুর

উইকিপিডিয়া, মুক্ত বিশ্বকোষ থেকে

ডুমুর (ইংরেজি: Ficus, Fig tree; /ˈfɪkʊs/) মোরাসিয়া গোত্রভূক্ত ৮৫০টিরও অধিক কাঠজাতীয় গাছের প্রজাতিবিশেষ। এ প্রজাতির গাছ, গুল্ম, লতা ইত্যাদি সম্মিলিতভাবে ডুমুর গাছ বা ডুমুর নামে পরিচিত।

ডুমুর নরম ও মিষ্টিজাতীয় ফল। ফলের আবরণ ভাগ খুবই পাতলা এবং এর অভ্যন্তরে অনেক ছোট ছোট বীজ রয়েছে। এর ফল শুকনো ও পাকা অবস্থায় ভক্ষণ করা যায়। উষ্ণ জলবায়ু অঞ্চলে এ প্রজাতির গাছ জন্মে। কখনো কখনো চাটনি হিসেবে এর ব্যবহার হয়ে থাকে। এছাড়াও, স্ন্যাকজাতীয় খাবারেও ডুমুরের প্রয়োগ হয়ে থাকে।

পরিচ্ছেদসমূহ[সম্পাদনা]

প্রকারভেদ[সম্পাদনা][সম্পাদনা]

ডুমুর কয়েক প্রজাতির হয়। বাংলাদেশে সচরাচর যে ডুমুর পাওয়া যায় (Ficus hispida) তার ফল ছোট এবং খাওয়ার অনুপযুক্ত। এর আরেক নাম 'কাকডুমুর'। এই গাছ অযত্নে-অবহেলায় এখানে সেখানে ব্যাপক সংখ্যায় গজিয়ে ওঠে। গাছ তুলনামূলকভাবে ছোট। এটি এশিয়ার অনেক অঞ্চলে এবং অস্ট্রেলিয়ায় পাওয়া যায়। পাখিরাই প্রধানত এই ডুমুর খেয়ে থাকে এবং পাখির বিষ্ঠার মাধ্যমে বীজের বিস্তার হয়ে থাকে। অনেক এলাকায় এই ডুমুর দিয়ে তরকারি রান্না করে খাওয়া হয়। এই ডুমুরের পাতা শিরিশ কাগজের মত খসখসে। এর ফল কান্ডের গায়ে থোকায় থোকায় জন্মে।

মধ্যপ্রাচ্যে যে ডুমুর (আঞ্জির) পাওয়া যায় (Ficus carica) তার ফল বড় আকারের; এটি জনপ্রিয় ফল হিসেবে খাওয়া হয়। বাণিজ্যিকভাবে এর চাষ হয়ে থাকে আফগানিস্তান থেকে পর্তুগাল পর্যন্ত। এর আরবি নাম 'তীন'; হিন্দি, উর্দু, ফার্সি ও মারাঠি ভাষায় একে 'আঞ্জির' বলা হয়। এই গাছ ৬ মিটার পর্যন্ত লম্বা হয়। এর আদি নিবাস মধ্যপ্রাচ্য।

জগডুমুর বা যজ্ঞডুমুর নামে আরেক প্রজাতির ডুমুর রয়েছে, যার বৈজ্ঞনিক নাম Ficus racemosa. মূলত এই প্রকার ডুমুর তরকারি করে খাওয়া হয়।

এছাড়া অশ্বত্থ বা পিপল নামে আরেকটি ডুমুর জাতীয় গাছ আছে, যার বৈজ্ঞানিক নাম Ficus religiosa। এটি বটগোত্রীয় বৃক্ষ, এর পাতার অগ্রভাগ সূচাল।

উপরিউক্ত প্রজাতি ছাড়াও ডুমুরের আরো অনেক প্রজাতি রয়েছে।

ধর্মীয় গুরুত্ব[সম্পাদনা][সম্পাদনা]

হিন্দুদের ক্ষেত্রে অশ্বত্থ একটি ধর্মীয় গাছ। ধর্মগ্রন্থ কুরআনে 'ত্বীন' (আঞ্জির) নামে একটি অনুচ্ছেদ বা সূরা রয়েছে। সেখানে এই ফলকে আল্লাহর বিশেষ নিয়ামত বা অনুগ্রহরূপে ব্যক্ত করা হয়েছে। বাইবেলে এই ফলের উল্লেখ আছে ; সেখানে বলা হয়েছে, ক্ষুধার্ত যীশু একটি ডুমুর (আঞ্জির) গাছ দেখলেন কিন্তু সেখানে কোনো ফল ছিল না, তাই তিনি গাছকে অভিশাপ দিলেন। বৌদ্ধ ধর্মেও এই গাছ পবিত্র হিসেবে গণ্য। গৌতম বুদ্ধ যে বোধিবৃক্ষতলে মোক্ষ লাভ করেন তা ছিল অশ্বত্থ গাছ, যা একটা ডুমুর জাতীয় গাছ (Ficus religiosa বা Pipal)।


জগডুমুর বা যজ্ঞডুমুর[সম্পাদনা]

গাছের বৈজ্ঞানিক নাম Ficus racemosa বা Ficus glomerata যা Moraceae পরিবারভুক্ত। একে ইংরেজিতে 'Cluster Fig Tree', 'Indian Fig Tree' বা 'Goolar (Gular) Fig' বলা হয়। এর আদি নিবাস ভারতীয় উপমহাদেশ, দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়া, মালয়েশিয়া এবং অস্ট্রেলিয়া। এর ফল গাছের কান্ডে থোকায় থোকায় হয়। এটি প্রধানতঃ বন্য পশু পাখির খাদ্য। উত্তর অস্ট্রেলিয়াতে এই গাছ প্রজাপতির খাদ্য হিসেবে লাগানো হয়।[সম্পাদনা]

পরিচ্ছেদসমূহ[সম্পাদনা]

বিভিন্ন ভাষায় নাম[সম্পাদনা][সম্পাদনা]

  • যজ্ঞ ডিমৰু (Jagna Dimaru) in Assamese
  • අටිටිකිකා (Attikka) in Sinhala
  • ಅತ್ತಿ (atti) in Kannada
  • మేడి పండు (Medi Pandu) Telugu
  • மலையின் முனிவன் (Malaiyin munivan) in Tamil
  • அத்தி (Aththi) Tamil
  • അത്തി (Aththi) Malayalam.
  • उंबर (Umbar) / औदुंबर (Audumbar) in Marathi.
  • যজ্ঞডুমুর, জগডুমুর, গজ গাছ (Jogdumur) in Bengali
  • डुम्री (Dumri) in Nepal
  • มะเดื่ออุทุมพร ("Ma-Duer Uthumphon") / มะเดื่อชุมพร ("Ma-Duer Chumphon") in Thai
  • sung ( /ʃuŋ/ or /suŋ/ ) in Vietnamese

হিন্দু ধর্মে যজ্ঞডুমুর[সম্পাদনা][সম্পাদনা]

অথর্ববেদে, এই ডুমুর গাছ (সংস্কৃত: উমুম্বারা বা udumbara) সমৃদ্ধি অর্জন এবং শত্রুদের পরাজিত করার একটি উপায় হিসাবে বিশিষ্টতা দেওয়া হয়।

রাজবংশের রাজা হারিশচন্দ্রের বিবরণে এটি বর্ণনা করা হয়েছে যে, মুকুট এই ডুমুর গাছের একটি শাখা ছিল, যা স্বর্ণের একটি বৃত্তে স্থাপিত হয়েছিল।