রজঃস্রাব: সংশোধিত সংস্করণের মধ্যে পার্থক্য

উইকিপিডিয়া, মুক্ত বিশ্বকোষ থেকে
বিষয়বস্তু বিয়োগ হয়েছে বিষয়বস্তু যোগ হয়েছে
Addbot (আলোচনা | অবদান)
বট: আন্তঃউইকি সংযোগ সরিয়ে নেওয়া হয়েছে, যা এখন উইকিউপাত্ত ...
WikitanvirBot I (আলোচনা | অবদান)
বট কসমেটিক পরিবর্তন করছে; কোনো সমস্যা?
১ নং লাইন: ১ নং লাইন:
[[File:MenstrualCycle2 en.svg|thumb|350px|right|[[Menstrual cycle]]]]
[[চিত্র:MenstrualCycle2 en.svg|thumb|350px|right|[[Menstrual cycle]]]]
'''রজঃস্রাব''' ([[ইংরেজি ভাষা|ইংরেজি]]: Menstruation) হলো উচ্চতর [[প্রাইমেট বর্গ|প্রাইমেট বর্গের]] স্তন্যপায়ী স্তরী- একটি শারীরবৃত্তীয় প্রক্রিয়া যা প্রজননের সঙ্গে সম্পর্কিত। প্রতি মাসে এটি হয় বলে এটিকে বাংলায় সচরাচর '''মাসিক''' বলেও অভিহিত করা হয়। প্রজননের উদ্দেশ্যে নারীর ডিম্বাশয়ে ডিম্বস্ফোটন হয় এবং তা ফ্যালোপিয়ন টিউব দিয়ে [[জরায়ু|জরায়ুতে]] চলে আসে এবং ৩-৪ দিন অবস্থান করে। এ সময় যদি পুরুষের সঙ্গে যৌনমিলনের মাধ্যমে নারীর জরায়ুতে শুক্র না-আসে এবং এই না-আসার কারণে যদি ডিম্ব নিষিক্ত না হয় তবে তা নষ্ট হয়ে যায় এবং জরায়ুগাত্রের অভ্যন্তরতম সরস স্তর([[এন্ডমেট্রিয়াম]]) ভেঙ্গে পড়ে। এই ভগ্ন ঝিল্লি, সঙ্গের শ্লেষ্মা ও এর রক্ত বাহ থেকে উৎপাদিত রক্তপাত সব মিশে তৈরী তরল এবং তার সংগে এর তঞ্চিত এবং অর্ধ-তঞ্চিত মিশ্রণ কয়েক দিন ধরে লাগাতার যোনিপথে নির্গত হয়। এই ক্ষরণই রজঃস্রাব বা রক্তস্রাব। কখনো একে '''গর্ভস্রাব''' হিসেবেও উল্লেখ করা হয়। যদি নারী জরায়ুতে অবমুক্ত ডিম্বটি পুরুষের স্খলিত শুক্র দ্বারা নিষিক্ত হয়ে এণ্ডোমেট্রিয়ামে প্রোথিত (ইম্প্ল্যান্টেশন) হয় তবে আর রজঃস্রাব হয় না। তাই মাসিক রজঃস্রাব বন্ধ হয়ে যাওয়া নারীর [[গর্ভধারণের]] প্রাথমিক লক্ষণ হিসেবে বিবেচনা করা হয়।
'''রজঃস্রাব''' ([[ইংরেজি ভাষা|ইংরেজি]]: Menstruation) হলো উচ্চতর [[প্রাইমেট বর্গ|প্রাইমেট বর্গের]] স্তন্যপায়ী স্তরী- একটি শারীরবৃত্তীয় প্রক্রিয়া যা প্রজননের সঙ্গে সম্পর্কিত। প্রতি মাসে এটি হয় বলে এটিকে বাংলায় সচরাচর '''মাসিক''' বলেও অভিহিত করা হয়। প্রজননের উদ্দেশ্যে নারীর ডিম্বাশয়ে ডিম্বস্ফোটন হয় এবং তা ফ্যালোপিয়ন টিউব দিয়ে [[জরায়ু|জরায়ুতে]] চলে আসে এবং ৩-৪ দিন অবস্থান করে। এ সময় যদি পুরুষের সঙ্গে যৌনমিলনের মাধ্যমে নারীর জরায়ুতে শুক্র না-আসে এবং এই না-আসার কারণে যদি ডিম্ব নিষিক্ত না হয় তবে তা নষ্ট হয়ে যায় এবং জরায়ুগাত্রের অভ্যন্তরতম সরস স্তর([[এন্ডমেট্রিয়াম]]) ভেঙ্গে পড়ে। এই ভগ্ন ঝিল্লি, সঙ্গের শ্লেষ্মা ও এর রক্ত বাহ থেকে উৎপাদিত রক্তপাত সব মিশে তৈরী তরল এবং তার সংগে এর তঞ্চিত এবং অর্ধ-তঞ্চিত মিশ্রণ কয়েক দিন ধরে লাগাতার যোনিপথে নির্গত হয়। এই ক্ষরণই রজঃস্রাব বা রক্তস্রাব। কখনো একে '''গর্ভস্রাব''' হিসেবেও উল্লেখ করা হয়। যদি নারী জরায়ুতে অবমুক্ত ডিম্বটি পুরুষের স্খলিত শুক্র দ্বারা নিষিক্ত হয়ে এণ্ডোমেট্রিয়ামে প্রোথিত (ইম্প্ল্যান্টেশন) হয় তবে আর রজঃস্রাব হয় না। তাই মাসিক রজঃস্রাব বন্ধ হয়ে যাওয়া নারীর [[গর্ভধারণের]] প্রাথমিক লক্ষণ হিসেবে বিবেচনা করা হয়।


==রজ:চক্র বা ঋতুচক্র==
== রজ:চক্র বা ঋতুচক্র ==
রজ:চক্র বা ঋতুচক্র ([[ইংরেজি ভাষা|ইংরেজি]]: Menstrual cycle) বলতে নারীদেহের ২৮ দিনের একটি পর্যায়ক্রমিক শরীরবৃত্তিয় প্রক্রিয়া বোঝায়। প্রথম শুরু হয় সাধারণত এগারো বা বারো বছর বয়সে এবং তারপর থেকে প্রতিমাসে নিয়মিতভাবে হয়। এই চক্র আটাশ দিন পর পর বা তার কিঞ্চিৎ আগে বা পরেও হতে পারে। মাসিক রজ:চক্রকে তিনটি পর্বে ভাগ করা হয়েছে।
রজ:চক্র বা ঋতুচক্র ([[ইংরেজি ভাষা|ইংরেজি]]: Menstrual cycle) বলতে নারীদেহের ২৮ দিনের একটি পর্যায়ক্রমিক শরীরবৃত্তিয় প্রক্রিয়া বোঝায়। প্রথম শুরু হয় সাধারণত এগারো বা বারো বছর বয়সে এবং তারপর থেকে প্রতিমাসে নিয়মিতভাবে হয়। এই চক্র আটাশ দিন পর পর বা তার কিঞ্চিৎ আগে বা পরেও হতে পারে। মাসিক রজ:চক্রকে তিনটি পর্বে ভাগ করা হয়েছে।
১. মেনোস্ট্রুয়াল পর্যায় (গপষঢ়য়ড়ৎথল হভথঢ়প) : এর স্খিতিকাল হলো পাঁচ থেকে সাত দিন বা তিন থেকে চার দিন। এ সময় যোনীপথে রক্তমিশ্রিত রস ক্ষরণ হয়। এতে রক্তের সাথে জরায়ুর অভ্যন্তরীণ অস্খায়ী স্তরের খসে পড়া কোষ কলা এবং কিছু কিছু গ্ল্যান্ডের রস মিশ্রিত থাকে। এ ছাড়া একধরনের টিপিক্যাল পথ থাকে যা থেকে বোঝা যায় এটি মাসিক ঋতুস্রাবের পথে।
১. মেনোস্ট্রুয়াল পর্যায় (গপষঢ়য়ড়ৎথল হভথঢ়প) : এর স্খিতিকাল হলো পাঁচ থেকে সাত দিন বা তিন থেকে চার দিন। এ সময় যোনীপথে রক্তমিশ্রিত রস ক্ষরণ হয়। এতে রক্তের সাথে জরায়ুর অভ্যন্তরীণ অস্খায়ী স্তরের খসে পড়া কোষ কলা এবং কিছু কিছু গ্ল্যান্ডের রস মিশ্রিত থাকে। এ ছাড়া একধরনের টিপিক্যাল পথ থাকে যা থেকে বোঝা যায় এটি মাসিক ঋতুস্রাবের পথে।
২. প্রলিফেরাটিভ পর্যায় (চড়সলমহভথড়থয়মংপ হভথঢ়প) : এই ফেজ বা সময়ে জরায়ুর অভ্যন্তরে ঝরে যাওয়া কোষ বা কোষের স্তরগুলো ফিমেল হরমোনের প্রভাবে আবার তৈরি হতে শুরু করে।
২. প্রলিফেরাটিভ পর্যায় (চড়সলমহভথড়থয়মংপ হভথঢ়প) : এই ফেজ বা সময়ে জরায়ুর অভ্যন্তরে ঝরে যাওয়া কোষ বা কোষের স্তরগুলো ফিমেল হরমোনের প্রভাবে আবার তৈরি হতে শুরু করে।
৩. সিকরেটরি পর্যায় (ঝপধড়পয়য়সড়ী চভথঢ়প) : এই সময় জরায়ু বা মাতৃজঠরের অভ্যন্তরের প্রতিটি গ্রন্থি রস নি:সরণের জন্য একেবারে তৈরি হয়ে থাকে। গ্রন্থি ও তার মধ্যবর্তী স্ট্রমা বা টিস্যুতে রস জমে থাকে। যৌনসঙ্গমের ফলস্বরূপ পুরুষের শুক্রাণু কর্তৃক নারীর ডিম্বাণু নিষিক্ত হলে সেটি জরায়ুতে ইমপ্ল্যান্ট (ওশহলথষয়) প্রোথিত হয়। শুরু হয় গর্ভধারণ। যদি নির্দিষ্ট মাসিকের মধ্যে গর্ভধারণ না ঘটে তাহলেই কেবল পরবর্তী মাসিক রজঃস্রাব শুরু হয়।
৩. সিকরেটরি পর্যায় (ঝপধড়পয়য়সড়ী চভথঢ়প) : এই সময় জরায়ু বা মাতৃজঠরের অভ্যন্তরের প্রতিটি গ্রন্থি রস নি:সরণের জন্য একেবারে তৈরি হয়ে থাকে। গ্রন্থি ও তার মধ্যবর্তী স্ট্রমা বা টিস্যুতে রস জমে থাকে। যৌনসঙ্গমের ফলস্বরূপ পুরুষের শুক্রাণু কর্তৃক নারীর ডিম্বাণু নিষিক্ত হলে সেটি জরায়ুতে ইমপ্ল্যান্ট (ওশহলথষয়) প্রোথিত হয়। শুরু হয় গর্ভধারণ। যদি নির্দিষ্ট মাসিকের মধ্যে গর্ভধারণ না ঘটে তাহলেই কেবল পরবর্তী মাসিক রজঃস্রাব শুরু হয়।


==রজ:স্রাবকালীন স্বাস্থ্য==
== রজ:স্রাবকালীন স্বাস্থ্য ==


===অনিয়মিত রজ:স্রাব===
=== অনিয়মিত রজ:স্রাব ===
অনিয়মিত রজ:স্রাব একটি সাধারণ সমস্যা। স্বাভাবিক ক্ষেত্রে এই মাসিক রজঃস্রাব আটাশ দিন পর পর হবে। তবে দু-একদিন আগে-পরে হতে পারে। দু-একদিনের হের-ফের স্বাভাবিক। তবে এর ব্যতিক্রমও হতে পারে। ব্যতিক্রম হলে অবশ্যই অভিজ্ঞ ডাক্তারের পরামর্শ নিতে হবে।
অনিয়মিত রজ:স্রাব একটি সাধারণ সমস্যা। স্বাভাবিক ক্ষেত্রে এই মাসিক রজঃস্রাব আটাশ দিন পর পর হবে। তবে দু-একদিন আগে-পরে হতে পারে। দু-একদিনের হের-ফের স্বাভাবিক। তবে এর ব্যতিক্রমও হতে পারে। ব্যতিক্রম হলে অবশ্যই অভিজ্ঞ ডাক্তারের পরামর্শ নিতে হবে।


===বিলম্বিত রজঃস্রাব===
=== বিলম্বিত রজঃস্রাব ===
মাসিক রজঃস্রাব প্রথম শুরু হয় সাধারণত: এগারো বা বারো বছর বয়সে এবং তার পর থেকে প্রতিমাসে নিয়মিতভাবে হয়। প্রথম রজঃস্রাব নয় বছর বয়সে অর্থাৎ একটু আগেও শুরু হতে পারে। আবার একটু দেরিতেও অর্থাৎ বারো বা তেরো বছর বয়সে কিংবা এর কিছু পরেও শুরু হতে পারে। যদি আঠারো বছর বয়সেও মাসিক রজঃস্রাব শুরু না হয় তবে তা সমস্যা গণ্য করে চিকিৎসা নিতে হয়। সে ক্ষেত্রে শারীরিক ও হরমোনজনিত কোনো প্রকার অস্বাভাবিকতা আছে কি না, তা নির্ণয় করা আবশ্যক।
মাসিক রজঃস্রাব প্রথম শুরু হয় সাধারণত: এগারো বা বারো বছর বয়সে এবং তার পর থেকে প্রতিমাসে নিয়মিতভাবে হয়। প্রথম রজঃস্রাব নয় বছর বয়সে অর্থাৎ একটু আগেও শুরু হতে পারে। আবার একটু দেরিতেও অর্থাৎ বারো বা তেরো বছর বয়সে কিংবা এর কিছু পরেও শুরু হতে পারে। যদি আঠারো বছর বয়সেও মাসিক রজঃস্রাব শুরু না হয় তবে তা সমস্যা গণ্য করে চিকিৎসা নিতে হয়। সে ক্ষেত্রে শারীরিক ও হরমোনজনিত কোনো প্রকার অস্বাভাবিকতা আছে কি না, তা নির্ণয় করা আবশ্যক।


==রজ:ক্ষান্তি==
== রজ:ক্ষান্তি ==
রজঃস্রাব শুরু হয় কিশোরীরা যখন বয়:সন্ধিতে উপনীত হয়। এরপর রজ:চক্র দীর্ঘদিন চলতে থাকে। নারী প্রেৌঢ়ত্বে উপনীত হলে তা বন্ধ হয়ে যায় যাকে বলা হয় রজ:ক্ষান্তি ([[ইংরেজি ভাষা|ইংরেজি]]: Menopause)। প্রথমে রজ:স্রাবের পরিমাণ হ্রাস পায় এবং রজ:স্রাবের সময় পরিধি কমে আসে। এক সময় রজ:স্রাব সম্পূর্ণ রূপে বন্ধ হয়ে যায়। এ সময়ে নারী দেহে নানা রকম উপসর্গ পরিলক্ষিত হয়। মনোপজ বা রজ:ক্ষান্তি যাওয়া মহিলাদের জীবনের একটি বিশেষ অধ্যায়। সাধারণতঃ ৪৩ থেকে শুরু করে ৫৩ বৎসরের মধ্যে নারীর জীবনে রজ:ক্ষান্তি অধ্যায়ের শুরু হয়। নারীর বয়স ৪০ পার হওয়ার পর থেকে [[ডিম্বাশয়|ডিম্বাশয়ের]] কার্যকারিতা আস্তে আস্তে কমতে থাকে। প্রত্যেক মহিলার তলপেটে জরায়ুর দু’ধারে দুটি ডিম্বাশয় থাকে। এর কাজ হল ডিম্বস্ফুটন এবং [[হরমোন]] নিঃসরণ। বেশিরভাগ মেয়েলি হরমোন [[ইসট্রোজেন]] ও [[প্রজেসটেরন]], পুরুষের হরমোন [[টেসটোসটেরন]] সামান্য নিঃসরণ হয়। রজঃস্রাব শুরুর পর থেকে প্রতি মাসে একেকটি ডিম্বাশয় থেকে ডিম্বস্ফুটন হয় ও হরমোনগুলো বের হতে থাকে। ৪০ বছরের পর থেকে হরমোন নিঃসরণ কমতে থাকে। প্রভাব পড়ে শরীর ও মনে। এ স্বাভাবিক ঘটনায় মন খারাপ করার কিছু নেই।
রজঃস্রাব শুরু হয় কিশোরীরা যখন বয়:সন্ধিতে উপনীত হয়। এরপর রজ:চক্র দীর্ঘদিন চলতে থাকে। নারী প্রেৌঢ়ত্বে উপনীত হলে তা বন্ধ হয়ে যায় যাকে বলা হয় রজ:ক্ষান্তি ([[ইংরেজি ভাষা|ইংরেজি]]: Menopause)। প্রথমে রজ:স্রাবের পরিমাণ হ্রাস পায় এবং রজ:স্রাবের সময় পরিধি কমে আসে। এক সময় রজ:স্রাব সম্পূর্ণ রূপে বন্ধ হয়ে যায়। এ সময়ে নারী দেহে নানা রকম উপসর্গ পরিলক্ষিত হয়। মনোপজ বা রজ:ক্ষান্তি যাওয়া মহিলাদের জীবনের একটি বিশেষ অধ্যায়। সাধারণতঃ ৪৩ থেকে শুরু করে ৫৩ বৎসরের মধ্যে নারীর জীবনে রজ:ক্ষান্তি অধ্যায়ের শুরু হয়। নারীর বয়স ৪০ পার হওয়ার পর থেকে [[ডিম্বাশয়|ডিম্বাশয়ের]] কার্যকারিতা আস্তে আস্তে কমতে থাকে। প্রত্যেক মহিলার তলপেটে জরায়ুর দু’ধারে দুটি ডিম্বাশয় থাকে। এর কাজ হল ডিম্বস্ফুটন এবং [[হরমোন]] নিঃসরণ। বেশিরভাগ মেয়েলি হরমোন [[ইসট্রোজেন]] ও [[প্রজেসটেরন]], পুরুষের হরমোন [[টেসটোসটেরন]] সামান্য নিঃসরণ হয়। রজঃস্রাব শুরুর পর থেকে প্রতি মাসে একেকটি ডিম্বাশয় থেকে ডিম্বস্ফুটন হয় ও হরমোনগুলো বের হতে থাকে। ৪০ বছরের পর থেকে হরমোন নিঃসরণ কমতে থাকে। প্রভাব পড়ে শরীর ও মনে। এ স্বাভাবিক ঘটনায় মন খারাপ করার কিছু নেই।


=== শরীর ও মনের ওপর মেনোপজের প্রভাব ===
=== শরীর ও মনের ওপর মেনোপজের প্রভাব ===
রজ:ক্ষান্তি শুরুর সঙ্গে-সঙ্গে মহিলাদের জীবনে শারীরিক ও মানসিক নানা ধরনের পরিবর্তন বা উপসর্গ দেখা দেয়। মাসিকে অনিয়ম, হঠাৎ করেই মাথা গরম বা হট ফ্লাস, বুক ধড়ফড়, অতিরিক্ত ঘুমানো, অনিদ্রা, প্রস্রাবে সমস্যা, ওজন বেড়ে যাওয়া, মেজাজ খিটখিটে হয়ে যাওয়া বা মুড চেঞ্জ ইত্যাদি হতে পারে। জীবনধারা বা লাইফস্টাইলের পরিবর্তন দ্বারা এগুলো নিয়ন্ত্রণ করা সম্ভব।
রজ:ক্ষান্তি শুরুর সঙ্গে-সঙ্গে মহিলাদের জীবনে শারীরিক ও মানসিক নানা ধরনের পরিবর্তন বা উপসর্গ দেখা দেয়। মাসিকে অনিয়ম, হঠাৎ করেই মাথা গরম বা হট ফ্লাস, বুক ধড়ফড়, অতিরিক্ত ঘুমানো, অনিদ্রা, প্রস্রাবে সমস্যা, ওজন বেড়ে যাওয়া, মেজাজ খিটখিটে হয়ে যাওয়া বা মুড চেঞ্জ ইত্যাদি হতে পারে। জীবনধারা বা লাইফস্টাইলের পরিবর্তন দ্বারা এগুলো নিয়ন্ত্রণ করা সম্ভব।
অনিয়মিত ঋতুচক্র
অনিয়মিত ঋতুচক্র
৩৭ নং লাইন: ৩৭ নং লাইন:
প্রস্রাবে ইনফেকশন
প্রস্রাবে ইনফেকশন
প্রস্রাবে যোনি পথে ইনফেকশনও বেশি হয়ে থাকে। এ ছাড়া যেহেতু প্রস্রাবের থলির স্থিতিস্থাপকতা কমে যায়, এ কারণে হাঁচি বা কাশি দিলে অনেক সময় প্রস্রাব বের হয়ে আসে। এজন্য পেলভিক এক্সারসাইজ এবং প্রতিদিন ৮-১০ গ্লাস পানি পান করা উচিত। কোল্ড ড্রিংস না খাওয়া ভালো। চিকিৎসকের পরামর্শ নেয়া উচিত।
প্রস্রাবে যোনি পথে ইনফেকশনও বেশি হয়ে থাকে। এ ছাড়া যেহেতু প্রস্রাবের থলির স্থিতিস্থাপকতা কমে যায়, এ কারণে হাঁচি বা কাশি দিলে অনেক সময় প্রস্রাব বের হয়ে আসে। এজন্য পেলভিক এক্সারসাইজ এবং প্রতিদিন ৮-১০ গ্লাস পানি পান করা উচিত। কোল্ড ড্রিংস না খাওয়া ভালো। চিকিৎসকের পরামর্শ নেয়া উচিত।
====ওজন বেড়ে যাওয়া====
==== ওজন বেড়ে যাওয়া ====
ওজন নিয়ন্ত্রণে রাখার জন্য হাঁটার অভ্যাস করা উচিত। অতিরিক্ত ক্যালরিযুক্ত খাবার খাবেন না। অর্থাৎ ভাত, রুটি, লবণ, মিষ্টি, চর্বি জাতীয় খাবার যতটা কম খাওয়া যায় ভালো। তবে শাকসবজি ও ফলমূল বেশি খাওয়া যেতে পারে। চকলেট, আইসক্রিম, তেলে ভাজা খাবার কম খাওয়া ভালো।
ওজন নিয়ন্ত্রণে রাখার জন্য হাঁটার অভ্যাস করা উচিত। অতিরিক্ত ক্যালরিযুক্ত খাবার খাবেন না। অর্থাৎ ভাত, রুটি, লবণ, মিষ্টি, চর্বি জাতীয় খাবার যতটা কম খাওয়া যায় ভালো। তবে শাকসবজি ও ফলমূল বেশি খাওয়া যেতে পারে। চকলেট, আইসক্রিম, তেলে ভাজা খাবার কম খাওয়া ভালো।
হাড়ের ক্ষয়িষ্ণুতা বা অসটিওপোরোসিস
হাড়ের ক্ষয়িষ্ণুতা বা অসটিওপোরোসিস
৪৮ নং লাইন: ৪৮ নং লাইন:




==তথ্যসূত্র==
== তথ্যসূত্র ==
<references/>
<references/>
==আরো দেখুন==
== আরো দেখুন ==
*[[স্ত্রী প্রজনন তন্ত্র (মানুষ)]]
* [[স্ত্রী প্রজনন তন্ত্র (মানুষ)]]
*[[যৌনসঙ্গম]]
* [[যৌনসঙ্গম]]
*[[জরায়ু]]
* [[জরায়ু]]
*[[যৌন অঙ্গ]]
* [[যৌন অঙ্গ]]
==বহিঃসংযোগ==
== বহিঃসংযোগ ==


{{Reproductive physiology}}
{{Reproductive physiology}}
{{Menstrual cycle}}
{{Menstrual cycle}}


[[Category:প্রজনন তন্ত্র]]
[[বিষয়শ্রেণী:প্রজনন তন্ত্র]]
[[বিষয়শ্রেণী:নারীস্বাস্থ্য]]
[[বিষয়শ্রেণী:নারীস্বাস্থ্য]]

২৩:২৩, ৭ জানুয়ারি ২০১৪ তারিখে সংশোধিত সংস্করণ

Menstrual cycle

রজঃস্রাব (ইংরেজি: Menstruation) হলো উচ্চতর প্রাইমেট বর্গের স্তন্যপায়ী স্তরী- একটি শারীরবৃত্তীয় প্রক্রিয়া যা প্রজননের সঙ্গে সম্পর্কিত। প্রতি মাসে এটি হয় বলে এটিকে বাংলায় সচরাচর মাসিক বলেও অভিহিত করা হয়। প্রজননের উদ্দেশ্যে নারীর ডিম্বাশয়ে ডিম্বস্ফোটন হয় এবং তা ফ্যালোপিয়ন টিউব দিয়ে জরায়ুতে চলে আসে এবং ৩-৪ দিন অবস্থান করে। এ সময় যদি পুরুষের সঙ্গে যৌনমিলনের মাধ্যমে নারীর জরায়ুতে শুক্র না-আসে এবং এই না-আসার কারণে যদি ডিম্ব নিষিক্ত না হয় তবে তা নষ্ট হয়ে যায় এবং জরায়ুগাত্রের অভ্যন্তরতম সরস স্তর(এন্ডমেট্রিয়াম) ভেঙ্গে পড়ে। এই ভগ্ন ঝিল্লি, সঙ্গের শ্লেষ্মা ও এর রক্ত বাহ থেকে উৎপাদিত রক্তপাত সব মিশে তৈরী তরল এবং তার সংগে এর তঞ্চিত এবং অর্ধ-তঞ্চিত মিশ্রণ কয়েক দিন ধরে লাগাতার যোনিপথে নির্গত হয়। এই ক্ষরণই রজঃস্রাব বা রক্তস্রাব। কখনো একে গর্ভস্রাব হিসেবেও উল্লেখ করা হয়। যদি নারী জরায়ুতে অবমুক্ত ডিম্বটি পুরুষের স্খলিত শুক্র দ্বারা নিষিক্ত হয়ে এণ্ডোমেট্রিয়ামে প্রোথিত (ইম্প্ল্যান্টেশন) হয় তবে আর রজঃস্রাব হয় না। তাই মাসিক রজঃস্রাব বন্ধ হয়ে যাওয়া নারীর গর্ভধারণের প্রাথমিক লক্ষণ হিসেবে বিবেচনা করা হয়।

রজ:চক্র বা ঋতুচক্র

রজ:চক্র বা ঋতুচক্র (ইংরেজি: Menstrual cycle) বলতে নারীদেহের ২৮ দিনের একটি পর্যায়ক্রমিক শরীরবৃত্তিয় প্রক্রিয়া বোঝায়। প্রথম শুরু হয় সাধারণত এগারো বা বারো বছর বয়সে এবং তারপর থেকে প্রতিমাসে নিয়মিতভাবে হয়। এই চক্র আটাশ দিন পর পর বা তার কিঞ্চিৎ আগে বা পরেও হতে পারে। মাসিক রজ:চক্রকে তিনটি পর্বে ভাগ করা হয়েছে। ১. মেনোস্ট্রুয়াল পর্যায় (গপষঢ়য়ড়ৎথল হভথঢ়প) : এর স্খিতিকাল হলো পাঁচ থেকে সাত দিন বা তিন থেকে চার দিন। এ সময় যোনীপথে রক্তমিশ্রিত রস ক্ষরণ হয়। এতে রক্তের সাথে জরায়ুর অভ্যন্তরীণ অস্খায়ী স্তরের খসে পড়া কোষ কলা এবং কিছু কিছু গ্ল্যান্ডের রস মিশ্রিত থাকে। এ ছাড়া একধরনের টিপিক্যাল পথ থাকে যা থেকে বোঝা যায় এটি মাসিক ঋতুস্রাবের পথে। ২. প্রলিফেরাটিভ পর্যায় (চড়সলমহভথড়থয়মংপ হভথঢ়প) : এই ফেজ বা সময়ে জরায়ুর অভ্যন্তরে ঝরে যাওয়া কোষ বা কোষের স্তরগুলো ফিমেল হরমোনের প্রভাবে আবার তৈরি হতে শুরু করে। ৩. সিকরেটরি পর্যায় (ঝপধড়পয়য়সড়ী চভথঢ়প) : এই সময় জরায়ু বা মাতৃজঠরের অভ্যন্তরের প্রতিটি গ্রন্থি রস নি:সরণের জন্য একেবারে তৈরি হয়ে থাকে। গ্রন্থি ও তার মধ্যবর্তী স্ট্রমা বা টিস্যুতে রস জমে থাকে। যৌনসঙ্গমের ফলস্বরূপ পুরুষের শুক্রাণু কর্তৃক নারীর ডিম্বাণু নিষিক্ত হলে সেটি জরায়ুতে ইমপ্ল্যান্ট (ওশহলথষয়) প্রোথিত হয়। শুরু হয় গর্ভধারণ। যদি নির্দিষ্ট মাসিকের মধ্যে গর্ভধারণ না ঘটে তাহলেই কেবল পরবর্তী মাসিক রজঃস্রাব শুরু হয়।

রজ:স্রাবকালীন স্বাস্থ্য

অনিয়মিত রজ:স্রাব

অনিয়মিত রজ:স্রাব একটি সাধারণ সমস্যা। স্বাভাবিক ক্ষেত্রে এই মাসিক রজঃস্রাব আটাশ দিন পর পর হবে। তবে দু-একদিন আগে-পরে হতে পারে। দু-একদিনের হের-ফের স্বাভাবিক। তবে এর ব্যতিক্রমও হতে পারে। ব্যতিক্রম হলে অবশ্যই অভিজ্ঞ ডাক্তারের পরামর্শ নিতে হবে।

বিলম্বিত রজঃস্রাব

মাসিক রজঃস্রাব প্রথম শুরু হয় সাধারণত: এগারো বা বারো বছর বয়সে এবং তার পর থেকে প্রতিমাসে নিয়মিতভাবে হয়। প্রথম রজঃস্রাব নয় বছর বয়সে অর্থাৎ একটু আগেও শুরু হতে পারে। আবার একটু দেরিতেও অর্থাৎ বারো বা তেরো বছর বয়সে কিংবা এর কিছু পরেও শুরু হতে পারে। যদি আঠারো বছর বয়সেও মাসিক রজঃস্রাব শুরু না হয় তবে তা সমস্যা গণ্য করে চিকিৎসা নিতে হয়। সে ক্ষেত্রে শারীরিক ও হরমোনজনিত কোনো প্রকার অস্বাভাবিকতা আছে কি না, তা নির্ণয় করা আবশ্যক।

রজ:ক্ষান্তি

রজঃস্রাব শুরু হয় কিশোরীরা যখন বয়:সন্ধিতে উপনীত হয়। এরপর রজ:চক্র দীর্ঘদিন চলতে থাকে। নারী প্রেৌঢ়ত্বে উপনীত হলে তা বন্ধ হয়ে যায় যাকে বলা হয় রজ:ক্ষান্তি (ইংরেজি: Menopause)। প্রথমে রজ:স্রাবের পরিমাণ হ্রাস পায় এবং রজ:স্রাবের সময় পরিধি কমে আসে। এক সময় রজ:স্রাব সম্পূর্ণ রূপে বন্ধ হয়ে যায়। এ সময়ে নারী দেহে নানা রকম উপসর্গ পরিলক্ষিত হয়। মনোপজ বা রজ:ক্ষান্তি যাওয়া মহিলাদের জীবনের একটি বিশেষ অধ্যায়। সাধারণতঃ ৪৩ থেকে শুরু করে ৫৩ বৎসরের মধ্যে নারীর জীবনে রজ:ক্ষান্তি অধ্যায়ের শুরু হয়। নারীর বয়স ৪০ পার হওয়ার পর থেকে ডিম্বাশয়ের কার্যকারিতা আস্তে আস্তে কমতে থাকে। প্রত্যেক মহিলার তলপেটে জরায়ুর দু’ধারে দুটি ডিম্বাশয় থাকে। এর কাজ হল ডিম্বস্ফুটন এবং হরমোন নিঃসরণ। বেশিরভাগ মেয়েলি হরমোন ইসট্রোজেনপ্রজেসটেরন, পুরুষের হরমোন টেসটোসটেরন সামান্য নিঃসরণ হয়। রজঃস্রাব শুরুর পর থেকে প্রতি মাসে একেকটি ডিম্বাশয় থেকে ডিম্বস্ফুটন হয় ও হরমোনগুলো বের হতে থাকে। ৪০ বছরের পর থেকে হরমোন নিঃসরণ কমতে থাকে। প্রভাব পড়ে শরীর ও মনে। এ স্বাভাবিক ঘটনায় মন খারাপ করার কিছু নেই।

শরীর ও মনের ওপর মেনোপজের প্রভাব

রজ:ক্ষান্তি শুরুর সঙ্গে-সঙ্গে মহিলাদের জীবনে শারীরিক ও মানসিক নানা ধরনের পরিবর্তন বা উপসর্গ দেখা দেয়। মাসিকে অনিয়ম, হঠাৎ করেই মাথা গরম বা হট ফ্লাস, বুক ধড়ফড়, অতিরিক্ত ঘুমানো, অনিদ্রা, প্রস্রাবে সমস্যা, ওজন বেড়ে যাওয়া, মেজাজ খিটখিটে হয়ে যাওয়া বা মুড চেঞ্জ ইত্যাদি হতে পারে। জীবনধারা বা লাইফস্টাইলের পরিবর্তন দ্বারা এগুলো নিয়ন্ত্রণ করা সম্ভব। অনিয়মিত ঋতুচক্র এ সময় ঋতুচক্র বা মাসিক চক্রের পরিবর্তন হয়। কখনোবা একটু বেশি রক্তস্রাব, কখনোবা কম রক্তস্রাব যেতে পারে। অনেকদিন ধরে অল্প ফোঁটা ফোঁটা রক্ত যেতে পারে। কমপক্ষে সাধারণত ছয় মাস একটানা রক্তস্রাব বন্ধ থাকলে ধরে নেয়া যায় যে মেনোপজ হয়ে গেছে।

হট ফ্লাশ

মেনোপজ হওয়ার প্রথম বছরগুলোতে হট ফ্লাশ বা মুখ-কান-ঘাড়-মাথা দিয়ে গরম ভাপ বের হয়। শতকরা ৭৫ ভাগ মহিলা এ হট ফ্লাশে ভুগে থাকেন এবং সেই সঙ্গে গা ঘামতে শুরু করে। সাধারণত রাতের বেলায় এ ঘাম বেশি বের হয়। প্রথম বছরে বেশি হয়, সাধারণত পাঁচ বছর পর্যন্ত হতে পারে। শরীর অবসাদবোধ হয় এবং মেজাজও খিটখিটে হয়ে যায়। অনিদ্রা বেড়ে গিয়ে শরীরে ক্লান্তি নেমে আসে। ইস্ট্রোজেন হরমোন মস্তিষ্কের তাপমাত্রা নিয়ন্ত্রণের গ্রন্থিগুলোকে প্রভাবিত করে থাকে। তাই মেনোপজ হলে ইস্ট্রোজেন হরমোনের ঘাটতির কারণে হট ফ্লাশ হয়ে থাকে। এ কারণে ইস্ট্রোজেন হরমোন প্রতিস্থাপন করে এর চিকিৎসা করা হয়। তবে বিশেষজ্ঞের পরামর্শ অবশ্যই নিতে হবে। মুখে ঠাণ্ডা পানি দিলে এবং ঠাণ্ডা পানি খেলে আরামবোধ হয়। কফি, গরম চা, সিগারেট, জর্দা এগুলো খেলে হট ফ্লাশ আরও বেড়ে যায়। ভিটামিন ‘বি’সমৃদ্ধ খাবার যেমনÑ আটা, ওটমিল, ব্রকোলি, ফুলকফি, মাশরুম, বাদাম, সূর্যমুখী বীজ, মটরশুঁটি, কিশমিশ, কলা, লাল আলু, পালংশাক ইত্যাদি খাবার খাওয়া উচিত। অনিদ্রা হট ফ্লাশ বা রাতে ঘামের কারণে অনেকের ভালো ঘুম হয় না। এছাড়াও অনেকের রাতে ঘুম ভেঙে গেলে আর ঘুম আসতে চায় না। সেই সঙ্গে নানা রকম টেনশন বাড়তে থাকে। এ কারণে সারাদিন ক্লান্তিবোধ হয়। ঘুমের ওষুধ চিকিৎসকের পরামর্শে খেতে পারেন। রাতে হালকা খাবার খাবেন, তেল-মশলাদার খাবার না খাওয়াই ভালো। সিগারেট, জর্দা, অ্যালকোহলের অভ্যাস থাকলে বাদ দিতে হবে। ঘুমানোর আগে হালকা গরম পানি দিয়ে গোসল করলে ভালো ঘুম হবে। মধু-পানি খেলে একটু উপকার পাওয়া যেতে পারে। বুক ধড়ফড় করা হট ফ্লাশের সঙ্গে বুক ধড়ফড় করতে পারে। তবে হার্টের বা অন্যান্য অসুস্থতার কারণেও বুক ধড়ফড় করতে পারে। কাজেই এ সময় চিকিৎসকের পরামর্শ নেয়া উচিত। ভুলে যাওয়া রজঃক্ষানিত হলে কারোকারো স্মৃতিশক্তি কিছুটা দুর্বল হয়ে যায়। মস্তিষ্কের সজীবতা বজায় রাখার জন্য ইস্ট্রোজেন হরমোন জরুরি। এ হরমোন ঘাটতির ফলে সোজা জিনিস অনেক সময় ভুলে যায়। বিশেষ করে যারা অযথাই টেনশন বেশি করে তাদের ক্ষেত্রে এ সমস্যা বেশি হয়। কলা, তিল, তিসি বীজ, সবুজ শাকসবজি বেশি করে খাওয়া উচিত।

ভ্যাজাইনাল ড্রাইনেস

ইস্ট্রোজেনের অভাবে ভ্যাজাইনাল ড্রাইনেস বা যোনিপথের শুষ্কতা অনেকেরই হয়ে থাকে। এজন্য সহবাসে জ্বালা হতে পারে। বাজারে কিছু অ্যাকুয়াবেজড জেলি পাওয়া যায়, এগুলো সহবাসের আগে ব্যবহার করা যেতে পারে অথবা চিকিৎসকের পরামর্শে ইস্ট্রোজেন ভ্যাজাইনাল ক্রিম ব্যবহার করা যেতে পারে। প্রস্রাবে ইনফেকশন প্রস্রাবে যোনি পথে ইনফেকশনও বেশি হয়ে থাকে। এ ছাড়া যেহেতু প্রস্রাবের থলির স্থিতিস্থাপকতা কমে যায়, এ কারণে হাঁচি বা কাশি দিলে অনেক সময় প্রস্রাব বের হয়ে আসে। এজন্য পেলভিক এক্সারসাইজ এবং প্রতিদিন ৮-১০ গ্লাস পানি পান করা উচিত। কোল্ড ড্রিংস না খাওয়া ভালো। চিকিৎসকের পরামর্শ নেয়া উচিত।

ওজন বেড়ে যাওয়া

ওজন নিয়ন্ত্রণে রাখার জন্য হাঁটার অভ্যাস করা উচিত। অতিরিক্ত ক্যালরিযুক্ত খাবার খাবেন না। অর্থাৎ ভাত, রুটি, লবণ, মিষ্টি, চর্বি জাতীয় খাবার যতটা কম খাওয়া যায় ভালো। তবে শাকসবজি ও ফলমূল বেশি খাওয়া যেতে পারে। চকলেট, আইসক্রিম, তেলে ভাজা খাবার কম খাওয়া ভালো। হাড়ের ক্ষয়িষ্ণুতা বা অসটিওপোরোসিস ইস্ট্রোজেনের অভাবে হাড় ধীরে ধীরে হালকা ও ভঙ্গুর হতে থাকে। এ সমস্যা সাধারণত ৬০ বছরের পরে বেশি হয়ে থাকে, তবে হাড়ের ক্ষয়রোগের প্রক্রিয়া শুরু হয়ে যায় অনেক আগেই। অসটিওপোরোসিস হলে হঠাৎ করেই সামান্য আঘাতে হাড় ভেঙে যায়। বিশেষ করে কোমর, ঊরুসন্ধি, শিরদ্বারা বা হাতের হাড় বেশি ভেঙে থাকে। কাজেই জীবনধারার কিছু পরিবর্তন, খাদ্যাভ্যাসের পরিবর্তন হাড়ের ঘনত্ব ধরে রাখতে সাহায্য করে; যেমনÑ প্রথমত, প্রয়োজন এক্সারসাইজ বা ব্যায়াম বা হাঁটার অভ্যাস। দ্বিতীয়ত, ক্যালসিয়ামসমৃদ্ধ খাবার ডিম, দুধ (ননি তোলা), ছোট মাছ, সবুজ শাকসবজি বেশি খেতে হবে। প্রয়োজনে ক্যালসিয়াম বড়ি খেতে হবে। তৃতীয়ত, যাদের অসটিওপোরোসিস হয়ে যাচ্ছে তাদের জন্য বিভিন্ন ধরনের ওষুধ ও হরমোন আছে, যা বিশেষজ্ঞের পরামর্শে সেবন করতে হবে।

হার্টের সমস্যা

ইস্ট্রোজেন হরমোন যেমন হাড়কে মজবুত রাখে, তেমনি রক্তের কলেস্টেরলের মাত্রাও নিয়ন্ত্রণ করতে সাহায্য করে। দেখা যায়, মহিলাদের মেনোপজ হওয়ার পর হার্টের সমস্যা বেড়ে যায়। এ কারণে অনেক সময় চিকিৎসকের পরামর্শে ইস্ট্রোজেন হরমোন ব্যবহার করা যেতে পারে। বয়সের সঙ্গে সঙ্গে উচ্চরক্তচাপ, ডায়াবেটিস, ওজন বৃদ্ধি ও কলেস্টেরল বৃদ্ধির জন্য হার্টের সমস্যা বেড়ে যায়।


তথ্যসূত্র

আরো দেখুন

বহিঃসংযোগ