দেবী রায়: সংশোধিত সংস্করণের মধ্যে পার্থক্য
অ বিষয়শ্রেণী:হাংরি আন্দোলন সরিয়ে মূল বিষয়শ্রেণী বিষয়শ্রেণী:হাংরি প্রজন্ম স্থাপন |
|||
৯২ নং লাইন: | ৯২ নং লাইন: | ||
{{কমন্স বিষয়শ্রেণী|দেবী রায়}} |
{{কমন্স বিষয়শ্রেণী|দেবী রায়}} |
||
[[বিষয়শ্রেণী:হাংরি |
[[বিষয়শ্রেণী:হাংরি প্রজন্ম]] |
||
[[বিষয়শ্রেণী:বাঙালি কবি]] |
[[বিষয়শ্রেণী:বাঙালি কবি]] |
||
[[বিষয়শ্রেণী:১৯৪০-এ জন্ম]] |
[[বিষয়শ্রেণী:১৯৪০-এ জন্ম]] |
১২:৩৯, ১৭ মার্চ ২০২০ তারিখে সংশোধিত সংস্করণ
দেবী রায় | |
---|---|
জন্ম | ৪ আগস্ট , ১৯৪০ |
পরিচিতির কারণ | কবি |
দেবী রায় (জন্ম: ৪ আগস্ট , ১৯৪০ ১৯শে শ্রাবণ), পরিবারপ্রদত্ত নাম হারাধন ধাড়া (যা তিনি হলফনামা দ্বারা ১৯৬৪ সালে পরিবর্তন করেন ), হাংরি আন্দোলন -এর জনকদের অন্যতম, এবং বাংলা আধুনিক কবিতার জগতে প্রথম নিম্নবর্গীয় কবি ।
পারিবারিক পরিচয় ও শিক্ষা
মাহিষ্য কৃষক পরিবারে জন্ম হলেও, তাদের কোনো চাষজমি পৈতৃক ভিটা মেদিনীপুরে ছিল না । তার পিতা - মাতা দুই সন্তানসহ হাওড়া শহরে নেতাজি সুভায রোদের বস্তিতে বসবাস করতেন । পিতা - মাতা উভয়েই নানা প্রকার শ্রমজীবী কাজের মাধ্যমে দুই ছেলেকে মাধ্যমিক পর্যন্ত পড়িয়েছিলেন । পড়াশুনার পাশাপাশি দেবী রায়ও বাবা - মাকে মজদুরি করে সাহায্য করতেন । স্নাতক পর্যন্ত পড়াশুনার খরচ তিনি নিজেই নানা প্রকার কাজ করে রোজগার করে ১৯৫৯ সালে বাংলায় ভালোভাবে উত্তীর্ণ হন । সেই বছরই ভারতীয় দাক বিভাগে চাকরি পান এবং ছোট ভাইয়ের শিক্ষা ভার নেন । তার পরিবারে তিনিই প্রথম স্কুল - কলেজে পড়া মানুষ । চাকরি পাবার পর তিনি সরকারি বিভিন্ন হিন্দী পরীক্ষায় পাশ করেন, যা তাকে সাহিত্য অকাদেমির অনুবাদকরূপে প্রতিষ্ঠা দিয়েছে ।
হাংরি আন্দোলন
১৯৬০ সালে ছোটগল্প পত্রিকার দপতরে মলয় রায়চৌধুরীর সঙ্গে দেবী রায়ের পরিচয় হয় এবং তা একটি গভীর বন্ধুত্বে পরিণত হয় । ১৯৬১ সালে সমীর রায়চৌধুরী, শক্তি চট্টোপাধ্যায় ও মলয় রায়চৌধুরী হাংরি আন্দোলন ঘটানোর জন্য পাটনায় যে প্রথম বৈঠকটি করেছিলেন তাতে নির্ণয় নেয়া হয় যে, প্রতি সপ্তাহে প্রকাশিতব্য বুলেটিনগুলির সম্পাদনার ভার নেবেন দেবী রায় । ১৯৬১ থেকে ১৯৬৩ সালের মাঝামাঝি পর্যন্ত যতগুলি বুলেটিন প্রকাশিত হয়েছিল, প্রতিটিতে দেবী রায়ের হাওড়াস্হিত চালাবাড়ির ঠিকানা ব্যবহৃত হয়েছে । হাংরি আন্দোলনএ যাঁরা যোগ দিতে চাইতেন তারা দেবি রায়ের বস্তিবাড়িতে গিয়ে তার সঙ্গে দেখা করতেন । অনেক তরুণ কবি ও লেখক বস্তির ঘর দেখে শেষাবধি যোগ দিতে পারেননি, কেন না ১৯৬০ পর্যন্ত বাংলা সাহিত্য মোটামুটি ছিল উচ্চবিত্তের আয়ত্তে । চল্লিশের বেশি সদস্য সংখ্যা হয়ে গেলে, ১৯৬৩ সালের মাঝামাঝি থেকে যখন যার যেমন ইচ্ছা নিজে বুলেটিন প্রকাশের নির্ণয় নেবার পর, দেবী রায়ের কাজটি বিকেনগদ্রিত হয়ে যায় । ১৯৬৩ থেকে ১৯৬৪ পর্যন্ত তিনি হাংরি আন্দোলনএর পত্রিকা চিহ্ণ পত্রিকা সম্পাদনা ও প্রকাশ করেন । ২ সেপ্টেম্বর ১৯৬৪ তিনি হাংরি আন্দোলন মামলায় গ্রেপতার হন, কিন্তু ১৯৬৫ সালের মে মাসে পুলিশ তার বিরুদ্ধে মামলা তুলে নিয়েছিল । কয়েকজন হাংরি আন্দোলনকারী পুলিশের সাক্ষী হয়ে যাওয়ায় দেবী রায় ান্দোলন ত্যাগ করেন । সরকারি চাকরি চলে যাবার ভয় এবং পুনরায় বাবা ও মাকে দারিদ্রে ঠেলে দেবার অতঙ্কও হাংরি আন্দোলন ত্যাগের আরেকটি কারণ । বস্তুত হাংরি আন্দোলন ফুরিয়ে যাবার কারণগুলির মধ্যে দেবী রায়ের আন্দোলন ত্যাগ অন্যতম ।
সাহিত্যিক বৈশিষ্ট্য
ড. অলোকরঞ্জন দাশগুপ্ত জানিয়েছেন যে, 'দেবী রায় প্রথম থেকেই তার নিজস্ব ব্যক্তিত্ব গড়ে নিতে পেরেছিলেন, এবং সেকারণে হাংরি আন্দোলনকারীদের মধ্যে তাকে অনায়াসে চিনে নেয়া যায়' । ড. উত্তম দাশ বলেছেন, 'দেশে - কালে সর্বভূতে যে আন্ধকার, সেই সর্বস্ব হারানো অবস্হায় আত্মার ইরিটেশান থেকে' দেবী রায়ের কবিতা উৎসারিত; 'অস্তিত্বের অসহায়তায় নিমজ্জিত ব্যক্তির মধ্যে ডুবে নিজের মানবসত্ত্বার অর্থ খঁোজায় আছে তার কবিতার উদ্দেশ্য, কবিতার পরিত্রাণ; তার কবিতায় আছে বন্দী আত্মার ক্রন্দন, হতাশা ,শোক,কৌমবেদনা, ক্ষোভ ও ক্রোধ ।
কবিতার আঙ্গিক
দেবী রায়ের কবিতার পংক্তিগুলি অর্ধসমাপ্ত; একটি পংক্তির সঙ্গে পরেরটি আপাতসংযোগহীন । ছন্দকে তিনি, অন্যান্য হারি আন্দোলনকারীদের মতই ইচ্ছাকৃতভাবে ভাঙেন; চিত্রকল্পকে নিটোল হতে দেন না । হাংরি আন্দোলনকারীরা এই প্রক্রিয়াকে বলেছেন লজিকাল ক্র্যাক বা যুক্তিফাটল । দেবী রায়ের কবিতার বাক্যগুলি ক্ষোভে আকস্মিক, ক্রোধে এলোমেলো, শোকে আসংলগ্ন, হতাশায় কেন্দ্রাতিগ, গ্লানিতে ব্যাজস্তুতিময়, এবং প্রেমে ক্রমান্বয়হীন । দেবী রায় এই ক্রমহীনতাকে বলেছেন থট জাম্পিং ।
উল্লেখযোগ্য গ্রন্হ
- উন্মাদ শহর
- কলকাতা ও আমি
- মানুষ,মানুষ
- সাম্প্রতিক তিনজন
- দেবী রায়ের কবিতা
- ভ্রূকুটির বিরুদ্ধে একা
- এই সেই তোমার দেশ
- পুতুল নাচের গান
- সর্বহারা,তবু অহংকার
- ভারতবর্ষ,তোমায় খুঁজছে
- আগুনের গান
- ২১শে ফেব্রুয়ারি
- নির্বাচিত কবিতা
তথ্যসূত্র
- ডেবী রায় আলোচনাসমগ্র । সম্পাদক: স্বরাজ সেনগুপ্ত । রেনেসঁস পাবলিশার্স, বঙ্কিম চ্যাটার্জি স্ট্রিট, কলকাতা ৭০০০৭৩ । (২০০৪) ।
- কবিতা:ষাট সত্তর । সম্পসদক : পরেশ মণ্ডল, মৃত্যুঞ্জয় সেন ও ড.উত্তম দাশ । মহাদিগন্ত, বারুইপুর, কলকাতা ৭০০১৪৪ । (১৯৮২) ।
- হাংরি শ্রুতি ও শাস্ত্রবিরোধী আন্দোলন । ড.উত্তম দাশ । মহাদিগন্ত, বারুইপুর, কলকাতা ৭০০১৪৪ । (১৯৮৬) ।
- ক্ষুধিত প্রজন্ম ও অন্যান্য প্রবন্ধ । ড.উত্তম দাশ । মহাদিগন্ত, বারুইপুর, কলকাতা ৭০০১৪৪ । (১৯৯৫) ।
- একালের গদ্যপদ্য আন্দোলনের দলিল । সত্য গুহ । আধুনা, আমহার্স্ট স্ট্রিট, কলকাতা । (১৯৭০) ।
- যুবযন্ত্রণা ও সাহিত্য । ড.আলোকরঞ্জন দাশগুপ্ত । বসুমতী, বৌবাজার, কলকাতা । (১৯৬৮) ।
- কৃত্তিবাস । সম্পাদক: সূনীল গঠ্গোপাধ্যায় । যুগীপাড়া রোড, দমদম, কলকাতা । (১৯৬৬) ।
- হাংরি কিম্বদন্তি । মলয়রায়চৌধুরী । দে বুক স্টোর, বঙ্কিম চ্যাটার্জি স্ট্রিট, কলকাতা ৭০০০৭৩ । (১৯৯৪) ।
- হাওয়া ৪৯ হাংরি আন্দোলন সংখ্যা । সম্পাদক: সমীর রায়চৌধুরী ও মর্শিদ এ. এম । হাওয়া ৪৯, বাঁশদ্রোণি, কলকাতা ৭০০০৭০ । (২০০৬) ।
- উত্তরপ্রবাসী হাংরি আন্দোলন সংখ্যা । সম্পাদক: গজেন্দ্রকুমার ঘোষ । গোথেনবুর্গ, সুইডেন । (১৯৮৬) ।
- বনতুলসী কা গন্ধ । ফণীশ্বরনাথ রেণু । রাজকমল প্রকাশন, দিল্লি । (১৯৮৮) ।
- Salted Feathers Hungryalist Issue. Editor: Lee Altman and Dick Bakken . Portland, Oregon, USA. (1969).
- Intrepid Hungryalist Issue. Editor: Allan De Loach. Buffalo, New York, USA. (1967).
আরও দেখুন
- শক্তি চট্টোপাধ্যায়
- মলয় রায়চৌধুরী
- ফাল্গুনী রায়
- রবীন্দ্র গুহ
- সমীর রায়চৌধুরী
- উৎপলকুমার বসু
- ত্রিদিব মিত্র
- বাসুদেব দাশগুপ্ত
- হাংরি আন্দোলন
- সন্দীপন চট্টোপাধ্যায়