ব্যবহারকারী:DelwarHossain/সাপ্তাহিক জয় বাংলা: সংশোধিত সংস্করণের মধ্যে পার্থক্য

উইকিপিডিয়া, মুক্ত বিশ্বকোষ থেকে
বিষয়বস্তু বিয়োগ হয়েছে বিষয়বস্তু যোগ হয়েছে
+ {{db-copyvio}}
ট্যাগ: মোবাইল সম্পাদনা মোবাইল ওয়েব সম্পাদনা
অসম্পূর্ণ ও কাজ চলছে,
ট্যাগ: মোবাইল সম্পাদনা মোবাইল ওয়েব সম্পাদনা
১ নং লাইন: ১ নং লাইন:
{{কাজ চলছে}}
{{db-copyvio|url=http://web.dailyjanakantha.com/details/article/114904/স্মৃতির-আড়ালে-হারিয়ে-যাচ্ছে-মুজিবনগর-সরকারের-জয়বাংলা/|oldid=}}


১৯৭১ সালের ১১ মে মাসে মুক্তিকামী জনতার মুখপত্র হিসেবে আত্মপ্রকাশ করে ‘জয় বাংলা’ পত্রিকা।
১৯৭১ সালের ১১ মে মাসে মুক্তিকামী জনতার মুখপত্র হিসেবে আত্মপ্রকাশ করে ‘জয় বাংলা’ পত্রিকা।

১০:৪৫, ২৫ জুন ২০১৯ তারিখে সংশোধিত সংস্করণ

১৯৭১ সালের ১১ মে মাসে মুক্তিকামী জনতার মুখপত্র হিসেবে আত্মপ্রকাশ করে ‘জয় বাংলা’ পত্রিকা।

মুক্তিযুদ্ধের সপক্ষে দেশে-বিদেশে জনমত গড়ে তুলতে সাপ্তাহিক ‘জয় বাংলা’ পত্রিকা রাখে অসামান্য ভূমিকা। মুক্তিযুদ্ধের নয় মাসে মুক্তাঞ্চলসহ দেশের বিভিন্ন এলাকা থেকে মুক্তিযুদ্ধের সপক্ষে সীমিত প্রচার সংখ্যায় প্রায় শতাধিক পত্রিকা আত্মপ্রকাশ করে। কিন্তু সেগুলোর প্রকাশনা ছিল অনিয়মিত। এদিক থেকে সাপ্তাহিক জয় বাংলা ব্যতিক্রম। ১৯৭১ সালের ১১ মে থেকে ২৪ ডিসেম্বর পর্যন্ত ৩৪টি সংখ্যার প্রতিটি প্রকাশ হয় নিয়মিতভাবেই। ওই বিরুদ্ধ সময়ে মুক্তিকামী জনতার কণ্ঠস্বরে পরিণত হওয়া আট পৃষ্ঠার পত্রিকাটির প্রচার সংখ্যা ছিল ৩০ হাজার পর্যন্ত। মুক্তিযুদ্ধের ১১টি সেক্টর, সাবসেক্টর, মুক্তাঞ্চল এবং ভারতের শরণার্থী শিবিরগুলোতে ‘জয় বাংলা’ পাওয়া যেত। এমনকি পশ্চিমবঙ্গ, ত্রিপুরা ও মেঘালয়ের মানুষও ‘জয় বাংলা’ পড়তেন। বাংলাদেশের পত্রিকা হিসেবে তাদের কাছে এটির আলাদা কদর ছিল। আবার প্রবাসী সরকারের পক্ষ থেকে নিবন্ধনপ্রাপ্ত প্রথম পত্রিকাও এটি, যার নম্বর-১। সে হিসেবে ‘জয় বাংলা’ই সরকার অনুমোদিত বাংলাদেশের প্রথম পত্রিকা।

প্রকাশের পর থেকে জয় বাংলার প্রভাব হয়ে ওঠে তাৎপর্যপূর্ণ। কেবল ‘জয় বাংলা’ পত্রিকা রাখার ‘অপরাধে’ বহু নিরীহ মানুষকে হত্যা ও তাদের বাড়িঘর জ্বালিয়ে দেয় রাজাকার, আলবদররা। ‘জয় বাংলা’ গুরুত্বপূর্ণ হয়ে ওঠে বিদেশী গণমাধ্যমের কাছেও। আন্তর্জাতিক মহলে যুদ্ধের সর্বশেষ সংবাদ জানাতে এসব গণমাধ্যম বিভিন্ন সময় বরাত দিয়েছে জয় বাংলা পত্রিকার। অথচ পরবর্তীতে দেশের অভ্যুদয়ের ইতিহাসের প্রতিচ্ছবি এ পত্রিকাটির তেমন খোঁজখবর রাখেনি কেউ। যথাযথভাবে সংরক্ষণের অভাবে স্বাধীনতার মাত্র ৪৪ বছরেই বিস্মৃতির অতলে হারিয়ে গেছে সরকারী অনুমোদনপ্রাপ্ত স্বাধীন বাংলাদেশের প্রথম সংবাদপত্র। মুক্তিযুদ্ধের ঐতিহাসিক এ প্রামাণ্য দলিলের বিভিন্ন সংখ্যা আজ লুপ্তপ্রায়।


দেশের ইতিহাস-ঐতিহ্য সম্পর্কিত গুরুত্বপূর্ণ বিভিন্ন দলিল সংরক্ষণের মূল দায়িত্ব বাংলাদেশ জাতীয় আর্কাইভসের। কিন্তু রাজধানীর আগারগাঁওয়ে অবস্থিত এ প্রতিষ্ঠানের সংগ্রহে জয় বাংলা পত্রিকার মূল কপি আছে মাত্র ১৮টি। মুজিবনগর সরকারের ‘জয় বাংলা’ ছাড়াও একই নামে আরও তিনটিসহ মুক্তিযুদ্ধকালে কমপক্ষে ৭০টি পত্রিকা প্রকাশের তথ্য পাওয়া যায়। এসব পত্রিকার প্রায় সব ক’টি ছিল সাপ্তাহিক ও সাইক্লোস্টাইলভিত্তিক (হাতে লেখা)। মুক্তিযুদ্ধের সপক্ষের বিভিন্ন ব্যক্তি ও রাজনৈতিক দলের উদ্যোগে এগুলো প্রকাশিত হয়। জাতীয় আর্কাইভসে ওইসব পত্রিকার অধিকাংশেরই কোন কপি সংরিক্ষত নেই। মুক্তিযুদ্ধ জাদুঘরে বিচ্ছিন্নভাবে জয় বাংলাসহ মুক্তিযুদ্ধকালীন অন্যান্য পত্রিকার হাতে গোনা ক’টি কপি সংরক্ষিত আছে। ৮ বছর আগে একটি সৃজনশীল প্রকাশনী সংস্থা মুজিবনগর সরকার প্রকাশিত ‘জয় বাংলা’ পত্রিকার বিভিন্ন সংখ্যার হুবহু সংকলন একত্রে প্রকাশ করে। অবশ্য সেটিরও ছাপা কোন কপি বর্তমানে বাজারে অবশিষ্ট নেই। পৃষ্ঠপোষকতা না পাওয়ায় প্রকাশনা সংস্থাও এ ব্যাপারে আর কোন উদ্যোগ নেয়নি। শুধু সংরক্ষণের ক্ষেত্রেই নয়, মুক্তিযুদ্ধের সপক্ষের সংবাদপত্রের ভূমিকার ইতিহাস পাঠদানের ক্ষেত্রেও উপেক্ষিত ‘জয় বাংলা’। মাধ্যমিক ও উচ্চমাধ্যমিক স্তরে ইতিহাসের পাঠ্যবইতে স্বাধীন বাংলা বেতার কেন্দ্রের প্রসঙ্গটি এলেও জয় বাংলা পত্রিকার নামটি কোথাও উল্লেখ নেই। পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর সিলেবাস ও গবেষণা কার্যক্রমেও অবহেলিত মুক্তিযুদ্ধের সপক্ষের সংবাদপত্রের ইতিহাস।

এ প্রসঙ্গে সেক্টর কমান্ডারস ফোরামের ভারপ্রাপ্ত মহাসচিব ও মুক্তিযুদ্ধকালে জয় বাংলা পত্রিকার ১১ নম্বর সেক্টরের সংবাদদাতা হারুন হাবীব জনকণ্ঠকে বলেন, ‘স্বাধীন বাংলা বেতার কেন্দ্র’ ও ‘জয় বাংলা’ পত্রিকা; দুটোই ছিল মুজিবনগর সরকারের মুখপত্র। ঘুরেফিরে স্বাধীন বাংলা বেতার কেন্দ্রের কর্মীরাই কাজ করতেন জয় বাংলা পত্রিকায়। স্বাধীনতার পরে বিজয়ের আনন্দে তাদের অনেকেই হয়ত পত্রিকাটির ঐতিহাসিক গুরুত্ব তাৎক্ষণিকভাবে উপলব্ধি করতে পারেননি। তাই পত্রিকার কপি সংরক্ষণের ব্যাপারেও মনোযোগ দেননি কেউ। আর স্বাধীনতার মাত্র সাড়ে তিন বছরের মাথায় জাতির জনককে সপরিবারে হত্যা করে স্বাধীনতাবিরোধী শক্তি ফের রাষ্ট্রীয় ক্ষমতা কুক্ষিগত করে। তারা মুক্তিযুদ্ধের স্মৃতিচিহ্ন সংরক্ষণের পরিবর্তে কৌশলে দীর্ঘ সময় ধরে সেগুলো নিশ্চিহ্ন করার ব্যবস্থা করেছে। সেই ধারাবাহিকতা বন্ধ হলেও এখনও মুক্তিযুদ্ধের বিভিন্ন দলিল সংরক্ষণে সরকারের যথেষ্ট অবহেলা রয়ে গেছে।[১]

আরো দেখুন

তথ্যসূত্র