বিদ্যাগৌরী নীলকান্ত

উইকিপিডিয়া, মুক্ত বিশ্বকোষ থেকে
বিদ্যাগৌরী নীলকান্ত
বিদ্যাগৌরী নীলকান্ত ১৮৯৫ নাগাদ
জন্ম(১৮৭৬-০৬-০১)১ জুন ১৮৭৬
মৃত্যু৭ ডিসেম্বর ১৯৫৮(1958-12-07) (বয়স ৮২)
পরিচিতির কারণসমাজ সংস্কারক, শিক্ষাবিদ ও লেখক
দাম্পত্য সঙ্গীরমনভাই নীলকান্ত (বি. ১৮৮৯)
সন্তানবিনোদিনী নীলকান্ত, সরোজিনী মেহতা (কন্যা)
আত্মীয়শারদা মেহতা (বোন)

বিদ্যাগৌরী নীলকান্ত ছিলেন একজন ভারতীয় সমাজ সংস্কারক, শিক্ষাবিদ এবং লেখক। তিনি গুজরাটের প্রথম দুই মহিলা স্নাতকের একজন ছিলেন।[১][২]

প্রাথমিক জীবন[সম্পাদনা]

স্বামী রমনভাই নীলকান্তের সঙ্গে বিদ্যাগৌরী

বিদ্যাগৌরী নীলকান্ত ১৮৭৬ সালের ১লা জুন আহমেদাবাদে জন্মগ্রহণ করেন। তিনি ছিলেন একজন বিচার বিভাগীয় কর্মকর্তা, গোপিলাল ধ্রুব এবং বালাবেনের কন্যা।[১][৩] তিনি ছিলেন সমাজ সংস্কারক ও কবি ভোলানাথ দিভেটিয়ার প্রপৌত্রী।[৪] তিনি রায়বাহাদুর মগনভাই গার্লস হাই স্কুল থেকে প্রাথমিক শিক্ষা (সপ্তম শ্রেণী পর্যন্ত) এবং মহালক্ষ্মী টিচার্স ট্রেনিং কলেজে অ্যাংলো-ভার্নাকুলার ক্লাস (ইংরেজি এবং স্থানীয় ভাষা ব্যবহার করা হয়) থেকে মাধ্যমিক স্কুল শিক্ষা সম্পন্ন করেন। তিনি ১৮৮৯ সালে রমনভাই নীলকান্তকে বিয়ে করেছিলেন এবং একসাথে তাঁরা অনেক নিবন্ধ, বই লিখেছিলেন এবং যৌথভাবে জ্ঞানসুধা নামে একটি পত্রিকা সম্পাদনা করেছিলেন।[২][৩][৪] বিনোদিনী নীলকান্ত এবং সরোজিনী মেহতা ছিলেন তাঁদের কন্যা।[৫]

নিজের স্বামীর সমর্থনে, তিনি ১৮৯১ সালে তাঁর ম্যাট্রিকুলেশন সম্পন্ন করেন এবং বোম্বে বিশ্ববিদ্যালয়ে গুজরাটি ভাষায় প্রথম হন ও উচ্চ শিক্ষা গ্রহণ করেন।[৪] তিনি ১৮৯৪ সালে কলেজে নথিভুক্ত হন এবং ১৯০১ সালে নৈতিক দর্শন ও যুক্তিবিদ্যায় স্নাতক সহ গুজরাট কলেজ থেকে পাশ করেন। ঘন ঘন গর্ভধারণের কারণে তাঁর লেখাপড়া ব্যাহত হয়েছিল।[৪] তিনি একটি ফেলোশিপ পেয়েছিলেন এবং এইভাবে তাঁর ছোট বোন, শারদা মেহতা এবং তিনি গুজরাটের প্রথম দুই মহিলা স্নাতক হন।[২][৩][৫]

সামাজিক কাজ[সম্পাদনা]

ছোটবেলা থেকেই সমাজসেবামূলক কাজে যুক্ত ছিলেন বিদ্যাগৌরী নীলকান্ত। নারীর উন্নতির জন্য তিনি নিজের জীবন উৎসর্গ করেছেন।[২] তিনি ন্যাশনাল ইণ্ডিয়ান অ্যাসোসিয়েশনের সহায়তায় দরিদ্র মুসলিম মহিলাদের জন্য সেলাই শিক্ষা ক্লাস শুরু করেন। তিনি প্রথম বিশ্বযুদ্ধের সময় যুদ্ধ ত্রাণ তহবিলের জন্য বয়স্ক শিক্ষার ক্লাস এবং বিভিন্ন কার্যক্রমের আয়োজন করেছিলেন। তাঁর সেবার জন্য তাকে এমবিই উপাধি দেওয়া হয়েছিল। তিনি সর্বভারতীয় মহিলা সম্মেলনের আহমেদাবাদ শাখা শুরু করেন। তিনি এআইডব্লিউসি-এর লক্ষ্ণৌ অধিবেশনে সভাপতিত্বও করেছিলেন। তিনি মগনভাই করমচাঁদ গার্লস হাই স্কুল, দিওয়ালিবাই গার্লস স্কুল, রণছোড়লাল ছোটেলাল গার্লস হাই স্কুলের মতো অসংখ্য শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের সাথে যুক্ত ছিলেন এবং বনিতা বিশ্রামের মতো প্রতিষ্ঠানে বিবাহের কারণে, বিধবা হওয়ার কারণে পড়া ছেড়ে দেওয়া মহিলাদের মাধ্যমিক শিক্ষা প্রদান করেছেন।[১]

তিনি লালশঙ্কর উমিয়া শংকর মহিলা পাঠশালা প্রতিষ্ঠা করেন, যেটি পরে এসএনডিটি (কর্বে) বিশ্ববিদ্যালয়ের অধিভুক্ত হয়। তিনি এই কলেজে ইংরেজি, মনোবিজ্ঞান এবং দর্শন পড়াতেন।[১]

তিনি অল্প সময়ের জন্য আহমেদাবাদ পৌরসভার একটি কমিটির সরকারি নিযুক্ত সদস্য হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন।[৩] তিনি প্রার্থ সমাজের সাথে যুক্ত ছিলেন এবং মহিপাতরাম রূপরাম অনাথ আশ্রমের অবৈতনিক সম্পাদক (অনারারী সেক্রেটারি) এবং তারপরে সভাপতি হয়েছিলেন।[১][৩]

সাহিত্যিক কর্মজীবন[সম্পাদনা]

তিনি গুণসুন্দরী, নারীবোধ এবং শারদা-র মতো নারী পত্রিকায় অবদান রেখেছিলেন। তিনি গুজরাটি সাহিত্য পরিষদের ১৫তম অধিবেশনের সভাপতি ছিলেন। তিনি গুজরাট বিদ্যা সভা এবং গুজরাট সাহিত্য সভার সভাপতি হিসাবেও কাজ করেছিলেন।[১][৩][৫]

তিনি হালকা হাস্যরসের পাশাপাশি জীবনীমূলক স্কেচ (একটি প্রকল্পে একটি নির্দিষ্ট ভূমিকার জন্য একজন ব্যক্তির যোগ্যতা এবং অভিজ্ঞতা নথিভুক্ত করে) সহ বেশ কয়েকটি প্রবন্ধ লিখেছিলেন। ফোরাম (১৯৫৫) তাঁর আত্মীয় এবং সহযোগীদের জীবনীমূলক স্কেচ অন্তর্ভুক্ত করে যা তাঁকে প্রভাবিত করেছিল। তাঁর অন্যান্য প্রবন্ধ সংকলন হল: গৃহদীপিকা (১৯৩১), নারীকুঞ্জ (১৯৫৬), জ্ঞানসুধা (১৯৫৭)। হাস্যমন্দিরে তাঁর বিবিধ প্রবন্ধ অন্তর্ভুক্ত রয়েছে। তিনি জীবনী লিখেছেন প্রো. ধন্দ কেশব কর্বে (১৯১৬)।[৩][৫]

তাঁর বোন শারদা মেহতার সাথে, তিনি রমেশচন্দ্র দত্তের বই, দ্য লেক অফ পামস (১৯০২) অনুবাদ করেন সুধাসুহাসিনী (১৯০৭) নামে; এবং দ্য মহারানী অফ বরোদার (চিমনাবাই দ্বিতীয়) পজিশন অফ উইমেন ইন ইণ্ডিয়ান লাইফ (১৯১১) অনুবাদ করেন হিন্দুস্তানমা স্ত্রিওনু সামাজিক স্থান (১৯১৫) নামে।[১][৩]

পুরস্কার[সম্পাদনা]

১৯২৬ সালে, তিনি কায়সার-ই-হিন্দ পদক লাভ করেন।[৩]

আরও দেখুন[সম্পাদনা]

তথ্যসূত্র[সম্পাদনা]

  1. "Stree Shakti"। সংগ্রহের তারিখ ২০১৬-১১-১০ 
  2. "Win Entrance Biography"। সংগ্রহের তারিখ ২০১৬-১১-১০ 
  3. Bhatt, Pushpa। "વિદ્યાગૌરી નીલકંઠ"gujaratisahityaparishad.com (গুজরাটি ভাষায়)। Gujarati Sahitya Parishad। সংগ্রহের তারিখ ২০১৯-০১-২১ 
  4. Sujata, Menon (২০১৩)। International Journal of Afro-Asian Studies। Universal-Publishers। পৃষ্ঠা 17–18। আইএসবিএন 978-1-61233-709-8 
  5. "લેખિકા-પરિચય" [Introduction of Women Writers]। વીસમી સદીનું ગુજરાતી નારીલેખન (গুজরাটি ভাষায়) (1st সংস্করণ)। Sahitya Akademi। ২০০৫। পৃষ্ঠা 349, 351। আইএসবিএন 8126020350ওসিএলসি 70200087