বিক্রমশিলা বিশ্ববিদ্যালয়
বিক্রমশীলা | |
---|---|
শহর | |
ভারতের বিহারে বিক্রমশীলার অবস্থান | |
স্থানাঙ্ক: ২৫°১৯′২৮″ উত্তর ৮৭°১৭′১২″ পূর্ব / ২৫.৩২৪৪° উত্তর ৮৭.২৮৬৭° পূর্ব | |
দেশ | ভারত |
রাজ্য | বিহার |
Languages | |
• Official | মৈথিলী, হিন্দি |
সময় অঞ্চল | IST (ইউটিসি+5:30) |
টেলিফোন কোড | ০৬৪১ |
নিকটবর্তী শহর | ভাগলপুর |
বিক্রমশীলা বিশ্ববিদ্যালয় ছিল পালযুগে ভারতীয় উপমহাদেশে বৌদ্ধ শিক্ষার সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ দুটি কেন্দ্রের একটি; এর অপরটি ছিল নালন্দা বিশ্ববিদ্যালয়। নালন্দাতে শিক্ষার মান কমে গেছে এমন ধারণার থেকে রাজা ধর্মপাল (৭৮৩ থেকে ৮২০) বিক্রমশীলার প্রতিষ্ঠা করেন। এই বিশ্ববিদ্যালয়ের মঠাধ্যক্ষদের মধ্যে প্রখ্যাত বৌদ্ধ ভীক্ষু শ্রীজ্ঞান অতীশ দীপঙ্কর উল্ল্যখযোগ্য। এভাবে এ মহাবিহার বৌদ্ধ ধর্মীয় শিক্ষা ও বুদ্ধিবৃত্তিক চর্চার কেন্দ্র হিসেবে পরিচিত ছিল। এর অভ্যন্তরীণ সংগঠন সম্পর্কে তেমন কিছু জানা যায় না। এটি ভারত এবং অন্যান্য দেশের সঙ্গে সাংস্কৃতিক আদান-প্রদানের ক্ষেত্রে অবাদন রেখেছিল। এর প্রকোষ্ঠগুলির ভেতরে প্রাপ্ত জমাটকৃত ছাই থেকে অনুমান করা হয় যে, কোন ধরনের অগ্নিকান্ড থেকেই সম্ভবত এই মহাবিহার ধ্বংসপ্রাপ্ত হয়েছিল
বিক্রমশীলার (গ্রাম: আন্তিচক, জেলা ভাগলপুর, বিহার) ভাগলপুর শহর থেকে প্রায় ৫০ কিলোমিটার পূর্বে অবস্থিত এবং পূর্বাঞ্চলীয় রেলওয়ের ভাগলপুর-সাহেবগঞ্জ সেকশনের কাহলগাও স্টেশন থেকে ১৩ কিলোমিটার উত্তর-পূর্বে অবস্থিত। কাহলগাও থেকে ২ কিলোমিটার দূরবর্তী অনাদিপুর নামক স্থানে জাতীয় মহাসড়ক ৮০-র সাথে সংযুক্ত ১১ কিলোমিটার দীর্ঘ একটি সড়ক দিয়ে বিক্রমশীলায় যাওয়া যায়।
ইতিহাস
[সম্পাদনা]প্রাচীন বাংলা এবং মগধে পালযুলে বেশকিছু বৌদ্ধবিহার গড়ে উঠেছিল। বিভিন্ন তিব্বতীয় সূত্র মতে এদের মধ্যে পাঁচটি মহাবিহার কালের আবর্তে টিকে যায়, এগুলো হলো: বিক্রমশীল, সে সময়কার প্রধান বিশ্ববিদ্যালয়; নালন্দা, ততদিনে শ্রেষ্ঠসময় পার হয়ে গেলেও এর জৌলুশ ঠিকই ছিল; সোমপুর; ওদান্তপুর এবং জগদ্দল।[১]
কাঠামো
[সম্পাদনা]আকৃতি এবং খননকার্য
[সম্পাদনা]সন্ন্যাসীদের বসবাসের জন্য বুদ্ধদেব পাঁচ ধরনের বাসস্থান নির্দেশ করেছিলেন বলে জানা যায়। বিহার ছিল এগুলির মধ্যে একটি। বিহারগুলি ধীরে ধীরে বেশ বড়সড় আবাসস্থলে পরিণত হয় এবং সন্ন্যাসীরা সেখানে সম্মিলিতভাবে জীবনযাপন করতেন। প্রত্নতাত্ত্বিকভাবে বর্তমানে বিক্রমশীলা মহাবিহারের অবস্থান বিহারের ভাগলপুর জেলার অন্তিচক নামক স্থানে নির্দিষ্ট হয়েছে। খ্রিস্টীয় নবম শতকের প্রথম দিক থেকে বারো শতক পর্যন্ত এর নির্মাণকাজ চলে।
অন্তিচকে প্রাথমিক খননকার্যের মাধ্যমে কক্ষ ও তৎসংলগ্ন ছোট ছোট পার্শ্ব কক্ষ এবং ২.৯ মিটার প্রশস্ত বৃত্তাকার দুটি প্রদক্ষিণ পথসহ একটি ইট নির্মিত সৌধ আবিষ্কৃত হয়। খননের মাধ্যমে পাওয়া যায় একটি চৈত্য (১৫ মিটার উঁচু এবং ১০০ মিটার প্রশস্ত)। এছাড়া এখানে প্রাপ্ত খোদাই করা একটি স্মারক স্তূপ (শ্রীধর্মধর ... দেবস্য) পাওয়া গেছে যা থেকে জানা যায় যে, এ প্রত্নস্থলে মঠ জাতীয় কোন প্রতিষ্ঠান ছিল।
পরবর্তীকালে একই স্থানে খননকার্যের মাধ্যমে পাওয়া যায় বিশাল একটি মঠ (৩৩০ মিটার বর্গাকার)। এর উত্তর গেটের আয়তাকার কাঠামোতে রয়েছে প্রায় ২০৮টি প্রকোষ্ঠ। এছাড়া এর বাইরের দেওয়াল জুড়ে রয়েছে আয়তাকার ও বৃত্তাকার কিছু অবয়ব। প্রতিটি প্রকোষ্ঠে ছিল ১.৩৫ মিটার প্রশস্ত প্রবেশদ্বার। প্রকোষ্ঠগুলিতে ছিল গড়ে ৩ মিটার এবং ২ মিটার আকারের বেদি সদৃশ শয্যাস্থল। প্রকোষ্ঠগুলি থেকে ৩.১০ মিটার চওড়া একটি বারান্দায় যাওয়া যেত। বারান্দাটি উত্তরদিকে ৩০ মিটার এবং দক্ষিণ-পশ্চিম দিকে ৪০ মিটার লম্বা। দক্ষিণ-পশ্চিম কোণে একটি আয়তাকার কাঠামো (৪১.৫০ মিটার দীর্ঘ এবং ১৮.৬৫ মিটার প্রশস্ত) আবিষ্কৃত হয়েছে। এর উত্তর, পশ্চিম এবং পূর্ব দিকের দেয়ালের পুরুত্ব ছিল প্রায় ১.৯ মিটার। কিন্তু দক্ষিণ দিকের দেয়াল ছিল অস্বাভাবিকভাবে ৪.৭৫ মিটার চওড়া। এতে ২.৬৫ মিটার পর পর চ্যানেলের মতো ১৩টি ঢালু ছিদ্র ছিল। এটি ছিল পোড়া ইটের তৈরি ১.৪ মিটার প্রশস্ত বাঁধানো পথ দ্বারা মূল মঠের সঙ্গে সংযুক্ত। এতে বিভিন্ন আকৃতির চারটি প্রকোষ্ঠ ছিল এবং আয়তাকার একটি প্রকোষ্ঠ উত্তরদিকের দেওয়ালের সঙ্গে ভেতর থেকে সংযুক্ত ছিল। মহাবিহারের এ কাঠামো একটি বিভাগের নির্দেশ করে যেখানে পান্ডুলিপি লেখা বা অনুলিপি করা হতো বা যেখানে তা সংরক্ষিত হতো। তালপাতার পান্ডুলিপি রক্ষার ক্ষেত্রে ঠান্ডা বাতাস চলাচলের জন্য দক্ষিণ দেয়ালের ছিদ্র পথগুলির প্রয়োজন ছিল। সম্পূর্ণ মঠটি ছিল ৩ মিটার চওড়া একটি বহির্দেওয়াল দিয়ে ঘেরা।
মূল স্তুপা
[সম্পাদনা]পুনঃনির্মাণ ও পন্ডীতগণ
[সম্পাদনা]এ মহাবিহারের মধ্যে ছিল ৫৮টি সংস্থা বা প্রতিষ্ঠান। আর এগুলিতে বাস করতেন ১০৮ জন পন্ডিত। তবে এ প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার মান সম্পর্কে জানা যায় না। এ মঠের ছিল ছয়টি প্রবেশদ্বার এবং দ্বারপাল নামক একজন করে পন্ডিত প্রতিটি প্রবেশ দ্বারে পাহারা দিতেন। তারনাথ শান্তি-পা, বাগীশ্বরকীর্তি, প্রজ্ঞাকরমতী প্রমুখ কয়েকজন দ্বাররক্ষক পন্ডিতের নাম উল্লেখ করেছেন। এ বিহার বিশেষত বৌদ্ধতান্ত্রিক মতবাদ সংক্রান্ত শিক্ষালয়রূপে পরিচিত ছিল। জ্ঞানপদ, দীপঙ্করভদ্র, ভবভদ্র প্রমুখ ছিলেন তান্ত্রিক মতবাদে অসাধারণ পন্ডিত। বিহারটি পরিচালিত হতো দীপঙ্কর শ্রীজ্ঞান, জেতরি, অভয়করগুপ্ত, শাক্য শ্রীভদ্র প্রমুখ পন্ডিত দ্বারা। বিহারের প্রধানকে বলা হতো অধ্যক্ষ। জেতরি তাঁর কর্মজীবন শুরু করেন একজন দ্বারপাল হিসেবে এবং পরবর্তীকালে তিনি হন অধ্যক্ষ। মহাবজ্রাসন, কমলকুলিস প্রমুখ উপাধ্যক্ষ বিহারের ধর্মীয় ও শিক্ষাগত দিক তত্ত্বাবধান করতেন। এ মহাবিহারে অনুবাদের কাজও সম্পন্ন হতো। সন্ন্যাসী বীর্যসিংহ কর্তৃক দীপঙ্কর শ্রীজ্ঞান তাঁর কিছু লেখা তিববতী ভাষায় অনুবাদ করিয়েছিলেন বলে জানা যায়। তারনাথের মতে, এক হাজার সন্ন্যাসী স্থায়ীভাবে এখানে বসবাস করতেন।
সাংস্কৃতিক কর্মকাণ্ড
[সম্পাদনা]সেখানে যাবার উপায়
[সম্পাদনা]বিক্রমশীলার (গ্রাম: আন্তিচক, জেলা ভাগলপুর, বিহার) ভাগলপুর শহর থেকে প্রায় ৫০ কিলোমিটার পূর্বে অবস্থিত এবং পূর্বাঞ্চলীয় রেলওয়ের ভাগলপুর-সাহেবগঞ্জ সেকশনের কাহলগাও স্টেশন থেকে ১৩ কিলোমিটার উত্তর-পূর্বে অবস্থিত। কাহলগাও থেকে ২ কিলোমিটার দূরবর্তী অনাদিপুর নামক স্থানে জাতীয় মহাসড়ক ৮০-র সাথে সংযুক্ত ১১ কিলোমিটার দীর্ঘ একটি সড়ক দিয়ে বিক্রমশীলায় যাওয়া যায়।
জনপ্রিয় সংস্কৃতিগুলোতে অবদান
[সম্পাদনা]গ্যালারি
[সম্পাদনা]-
The Vikramshila Museum at the entrance of the Excavation site. It holds many exhibits which have been excavated from the ruins, these include monuments, art figures, utensils, coins, weapons and jewellery.
-
The view of the entrance from the Stupa.
-
Pillars at Vikramshila University
-
Landscape of Vikramshila Ruins, the seating and meditation area
-
Vikramshila History on excavation location
-
Maintenance work going on to beautify the place
-
Gardens around the main stupa
-
A stone structure at the ruins
আরো দেখুন
[সম্পাদনা]তথ্যসূত্র
[সম্পাদনা]- ↑ Vajrayogini: Her Visualization, Rituals, and Forms by Elizabeth English. Wisdom Publications. আইএসবিএন ০-৮৬১৭১-৩২৯-X pg 15