বিকার

বিকার (সংস্কৃত: विकार) অর্থ পরিবর্তন, রূপ পরিবর্তন, মন পরিবর্তন, রোগ।^[১] এটি বাসুবন্ধু দ্বারা তাঁর মধ্যন্ত-বিভাগ-ভাষ্য তালিকাভুক্ত দশটি কারণের একটি।^[২] সংস্কৃত গ্রন্থে, এটি প্রাতিশাখ্যে ব্যবহৃত হয় যা ধ্বনিমূলক প্রতিস্থাপনের প্রবর্তন করে নামক অন্তে প্রতিস্থাপিত একক ও অভিযুক্ত সমাপ্তিতে বিকল্পটি উল্লেখ করে।^[৩]

উদ্দালক আরুণীর সদ্বিদ্যা (সত্তার বিজ্ঞান) অনুসারে, দ্বৈতভাবে বিদ্যমান সমস্ত জিনিসই হল ভিন্নতা, সতের বিকাশ (রূপান্তর), আদি সত্তা, যিনি সর্বজনীন স্তর; নামরূপ (স্বতন্ত্র নাম ও রূপ) এর কারণে সমস্ত জিনিস সনাক্ত করা যায়। পুরুষ (ব্রহ্ম) নিজেকে রূপান্তরিত করে প্রকৃতির এই সমস্ত বহুগুণ সৃষ্টি করেছেন। এটি কার্যকারণের সাংখ্য তত্ত্ব, সতকার্যবাদের মতই, যা এই ভিত্তির উপর ভিত্তি করে যে প্রভাবটি কারণের মধ্যে বিদ্যমান, এবং মূল কারণ হল তিনটি গুণের সমন্বয়ে গঠিত প্রকৃতি যা প্রবণতা ও কার্যপ্রণালী।^[৪] প্রকৃতি বৈদিক শাস্ত্রের মধ্যে মায়ার ধারণার সাথে ঘনিষ্ঠভাবে জড়িত।^[৫] বিশ্বকে সর্বদা বিকশিত হতে দেখা যায় কারণ বিকার (পরিবর্তন) হল এর স্বভাব (প্রকৃতি); উদ্ভব ও বিলুপ্তি হল দুটি বিকার, এবং কার্যকারণ কার্যকারিতা হল পরিবর্তন শুরু করার শক্তি। পরিবর্তন (বিকার) তখনই ঘটতে পারে যখন কর্ম থাকে।^[৬] অদ্বৈত বেদান্তের বিবর্তবাদে আপাত বিকার বা পরিবর্তন জড়িত, নিছক বিভ্রম।

আয়ুর্বেদে, দোষ দ্বারা উৎপন্ন রোগগুলিকে নানাত্মজ-বিকার নামে পরিচিত, একাধিক দোষ দ্বারা উৎপন্ন রোগগুলিকে সমন্যজ-বিকার নামে পরিচিত; এগুলো ব্যাধি-রোগ নয় কিন্তু স্বতন্ত্র ও চিকিৎসাযোগ্য ব্যাধি।^[৭]^[৮] কাম (কামনা), ক্রোধ (রাগ), লোভা (লিপ্সা), মোহ (গভীর মানসিক সংযুক্তি, মূর্খতা), মতসার্য (হিংসা) এবং মদ (অহংকার, উন্মাদনা) হল ভগবদ্গীতায় উল্লিখিত মনের বিকার।

তথ্যসূত্র

↑ A Sanskrit-English Dictionary। Asian Educational Services। ১৯৯৮। পৃ. ৮৪৫। আইএসবিএন ৯৭৮৮১২০৬০৩৭০৭।
↑ Yoga Sutras of Patanjali। Motilal Banarsidass। ২০০১। পৃ. ৪৫৫। আইএসবিএন ৯৭৮৮১২০৮১৮২৫৫।
↑ Signless Signification in Ancient India and Beyond। Anthem Press। নভেম্বর ২০১৪। পৃ. ৮১। আইএসবিএন ৯৭৮১৭৮৩০৮৩৩২৯।
↑ Wilhelm Halbfass (২৮ জুলাই ১৯৯২)। On Being and What there is। পৃ. ৫৯–৬০)। আইএসবিএন ৯৭৮০৭৯১৪১১৭৮০।
↑ Discípulos de Ramakrishna। Preceptos de Perfección। Editorial Kier। পৃ. ৪০। আইএসবিএন ৯৭৮৯৫০১৭০১৪৬৩।
↑ K.Sivaraman (২০০১)। Saivism in Philosophical Perspective। Motilal Banarsidass। পৃ. ৭২। আইএসবিএন ৯৭৮৮১২০৮১৭৭১৫।
↑ Vasant Patil (১১ মে ২০১৪)। Clinical Diagnosis in Ayurveda। পৃ. ২০।
↑ eJIM Volume 4 (2011)। Barkhuis। পৃ. ৩৮। আইএসবিএন ৯৭৮৯৪৯১৪৩১১১১।

[1] A Sanskrit-English Dictionary। Asian Educational Services। ১৯৯৮। পৃ. ৮৪৫। আইএসবিএন ৯৭৮৮১২০৬০৩৭০৭।

[2] Yoga Sutras of Patanjali। Motilal Banarsidass। ২০০১। পৃ. ৪৫৫। আইএসবিএন ৯৭৮৮১২০৮১৮২৫৫।

[3] Signless Signification in Ancient India and Beyond। Anthem Press। নভেম্বর ২০১৪। পৃ. ৮১। আইএসবিএন ৯৭৮১৭৮৩০৮৩৩২৯।

[4] Wilhelm Halbfass (২৮ জুলাই ১৯৯২)। On Being and What there is। পৃ. ৫৯–৬০)। আইএসবিএন ৯৭৮০৭৯১৪১১৭৮০।

[5] Discípulos de Ramakrishna। Preceptos de Perfección। Editorial Kier। পৃ. ৪০। আইএসবিএন ৯৭৮৯৫০১৭০১৪৬৩।

[6] K.Sivaraman (২০০১)। Saivism in Philosophical Perspective। Motilal Banarsidass। পৃ. ৭২। আইএসবিএন ৯৭৮৮১২০৮১৭৭১৫।

[7] Vasant Patil (১১ মে ২০১৪)। Clinical Diagnosis in Ayurveda। পৃ. ২০।

[8] eJIM Volume 4 (2011)। Barkhuis। পৃ. ৩৮। আইএসবিএন ৯৭৮৯৪৯১৪৩১১১১।

[১]

[২]

[৩]

[৪]

[৫]

[৬]

[৭]

[৮]