বায়েজিদ লিংক রোড

উইকিপিডিয়া, মুক্ত বিশ্বকোষ থেকে
বায়েজিদ লিংক রোড
Bayezid Link Road.jpg
২০২০ সালের ১৭ই জানুয়ারীতে বায়েজিদ লিংক রোড
পথের তথ্য
চট্টগ্রাম উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ কর্তৃক রক্ষণাবেক্ষণকৃত
দৈর্ঘ্য৬ কিমি (৩.৭ মা)
অস্তিত্বকাল২০২০–বর্তমান
প্রধান সংযোগস্থল
থেকে:ফৌজদারহাট, ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়ক
পর্যন্ত:শেরশাহ

বায়েজিদ লিংক রোড চট্টগ্রামের প্রথম বাইপাস রোড। এটির মাধ্যমে ঢাকা থেকে আসা যানবাহন শহরে প্রবেশ না করেই রাঙ্গামাটি-রাউজান-কাপ্তাই-রাঙ্গুনিয়ায় যেতে পারবে। সড়কটির পশ্চিম প্রান্ত শুরু হয়েছে ফৌজদারহাট থেকে, আর পূর্ব প্রান্ত শেরশাহ এলাকায় শেষ হয়েছে। সড়কটির দৈর্ঘ্য ৬ কিলোমিটার।[১]

ইতিহাস[সম্পাদনা]

ফৌজদারহাট থেকে বায়েজিদ পর্যন্ত বিস্তৃত এই সড়কের নির্মাণ প্রকল্প হাতে নেয়া হয় ১৯৯৭ সালে। ১৯৯৯ সালে একনেকে প্রকল্পটি পাশ হয়। তখন এর নির্মাণ ব্যয় ছিল ৩৩ কোটি ৮১ লক্ষ টাকা। ২০০৪ সালে ৫৫ একর জমি অধিগ্রহণ করা হয়। সড়কটির কাজ শুরু হয় ফৌজদারহাট থেকে। প্রথমদিকেই রেলওয়ে ওভারব্রিজ নির্মাণ করা হয়। কিছু কাজও আগায়। ঠিক একই সময়ে এশিয়ান উইম্যান ইউনিভার্সিটিকেও একই জায়গায় নিজেদের ক্যাম্পাসের জন্য জমি বরাদ্দ দেয়া হয়। বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ আপত্তি তোলে। ফলে রাস্তা নির্মাণের কাজ বন্ধ হয়ে যায়। পুরো প্রকল্পটি পরিত্যক্ত অবস্থায় পড়ে থাকে। এভাবে চলার পর পুনরায় সরকারের কাছে এই রাস্তাটির গুরুত্ব তুলে ধরা হয়। প্রকল্পটি পুনরায় চালুর সিদ্ধান্ত হয়। বিশ্ববিদ্যালয়ের সাথে বিরোধের সমাধান করা না যাওয়ায় সিদ্ধান্ত নেয়া হয় তাদের ক্যাম্পাসের জায়গায় পড়ে যাওয়া রাস্তাটি তাদের কাছে ছেড়ে দেয়া হবে। নতুন করে হাতে নেয়া প্রকল্পের নির্মাণ ব্যয় ধরা হয় ২১০ কোটি টাকা। ২০১৫ সালে স্পেকট্রা ইঞ্জিনিয়ার্স লিমিটেডকে সড়কটি নির্মাণের আদেশ দেয়া হয়।[২] পরবর্তীতে খরচ কমিয়ে তা ১৭২ কোটি টাকায় করা হয়। কিন্তু নানা জটিলতায় খরচ ৩২০ কোটি টাকায় গিয়ে থামে।[২] ২০২০ সালে এসে প্রকল্পের কাজ প্রায় শেষ হয়ে আসে। গাড়ি চলাচলের জন্য তা খুলে দেয়া হয়।[১]

পরিবেশ অধিদপ্তরের সাথে বিরোধ[সম্পাদনা]

চট্টগ্রাম উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের (সিডিএ) অধীনে সড়কটি নির্মিত হয়। কিন্তু পরিবেশ অধিদপ্তর তাদের বিরুদ্ধে হিল কাটিং ম্যানেজমেন্ট প্ল্যান লঙ্ঘনের অভিযোগ তোলে। এবং ১০ কোটি টাকা জরিমানা দাবী করে। সিডিএ জরিমানা মওকুফের আপিল করে। কিন্তু সিডিএ-এর বিরুদ্ধে আবারো অতিরিক্ত পাহাড় কাটার অভিযোগ করা হয়। ২০১৭ সালেও তাদের ১০ লক্ষ টাকা জরিমানা করা হয়েছিল। ৬ কিলোমিটার সড়ক নির্মাণের জন্য ১৮ টি পাহাড় কাটা হয়। পরিবেশ অধিদপ্তরের মহাপরিচালক রফিক আহমেদ প্রকল্পস্থান সফর করেন। তিনি অভিযোগ করেন সিডিএ কে ২৬ ডিগ্রি কোণ করে পাহাড় কাটতে বললেও তারা ৯০ ডিগ্রি কোণে পাহাড় কেটেছে। ফলে যেকোন সময় ভূমিধসের আশঙ্কা রয়েছে।[৩]

পাহাড় ধস[সম্পাদনা]

২০২১ সালের জুন মাসের শুরুর দিকে এই রাস্তায় পর্যায়ক্রমে কয়েকটি পাহাড় ধসের ঘটনা ঘটে। কয়েকটি পাহাড় বেশি ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে ওঠে। ফলস্বরুপ চট্টগ্রাম উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ তিন মাস এই রাস্তাটিকে বন্ধ রাখার সিদ্ধান্ত নেয়। অর্থাৎ বর্ষা মৌসুমের পুরোটা সময় এই রাস্তাটি বন্ধ রাখা হবে। দুর্ঘটনার ঝুঁকি এড়াতে কিছুদিন আগে একপাশ বন্ধ রাখা হয়েছিল। আনুষ্ঠানিক ভাবে এখনও রাস্তাটিকে উদ্বোধন করা হয়নি। তবে প্রায় প্রতিদিন এই রাস্তা দিয়ে হাজার হাজার গাড়ি যাতায়াত করে। এছাড়া এই রাস্তাটি চট্টগ্রামের নতুন একটি পর্যটন কেন্দ্রও হয়ে ওঠে।[৪]

গঠন[সম্পাদনা]

এই সড়কটিতে একটি রেলওয়ে ওভারব্রিজসহ মোট ৬ টি ব্রিজ রয়েছে। কয়েকটি কালভার্টও রয়েছে। পাহাড় কেটে রাস্তাটি নির্মাণ করা হয়েছে।[১]

তথ্যসূত্র[সম্পাদনা]

  1. "ফৌজদারহাট-বায়েজিদ বাইপাস খুলছে ডিসেম্বরে"। দৈনিক আজাদী। ২০ সেপ্টেম্বর ২০২০। সংগ্রহের তারিখ ২৩ আগস্ট ২০২০ [স্থায়ীভাবে অকার্যকর সংযোগ]
  2. "অবশেষে চার লেন হচ্ছে, ব্যয় বাড়ছে ১৩৮ কোটি টাকা"। প্রথম আলো। ২০ অক্টোবর ২০১৬। সংগ্রহের তারিখ ২৩ আগস্ট ২০২০ 
  3. "চট্টগ্রাম উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের 'নেশা' পাহাড় কাটা"। ডেইলি স্টার। ৩ মার্চ ২০২০। সংগ্রহের তারিখ ২৩ আগস্ট ২০২০ 
  4. "পাহাড় ধসের আশঙ্কায় বায়েজিদ 'লিংক রোড' ৩ মাস বন্ধ ঘোষণা"মানবজমিন। সংগ্রহের তারিখ ২০২১-০৬-০৯