বাভারিয়া মূর্তি

উইকিপিডিয়া, মুক্ত বিশ্বকোষ থেকে
বাভারিয়া ভাস্কর্য এবঙ্গি সিঙ্গঙ্ঘ ২০০১-২০০২ সালে নতুন করে নির্মানের পরে
এরিয়াল ছবিতে বাভারিয়া মনুমেন্ট (২০০৯)

১৯শ শতকের ব্রোঞ্জ ও বালু-কাস্টে নির্মিত একটি ভাস্কর্যের নাম বাভারিয়া । ভাস্কর্যটি দক্ষিণ জার্মানির মিউনিখে অবস্থিত। নারীর আদলে নির্মিত এই ভাস্কর্যটি বাভারিয়ার শক্তি, সামর্থ্য ও যশকে প্রদর্শন করে।

গঠন[সম্পাদনা]

ভাস্কর্যটির সাথে একটি সিঁড়ি ও হল অব ফেম সঙ্গিযুক্ত। রাজা লুডভিগ প্রথম দ্বারা আয়োজিত একটি প্রতিযোগিতার মাধ্যমে এর নকশা নির্বাচন করা হয়। ১৮৪৪ সাল থেকে ১৮৫০ সাল সময়কালে এটি নির্মিত হয়। ধ্রুপদী সভ্যতার পর্ববর্তী সময়ে সম্পূর্ণ ব্রোঞ্জ আবৃত প্রথম বৃহদাকার ভাস্কর্য। এর বিশাল আকৃতির জন্য কয়েকটি অঙ্গিশে আলাদা ভাবে ভাস্কর্যটি নির্মিত হয়েছে। ভাস্কর্যটি দৈর্ঘ্যে ১৮ দশমিক ৫২ মিটার (৬০ ফুট ৯ ইঞ্চি)। এর ওজন প্রায় ৮৬ দশমিক ৩৬ টন। ভাস্কর্যটির পাদদেশের স্তম্ভটি প্রায় আট দশমিক ৯২ মিটার বা ২৮ ফুট উঁচু।

ইতিহাস[সম্পাদনা]

রাজা লুডভিগ প্রথমের বাল্যকাল থেকে একদিকে যেমন নেপোলিয়নের মত শক্তিশালী ক্ষমতাধর অন্যদিকে অস্ট্রিয়ার মতো রাজ্য। সবমিলিয়ে লুডভিগ প্রথম তার প্রতিনিধিত্বকারী ভিটেলবাখ হাউজের দেখানোর মত সেরকম কিছু ছিলো না। ১৮০৫ সালে, নেপোলিয়ন মিউনিখকে নিজের ক্ষমতাবল থেকে মুক্তি দেয়। নেপোলিয়ন লুডভিগের বাবা ম্যাক্সিমিলানকে বাভারিয়া রাজ্যের রাজা ঘোষণা করে। ১৮১৩ সালে লাইপজিগের যুদ্ধে নেপোলিয়নের পরাজয়ের পর মাত্র মিউনিখে শান্তি ফিরে আসে। এর আগ অব্দি বাভারিয়া সর্বদাই যুদ্ধ আর হানাহানির রণাঙ্গন হয়ে ছিলো।

এই ইতিহাস দেখে বড় হওয়া রাজা লুডভিগ ভবিষ্যতের রাজা হিসেবে ঘোষিত হওয়ার পর থেকে "সর্বসেরা জার্মান জাতি" চিন্তায় অনুপ্রাণিত হন। আর এই ধরনের আদর্শ নিয়ে বড় হওয়া লুডভিগ রাজা হওয়ার পর একাধিক প্রকল্প হাতে নেন। এই প্রকল্পগুলোই পরে একে একে বাভারিয়ার জাতীয় স্মৃতিস্তম্ভ হয়ে ওঠে। এই ধরনের জাতীয়তাবাদী চিন্তা থেকে গড়ে তোলা স্মৃতিস্তম্ভের মাঝে আছে দানুবে নদীর দিকে মুখ করে থাকা ভালহালা মন্দির, মিউনিখের হল অব ফেম (১৮৫৩) , ১৮৬৩ সালে নির্মিত স্বাধীনতাকক্ষ (Befreiungshalle)। এই সবগুলোই রাজার ব্যক্তিগত অর্থায়নে নির্মিত হয়েছিলো। প্রত্যাশা ছিলো এই স্থাপত্যকলাগুলো জার্মানির নিজস্বতা তুলে ধরবে যদিঅ এই নিয়ে বিতর্ক র্যে যায়।

১৮২৫ সালে বাবার মৃত্যুর পর সিংহাসনে বসা রাজা লুডভিগ গ্রীসের সাথে এক ধরনের আত্মিক সম্পর্কবোধ করতেন। প্রাচীণ গ্রীশ নিয়ে প্রচন্ড রকমের আগ্রহী এই রাজা মিউনিখকে "ইসার নদীর তীরের এথেন্স" হিসেবে গড়ে তুলতে চেয়েছিলেন। লুডভিগের দ্বিতীয় পুত্র অটো ১৮৩২ সালে গ্রীসের রাজা হন।

নির্মান[সম্পাদনা]

১৮৩৩ সালে হল অব ফেম নির্মানের জন্য নকশার ধারণআ পেতে রাজা লুডভিগ প্রথম একটি প্রতিযোগিতার আয়োজন করেন। নিজ রাজ্যের রাজধানী মিউনিখে একটি দেশাত্মবোধক স্থাপত্য নির্মানের ইচ্ছে রাজা লুডভিগের বাল্যকাল থেকেই ছিলো। ১৮৩২ সালের মার্চে ফ্রিডরিখ বন গ্যার্টনার, ইয়োসেফ ডানিয়েল অ'মুলার ও ফ্রিডরিখ জিবলান্ডের মতো শিলপীদের আপত্তি থাকা স্বত্তেও সবশেষে লেও ভন ক্লেনযেকে হল অব ফেম এর দায়িত্ব দেয়া হয়। ক্লাসিকাল ধরাণার এত বিশাল মূর্তি আগে কখনো নির্মিত না হওয়াতে রাজা লুডভিগ এই নকশা নিয়ে প্রচন্ড আশাবাদী ছিলেন। এই ব্যাপারে লুডভিগ লিখেন, "নিরো আর আমিই শুধুমাত্র এত বিশাল মূর্তি স্থাপনে সক্ষম"

বাভারিয়া মূর্তি ও হল অব ফেম(Ruhmeshalle)


তথ্যসূত্র[সম্পাদনা]