বাবা ভাঙ্গা
ভাঙ্গা | |
---|---|
![]() আনুমানিক অলৌকিক ক্ষমতার অধিকারী ও চিকিৎসক | |
জন্ম | স্ট্রোমিকা, উসমানীয় সাম্রাজ্য (বর্তমান ম্যাসেডোনিয়া প্রজাতন্ত্র) | ৩১ জানুয়ারি ১৯১১
মৃত্যু | ১১ আগস্ট ১৯৯৬ | (বয়স ৮৫)
জাতীয়তা | বুলগেরীয়[২] |
দাম্পত্য সঙ্গী | দিমিতার গোস্তারভ, ১০ই মে ১৯৪২ সালে বিবাহ সম্পন্ন |
বাবা ভাঙ্গা (বুলগেরীয়: баба Ванга) (জানুয়ারি ৩১, ১৯১১ – আগস্ট ১১, ১৯৯৬), (শৈশবে তার নাম ছিল ভ্যানগেলিয়া প্যানদেভা দিমিত্রোভা (Вангелия Пандева Димитрова), বিয়ের পর ভ্যানগেলিয়া গুস্টেরোভা নামে পরিচিত হন) (Вангелия Гущерова), ছিলেন একজন অন্ধ বুলগেরিয়ার রহস্যময় ও আধ্যাত্মিক শক্তিসম্পন্ন নারী,[৩][৪][৫] যিনি তার জীবনের অধিকাংশ সময় কাটিয়েছেন বুলগেরিয়ার কুজহু পার্বত্য অঞ্চলের রুপিটি নামক স্থানে। বিশ্বের লক্ষ লক্ষ মানুষ বিশ্বাস করেন তিনি কোন অলৌকিক ক্ষমতার অধিকারী ছিলেন।[৬]
জীবনী[সম্পাদনা]
ভাঙ্গা উসমানীয় সাম্রাজ্যের (বর্তমান ম্যাসেডোনিয়া প্রজাতন্ত্র) স্ট্রোমিকাতে জন্মগ্রহণ করেন। ছোটবেলা থেকেই তিনি স্বাস্থ্য জটিলতায় ভুগছিলেন। সেসময়কার স্থানীয় ঐতিহ্য অনুসারে, যখন একটি শিশু জন্মগ্রহণ করে তখন সাথে সাথেই তার নাম রাখা হয় না, যতক্ষণ পর্যন্ত না এটা নিশ্চিত হওয়া যায় যে শিশুটি বেঁচে থাকবে। যখন শিশু ভাঙ্গা কেঁদে উঠলেন তখন একজন ধাত্রী রাস্তায় বের হয়ে আসলেন এবং অপরিচিত একজন ব্যক্তির কাছে শিশুটির নাম রাখার জন্য অনুরোধ করলেন। অপরিচিত ব্যক্তিটি শিশুটির নাম অ্যান্ড্রোমাহা রাখার জন্য প্রস্তাব করলেন কিন্তু নামটি গ্রীক নামের সাথে অত্যধিক মিল থাকায় প্রত্যাখ্যান করা হল। দ্বিতীয় একজন অপরিচিত ব্যক্তি ভ্যানগেলিয়া নাম রাখার জন্য প্রস্তাব করলেন, যদিও এই নামটিও গ্রিক নামের সাথে মিল ছিল কিন্তু বুলগেরীয় সংস্কৃতির সাথে মিলও ছিল এবং এই নামটিই গ্রহণ করা হল।[৭][৮]
শৈশবে ভ্যানগেলিয়া নীল চোখ ও সোনালী চুলের একজন সাধারণ মেয়ে ছিলেন। তার বাবা অভ্যন্তরীণ ম্যাসেডোনীয় বিপ্লবী সংগঠনের একজন সক্রিয় সদস্য ছিলেন এবং প্রথম বিশ্বযুদ্ধে বুলগেরীয় সেনাবাহিনীতে বাধ্যতামূলকভাবে যোগদান করেছিলেন। শৈশবেই তার মা মৃত্যুবরণ করায় তার বাবা দ্বিতীয় বিয়ে করেন এবং তিনি তার সৎমায়ের আশ্রয়ে পালিত হন। যদিও তিনি অধিকাংশ সময় প্রতিবেশীদের সাথেই কাটাতেন। কথিত আছে, ছোটবেলা থেকেই তিনি ও তার বন্ধুরা মিলে রোগী ও চিকিৎসক সেজে খেলা করতেন। কথিত আছে, একদিন এক ঝড় ভাঙ্গাকে উঠিয়ে নিয়ে যায় এবং একটি মাঠে নিক্ষেপ করে (যদিও এই দাবির স্বপক্ষে কোন প্রমাণ নেই)। ব্যাপক অনুসন্ধানের পর তাকে ভয়ার্ত ও চোখে বালি ও কর্দমাক্ত অবস্থায় পাওয়া যায়। অনেক চেষ্টার পরও তিনি চোখ খুলতে পারছিলেন না এবং চোখের পুরো অংশ অপারেশনের জন্য টাকা ছিল না[৯] ;সুতরাং তিনি অন্ধ হয়ে যান।
১৯২৫ সালে জেমুন শহরে ভাঙ্গাকে একটি বিদ্যালয়ে ভর্তি করানো হয় যেখানে তাকে ব্রেইল পদ্ধতিতে পাঠদান করা হয়। সেখানেই তিনি পিয়ানো বাজানো, বুনন, রান্না ও পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতার উপর শিক্ষা নেন।[১০] এই বিদ্যালয়ে তিনি তিন বছর অবস্থান করেন। সেসময়ই তার সৎমা মৃত্যুবরণ করেন এবং তিনি তার সৎ ছোট ভাইদের দেখাশোনার জন্য বাড়িতে চলে যান। তার পরিবার দরিদ্র হওয়ায় প্রায় সবসময়ই তাকে অন্ধ থাকার পরও পরিশ্রম করতে হতো।
১৯৩৯ সালে তিনি ফুসফুসের রোগে আক্রান্ত হন, যদিও আগের বছরগুলোতে তার স্বাস্থ্য বেশ ভালো ছিল। সেমময় যদিও ডাক্তাররা বলেছিলেন তিনি খুব শীঘ্রই মৃত্যুবরণ করবেন কিন্তু তিনি সুস্থ হয়ে উঠেন। তার অলৌকিক ক্ষমতা জনপ্রিয় হতে থাকে দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময় থেকে। সেময় অনেকেই তার কাছে তাদের পরিবারের সদস্যরা বেঁচে আছেন কিনা এমন প্রশ্ন নিয়ে আসতে থাকেন। ১৯৪২ সালের ৮ই এপ্রিল বুলগেরীয় শাসক তৃতীয় বোরিস তার সাথে দেখা করার জন্য আসেন।[১১]
বিবাহ ও মৃত্যু[সম্পাদনা]
১৯৪২ সালের ১৯ই মে তিনি দিমিতার গোসতারভ নামে একজন সৈনিকের সাথে বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হন। দিমিতার ছিলেন পেটরিচের নিকটবর্তী ক্রেন্দাহিলিৎসা গ্রামের বাসিন্দা যিনি তার ভাইয়ের হত্যাকারীদের ব্যাপারে অনুসন্ধান করতে ভাঙ্গার কাছে আসতেন। বিয়ের পরপরই তারা পেটরিচ গমন করেন এবং সেখানেই ভাঙ্গার খ্যাতি আরো বৃদ্ধি পায়। কিছুদিন পর দিমিতার বাধ্যতামূলকভাবে বুলগেরীয় সেনাবাহিনীতে যোগদান করেন এবং কিছু সময় উত্তর গ্রীসে (যা সেসময় বুলগেরিয়ার অধীন ছিল) অতিবাহিত করেন। দিমিতার ১৯৪৭ সালে অতিরিক্ত অ্যালকোহল পানের কারণে অসুস্থ হয়ে পড়েন এবং ১৯৬২ সালের ১লা এপ্রিল মৃত্যুবরণ করেন।[১২]
ভাঙ্গা ১১ই আগস্ট ১৯৯৬ সালে স্তন ক্যান্সারে আক্রান্ত হয়ে মৃত্যুবরণ করেন। তার অন্ত্যেষ্টিক্রিয়ায় বিশিষ্ট ব্যক্তিসহ অনেক লোকসমাগম হয়েছিল।[১৩] ভাঙ্গার শেষ ইচ্ছা অনুসারে পেটরিচের তার বাড়িটি যাদুঘরে রূপান্তরিত করা হয় এবং ৫ই মে ২০০৮ সালে এটি জনসাধারণের জন্য উন্মুক্ত করে দেওয়া হয়।[১৪]
টীকা[সম্পাদনা]
- ↑ "NOTES FROM HISTORY: Baba Vanga"। ১৫ নভেম্বর ২০১৬ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ৯ ডিসেম্বর ২০১৫।
- ↑ Christianity and Modernity in Eastern Europe, Bruce R. Berglund, Brian A. Porter, Central European University Press, 2010, আইএসবিএন ৯৬৩৯৭৭৬৬৫৩, 9789639776654, pp. 252-253; 265.
- ↑ "The Weiser Field Guide to the Paranormal: Abductions, Apparitions, ESP, Synchronicity, and More Unexplained Phenomena from Other Realms, Judith Joyce, Weiser Books, 2011, {{আইএসবিএন|1609252985}}, pp. 21-25."। ৭ নভেম্বর ২০১৪ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ৯ ডিসেম্বর ২০১৫।
- ↑ The History of Bulgaria, The Greenwood histories of the modern nations, Frederick B. Chary, ABC-CLIO, 2011, আইএসবিএন ০৩১৩৩৮৪৪৬০, pp. 145-146.
- ↑ In Search of Destiny: The Universe and Man, Robert A. Welcome, AuthorHouse, 2012, আইএসবিএন ১৪৭৭২৩৭৪৭X, pp. 35-36.
- ↑ Прoрoчeствaтa на Вaнгa. Жeни Кoстaдинoвa, Издателство Труд, [[:en:Special:BookSources/9545280743|আইএসবিএন ৯৫৪-৫২৮-০৭৪-৩]],Страници 696.
- ↑ According to Encyclopædia Britannica Eleventh Edition, at the beginning of the 20th century the Bulgarians constituted the majority of the population in the whole region of Macedonia. They are described in the encyclopaedia as "Slavs, the bulk of which is regarded by almost all independent sources as Bulgarians": 1,150,000, whereof, 1,000,000 Orthodox and 150,000 Muslims (the so-called Pomaks); Turks: ca. 500,000 (Muslims); Greeks: ca. 250,000, whereof ca. 240,000 Orthodox and 14,000 Muslims; Albanians: ca. 120,000, whereof 10,000 Orthodox and 110,000 Muslims; Vlachs: ca. 90,000 Orthodox and 3,000 Muslims; Jews: ca. 75,000; Roma: ca. 50,000, whereof 35,000 Orthodox and 15,000 Muslims; In total 1,300,000 Christians (almost exclusively Orthodox), 800,000 Muslims, 75,000 Jews, a total population of ca. 2,200,000 for the whole of Macedonia.
- ↑ Честотно-тълковен речник на личните имена у българите, Николай П. Ковачев, Държавно издателство "Д-р Петър Берон", 1987 г. стр. 58. Dictionary of Personal Names of the Bulgarians, Nikolai P. Kovatchev State Publishing House "Dr Petar Beron", 1987, p 58. (Bg.)
- ↑ The truth about Vanga, p. 42
- ↑ The truth about Vanga, pp. 43-44
- ↑ Joyce, Judith (২০১০)। The Weiser Field Guide to the Paranormal: Abductions, Apparitions। Weiser Books।
- ↑ The truth about Vanga, pp. 61-65, 69-70, 80-81
- ↑ ru:Файл:Vanga's-Grave-Rupite.JPG
- ↑ Prophetess Baba Vanga's Petrich house becomes museum, The Sofia Echo,
উৎস[সম্পাদনা]
- Стоянова [Stoyanova], Красимира [Krasimira] (1996). Истината за Ванга [The truth about Vanga] (in Bulgarian). Sofia: Balgarski Pisatel. ISBN 954-443-170-5.
- Ostrander, Sheila; Schroeder, Lynn (1970). "Vanga Dimitrova: The Bulgarian Oracle". Psychic discoveries behind the Iron Curtain. Englewood Cliffs, NJ: Prentice Hall. pp. 259–281. ISBN 978-0-13-732230-5.
- Valtchinova, Galia (2005). "Vanga, la "Pythie bulgare": idées et usages de l'Antiquité en Bulgarie socialiste". Dialogues d'histoire ancienne (in French) 31 (1): 93–127. doi:10.3406/dha.2005.2487. Retrieved 1 January 2011.
- Ivanov, Petko; Izmirlieva, Valentina (2003). "Betwixt and Between: The Cult of Living Saints in Contemporary Bulgaria". Folklorica, Journal of the Slavic and East European 8 (1): 33–53. Retrieved 1 January 2011.
বহিঃসংযোগ[সম্পাদনা]
- Stephen Kinzer: Rupite Journal; For a Revered Mystic, a Shrine Now of Her Own in The New York Times, April 5, 1995
- Baba Vanga - Prophecies of the Bulgarian Prophet[dead link]
- Ideological Drive Against Paraperception Radio Free Europe Research, March 24, 1983, in Open Society Archives
- (in Russian) An article by Natalia Baltzun, translated by Kristina Hristova (Bulgaria)
- (in Russian) Vanga's Prophecies: Product of the Bulgarian Secret Services
- (in French) An article in french about Vanga's propheties, by K8 Transmission
- NOTES FROM HISTORY: Baba Vanga ওয়েব্যাক মেশিনে আর্কাইভকৃত ১৫ নভেম্বর ২০১৬ তারিখে[dead link], The Sofia Echo, December 19, 2005
- Baba Vanga say about 2012 [dead link]