বানৌজা টুনা

উইকিপিডিয়া, মুক্ত বিশ্বকোষ থেকে
ইতিহাস
বাংলাদেশ
নাম: বানৌজা টুনা
নির্মাণাদেশ: ২৪ এপ্রিল, ২০১৮
নির্মাতা: খুলনা শিপইয়ার্ড লিমিটেড
অর্জন: ৭ নভেম্বর, ২০১৯
কমিশন লাভ: ১২ জুলাই, ২০২৩
মাতৃ বন্দর: চট্টগ্রাম
শনাক্তকরণ: এল৯০৭
অবস্থা: সক্রিয়
সাধারণ বৈশিষ্ট্য
প্রকার ও শ্রেণী: সন্দ্বীপ-শ্রেণীর ল্যান্ডিং ক্রাফট ইউটিলিটি
ওজন: ৬০০ টন
দৈর্ঘ্য: ৪২ মিটার (১৩৮ ফু)
প্রস্থ: ১০ মিটার (৩৩ ফু)
গভীরতা: ১.৮ মিটার (৫.৯ ফু)
প্রচালনশক্তি:
  • ২ × ৬এওয়াইএম-ডব্লিউইটি ৪৪০ অশ্বশক্তি (৩৩০ কিওয়াট) ইয়ানমার ডিজেল ইঞ্জিন (জাপান);
  • ২ × শ্যাফট
গতিবেগ: ১২ নট (২২ কিমি/ঘ; ১৪ মা/ঘ)
সীমা: ১,২০০ নটিক্যাল মাইল (২,২০০ কিমি; ১,৪০০ মা)
সহনশীলতা: ৭ দিন
লোকবল: ২৫ জন
সেন্সর এবং
কার্যপদ্ধতি:
  • ১ × ফুরুনো ডিআরএস৪ডব্লিউ র‍্যাডার (জাপান);
  • ১ × ফুরুনো এফএআর-৩৩২০ চার্ট র‍্যাডার (জাপান)
রণসজ্জা:
  • ২ × ২০ মিমি বিমান বিধ্বংসী কামান;
  • ৪ × ১২.৭ মিমি বিমান বিধ্বংসী মেশিনগান

বাংলাদেশ নৌবাহিনী জাহাজ (সংক্ষেপেঃ বানৌজা) টুনা বাংলাদেশ নৌবাহিনীর সন্দ্বীপ-শ্রেণীর একটি ল্যান্ডিং ক্রাফট ইউটিলিটি (এলসিউই) জাহাজ। জাহাজটিকে দেশীয় প্রযুক্তিতে খুলনা শিপইয়ার্ডে নির্মাণ করা হয়। বর্তমানে জাহাজটি ২১ এলসিইউ স্কোয়াড্রন এর অধীনে সামুদ্রিক এবং উপকূলীয় অঞ্চলে উভচর অভিযান পরিচালনার পাশাপাশি সেনাসদস্য, রসদ, অস্ত্র ও গোলাবারুদ, ট্যাংক, সামরিক যানবাহন এবং বিভিন্ন প্রকার সামরিক সরঞ্জাম পরিবহনে সক্ষম। এছাড়াও জাহাজটি দুর্যোগ কালীন সময়ে উদ্ধার অভিযান পরিচালনা ও দুর্যোগ পরবর্তী ত্রাণ তৎপরতা কার্যক্রমে অংশগ্রহণ করতে সক্ষম।[১][২][৩][৪][৫][৬][৭][৮][৯][১০]

ইতিহাস[সম্পাদনা]

সশস্ত্র বাহিনীর জন্য গৃহীত দীর্ঘমেয়াদী আধুনিকায়ন পরিকল্পনার অংশ হিসেবে বাংলাদেশ সরকার দেশীয় উৎস থেকে সমরাস্ত্র সংগ্রহ বৃদ্ধির সিদ্ধান্ত গ্রহণ করে। এছাড়াও উপকূলবর্তী নৌঘাঁটিতে চলাচল করার জন্য এসব উভচর জাহাজের প্রয়োজন ছিলো। যুদ্ধ ও শান্তি কালীন সময়ে চট্টগ্রাম, মোংলা, সেন্ট মার্টিন দ্বীপ এবং তৎসংলগ্ন উপকূলীয় এলাকায় উভচর অভিযান পরিচালনার পাশাপাশি ল্যান্ডিং ফোর্স, ট্যাংক, অস্ত্র, গোলাবারুদ ও রসদ সরবরাহের জন্য এসব জাহাজের প্রয়োজনীয়তা বিশেষভাবে পরিলক্ষিত হয়। সে অনুযায়ী বাংলাদেশ নৌবাহিনীর জন্য খুলনা শিপইয়ার্ডে জাহাজ নির্মানের পদক্ষেপ নেয়া হয়। এরই ধারাবাহিকতায় ১৪ মার্চ, ২০১৮ সালে দেশীয় প্রতিষ্ঠান এমআরজেড ইন্টারন্যাশনাল, ঢাকা এবং খুলনা শিপইয়ার্ড এর মধ্যে ল্যান্ডিং ক্র্যাফট জাহাজ নির্মাণে প্রজেক্ট ডিজাইন, সাপ্লাই এবং লজিস্টিক ম্যানেজমেন্ট সংক্রান্ত একটি চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়। ২৪ এপ্রিল, ২০১৮ সালে তৎকালীন সহকারী নৌবাহিনী প্রধান (পারসোনেল) ভাইস এডমিরাল মোহাম্মদ শাহীন ইকবাল-এনবিপি, এনইউপি, এনডিসি, এএফডব্লিউসি, পিএসসি মহোদয় খুলনা শিপইয়ার্ড প্রাঙ্গনে এক অনুষ্ঠানে কিল লেয়িং এর মাধ্যমে নির্মাণ কাজের আনুষ্ঠানিক সূচনা করেন। খুলনা শিপইয়ার্ডের তৎকালীন ব্যবস্থাপনা পরিচালক কমোডর আনিছুর রহমান মোল্লা-(এল), এনইউপি, পিএসসি-বিএন, এর সভাপতিত্বে উক্ত অনুষ্ঠানে প্রতিষ্ঠানটির জিএমবৃন্দ ছাড়াও উর্ধ্বতন সামরিক ও বেসামরিক কর্মকর্তাগণ উপস্থিত ছিলেন। নির্মাণকাজ শেষে ৭ নভেম্বর, ২০১৯ সালে বানৌজা টুনা জাহাজটি বাংলাদেশ নৌবাহিনীকে হস্তান্তর করা হয়। অবশেষে ১২ জুলাই, ২০২৩ সালে জাহাজটি নৌবাহিনীতে কমিশন লাভ করে। এছাড়া নবনির্মিত এলসিইউ জাহাজটি আশ্রয়ণ-৩ প্রকল্পের আওতায় বলপূর্বক বাস্তুচ্যুত মায়ানমার জনগোষ্ঠিকে চট্টগ্রাম হতে ভাষাণচরে স্থানান্তর ও তাদের নিত্য প্রয়োজনীয় রসদ সরবরাহসহ বিভিন্ন কার্যক্রমে নিয়োজিত রয়েছে। পাশাপাশি এলসিইউ জাহাজটি জাতিসংঘ, আন্তর্জাতিক সংস্থা ও বিভিন্ন দেশের কূটনৈতিকবর্গকে সকল প্রকার সহায়তাসহ মায়ানমার হতে বলপূর্বক বাস্তুচ্যুত মায়ানমার জনগোষ্ঠির বিভিন্ন কল্যাণমূলক কর্মকান্ডে ব্যবহৃত হচ্ছে।

বৈশিষ্ট্য ও যান্ত্রিক কাঠামো[সম্পাদনা]

বানৌজা টুনা জাহাজটির দৈর্ঘ্য ৪২ মিটার (১৩৮ ফু), প্রস্থ ১০ মিটার (৩৩ ফু) এবং গভীরতা ১.৮ মিটার (৫.৯ ফু)। এই উভচর জাহাজটির ওজন ৬০০ টন এবং জাহাজটিতে রয়েছে ২টি শ্যাফট ও ২টি ৬এওয়াইএম-ডব্লিউইটি ৪৪০ অশ্বশক্তি (৩৩০ কিওয়াট) ইয়ানমার ডিজেল ইঞ্জিন (জাপান)। জাহাজটির সর্বোচ্চ গতিবেগ ঘণ্টায় ১২ নট (২২ কিমি/ঘ; ১৪ মা/ঘ)। সমুদ্রপৃষ্ঠ অনুসন্ধানের জন্য এটি ১টি ফুরুনো ডিআরএস৪ডব্লিউ র‍্যাডার (জাপান) এবং ১টি ফুরুনো এফএআর-৩৩২০ চার্ট র‍্যাডার (জাপান) দ্বারা সজ্জিত। এটি ২৫ জন জনবল নিয়ে একনাগাড়ে ৭ দিন অভিযান পরিচালনার পাশাপাশি ১১৫ টন কার্গো বহন করতে সক্ষম। এছাড়াও জাহাজটি ৩টি সামরিক ট্যাংক, ২১৫ জন সেনাসদস্য এবং ৬টি সামরিক ট্রাক পরিবহন করতে সক্ষম।

রণসজ্জা[সম্পাদনা]

দুর্যোগ ও শান্তিকালীন সময়ে সহায়ক ভূমিকায় নিয়োজিত এই জাহাজটিতে রয়েছে:

  • ২টি ২০ মিমি বিমান-বিধ্বংসী কামান;
  • ৪টি সিআইএস-৫০ ১২.৭ মিমি বিমান-বিধ্বংসী মেশিনগান;
  • এছাড়াও যুদ্ধকালীন বিশেষ পরিস্থিতিতে জাহাজটিতে ৬টি ভূমি থেকে আকাশে উৎক্ষেপণযোগ্য বিমান বিধ্বংসী ক্ষেপণাস্ত্র কিউডব্লিউ-২ ম্যানপ্যাড মোতায়েন করা যায়।

তথ্যসূত্র[সম্পাদনা]

  1. "LANDING CRAFT UTILITY – Khulna Shipyard Ltd" (ইংরেজি ভাষায়)। ২০২১-১১-২৭ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২০২১-১১-২৭ 
  2. "Contact Signing For 04 X LCU Vessel For Rohingya pepole. (Bangladesh Navy, Bhashan Char Project)"Facebook। ২০২৩-০৭-১৩ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২০২৩-০৭-০২ 
  3. "04 টি ল্যান্ডিং ক্রাফট ইউটিলিটি এর কিল লেয়িং অনুষ্ঠান"www.facebook.com। ২০২৩-০৭-০২ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২০২৩-০৭-০২ 
  4. "রোহিঙ্গাদের ভাসানচরে পাঠাতে তৈরি হচ্ছে ৪টি জাহাজ"Dhaka Tribune Bangla। ২০১৯-১১-১৯। ২০২১-১১-২৮ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২০২১-১১-২৮ 
  5. "Tender specification of spare parts for main engine and diesel generator- BNS TUNA, TIMI & DOLPHIN"Naval Store Sub Depot, Dhaka (ইংরেজি ভাষায়)। সংগ্রহের তারিখ ২০২২-১১-১৪ 
  6. "কমিশনিং অনুষ্ঠান বানৌজা শের-ই-বাংলা, ৪১ পিসিএস এবং এলসিইউ স্কোয়াড্রন"। ১২ জুলাই ২০২৩ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ১২ জুলাই ২০২৩ 
  7. "বানৌজা শের-ই-বাংলা ঘাঁটির উপর নির্মিত প্রামাণ্যচিত্র" 
  8. "খুলনা শীপইয়ার্ড লিমিটেডে নির্মিত ৪টি পেট্রোল ক্রাফট ও ৪টি এলসিইউ এর কমিশনিং" 
  9. আইএসপিআর (২০২৩-০৭-১২)। "পটুয়াখালীর কলাপাড়ায় নাবিক প্রশিক্ষণ ও এভিয়েশন সুবিধা সম্বলিত ঘাঁটি বানৌজাশের-ই-বাংলা এবং খুলনা শীপইয়ার্ড লিমিটেডে নির্মিত ৪টি পেট্রোল ক্রাফট ও ৪টি এলসিইউ এর কমিশনিং করলেন মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা - ISPR-আন্তঃবাহিনী জনসংযোগ পরিদপ্তর, বাংলাদেশ"ISPR---আন্তঃবাহিনী জনসংযোগ পরিদপ্তর, বাংলাদেশ। ২০২৩-০৭-১৩ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২০২৩-০৭-১৩ 
  10. আইএসপিআর (২০২৩-০৭-১২)। "পটুয়াখালীর কলাপাড়ায় নাবিক প্রশিক্ষণ ও এভিয়েশন সুবিধা সম্বলিত ঘাঁটি বানৌজাশের-ই-বাংলা এবং খুলনা শীপইয়ার্ড লিমিটেডে নির্মিত ৪টি পেট্রোল ক্রাফট ও ৪টি এলসিইউ এর কমিশনিং করলেন মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা - ISPR-আন্তঃবাহিনী জনসংযোগ পরিদপ্তর, বাংলাদেশ" (পিডিএফ)ISPR---আন্তঃবাহিনী জনসংযোগ পরিদপ্তর, বাংলাদেশ। ২০২৩-০৭-১৩ তারিখে মূল (পিডিএফ) থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২০২৩-০৭-১৩