বিষয়বস্তুতে চলুন

বানৌজা আবু বকর (২০১৪)

উইকিপিডিয়া, মুক্ত বিশ্বকোষ থেকে
ইতিহাস
বাংলাদেশ
শ্রেণী এবং ধরন: রূপান্তরিত টাইপ ০৫৩এইচ২ ফ্রিগেট
নাম: বানৌজা আবু বকর
নির্মাতা: হুডং শিপইয়ার্ড, সাংহাই, গণচীন
অভিষেক: ২৮ ডিসেম্বর, ১৯৮৫
অর্জন: ডিসেম্বর, ২০১৩
কমিশন লাভ: ১ মার্চ, ২০১৪
কার্যসময়: ২০১৪-বর্তমান
অবস্থা: সক্রিয়
সাধারণ বৈশিষ্ট্য
ওজন:
  • ১,৭০০ টন (স্বাভাবিক অবস্থায়)
  • ২০০০ টন (পুর্ণ অবস্থায়)
দৈর্ঘ্য: ১০৩.২০ মিটার (৩৩৮.৬ ফু)
প্রস্থ: ১১.৩০ মিটার (৩৭.১ ফু)
ড্রাফট: ৩.১৯ মিটার (১০.৫ ফু)
প্রচালনশক্তি:
  • ২ × হুডং-ঝংহুয়া ১৮ই৩৯০ভিএ ১২,০০০ অশ্বশক্তি (৮,৯০০ কিওয়াট) ডিজেল ইঞ্জিন (গণচীন);
  • জিনান জেড১২ ভি১৯০বিসিডি-২ ডিজেল জেনারেটর;
  • ২ × শ্যাফট
গতিবেগ: ২৬ নট (৪৮ কিমি/ঘ; ৩০ মা/ঘ)
সীমা: ২,৭০০ নটিক্যাল মাইল (৩,১০০ মা; ৫,০০০ কিমি), ১৮ নট (৩৩ কিমি/ঘ; ২১ মা/ঘ) গতিতে
লোকবল: ১৬০ (২৭ জন কর্মকর্তা)
সেন্সর এবং
কার্যপদ্ধতি:
  • সোনার:
    • এসজেডি-৫ মধ্যম কম্পাঙ্ক বিশিষ্ট সোনার
    • এসজেসি-১বি রিকনিসেন্স সোনার
    • এসজেএক্স-৪ যোগাযোগ সোনার
    • সিটিসি-১৬২৯ যুদ্ধকালীন তথ্যনিয়ন্ত্রণ ব্যবস্থা
    • ইকো টাইপ ৫ (সম্মুখে অবস্থিত)
  • র‍্যাডার ব্যবস্থা:
    • সেলেক্স ইএস ৩ডি মাল্টিফাংশনাল র‍্যাডার, সি-ব্যান্ড
    • টাইপ ৫১৭এইচ-১ (নাইফ রেস্ট) দ্বিমাত্রিক দূরপাল্লা বিশিষ্ট, এ ব্যান্ড
    • ২ x রাকাল আর এম-১২৯০, আই ব্যান্ড
  • গোলা-নিক্ষেপ নিয়ন্ত্রণ:
    • টাইপ ৩৫২ র‍্যাডার (স্কয়ার টাই), আই ব্যান্ড
    • টাইপ ৩৪৩ (ওয়াস্প হেড), জি/এইচ ব্যান্ড
    • ২ x টাইপ ৩৪১ (বিমানবিধ্বংসী কামানের জন্য)
যান্ত্রিক যুদ্ধাস্ত্র
ও ফাঁদ:
  • তথ্য সন্নিবেশক: এইচএন ৯০০
  • যোগাযোগ: এসএনটিআই-২৪০ স্যাটকম; আরডব্লিউডি-৮ (জোড়া) ইন্টেরসেপ্ট ই ডব্লিউ
  • টাইপ ৯২৩০আই র‍্যাডার সতর্ক সংকেত সংগ্রাহক
  • টাইপ ৬৫১এ আইএফএফ
রণসজ্জা:
  • ক্ষেপণাস্ত্র:
    • জাহাজবিধ্বংসী - ২x৪ সি-৮০২এ
  • নৌ-কামান:
    • ২ x টাইপ ৭৯এ ১০০ মিমি (জোড়া)
    • ৪ x টাইপ ৭৬ ৩৭ মিমি বিমানবিধ্বংসী কামান (২ জোড়া)
  • ডেপ্থ চারজার:
    • ২ x ডিসি র‍্যাক
    • ৪ x টাইপ ৬৪ ডিসি নিক্ষেপক
  • ডিকয়: ২ x এমকে ৩৬ আরবিওসি ৬-ব্যারেলযুক্ত শ্যাফ উৎক্ষেপক

বাংলাদেশ নৌবাহিনী জাহাজ (সংক্ষেপেঃ বানৌজা) আবু বকর বাংলাদেশ নৌবাহিনীর একটি রূপান্তরিত টাইপ ০৫৩এইচ২ ফ্রিগেট যা ২০১৪ সালে যুক্ত হয়। ইসলামের ১ম খলিফায়ে রাশেদিন হযরত আবু বকর (রাঃ) এর সম্মানার্থে এটির নামকরণ করা হয়।[][][][]

ইতিহাস

[সম্পাদনা]

টাইপ ০৫৩এইচ২ এই ফ্রিগেটটি ২৮ ডিসেম্বর, ১৯৮৫ সালে হুডং শিপইয়ার্ডে নির্মিত হয়। যা ১৯৮৬ সালের ১৪ ডিসেম্বর তারিখে চীনের পিপলস লিবারেশন আর্মি নেভি'র পূর্ব সাগর নৌবহরে হুয়াংশি নামে যুক্ত হয়। পরবর্তীতে ২০১৩ সালে উহু নামে আরেকটি ফ্রিগেট সহ এই ফ্রিগেটটিকে বিমুক্ত করে এবং সংস্কার করতে জিয়াঙ্গান পোতাঙ্গনে পাঠায়। প্রয়োজনীয় সংস্কার কাজ শেষে উক্ত জাহাজ দুটি বাংলাদেশ নৌবাহিনীর নিকট বিক্রয় করা হয়। বাংলাদেশে পৌঁছানোর পর জাহাজটি বানৌজা আবু বকর নামে ১ মার্চ, ২০১৪ সালে আনুষ্ঠানিকভাবে যুক্ত হয়।

বানৌজা আবু বকর ২১ থেকে ২৫ এপ্রিল ২০১৪ পর্যন্ত, চীনের শানডং প্রদেশের কিংডাওতে ১৪তম পশ্চিম প্রশান্ত মহাসাগরীয় নৌ সিম্পোজিয়াম এবং আন্তর্জাতিক ফ্লিট রিভিউ-২০১৪ অনুষ্ঠানে অংশ নেয়। সফরের সময়, জাহাজটি একটি শুভেচ্ছা মিশনে ক্লাং, মালয়েশিয়া, হংকং, সানিয়া, চীন এবং ফুকেট, থাইল্যান্ডের বন্দর পরিদর্শন করে।

১২ মার্চ, ২০১৫ সালে জাহাজটি ল্যাংকাউই ইন্টারন্যাশনাল মেরিটাইম অ্যান্ড অ্যারোস্পেস এক্সিবিশন (লিমা-২০১৫) এ অংশ নিতে মালয়েশিয়ার উদ্দেশ্যে রওনা হয়। ফেরার পথে জাহাজটি একটি শুভেচ্ছা মিশনে মিয়ানমারের ইয়াঙ্গুন বন্দর পরিদর্শন করে। পরবর্তীতে ৩১ মার্চ ২০১৫ সালে চট্টগ্রামে আসে।

জাহাজটি ২০১৫ সালে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের নৌবাহিনীর সাথে একটি বার্ষিক দ্বিপাক্ষিক অনুশীলন কোঅপারেশন অ্যাফ্লোট রেডিনেস অ্যান্ড ট্রেনিং (ক্যারাট) এ অংশ নেয়।

বানৌজা আবু বকর ২১ থেকে ২৩ অক্টোবর ২০১৫ পর্যন্ত একটি শুভেচ্ছা সফরে শ্রীলঙ্কার কলম্বো বন্দর পরিদর্শন করে।

২০১৭ সালে, জাহাজটি একটি আপগ্রেডেশন প্রক্রিয়ার মধ্য দিয়ে গিয়েছিল যেখানে এর পুরানো চাইনিজ টাইপ ৩৫৪ সারফেস সার্চ রাডার এবং টাইপ ৫১৭এইচ-১ এয়ার সার্চ রাডারকে ইতালির তৈরি নতুন প্রজন্মের সেলেক্স ইএস ক্রোনোস নেভাল থ্রিডি মাল্টিফাংশন সি-ব্যান্ড এইএসএ রাডার দিয়ে প্রতিস্থাপন করা হয়েছিল। এই নতুন রাডারের রেঞ্জ ২৫০ কিমি।

বানৌজা আবু বকর বঙ্গোপসাগরের উত্তরাঞ্চলে ৪ থেকে ৫ অক্টোবর ২০২০ তারিখে ভারতীয় নৌবাহিনীর সাথে একটি দ্বিপাক্ষিক মহড়া বঙ্গসাগর-২০২০ এ অংশগ্রহণ করে। বঙ্গোসাগর মহড়া শেষ হওয়ার পর বাংলাদেশ-ভারত সামুদ্রিক সীমান্তে সমন্বিত যৌথ প্যাট্রোল (করপ্যাট-২০২০) মহড়ায় অংশ নেয়।

বৈশিষ্ট্য ও যান্ত্রিক কাঠামো

[সম্পাদনা]

বানৌজা আবু বকর জাহাজটির দৈর্ঘ্য ১০৩.২০ মিটার (৩৩৮.৬ ফু), প্রস্থ ১১.৩০ মিটার (৩৭.১ ফু) এবং গভীরতা ৩.১৯ মিটার (১০.৫ ফু)। জাহাজটিতে রয়েছে ২টি টাইপ ১২ই ৩৯০ ভোল্ট ডিজেল ইঞ্জিন; ৭,৮৮৫ অশ্বশক্তি (৮৮০ কিলোওয়াট)। যার ফলে জাহাজটি সর্বোচ্চ ২৬ নট (৪৮ কিমি/ঘ; ৩০ মা/ঘ) গতিতে চলতে সক্ষম। এছাড়াও জাহাজটিতে অত্যাধুনিক সারভাইলেন্স র‍্যাডার, অগ্নি নিয়ন্ত্রণ ব্যবস্থা, গোলানিক্ষেপ নিয়ন্ত্রণ ব্যবস্থা, সাবমেরিন বিধ্বংসী রকেট, র‍্যাডার জ্যামিং ব্যবস্থা রয়েছে।

রণসজ্জা

[সম্পাদনা]

ফ্রিগেটটি আধুনিক প্রযুক্তি সম্পন্ন কামান, ভূমি থেকে আকাশে এবং ভূমি থেকে ভূমিতে উৎক্ষেপণযোগ্য ক্ষেপণাস্ত্র সহ নানাবিধ অস্ত্র ও সামরিক প্রযুক্তিতে সজ্জিত। ফ্রিগেটটির রণসজ্জায় নিম্নোক্ত সমরাস্ত্র রয়েছে:

  • ৪ কোষ বিশিষ্ট ২ টি সি-৮০২এ ক্ষেপণাস্ত্র। জাহাজ থেকে শত্রু জাহাজে বা ভূমিতে নিক্ষেপণযোগ্য এই ক্ষেপণাস্ত্র ২২০ কিলোমিটার দূরের লক্ষ্যবস্তুতে আঘাত করতে সক্ষম।
  • ২টি 'পিজে ৩৩এ দ্বৈত ১০০ মিমি নেভাল গান' বা কামান যা সমুদ্র তটবর্তী লক্ষ্যবস্তুতে আঘাত হানতে কার্যকর কামান।
  • ৪টি 'টাইপ ৭৬ দ্বৈত ৩৭ মিমি এএ গান' বা কামান যা সমুদ্র তটবর্তী লক্ষ্যবস্তুতে আঘাত হানতে কার্যকর কামান।
  • ২টি ৫ টিউব বিশিষ্ট 'আরবিইউ-১২০০ এএসডাব্লিউ' রকেট লাঞ্চার ও
  • ২টি 'ডেপথ চার্জ র‍্যাকস' যা নিমজ্জিত সাবমেরিনে আঘাত করতে পারে।
  • ২টি ৬ ব্যারেল বিশিষ্ট 'মার্ক-৩৬ এসআরবিওসি' ডিকয় রকেট লঞ্চার যা শত্রু নিক্ষিপ্ত ক্ষেপণাস্ত্র ধ্বংস করার সক্ষমতা রাখে।

তথ্যসূত্র

[সম্পাদনা]
  1. "গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের ০৭ (সাত) বছরের অগ্রগতির তথ্য প্রচারের ব্যবস্থাকরণ সম্পর্কিত" (পিডিএফ)। ২০১৬-০৪-০৭। ২০২২-১০-১৮ তারিখে মূল (পিডিএফ) থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২০২৩-০৩-২১ 
  2. "বাংলাদেশ ও ভারত নৌবাহিনীর মধ্যকার যৌথ টহলে অংশ নিতে নৌবাহিনীর দুটি যুদ্ধজাহাজ 'আবু বকর' ও 'ধলেশ¡রী' এর চট্টগ্রাম ত্যাগ"আইএসপিআর। ২০২১-১১-২৮ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২০২১-১১-২৮ 
  3. "Previous Huangshi, Type 053H2 frigate named by BNS Abu BAKR"। ২১ মার্চ ২০২৩ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২১ মার্চ ২০২৩ 
  4. "সমরাস্ত্রে সজ্জিত বাংলাদেশ নৌবাহিনী জাহাজ (বি.এন.এস) আবু বকর"। ১ এপ্রিল ২০২৩ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ১ এপ্রিল ২০২৩