বাংলাদেশ আর্মি এভিয়েশন গ্রুপ
বাংলাদেশ আর্মি এভিয়েশন গ্রুপ | |
---|---|
সক্রিয় | ১ জানুয়ারি ১৯৭৮ – বর্তমান |
দেশ | বাংলাদেশ |
শাখা | বাংলাদেশ সেনাবাহিনী |
ধরন | সেনা উড্ডয়ন শাখা |
আকার | ২০৪ (৩০+ পাইলট) |
সদর দপ্তর | তেজগাঁও বিমানবন্দর, ঢাকা সেনানিবাস |
ডাকনাম | আর্মি এভিয়েশন এএজি |
যুদ্ধসমূহ | পার্বত্য চট্টগ্রাম সংঘাত |
সজ্জা | দেখুন বাংলাদেশ সশস্ত্র বাহিনীর পদক |
কমান্ডার | |
আর্মি এয়ার কমান্ডার | মেজর জেনারেল আই কে এম মোস্তাহসিনুল বাকী |
প্রতীকসমূহ | |
পরিচয়সূচক চক্র | |
ফিন ফ্ল্যাশ | |
বিমানবহর | |
প্রশিক্ষকদের হেলিকপ্টার | বেল ২০৬ |
ইউটিলিটি হেলিকপ্টার | ইউরোকপ্টার এএস৩৬৫ |
প্রশিক্ষণ বিমান | সেসনা ১৫২, ডায়মন্ড ডিএ৪০ |
পরিবহন বিমান | কাসা সি ২৯৫, সেসনা ২০৮, এমআই-১৭১এসএইচ |
বাংলাদেশ আর্মি এভিয়েশন গ্রুপ হচ্ছে বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর উডয়ন শাখা। এই ইউনিটটি সেনাবাহিনীর সকল উড্ডয়ন অভিযান পরিচালনা করে এবং সেনাবাহিনীর সব ধরনের বিমান পরিচালনার পদ্ধতি নির্ধারন, জনবল নিয়োগ ও অন্যান্য কার্যাবলীর জন্য রূপরেখা প্রণয়নের জন্য দায়িত্বপ্রাপ্ত।
ইতিহাস
[সম্পাদনা]জন্ম
[সম্পাদনা]১৯৭৮ সালের ১ জানুয়ারি এই ইউনিটটি আর্মি এভিয়েশন ফ্লাইট নামে যাত্রা শুরু করে। শুরুতে আর্মিএভিয়েশনের নিজস্ব বৈমানিক প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা ছিল না। সেসময় বাংলাদেশ বেসামরিক বিমান চলাচল কর্তৃপক্ষ আর্মি এভিয়েশনের বৈমানিকদের প্রশিক্ষণে এগিয়ে আসে। ১৯৭৮ সালে ইরান সরকার কর্তৃক উপহার হিসেবে প্রদত্ত দুইটি বেল ২০৫ হেলিকপ্টার ছিল আর্মি এভিয়েশনের প্রথম বিমান। ১৯৭৯ সালের ৭ সেপ্টেম্বর এই ইউনিটকে আর্মি এভিয়েশন স্কোয়াড্রন-এ উন্নীত করা হয়। ১৯৮০ সালের ১৫ জুলাই নাগাদ ইউনিটের শক্তি রেজিমেন্ট পর্যায়ে উন্নীত হয় এবং নতুন নামকরণ করা হয় আর্মি এয়ার রেজিমেন্ট। ১৯৮২ সালে চারটি সেসনা ১৫২ বিমান এই রেজিমেন্টে যুক্ত হয় যা ছিল আর্মি এভিয়েশনের প্রথম স্থির ডানার বিমান। ১৯৮৩ সালে একটি পাইপার পিএ-৩১টি বিমান ক্রয় করা হয় যা মূলত ভিআইপি পরিবহনের কাজে ব্যবহৃত হত। ১৯৯৫ সালের ২৭ নভেম্বর এই ইউনিটকে আর্মি এভিয়েশন নামে পূনঃনামকরণ করা হয়। পরবর্তিতে এই বাহিনীতে তিনটি বেল ২০৬ হেলিকপ্টার ও একটি সেসনা ২০৮ বিমান যুক্ত হয়। ২০১২ সালের ২০ মার্চ এই বাহিনীকে আর্মি এভিয়েশন গ্রুপ নামকরণ করা হয়।
বর্তমান
[সম্পাদনা]বর্তমানে আর্মি এভিয়েশনের জনবল ২০৪ জন যার মধ্যে রয়েছে ৩০+ পাইলট। বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর যেকোন কোরের সদস্যরা প্রয়োজনীয় যোগ্যতা ও যথাযথ প্রশিক্ষণের মাধ্যমে এই ইউনিটে যোগ দিতে পারে। ফোর্সেস গোল ২০৩০ এর আওতায় অন্য সব বাহিনী এবং ইউনিটের মত আর্মি এভিয়েশন গ্রুপেরও আধুনিকায়ন ও সম্প্রসারণ চলমান রয়েছে। এর আওতায় আর্মি এভিয়েশন যুক্ত হয়েছে ইউরোকপ্টার এএস৩৬৫, এমআই-১৭১এসএইচ এবং কাসা সি ২৯৫ এর মত আধুনিক বিমান ও হেলিকপ্টার। সম্প্রতি অস্ট্রিয়া থেকে ছয়টি ডায়মন্ড ডিএ৪০ প্রশিক্ষণ বিমান ক্রয় করা হয়েছে যার চারটি ইতোমধ্যেই দেশে এসে পৌছেছে।[১]
২০২০ সালের ২ মার্চ লালমনিরহাট বিমানবন্দরে একটি নতুন ঘাটির উদ্বোধন করা হয়েছে যা তেজগাঁও বিমানবন্দরের পর আর্মি এভিয়েশনের দ্বিতীয় ঘাটি। এই ঘাটিতে আর্মি এভিয়েশনের প্রশিক্ষণ কেন্দ্র, আর্মি এভিয়েশন ট্রেইনিং স্কুল এর জন্য বিশেষায়িত অবকাঠামো রয়েছে।[২]
২০২১ সালের ১১ অক্টোবর চট্টগ্রামের শাহ আমানত আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে আর্মি এভিয়েশনের তৃতীয় ঘাটি উদ্বোধন করা হয়।একই সাথে প্রতিষ্ঠানটির বহরে নতুন দুইটি বেল ৪০৭ জিএক্সআই হেলিকপ্টার যুক্ত করা হয়।[৩]
আর্মি এভিয়েশন মেইনটেনেন্স ওয়ার্কশপ
[সম্পাদনা]এই ইউনিটটি আর্মি এভিয়েশনের বিমানগুলোর রক্ষণাবেক্ষণের দায়িত্বে নিয়োজিত। শুরুতে বাংলাদেশ বিমান বাহিনীর জনবল দ্বারা আর্মি এভিয়েশনের বিমানের রক্ষণাবেক্ষণের কাজ করা হত। পরে সেনাবাহিনী তাদের নিজস্ব জনবল নিয়ে আলাদা রক্ষনাবেক্ষণ ইউনিট প্রতিষ্ঠা করে।
বিমান বহর
[সম্পাদনা]বিমান | উৎস | ধরন | সংস্করণ | সক্রিয় | নোট | |
---|---|---|---|---|---|---|
স্থির ডানার বিমান | ||||||
কাসা সি ২৯৫ | স্পেন | পরিবহন | ডব্লিউ | ১[৪] | ||
সেসনা ২০৮ | যুক্তরাষ্ট্র | পরিবহন | ১[৪] | |||
সেসনা ১৫২ | যুক্তরাষ্ট্র | প্রশিক্ষণ/ইউটিলিটি | ৪ | |||
ডায়মন্ড ডিএ৪০ | অস্ট্রিয়া | প্রশিক্ষণ | এনজি | ৪[৫] | ২টি অর্ডারে[১] | |
হেলিকপ্টার | ||||||
ইউরোকপ্টার এএস৩৬৫ | ফ্রান্স | ইউটিলিটি | ২[৪] | |||
এমআই-১৭১এসএইচ | রাশিয়া | পরিবহন | ৬[৪] | |||
বেল ৪০৭ | যুক্তরাষ্ট্র | প্রশিক্ষণ | জিএক্সআই | ২ | ||
বেল ২০৬ | যুক্তরাষ্ট্র | প্রশিক্ষণ | এল | ২[৪] |
ভবিষ্যৎ আধুনিকায়ন পরিকল্পনা
[সম্পাদনা]বাংলাদেশ সরকার আর্মি এভিয়েশন গ্রুপের জন্য একটি পুনর্গঠন পরিকল্পনা হাতে নিয়েছে। এই পরিকল্পনা অনুসারে আর্মি এভিয়েশন গ্রুপের নতুন নাম হবে আর্মি এভিয়েশন। ইউনিটের মোট জনবল ২০৪ থেকে বৃদ্ধি করে ৭০৪ জনে উন্নীত করা হবে। ২০২১ সাল নাগাদ আর্মি এভিয়েশনের ব্যবহৃত বিমানের সংখ্যা দাড়াবে ২৬টিতে। ১৪৭ জনবলের আর্মি এভিয়েশন মেইনটেনেন্স ওয়ার্কশপকে পুনর্গঠন করে ৪৯০ জনবলের আর্মি এভিয়েশন ইঞ্জিনিয়ারিং ওয়ার্কশপ গঠিত হবে। সেনাবাহিনীতে একটি উড্ডয়ন পরিদপ্তরও স্থাপন করা হবে।[৬]
আর্মি এভিয়েশনের তাদের বহরে আরো একটি কাসা সি ২৯৫ পরিবহন বিমান যুক্ত করার পরিকল্পনা রয়েছে। পাশাপাশি ২০২১ সাল নাগাদ আরও ছয়টি এমআই-১৭১এসএইচ হেলিকপ্টার এই বহরে যুক্ত হবে। অদূর ভবিষ্যতে আর্মি এভিয়েশনের বহরে অ্যাটাক হেলিকপ্টার যুক্ত করার পরিকল্পনা রয়েছে।[৭]
আরও দেখুন
[সম্পাদনা]তথ্যসূত্র
[সম্পাদনা]- ↑ ক খ "Trade Register 1971-2019"। SIPRI। ১৪ এপ্রিল ২০১০ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ১৪ এপ্রিল ২০২০।
- ↑ "Army chief inaugurates Army Aviation School base in Lalmonirhat"। New Age। ৩ মার্চ ২০২০। সংগ্রহের তারিখ ১৪ এপ্রিল ২০২০।
- ↑ "চট্টগ্রামে 'আর্মি এভিয়েশন ফরওয়ার্ড বেস' উদ্বোধন"। প্রথম আলো। ১১ অক্টোবর ২০২১। সংগ্রহের তারিখ ১৪ অক্টোবর ২০২১।
- ↑ ক খ গ ঘ ঙ "World Air Forces 2019"। Flightglobal Insight। ২০১৯। সংগ্রহের তারিখ ৪ জুন ২০১৯।
- ↑ "Training Aircraft Inducted In Bangladesh Army"। ISPR। ১২ ডিসেম্বর ২০১৯। সংগ্রহের তারিখ ১২ ডিসেম্বর ২০১৯।
- ↑ "সেনাবাহিনীর জন্য নতুন এভিয়েশন পরিদপ্তর হচ্ছে"। Daily BD News। ৫ ডিসেম্বর ২০১৭। সংগ্রহের তারিখ ২০ ডিসেম্বর ২০১৭।[স্থায়ীভাবে অকার্যকর সংযোগ]
- ↑ "মিয়ানমারকে বলেছি রোহিঙ্গাদের ফিরিয়ে নেয়ার সব ব্যবস্থা তাদেরকে করতে হবে"। Daily Manab Zamin। ১৩ ডিসেম্বর ২০১৯। সংগ্রহের তারিখ ১৪ ডিসেম্বর ২০১৯।