বাংলাদেশে রক্তদান

উইকিপিডিয়া, মুক্ত বিশ্বকোষ থেকে

বাংলাদেশে রক্তদান হল বিভিন্ন সংগঠন কর্তৃক পরিচালিত একটি কার্যক্রম। ২০১১ সালের হিসাব মতে, দেশের রক্ত সরবরাহের প্রায় ২৫% আসে স্বেচ্ছা রক্তদান থেকে, ২০-২৫% অর্থ পেশাদার দাতাদের কাছ থেকে এবং ৫০-৫৫% একটি নির্দিষ্ট রোগীর জন্য এককালীন দান থেকে আসে।

পটভূমি[সম্পাদনা]

বাংলাদেশে ১৯৫০ সালে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে রক্ত সঞ্চালন সেবা বিদ্যমান ছিল।[১] পেশাদার রক্তদাতারা বাংলাদেশে রক্তদানের প্রধান ভিত্তি ছিল, ২০০০ সালের শেষের দিকে ৪৭% দানকৃত রক্ত পেশাদার দাতাদের কাছ থেকে এসেছে।[১] সরবরাহে দূষণের সম্ভাবনা এবং স্বেচ্ছাসেবক দাতাদের প্রয়োজনীয়তা অনস্বীকার্য ছিল।[১] ২০১১ সালের একটি হিসেব মতে, বার্ষিক ৫,০০,০০০ ইউনিট রক্তের প্রয়োজন ছিল, যর মধ্যে মাত্র ২৫% আসে স্বেচ্ছায় দান থেকে, ২০-২৫% পেশাদারদের কাছ থেকে এবং ৫০-৫৫% আসে একটি নির্দিষ্ট রোগীর জন্য এককালীন দান থেকে।[২]

মেডিসিন ক্লাব[সম্পাদনা]

মেডিসিন ক্লাব বাংলাদেশের একটি অলাভজনক মানবিক সংস্থা যা মেডিকেল এবং ডেন্টাল ছাত্রদের স্বেচ্ছাশ্রমে পরিচালিত।[৩] অসহায়দের সাহায্য এবং মানবতার সেবা করার প্রত্যয়ে ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজে ১৯৮১ সালের ৩১ জানুয়ারি সংগঠনটি প্রতিষ্ঠিত হয়।[৩] বর্তমানে বিভিন্ন মেডিকেল ও ডেন্টাল কলেজে এর ২১টি ইউনিট রয়েছে।[৩] এটি স্বেচ্ছায় রক্তদান, থ্যালাসেমিয়া প্রতিরোধ[৪] সমগ্র বাংলাদেশে ছড়িয়ে দেয়ার জন্য এবং এই বিষয়ে সচেতনতা বৃদ্ধির জন্য কাজ করে যাচ্ছে। এটি সারা দেশে প্রচুর পরিমাণে রক্তদান করে থাকে।[৫] এমনকি অর্থ এবং ওষুধ দিয়ে দরিদ্র রোগীদের সাহায্য করে।[৬] এই সংস্থা টিকাও বিতরণ করে থাকে।[৭]

সন্ধানী[সম্পাদনা]

সন্ধানী সংগঠনের দ্বারা বাংলাদেশে প্রথম স্বেচ্ছায় রক্তদান কর্মসূচি ১৯৭৭ সালে ঢাকা মেডিকেল কলেজে শুরু হয়।[৮] সন্ধানীর বর্তমানে বিভিন্ন মেডিকেল এবং ডেন্টাল কলেজে ২৫টি ইউনিট রয়েছে।[৯] সন্ধানী বাংলাদেশের মেডিকেল এবং ডেন্টাল ছাত্রদের দ্বারা পরিচালিত একটি স্বেচ্ছাসেবী প্রতিষ্ঠান। এটি মূলত বাংলাদেশে স্বেচ্ছায় রক্তদান এবং মরণোত্তর চক্ষুদানের বিষয়ে প্রেরণা নিয়ে কাজ করছে। এছাড়াও সন্ধানী সমাজের অসহায় রোগীদের ওষুধ ব্যাংক থেকে ওষুধ দিয়ে সেবা, থ্যালাসেমিয়া রোগীকে রক্তদান, বন্যা ও দুর্যোগে ক্ষতিগ্রস্তদের ত্রাণ প্রদান ইত্যাদির মাধ্যমে কাজ করে যাচ্ছে।[১০]

রেড ক্রিসেন্ট সোসাইটি[সম্পাদনা]

আন্তর্জাতিক রেড ক্রস ও রেড ক্রিসেন্ট আন্দোলন ১৯৮১ সালে বাংলাদেশে তাদের রক্তদান কর্মসূচি শুরু করে। বর্তমানে তারা পূর্ণ-রক্ত ​​এবং আংশিক-রক্তের উপাদান উভয়ই ব্যবহার করে বেশ কয়েকটি কেন্দ্র পরিচালনা করছে।[১১]

নওগাঁ ব্লাড সার্কেল[সম্পাদনা]

২০১৭ সালে নওগাঁতে মফস্বলের তরুণদের নিয়ে কার্যক্রম শুরু করে।[১২] পরবর্তীতে আশেপাশের জেলা সমূহ সহ রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় ও চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে রক্তদান সচেতনতা বিষয়ে কার্যক্রম শুরু করে। কাজ করছে থ্যালাসেমিয়া রোগীদের নিয়ে। পাশাপাশি ফ্রি মেডিক্যাল ক্যাম্পেইন[১৩] ও দূর্যোগে ত্রাণ বিতরণ করে থাকে।[১৪][১৫]

তথ্যসূত্র[সম্পাদনা]

  1. Islam, M. B. (২০০৯)। "Blood transfusion services in Bangladesh": 108–110। ডিওআই:10.4103/0973-6247.53880পিএমআইডি 20808657পিএমসি 2920470অবাধে প্রবেশযোগ্য 
  2. Nurul Islam Hasib (১৪ জুন ২০১১)। "Let Bangladeshi youth's blood 'flow'"bd24news.com 
  3. "About Us – Medicine Club" 
  4. "Thalassaemia – Medicine Club" 
  5. "Blood Division – Medicine Club" 
  6. "Drug Division – Medicine Club" 
  7. "Vaccination Division – Medicine Club" 
  8. "History – SANDHANI"। ২১ জানুয়ারি ২০২২ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ১২ ফেব্রুয়ারি ২০২৩ 
  9. "Contact Us – SANDHANI"। ৩ ডিসেম্বর ২০২১ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ১২ ফেব্রুয়ারি ২০২৩ 
  10. "SANDHANI – Central Committee"। ১৩ ফেব্রুয়ারি ২০২৩ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ১২ ফেব্রুয়ারি ২০২৩ 
  11. "Bangladesh Red Crescent Society: Blood Program" 
  12. "নওগাঁ ব্লাড সার্কেল কী ও কেন? - nbcbd.org"নওগাঁ ব্লাড সার্কেল - একটি স্বেচ্ছাসেবী সেবামূলক সংগঠন। ২০২৩-০৩-০৫। সংগ্রহের তারিখ ২০২৩-১০-২৬ 
  13. "নওগাঁ ব্লাড সার্কেলের উদ্যোগে ফ্রি মেডিকেল ক্যাম্প"jjdin (ইংরেজি ভাষায়)। সংগ্রহের তারিখ ২০২৩-১০-২৬ 
  14. "কুড়িগ্রামে বন্যার্তদের পাশে নওগাঁ ব্ল্যাড সার্কেল"jjdin (ইংরেজি ভাষায়)। সংগ্রহের তারিখ ২০২৩-১০-২৬ 
  15. Pratidin, Bangladesh (২০২১-০৬-২৬)। "সান্তাহার স্টেশনে শতাধিক ছিন্নমূল মানুষের মাঝে খাবার বিতরণ"বাংলাদেশ প্রতিদিন। সংগ্রহের তারিখ ২০২৩-১০-২৬ 

বহিঃসংযোগ[সম্পাদনা]