বঙ্কিমচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়ের সাহিত্যকর্ম
সাহিত্যসম্রাট বঙ্কিমচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়ের সাহিত্যচর্চা শুরু হয় ১৮৫২ খ্রিষ্টাব্দে, "সংবাদ প্রভাকর" পত্রিকায় কবিতা প্রকাশের মাধ্যমে। বাংলা ভাষায় প্রথম সার্থক উপন্যাস দুর্গেশনন্দিনী (১৮৬৫) তাঁর লেখা। তাঁর প্রথম কাব্যগ্রন্থ: ললিতা তথা মানস (১৮৫৬)
উপন্যাস[সম্পাদনা]
উপন্যাস | প্রকাশকাল | বিস্তারিত তথ্য |
---|---|---|
Rajmohans Wife | ১৮৬৪ | বঙ্কিমচন্দ্রের প্রথম উপন্যাস। এটি ১৮৬৪ সালে 'Indian Field' নামে একটি সাপ্তাহিক পত্রিকায় ধারাবাহিকভাবে প্রকাশিত হয়। |
দুর্গেশনন্দিনী | মার্চ, ১৮৬৫ | ঐতিহাসিক উপন্যাস। বঙ্কিমচন্দ্রের প্রথম বাংলা উপন্যাস। রচনাকাল ১৮৬২-৬৪। বঙ্কিমচন্দ্রের জীবিতকালে উপন্যাসের তেরটি সংস্করণ প্রকাশিত হয়। সর্বশেষ সংস্করণ মুদ্রিত হয় ১৮৯৩ সালে। |
কপালকুণ্ডলা | ১৮৬৬ | কাব্যিক উপন্যাস। বঙ্কিমচন্দ্রের দ্বিতীয় উপন্যাস। মেদিনীপুর জেলার নেগুঁয়া মহকুমায় (বর্তমানে কাঁথি মহকুমা, পূর্ব মেদিনীপুর জেলা) অবস্থানকালে অর্জিত কিছু অভিজ্ঞতার ভিত্তিতে এই উপন্যাস রচনা করেন বঙ্কিমচন্দ্র। সমালোচক মহলে উচ্চ-প্রশংসিত হয় এই উপন্যাস।[১] |
মৃণালিনী | ১৮৬৯ | ঐতিহাসিক উপন্যাস। খ্রিষ্টীয় ত্রয়োদশ শতাব্দীর পটভূমিতে রচিত।[২] |
বিষবৃক্ষ | ১৮৭৩ | সামাজিক উপন্যাস। বঙ্গদর্শন পত্রিকার প্রথম সংখ্যা (বৈশাখ, ১২৭৯) থেকে ধারাবাহিক ভাবে প্রকাশিত হয়। মোট সংস্করণের সংখ্যা আট। সর্বশেষ সংস্করণ মুদ্রিত হয় ১৮৯২ সালে। |
ইন্দিরা | ১৮৭৩ | অনু-উপন্যাস। বঙ্গদর্শন পত্রিকায় (চৈত্র, ১২৭৯) ছোটোগল্প আকারে প্রকাশিত হয়। ১৮৭৩ সালে ৪৫ পৃষ্ঠার ক্ষুদ্র গ্রন্থাকারে প্রকাশিত। ১৮৯৩ সালে ১৭৭ পৃষ্ঠার একটি অনু-উপন্যাসের আকারে এই গ্রন্থের পঞ্চম সংস্করণ প্রকাশিত হয়। |
যুগলাঙ্গুরীয় | ১৮৭৪ | ঐতিহাসিক অনু-উপন্যাস। প্রথম প্রকাশ বঙ্গদর্শন পত্রিকায় (বৈশাখ, ১২৮০)। প্রথম সংস্করণে পৃষ্ঠাসংখ্যা ছিল ৩৬। ১৮৯৩ সালে পঞ্চম তথা সর্বশেষ সংস্করণে পৃষ্ঠা সংখ্যা হয় ৫০। |
চন্দ্রশেখর | ১৮৭৫ | রোম্যান্সধর্মী উপন্যাস। প্রথম প্রকাশ বঙ্গদর্শন পত্রিকায় (শ্রাবণ, ১২৮০ – ভাদ্র, ১২৮১)। বঙ্কিমচন্দ্রের জীবিতকালে তিনটি সংস্করণ প্রকাশিত হয়। সর্বশেষ সংস্করণ ১৮৮৯ সালে মুদ্রিত। |
রাধারাণী | ১৮৮৬ | অনু-উপন্যাস। প্রথম প্রকাশ বঙ্গদর্শন পত্রিকায় (কার্তিক-অগ্রহায়ণ, ১২৮২)। ১৮৭৭ ও ১৮৮১ সালে উপন্যাস – অর্থাৎ ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র উপন্যাস সংগ্রহ গ্রন্থে সংকলিত হয়। ১৮৮৬ সালে গ্রন্থাকারে প্রথম প্রকাশের সময় পৃষ্ঠাসংখ্যা ছিল ৩৮। ১৮৯৩ সংস্করণে পৃষ্ঠাসংখ্যা বেড়ে হয় ৬৫। |
রজনী | ১৮৭৭ | রোম্যান্সধর্মী উপন্যাস। প্রথম প্রকাশ বঙ্গদর্শন পত্রিকায় (১২৮১-৮২)। বঙ্কিমচন্দ্রের জীবিতকালে তিনটি সংস্করণ প্রকাশিত হয়। সর্বশেষ সংস্করণ ১৮৮৭ সালে মুদ্রিত।[৩] |
কৃষ্ণকান্তের উইল | ১৮৭৮ | সামাজিক উপন্যাস। ১৮৮২ ও ১৮৮৪ সালে বঙ্গদর্শন পত্রিকার বিভিন্ন সংখ্যায় প্রকাশিত হয়। বঙ্কিমচন্দ্রের জীবিতকালে চারটি সংস্করণ প্রকাশিত হয়। সর্বশেষ সংস্করণ ১৮৯২ সালে মুদ্রিত। |
রাজসিংহ | ১৮৮২ | ঐতিহাসিক উপন্যাস। প্রথম প্রকাশ বঙ্গদর্শন পত্রিকায় (চৈত্র, ১২৮৪ – ভাদ্র, ১২৮৫)। পত্রিকায় অসমাপ্ত উপন্যাসটি সমাপ্ত করে ১৮৮২ সালে ৮৩ পৃষ্ঠার প্রথম সংস্করণ প্রকাশিত হয়। দ্বিতীয় সংস্করণে পৃষ্ঠাসংখ্যা বেড়ে হয় ৯০। ১৮৯৩ খ্রিস্টাব্দে চতুর্থ সংস্করণে পৃষ্ঠাসংখ্যা হয় ৪৩৪। |
আনন্দমঠ | ১৮৮২ | বঙ্কিমচন্দ্রের প্রসিদ্ধ ঐতিহাসিক উপন্যাস। প্রথম প্রকাশ বঙ্গদর্শন পত্রিকায় (চৈত্র, ১২৮৭ – জ্যৈষ্ঠ, ১২৮৯)।-১৮৯২ সালে মুদ্রিত। ভারতীয় প্রজাতন্ত্রের জাতীয় স্তোত্র বন্দেমাতরম্এই উপন্যাস থেকে গৃহীত।
ছিয়াত্তরের মন্বন্তরের পটভূমিকায় সন্ন্যাসী বিদ্রোহের ছায়া অবলম্বনে রচিত। এই উপন্যাসে লেখকের দেশপ্রেম ফুটে উঠেছে। |
দেবী চৌধুরাণী | ১৮৮৪ | ঐতিহাসিক উপন্যাস। বিভিন্ন সময়ে বঙ্গদর্শন পত্রিকায় প্রকাশিত হয়। বঙ্কিমচন্দ্রের জীবিতকালে ছয়টি সংস্করণ প্রকাশিত হয়। সর্বশেষ সংস্করণ ১৮৯১ সালে মুদ্রিত। |
সীতারাম | মার্চ, ১৮৮৭ | ঐতিহাসিক উপন্যাস। বঙ্কিমচন্দ্রের শেষ উপন্যাস। প্রচার পত্রিকায় (শ্রাবণ, ১২৯১ – মাঘ, ১২৯৩; মাঝে কয়েকমাসের বিরতি সহ) প্রকাশিত হয়। প্রথম সংস্করণে পৃষ্ঠাসংখ্যা ছিল ৪১৯। তৃতীয় ও শেষ সংস্করণ বঙ্কিমচন্দ্রের জীবদ্দশায় মুদ্রিত হলেও প্রকাশিত হয় তাঁর মৃত্যুর অব্যবহিত পরে, ১৮৯৪ সালের মে মাসে। |
প্রবন্ধ[সম্পাদনা]
প্রবন্ধ | প্রকাশকাল | বিস্তারিত তথ্য |
---|---|---|
লোকরহস্য | ১৮৭৪ | |
বিজ্ঞান রহস্য | ১৮৭৫ | |
কমলাকান্তের দপ্তর | ১৮৭৫ | |
বিবিধ সমালোচনা | ১৮৭৬ | |
সাম্য | ১৮৭৯ | |
কৃষ্ণচরিত্র | ১৮৮৬ | |
বিবিধ প্রবন্ধ | ১ম খন্ড-১৮৮৭, ২য় খন্ড-১৮৯২ | |
ধর্মতত্ত্ব অনুশীলন | ১৮৮৮ | |
শ্রীমদ্ভগবদ্গীতা | ১৯০২ |
সম্পাদনা[সম্পাদনা]
- বঙ্গদর্শন পত্রিকা (১৮৭২-১৮৭৬)[৪]
তথ্যসূত্র[সম্পাদনা]
- ↑ নীলরতন সরকার (২২ জুলাই ২০১৯)। "বাঁদর ইংরেজি শিখতে পারবে! দেখতে চেয়েছিলেন বঙ্কিম"। আনন্দবাজার পত্রিকা। সংগ্রহের তারিখ ২২ মার্চ ২০২০।
- ↑ আবু নোমান (৫ মার্চ ২০২০)। "ক্রান্তিকালের রূপকার"। জনকণ্ঠ। ২২ মার্চ ২০২০ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২২ মার্চ ২০২০।
- ↑ আবু নোমান (৪ অক্টোবর ২০১৯)। "বঙ্কিমচন্দ্র ও তাঁর রজনী উপন্যাস"। জনকণ্ঠ। ২২ মার্চ ২০২০ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২২ মার্চ ২০২০।
- ↑ আব্দুর রাজ্জাক (১৮ মার্চ ২০২০)। "বঙ্গদর্শন"। কালের কণ্ঠ। সংগ্রহের তারিখ ২২ মার্চ ২০২০।