বঙ্কিমচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়ের সাহিত্যকর্ম

উইকিপিডিয়া, মুক্ত বিশ্বকোষ থেকে
বঙ্কিমচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়

সাহিত্যসম্রাট বঙ্কিমচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়ের সাহিত্যচর্চা শুরু হয় ১৮৫২ খ্রিষ্টাব্দে, "সংবাদ প্রভাকর" পত্রিকায় কবিতা প্রকাশের মাধ্যমে। বাংলা ভাষায় প্রথম সার্থক উপন্যাস দুর্গেশনন্দিনী (১৮৬৫) তাঁর লেখা। তাঁর প্রথম কাব্যগ্রন্থ: ললিতা তথা মানস (১৮৫৬)

উপন্যাস[সম্পাদনা]

উপন্যাস প্রকাশকাল বিস্তারিত তথ্য
Rajmohans Wife ১৮৬৪ বঙ্কিমচন্দ্রের প্রথম উপন্যাস। এটি ১৮৬৪ সালে 'Indian Field' নামে একটি সাপ্তাহিক পত্রিকায় ধারাবাহিকভাবে প্রকাশিত হয়।
দুর্গেশনন্দিনী মার্চ, ১৮৬৫ ঐতিহাসিক উপন্যাস। বঙ্কিমচন্দ্রের প্রথম বাংলা উপন্যাস। রচনাকাল ১৮৬২-৬৪। বঙ্কিমচন্দ্রের জীবিতকালে উপন্যাসের তেরটি সংস্করণ প্রকাশিত হয়। সর্বশেষ সংস্করণ মুদ্রিত হয় ১৮৯৩ সালে।
কপালকুণ্ডলা ১৮৬৬ কাব্যিক উপন্যাস। বঙ্কিমচন্দ্রের দ্বিতীয় উপন্যাস। মেদিনীপুর জেলার নেগুঁয়া মহকুমায় (বর্তমানে কাঁথি মহকুমা, পূর্ব মেদিনীপুর জেলা) অবস্থানকালে অর্জিত কিছু অভিজ্ঞতার ভিত্তিতে এই উপন্যাস রচনা করেন বঙ্কিমচন্দ্র। সমালোচক মহলে উচ্চ-প্রশংসিত হয় এই উপন্যাস।[১]
মৃণালিনী ১৮৬৯ ঐতিহাসিক উপন্যাস। খ্রিষ্টীয় ত্রয়োদশ শতাব্দীর পটভূমিতে রচিত।[২]
বিষবৃক্ষ ১৮৭৩ সামাজিক উপন্যাস। বঙ্গদর্শন পত্রিকার প্রথম সংখ্যা (বৈশাখ, ১২৭৯) থেকে ধারাবাহিক ভাবে প্রকাশিত হয়। মোট সংস্করণের সংখ্যা আট। সর্বশেষ সংস্করণ মুদ্রিত হয় ১৮৯২ সালে।
ইন্দিরা ১৮৭৩ অনু-উপন্যাস। বঙ্গদর্শন পত্রিকায় (চৈত্র, ১২৭৯) ছোটোগল্প আকারে প্রকাশিত হয়। ১৮৭৩ সালে ৪৫ পৃষ্ঠার ক্ষুদ্র গ্রন্থাকারে প্রকাশিত। ১৮৯৩ সালে ১৭৭ পৃষ্ঠার একটি অনু-উপন্যাসের আকারে এই গ্রন্থের পঞ্চম সংস্করণ প্রকাশিত হয়।
যুগলাঙ্গুরীয় ১৮৭৪ ঐতিহাসিক অনু-উপন্যাস। প্রথম প্রকাশ বঙ্গদর্শন পত্রিকায় (বৈশাখ, ১২৮০)। প্রথম সংস্করণে পৃষ্ঠাসংখ্যা ছিল ৩৬। ১৮৯৩ সালে পঞ্চম তথা সর্বশেষ সংস্করণে পৃষ্ঠা সংখ্যা হয় ৫০।
চন্দ্রশেখর ১৮৭৫ রোম্যান্সধর্মী উপন্যাস। প্রথম প্রকাশ বঙ্গদর্শন পত্রিকায় (শ্রাবণ, ১২৮০ – ভাদ্র, ১২৮১)। বঙ্কিমচন্দ্রের জীবিতকালে তিনটি সংস্করণ প্রকাশিত হয়। সর্বশেষ সংস্করণ ১৮৮৯ সালে মুদ্রিত।
রাধারাণী ১৮৮৬ অনু-উপন্যাস। প্রথম প্রকাশ বঙ্গদর্শন পত্রিকায় (কার্তিক-অগ্রহায়ণ, ১২৮২)। ১৮৭৭ ও ১৮৮১ সালে উপন্যাস – অর্থাৎ ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র উপন্যাস সংগ্রহ গ্রন্থে সংকলিত হয়। ১৮৮৬ সালে গ্রন্থাকারে প্রথম প্রকাশের সময় পৃষ্ঠাসংখ্যা ছিল ৩৮। ১৮৯৩ সংস্করণে পৃষ্ঠাসংখ্যা বেড়ে হয় ৬৫।
রজনী ১৮৭৭ রোম্যান্সধর্মী উপন্যাস। প্রথম প্রকাশ বঙ্গদর্শন পত্রিকায় (১২৮১-৮২)। বঙ্কিমচন্দ্রের জীবিতকালে তিনটি সংস্করণ প্রকাশিত হয়। সর্বশেষ সংস্করণ ১৮৮৭ সালে মুদ্রিত।[৩]
কৃষ্ণকান্তের উইল ১৮৭৮ সামাজিক উপন্যাস। ১৮৮২ ও ১৮৮৪ সালে বঙ্গদর্শন পত্রিকার বিভিন্ন সংখ্যায় প্রকাশিত হয়। বঙ্কিমচন্দ্রের জীবিতকালে চারটি সংস্করণ প্রকাশিত হয়। সর্বশেষ সংস্করণ ১৮৯২ সালে মুদ্রিত।
রাজসিংহ ১৮৮২ ঐতিহাসিক উপন্যাস। প্রথম প্রকাশ বঙ্গদর্শন পত্রিকায় (চৈত্র, ১২৮৪ – ভাদ্র, ১২৮৫)। পত্রিকায় অসমাপ্ত উপন্যাসটি সমাপ্ত করে ১৮৮২ সালে ৮৩ পৃষ্ঠার প্রথম সংস্করণ প্রকাশিত হয়। দ্বিতীয় সংস্করণে পৃষ্ঠাসংখ্যা বেড়ে হয় ৯০। ১৮৯৩ খ্রিস্টাব্দে চতুর্থ সংস্করণে পৃষ্ঠাসংখ্যা হয় ৪৩৪।
আনন্দমঠ ১৮৮২ বঙ্কিমচন্দ্রের প্রসিদ্ধ ঐতিহাসিক উপন্যাস। প্রথম প্রকাশ বঙ্গদর্শন পত্রিকায় (চৈত্র, ১২৮৭ – জ্যৈষ্ঠ, ১২৮৯)।-১৮৯২ সালে মুদ্রিত। ভারতীয় প্রজাতন্ত্রের জাতীয় স্তোত্র বন্দেমাতরম্এই উপন্যাস থেকে গৃহীত।

ছিয়াত্তরের মন্বন্তরের পটভূমিকায় সন্ন্যাসী বিদ্রোহের ছায়া অবলম্বনে রচিত। এই উপন্যাসে লেখকের দেশপ্রেম ফুটে উঠেছে।

দেবী চৌধুরাণী ১৮৮৪ ঐতিহাসিক উপন্যাস। বিভিন্ন সময়ে বঙ্গদর্শন পত্রিকায় প্রকাশিত হয়। বঙ্কিমচন্দ্রের জীবিতকালে ছয়টি সংস্করণ প্রকাশিত হয়। সর্বশেষ সংস্করণ ১৮৯১ সালে মুদ্রিত।
সীতারাম মার্চ, ১৮৮৭ ঐতিহাসিক উপন্যাস। বঙ্কিমচন্দ্রের শেষ উপন্যাস। প্রচার পত্রিকায় (শ্রাবণ, ১২৯১ – মাঘ, ১২৯৩; মাঝে কয়েকমাসের বিরতি সহ) প্রকাশিত হয়। প্রথম সংস্করণে পৃষ্ঠাসংখ্যা ছিল ৪১৯। তৃতীয় ও শেষ সংস্করণ বঙ্কিমচন্দ্রের জীবদ্দশায় মুদ্রিত হলেও প্রকাশিত হয় তাঁর মৃত্যুর অব্যবহিত পরে, ১৮৯৪ সালের মে মাসে।

প্রবন্ধ[সম্পাদনা]

প্রবন্ধ প্রকাশকাল বিস্তারিত তথ্য
লোকরহস্য ১৮৭৪ লোকরহস্য গ্রন্থের প্রবন্ধগুলো হলো: ব্যাঘ্রচার্য বৃহল্লাঙ্গুল, ইংরাজস্তোত্র, বাবু, গর্দভ, দাম্পত্য দণ্ডবিধির আইন, বসন্ত এবং বিরহ, সুবর্ণগোলক, রামায়ণের সমালোচন, বৰ্ষ সমালোচন, কোন 'স্পেশিয়ালের' পত্র, BRANSONISM, হনুমদ্বাবুসংবাদ, গ্রাম্য কথা(প্রথম সংখ্যা, দ্বিতীয় সংখ্যা), বাঙ্গালা সাহিত্যের আদর, New Year's Day.
বিজ্ঞান রহস্য ১৮৭৫
কমলাকান্তের দপ্তর ১৮৭৫
বিবিধ সমালোচনা ১৮৭৬
সাম্য ১৮৭৯
কৃষ্ণচরিত্র ১৮৮৬
বিবিধ প্রবন্ধ ১ম খন্ড-১৮৮৭, ২য় খন্ড-১৮৯২
ধর্মতত্ত্ব অনুশীলন ১৮৮৮
শ্রীমদ্ভগবদ্গীতা ১৯০২

সম্পাদনা[সম্পাদনা]

তথ্যসূত্র[সম্পাদনা]

  1. নীলরতন সরকার (২২ জুলাই ২০১৯)। "বাঁদর ইংরেজি শিখতে পারবে! দেখতে চেয়েছিলেন বঙ্কিম"আনন্দবাজার পত্রিকা। সংগ্রহের তারিখ ২২ মার্চ ২০২০ 
  2. আবু নোমান (৫ মার্চ ২০২০)। "ক্রান্তিকালের রূপকার"জনকণ্ঠ। ২২ মার্চ ২০২০ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২২ মার্চ ২০২০ 
  3. আবু নোমান (৪ অক্টোবর ২০১৯)। "বঙ্কিমচন্দ্র ও তাঁর রজনী উপন্যাস"জনকণ্ঠ। ২২ মার্চ ২০২০ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২২ মার্চ ২০২০ 
  4. আব্দুর রাজ্জাক (১৮ মার্চ ২০২০)। "বঙ্গদর্শন"কালের কণ্ঠ। সংগ্রহের তারিখ ২২ মার্চ ২০২০