নিরঞ্জন মুখোপাধ্যায়

উইকিপিডিয়া, মুক্ত বিশ্বকোষ থেকে
নিরঞ্জন মুখোপাধ্যায়
জন্ম১৮৩৫
মৃত্যু২ মার্চ ১৯২৩
পিতা-মাতাজগন্মোহন মুখোপাধ্যায় (পিতা)
নিরঞ্জন মুখোপাধ্যায় (১৮৩৫ – ২ মার্চ ১৯২৩) ছিলেন একজন বাঙালি লেখক, দুষ্প্রাপ্য জিনিসের সংগ্রাহক। সংস্কৃত ও ফরাসি উভয় ভাষাতেই ব্যুৎপত্তি থাকার জন্য মৌলবী মুখুয্যে নামে আখ্যায়িত হয়েছিলেন। [১]

জন্ম ও প্রারম্ভিক জীবন[সম্পাদনা]

নিরঞ্জন মুখোপাধ্যায়ের জন্ম ১৮৩৫ খ্রিস্টাব্দে ব্রিটিশ ভারতের অধুনা উত্তরপ্রদেশের বারাণসীতে মাতামহ সূর্যকুমার ঠাকুরের বাড়িতে। তার আদি পৈতৃক নিবাস ছিল অধুনা উত্তর চব্বিশ পরগনা জেলার ভাটপাড়ায় (পূর্ব নাম ভট্টপল্লীতে)। পিতা জগন্মোহন (বা পরমানন্দ) মুখোপাধ্যায় পাথুরিয়াঘাটা ঠাকুরবাড়ির ঘর-জামাই ছিলেন। সমাজ সংস্কারক রাজা দক্ষিণারঞ্জন মুখোপাধ্যায় ছিলেন তার বৈমাত্রেয় ভ্রাতা। সংস্কৃত ও ফরাসি ভাষায় তার ব্যুৎপত্তি ছিল। কলকাতায় হিন্দু কলেজের শিক্ষা সমাপ্ত করে তিনি কাশীধামে যান। সেখানে হিন্দি ও উর্দু ভাষা শেখেন। ইংরাজী ভাষাতেও পারঙ্গম হন। সংস্কৃত ও ফরাসি ভাষায় কিছু গ্রন্থ রচনা করেন। উর্দু, ফরাসি ভাষায় তিনি ব্যুৎপন্ন ছিলেন বলে তার পিতামহ ভৈরবচন্দ্র তাকে মৌলবী মুখুয্যে নামে আখ্যায়িত করেন।

কর্মজীবন[সম্পাদনা]

নিরঞ্জন কিছুদিন কলকাতার ওরিয়েন্টাল গ্যাস কোম্পানির দেওয়ানের পদে কাজ করেন। পরে ব্রিটিশ সরকারের অধীনে ডেপুটি ম্যাজিস্ট্রেট পদে কৃষ্ণনগর, যশোহর এবং পূর্ণিয়ায় কাজ করেন। ১৮৬৬ খ্রিস্টাব্দে প্রথমে রেওয়াজ মহারাজের সেক্রেটারি হন, পরে পদোন্নতিতে দেওয়ান হন। ১৮৭৫ খ্রিস্টাব্দে প্রিন্স অফ ওয়েল্স ( পরবর্তীতে সপ্তম এডওয়ার্ড হন) ভারতবর্ষে এলে তার অনুচরসহ ভারত-ভ্রমণে সঙ্গী হন। ব্রহ্মদেশের শেষ রাজা থিরোর রাজত্বকালে তিনি বর্মা সফর করেন। তবে অধিকাংশ সময়েই তিনি বারাণসীতে থাকতেন। ভ্রমণের সময় দুষ্পাপ্য যা কিছু পেতেন তা সংগ্রহ করতেন। প্রখ্যাত পুরাতত্ত্ব এবং প্রত্নতত্ত্ববিদ রাজেন্দ্রলাল মিত্র ছিলেন তার ঘনিষ্ঠ ও প্রিয় বন্ধু। বারাণসী থেকে বন্ধুর অনুরোধে নিরঞ্জন এশিয়াটিক সোসাইটির জন্ম বহু দুষ্প্রাপ্য পুঁথি সংগ্রহ করেছেন। তার অনেক দুষ্প্রাপ্য সংগ্রহের মধ্যে ছিল বাবরের তরবারি। ইংল্যান্ডের সম্রাটকে তিনি তরবারিটি উপহার দেন। কয়েকটি গ্রন্থও তিনি রচনা করেছেন। তার মধ্যে উল্লেখযোগ্য হল-

  • ভারতবর্ষীয় রাজদর্পন
  • কাশীনরেশগণের ইতিহাস (১৮৭৫)

মৃত্যু[সম্পাদনা]

নিরঞ্জন মুখোপাধ্যায় ১৯২৩ খ্রিস্টাব্দের ২ মার্চ পরলোক গমন করেন।

তথ্যসূত্র[সম্পাদনা]

  1. সুবোধ সেনগুপ্ত ও অঞ্জলি বসু সম্পাদিত, সংসদ বাঙালি চরিতাভিধান, প্রথম খণ্ড, সাহিত্য সংসদ, কলকাতা, নভেম্বর ২০১৩, পৃষ্ঠা ৪৪, আইএসবিএন ৯৭৮-৮১-৭৯৫৫-১৩৫-৬