না জনগোষ্ঠী

উইকিপিডিয়া, মুক্ত বিশ্বকোষ থেকে

না বা এনগা জনগোষ্ঠী (প্রমিত তিব্বতীয়: ) ভারতের অরুণাচল প্রদেশ রাজ্যের উচ্চ সুবনসিরি জেলায় বাস করে। এরা হিমালয় পর্বতমালার নীচে, উচ্চ সীমায় বসবাসকারী একটি ছোট উপজাতীয় গোষ্ঠী। জেলার ভিতর টাকসিং বলয়ের মধ্যে যে গ্রামগুলিতে এদের দেখা মেলে সেগুলি হল: গুমসিং, তায়িং, এসনায়া, লিংবিং, টোংলা, ইয়েজা, রিডিং, রেডি, দাদু গ্রাম। ২০০০ সালের হিসেব অনুযায়ী, এই উপজাতীয় মানুষদের জনসংখ্যা ১,৫০০ তে এসে দাঁড়িয়েছে। যাইহোক, সমস্ত সরকারী আদমশুমারিতে 'না' কে তাগিন জনগোষ্ঠীর সাথে এক শ্রেণীভুক্ত করা হয়েছে, কারণ তারা জাতিগতভাবে পরস্পর সম্পর্কিত।

ভাষা[সম্পাদনা]

তারা না ভাষায় কথা বলে। এই ভাষাটি চীনা-তিব্বতি ভাষাসমূহের অন্তর্গত। এখানে জনসংখ্যার সাক্ষরতার হার ৩০%। না ভাষার সাথে তাগিন ভাষার একটি সম্বন্ধ রয়েছে। তারা এর সঙ্গে হিন্দি বা ইংরেজিও ব্যবহার করে।[১]

ইতিহাস[সম্পাদনা]

তিব্বতীয় মানুষদের কাছ থেকে জাতিগত নিপীড়নের পর 'না' রা তিব্বতের উত্তর থেকে দক্ষিণে চলে গিয়েছিল বলে মনে করা হয়, কিন্তু পরে তারা তিব্বতীয়দের সাথে বাণিজ্যে নিযুক্ত হয়েছিল। আধুনিক যুগে নিশি জনগোষ্ঠী এই দুই গোষ্ঠীর মধ্যে মধ্যস্থতা করে বিভেদ ঘুচিয়েছিল এবং তারপরেই পরস্পর বাণিজ্য শুরু হয়েছে। তা সত্ত্বেও, দুই প্রতিবেশীর মধ্যে সম্পর্ক খুব একটা স্থিতিশীল নয়। উদাহরণস্বরূপ বলা যায়, ১৯০৬ সালের একটি ঘটনায় তাদের উত্তর তিব্বতীয় ব্যবসায়িক অংশীদারদের পছন্দের পরিবর্তন হওয়ার ফলে একটি গণহত্যা হয়েছিল, এতে তাদের উপজাতীয় গোষ্ঠীর অনেক প্রাণ চলে গেছে।[২]

ধর্ম[সম্পাদনা]

এই জনগোষ্ঠী তিব্বতি বৌদ্ধধর্মেরর অনুগামী। কিন্তু তারা এই সঙ্গে প্রাক-বৌদ্ধ শামান প্রথা দ্বারাও প্রভাবিত। বৌদ্ধ লামা এবং ঐতিহ্যবাহী শামান উভয়কেই ধর্মীয় অনুষ্ঠানের জন্য নিযুক্ত করা হয়। এরা দেশীয় ভাষায় নাইবু নামে পরিচিত।[৩]

বসবাস[সম্পাদনা]

উচ্চতর অবস্থানে বসবাসকারী বেশিরভাগ উপজাতির মতো, তারা পাথরের তৈরি স্থায়ী ঘর তৈরি করে। এরপরে যে ব্যবহারযোগ্য জমি থাকে, সেখানে তারা চাষ করে। এদের গ্রামগুলিতে ভুট্টা, বাজরা, বার্লি ইত্যাদির চাষ হতে দেখা যায়। তারা চমরী গাই এবং ভেড়া সহ গৃহপালিত প্রাণী লালন পালন করে। তাদের জামাকাপড় বুনন করা উলের তৈরি।[৪]

জাতিগত[সম্পাদনা]

না জনগোষ্ঠী জাতিগত এবং ভাষাগতভাবে খুবই ঘনিষ্ঠভাবে তাগিনদের সাথে সম্পর্কিত। তিব্বতীয়দের সাথে তাদের অত মিল নেই। কিন্তু না জনগোষ্ঠী নিজেদের একেবারেই আলাদা গোষ্ঠী বলে দাবি করে, লাইমেকিংয়ে বসবাসকারী মারা উপজাতির মতো। তবে, দুই উপজাতিই স্বীকার করে নেয় যে তাদের উভয়েরই পূর্বপুরুষ তাগিনদের থেকেই এসেছে।[৫]

তথ্যসূত্র[সম্পাদনা]

  1. "Na"Ethnologue। সংগ্রহের তারিখ ৩ ফেব্রুয়ারি ২০১৪ 
  2. Toni Huber (১৯৯৯)। The Cult of Pure Crystal Mountain: Popular Pilgrimage and Visionary Landscape in Southeast Tibetসীমিত পরীক্ষা সাপেক্ষে বিনামূল্যে প্রবেশাধিকার, সাধারণত সদস্যতা প্রয়োজনOxford University Press। পৃষ্ঠা 166–8। আইএসবিএন 0-19-512007-8 
  3. Dalvindar Singh Grewal (১৯৯৭)। Tribes of Arunachal Pradesh: Identity, Culture, and Languages। South Asia Publications। পৃষ্ঠা 197। আইএসবিএন 81-7433-019-4 
  4. Rann Singh Mann (১৯৯৬)। Tribes of India: Ongoing Challenges। M.D. Publications Pvt. Ltd.। পৃষ্ঠা 401। আইএসবিএন 81-7533-007-4 
  5. Rann Singh Mann (১৯৯৬)। Tribes of India: Ongoing Challenges। M.D. Publications Pvt. Ltd.। পৃষ্ঠা 395–402। আইএসবিএন 81-7533-007-4 

বহিঃসংযোগ[সম্পাদনা]

টেমপ্লেট:Tribes of Arunachal Pradesh টেমপ্লেট:Hill tribes of Northeast India