নারী স্বাধীনতা সমিতি (ইরান)

উইকিপিডিয়া, মুক্ত বিশ্বকোষ থেকে

নারী স্বাধীনতা সমিতি (ফার্সি: انجمن حریت نسوان),[১] ১৯০৭ সালে ইরানে গঠিত হয়েছিল। বেশ কয়েকজন নারী এবং সাংবিধানিক আন্দোলনের পুরুষ বুদ্ধিজীবীরা আলোচনা ও পরিকল্পনা করে এটি তৈরি করেছিলেন। ইরানে মহিলাদের আজ্ঞাধীন অবস্থানে থাকার ওপর দৃষ্টি নিবদ্ধ করে এদের অধিবেশনগুলির আলোচ্য বিষয়বস্তু তৈরি হত।[২]

ইতিহাস[সম্পাদনা]

ইরানের সাংবিধানিক বিপ্লব চলাকালীন, সেখানে অনেক গোপন ও আধা-কংগ্রেসী সমিতি ছিল। এই সময়ের মধ্যে, সাংবিধানিক আন্দোলনে গোপনে নারী সমিতি গঠন করা হয়। সমাবেশ এবং দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের বহু বছর পর, কিছু সংস্থা স্থাপন করা হয়েছিল যেগুলি মূলত নারী অধিকারের উপর দৃষ্টি নিবদ্ধ করে তৈরি হয়েছিল।[৩][৪]

লক্ষ্য এবং ক্রিয়াকলাপ[সম্পাদনা]

নারী স্বাধীনতা সমিতির প্রতিষ্ঠাতারা নারীদের সামাজিকীকরণের নিয়মের সাথে পরিচিত করতে চেয়েছিলেন, তাঁরা চেয়েছিলেন নারীরা যেন সম্প্রদায়ে যোগ দিতে পারেন এবং সম্প্রদায়ে কথা বলার ক্ষেত্রে নিজেদের আত্মবিশ্বাস বাড়াতে পারেন, বিশেষ করে যখন পুরুষেরা উপস্থিত থাকেন। এই সম্মেলনস্থানে, মহিলা এবং পুরুষ উভয়ই সদস্য ছিলেন এবং অধিবেশনে অংশগ্রহণ করতেন, কিন্তু যাতে নারীদের মধ্যে আত্মবিশ্বাস তৈরি হয় সেই উদ্দেশ্যে সভায় শুধুমাত্র মহিলা সদস্যদেরই কথা বলার অনুমতি দেওয়া হত। সভাগুলি গোপনে অনুষ্ঠিত হত এবং কোনও পুরুষ বা মহিলাকে একা সভাগুলিতে যোগ দেওয়ার অনুমতি দেওয়া হয়নি। তাঁদের কোন আত্মীয় বা পরিচিত একজনের সাথে আসতে হত।[২][১]

নারী স্বাধীনতা সমিতির কয়েকজন বিখ্যাত সদস্য ছিলেন: মির্জা বাজি খানুম, নবব সামী, সেদিগ দৌলতাবাদী, মিরেহ খানম, গোলিন খানম আঘগার, ইফতেখার আল-সালতানাহ, ও তাজ আল-সালতানাহ (নাসের-আল-দীন শাহের কন্যা), আফসার সালতানাহ, শামসোলমুলুক জয়ুরকালাম, মিসেস হাকিম, জর্ডান, ডক্টর আইয়ুব, আফান্দিয়েহ খানুম, এবং জান্দোখত শিরাজি (শাইখ-আল-রেয়েস কাজারের কন্যা)।[১]

তেহরানের বাইরে ফিসচারাবাদে পারটিভা ফুলের বাগানে গোপনে কাউন্সিলের সভা অনুষ্ঠিত হত। কিন্তু একদিন, এক ব্যক্তি, যে মহিলার সাথে স্বচ্ছন্দ ছিলনা বলে তাকে সভায় উপস্থিত হতে দেওয়া হয়নি, সে আব্বাসবাদ বাজারে ধর্মান্ধদের কাছে বৈঠকের খবর দিয়ে দেয়। সেই ধর্মান্ধরা অনেক লোককে জড়ো করে সভাস্থলের দিকে অগ্রসর হয়। আইন - শৃঙ্খলার দায়িত্বে থাকা কর্মকর্তারা কিছুই করেননি। ধর্মান্ধদের ভিড় গভর্নমেন্ট গেট নামক সভার জমায়েতের গেটে পৌঁছানোর আগেই, একজন আর্মেনীয় ছাত্র অ্যান্টনি খান, এই ঘটনাটি জেনে যান। তিনি তাঁর ফটোগ্রাফির দোকানে ছিলেন। তিনি নিজের বাইক নিয়ে সমিতির সভাস্থলে পৌঁছে সদস্যদের অবহিত করেন। ফলে সভার সদস্যরা সভা বরখাস্ত করে দেন, এবং তাঁরা মহিলা স্বাধীনতা সমিতি বন্ধ করে দিতে বাধ্য হন।[১]

আরও দেখুন[সম্পাদনা]

টীকা[সম্পাদনা]

  1. بامداد، بدرالملوک، ص. ۷ تا ۹Bamdad Badramaulk
  2. Eliz Sanasarian pages. 62-63
  3. Janet Afariآفاری، ژانت
  4. Eliz Sanasarianساناساریان، الیز

তথ্যসূত্র[সম্পাদনা]

  • জ্যানেট আফারি। উইমেন'স সেমি-কনস্টিটিউশন ইন দ্য কনস্টিটিউশনাল মুভমেন্ট। ডাঃ জাভেদ ইউসেফিয়ানের অনুবাদ। বান্নু সংবাদপত্র ১৯৯৬ দ্বারা প্রকাশিত ১৯৯৮ সালে অনূদিত। আইএসবিএন ৯৬৪-৯০৭৭২-১-৯
  • এলিজ সানাসারিয়ানদ্য উইমেন'স রাইটস মুভমেন্টস ইন ইরান। প্রেগার, নিউ ইয়র্ক: ১৯৮২, আইএসবিএন ০-০৩-০৫৯৬৩২-৭। (মিশিগান বিশ্ববিদ্যালয় থেকে মূল)
  • বমদাদ বদরামলক। ইরানিয়ান উইমেন ফ্রম কনস্টিটিউশনাল রেভোলিউশন টু হোয়াইট রেভোলিউশন। দ্বিতীয় খন্ড। তেহরান: এবনাসিনা পাবলিশিং হাউস, ১৯৬৯
  • * এলিজ সানাসারিয়ানদ্য উইমেন'স রাইটস মুভমেন্টস ইন ইরান। (রিভোল্ট, ডিক্লাইন, অ্যাণ্ড রিপ্রেশন ফ্রম ১৯০১ টু ১৯৭৯ রেভোলিউশন)। নওশীন আহমাদী খোরাসানির অনুবাদ। প্রথম মুদ্রণ, তেহরান: আখতারান দ্বারা প্রকাশিত, ২০০৫। আইএসবিএন ৯৬৪-৭৫১৪-৭৮-৬