নাজনীন সুলতানা

উইকিপিডিয়া, মুক্ত বিশ্বকোষ থেকে
নাজনীন সুলতানা
জন্ম১৯৫৪
জাতীয়তা বাংলাদেশ
পেশাব্যাংকার
পরিচিতির কারণবাংলাদেশ ব্যাংকের প্রথম মহিলা ডেপুটি গভর্নর
দাম্পত্য সঙ্গীআব্দুল কাইয়ুম

নাজনীন সুলতানা বাংলাদেশের প্রখ্যাত ব্যাংকার। তিনি বাংলাদেশের কেন্দ্রীয় ব্যাংক বাংলাদেশ ব্যাংকের প্রথম মহিলা ডেপুটি গভর্নর। [১] এর আগে তিনি বাংলাদেশ ব্যাংকের নির্বাহী পরিচালকের দায়িত্ব পালন করেছিলেন।[২] তিনি ১৯৮০ সালে সরাসরি সহকারী পরিচালক হিসেবে কেন্দ্রীয় ব্যাংকে যোগদান করে বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ বিভাগে দায়িত্ব পালন করেন।

জন্ম ও শিক্ষাজীবন[সম্পাদনা]

নাজনীন সুলতানার জন্ম ১৯৫৪ সালে। তার বাবার নাম মোসলেহউদ্দিন খান এবং মায়ের নাম উম্মেহানী খানম।পড়াশোনা শুরু হয় রোকেয়া মেমোরিয়াল স্কুলে। তৃতীয় থেকে ষষ্ঠ পর্যন্ত এ বিদ্যালয়ে পড়ে ভর্তি হন মতিঝিল গভর্নমেন্ট গালর্স হাই স্কুলে। সেখান থেকে বদরুন্নেসা সরকারি মহিলা কলেজ এবং পরবর্তীতে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে পদার্থবিজ্ঞানে স্নাতকসহ মাস্টার্স ডিগ্রি লাভ করেন। তার স্বামী বিশিষ্ট সাংবাদিক ও লেখক আব্দুল কাইয়ুম।

পরিবারের সঙ্গে নাজনীন সুলতানা

অন্যান্য কর্মকাণ্ড[সম্পাদনা]

নাজনীন সুলতানা ১৯৬৯ সালের গণ আন্দোলনে বদরুন্নেসা কলেজের ছাত্র ইউনিয়নের সাধারণ সম্পাদক হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। ১৯৬৯ থেকে ১৯৭১ সাল পর্যন্ত বদরুন্নেসা কলেজের সকল ছাত্র আন্দোলনের নেতৃত্বে ছিলেন তিনি। ১৯৭১ সালের মার্চে বদরুন্নেসা কলেজের একদল শিক্ষার্থী ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের মাঠে প্রথম ডামি ও পরে রাইফেল নিয়ে যুদ্ধে যাবার প্রশিক্ষণ নেন। বিশ্ববিদ্যালয় জীবনে তিনি ছাত্র ইউনিয়নের কেন্দ্রীয় সংসদের সহ-সাধারণ সম্পাদক হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। সে সময়ে যুক্ত ছিলেন উদীচী শিল্পী গোষ্ঠীর সঙ্গেও। বিশ্ববিদ্যালয় গণ্ডি শেষ করে যোগ দেন মহিলা পরিষদে। বেগম সুফিয়া কামালের নেতৃত্বে নারী অধিকার নিয়ে কাজ করেন তিনি। [৩]

কর্মজীবন[সম্পাদনা]

১৯৭৮ সালে তিনি বিআইডিএসে যোগ দেন। পরবর্তীতে সায়েন্স ল্যাবরেটরিতে পদার্থবিদ্যার রিচার্স ফেলো হিসেবে যোগ দেন। ১৯৮০ সালের ফেব্রুয়ারি মাসে নাজনীন সুলতানা বাংলাদেশে ব্যাংকে কম্পিউটার উপ-বিভাগে প্রথম শ্রেনীর কর্মকর্তা হিসেবে যোগ দেন। সে সময়ে বাংলাদেশ ব্যাংকে তিনিসহ মাত্র চারজন প্রথম শ্রেণীর কর্মকর্তা ছিলেন। সে সময়ে এ দলটি সবমিলিয়ে প্রায় ৮৫টি সফটওয়্যার তৈরি করে যেগুলো ব্যাংকের বিভিন্ন কাজে ব্যবহৃত হয়। [৪] তার লেখা প্রথম প্রোগ্রাম ছিলো আমদানি-রপ্তানির পরিসংখ্যান বিষয়ক। ১৯৮৪ সালে তিনি একই বিভাগের উপ-পরিচালক হিসেবে কাজ শুরু করেন। ১৯৮৫ সালে বাংলা ওয়ার্ড প্রসেসিং সফটওয়্যার তৈরি করেন যদিও নিয়মতান্ত্রিক জটিলতায় সে সময়ে সেটি আর আলোর মুখ দেখেনি। ১৯৯২ সালে তিনজন সহকর্মী মিলে টেক্সটবুক বোর্ডের আওতাভুক্ত কম্পিউটার বিষয়ক প্রথম বই 'মাধ্যমিক কম্পিউটার বিজ্ঞান' লেখেন। ১৯৮৯ সালে তিনি বাংলাদেশ ব্যাংকের সিস্টেম অ্যানালিস্ট হন এবং ১৯৯৬ সালে জৈষ্ঠ সিস্টেম অ্যানালিস্ট হন। পরবর্তীতে ২০০০ সালে বাংলাদেশ ব্যাংকের প্রথম নারী নির্বাহী পরিচালক নির্বাচিত হন। [৫] বাংলাদেশ ব্যাংকের অটোমেশনের সার্বিক কাজের নেতৃত্বে ছিলেন। তিনি বিশ্বব্যাংকের আর্থিক সহায়তায় সিবিএসপি’র আওতায় বিভিন্ন প্রকল্পের প্রকল্প ব্যবস্থাপক হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন। এ ছাড়া এন্টারপ্রাইজ ডাটা ওয়্যারহাউস ও ব্যাংকিং প্রকল্পের পারচেজার হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। [৬] তিনি বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরোতেও (বিবিএস) কর্মরত ছিলেন। [৭]

বাংলাদেশ ব্যাংকের রিজার্ভের অর্থ চুরির ঘটনায় ব্যাংকের ব্যবস্থাপনায় ব্যাপক পরিবর্তন আনা হয়েছে। ৪ ফেব্রুয়ারি ২০১৬ বৃহস্পতিবার দিবাগত রাত সাড়ে ১২টার দিকে (সময়ের হিসাবে ৫ ফেব্রুয়ারি) সুইফট ব্যবহার করে অর্থ চুরির জন্য ৩৫টি পরামর্শ বা অ্যাডভাইস পাঠানো হয় যুক্তরাষ্ট্রের ফেডারেল রিজার্ভ ব্যাংক অব নিউইয়র্কে।[৮] ১৫ মার্চ ২০১৬, মঙ্গলবার সকালে প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে দেখা করে পদত্যাগপত্র দেন বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর আতিউর রহমান। তার পদত্যাগের কয়েক ঘণ্টার মধ্যে ব্যাংকের ডেপুটি গভর্নর নাজনীন সুলতানাকে অব্যাহতি দেওয়া হয়।

প্রকাশিত বই[সম্পাদনা]

  • একাত্তরের ডায়রি

পুরস্কার ও স্বীকৃতি[সম্পাদনা]

তথ্যসূত্র[সম্পাদনা]

  1. "বিডিনিউজ ২৪ ডট কম"। ২৬ জানুয়ারি ২০১২ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ৭ ফেব্রুয়ারি ২০১২ 
  2. "দৈনিক প্রথম আলো"। ২০ মার্চ ২০১৯ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ৩ জানুয়ারি ২০১৪ 
  3. দৈনিক ইত্তেফাক, ২৯ জুলাই, ২০০৯
  4. দি ডেইলি সান[স্থায়ীভাবে অকার্যকর সংযোগ]
  5. দৈনিক ইত্তেফাক, ২৯ জুলাই ২০০৯
  6. দৈনিক সকালের খবর
  7. বাংলাদেশ প্রতিদিন
  8. রিজার্ভের অর্থ চুরি, প্রথম আলো, ৫ ফেব্রুয়ারি ২০১৮

বহি:সংযোগ[সম্পাদনা]