তাই ফাকে গোষ্ঠী
তাই ফাকে গোষ্ঠী যারা ফাকিয়াল বা সহজভাবে ফাকে নামেও পরিচিত, এরা আসামের ডিব্রুগড় জেলা এবং তিনসুকিয়া জেলায় বসবাসকারী তাই ভাষাগোষ্ঠীর অন্তর্ভুক্ত এক জনগোষ্ঠী। এরা প্রধানত আদিবাসী জাতিগোষ্ঠীর অন্তর্গত। এরা দিহিং নদীর উপকূল এলাকা এবং লোহিতের সংলগ্ন অংশে বসবাস করে। এই অঞ্চল অরুণাচল প্রদেশের চাংলাং জেলা হিসাবে পরিচিত। [১] ১৯৯০ সালের জনগননায় তাদের জনসংখ্যা ছিল পাঁচ হাজার যা আড়াইশোরও কম পরিবার নিয়ে গঠিত ছিল।
বিশ্বাস করা হয় যে, তাই ফাকে গোষ্ঠীর লোকেরা আঠারো শতকে মিয়ানমারের মংমাও (মুয়াং মাও) এর শান রাজ্য থেকে এদেশে স্থানান্তরিত হয়েছিলেন। ফাকে শব্দটি তাই শব্দ ফা এবং কে এই দুই শব্দের সংমিশ্রনে গঠিত। ফা কথার অর্থ প্রাচীর এবং কে কথার অর্থ প্রাচীন বা পুরাতন। এই দুই শব্দ থেকে ফাকে শব্দ উদ্ভূত হয়েছে।
আসামে অভিবাসনের আগে তারা ইরাবতি নদীর তীরবর্তী অঞ্চলের বাসিন্দা ছিল। আসামে এসে তারা প্রথমে মুংকংয়ের রাজকীয় বংশের প্রধান চৌ তা মেং খুয়েন মেং-এর অধীনে বুড়িদিহিং-এর নিংরু থেকে একটু উপরে মুংকংটত নামক স্থানে বসতি স্থাপন করেছিলেন।
উনিশ শতকের গোড়ার দিকে তৎকালীন আহোম (আসাম) অফিসার চন্দ্র গোহাইন তাই ফাকে গোষ্ঠীর লোকেদের ডাক পাঠান। তিনি একটি ছোট সেনাবাহিনী নিয়ে পূর্বাঞ্চলীয় জেলাগুলি পরিদর্শন করেছিলেন যেখানে মূলত তাই ফাকে গোষ্ঠীর লোকেরা বসতি স্থাপন করেছিলেন। চন্দ্র গোহাইন তাদের আদি বাসস্থান থেকে তার রাজধানীতে নিয়ে আসেন। ব্রিটিশরা আসাম আক্রমণ করলে, বার্মিজ কর্তৃপক্ষ তাদের এবং শান জাতির অন্যদেরকে মোগংয়ে ফিরে যাওয়ার নির্দেশ দেয়। তাই ফাকে লোকেরা বুড়িদিহিং অঞ্চলে গিয়ে বসতি স্থাপন করে। পরবর্তীকালে এই জনগোষ্ঠীর লোকেরা বুড়িদিহিং নদীর দক্ষিণ তীরের সমৃদ্ধ অঞ্চলে তাদের জনবসতি স্থাপন করে।
তথ্যসূত্র
[সম্পাদনা]- ↑ William J. Gedney (১৯৯২)। Papers on Tai Languages, Linguistics, and Literatures: In Honor of William J. Gedney on His 77th Birthday। Northern Illinois University, Center for Southeast Asian Studies। পৃষ্ঠা 14। আইএসবিএন 1-877979-16-3।