ডারউইনিয়াস

উইকিপিডিয়া, মুক্ত বিশ্বকোষ থেকে

ডারউইনিয়াস
সময়গত পরিসীমা: ইয়োসিন, ৪৭কোটি
ডারউইনিয়াস মাসিলাই প্রজাতির একমাত্র নিদর্শন: ইডা (নমুন নং: PMO 214.214)
বৈজ্ঞানিক শ্রেণীবিন্যাস
জগৎ: Animalia
পর্ব: কর্ডাটা
শ্রেণী: Mammalia
বর্গ: Primates
পরিবার: Notharctidae
উপপরিবার: Cercamoniinae
গণ: Darwinius
Franzen et al., 2009
প্রজাতি: D. masillae
দ্বিপদী নাম
Darwinius masillae
Franzen et al., 2009

ডারউইনিয়াস (ইংরেজি: Darwinius) ইয়োসিন যুগে বসবাসকারী এবং পরবর্তীতে বিলুপ্ত হয়ে যাওয়া প্রাইমেটদের একটি গণ। এটি প্রাইমেট বর্গের অ্যাডাপিফর্মিস অববর্গের অন্তর্ভুক্ত। এখন পর্যন্ত এ গণের একটিমাত্র সদস্যের জীবাশ্ম আবিষ্কৃত হয়েছে যার প্রজাতির দ্বিপদী নাম Darwinius masillae। ৪ কোটি ৭০ লক্ষ বছরের পুরনো এই জীবাশ্মের ডাকনাম দেয়া হয়েছে ইডা।[১]

ইডার জীবাশ্ম আবিষ্কৃত হয়েছিল জার্মানির ফ্রাংকফুর্ট থেকে মাত্র ৩৫ কিলোমিটার দক্ষিণপূর্বে অবস্থিত মেসেল নামক গ্রামের নিকটে অবস্থিত একটি মাটির গর্ত থেকে ১৯৮৩ সালে। গর্তটির নাম মেসেল মৃত্তিকাগহ্বর।[২] শৌখিন জীবাশ্ম সংগ্রাহকরা এটি খুঁজে পাওয়ার পর দুটি আলাদা আলাদা পাতে প্রোথিত করে আলাদাভাবে বিক্রি করে দিয়েছিল। ২০০৭ সালে দুটি পাত ক্রয় করে বিজ্ঞানীরা জীবাশ্মটি পুনরায় একত্রিত করেন। জীবাশ্মটি একটি কিশোরীর, লেজ বাদ দিয়ে যার কেবল মাথা ও দেহের দৈর্ঘ্য ৫৮ সেন্টিমিটার, লেজের দৈর্ঘ্য আবার ২৪ সেমি। ধারণা করা হচ্ছে প্রাপ্ত বয়স্ক হওয়া পর্যন্ত বেঁচে থাকলে ইডার দেহ আরও ১৫-২০% বৃদ্ধি মতো।[৩]

'প্রাকৃতিক নির্বাচনের মাধ্যমে বিবর্তন' তত্ত্বের প্রস্তাবক চার্লস ডারউইনের ২০০তম জন্মবার্ষিকীতে ডারউইনের সম্মানেই এই প্রজাতির গণের নামকরণ করা হয়। আর প্রজাতির নাম রাখা হয় যে গর্ত থেকে জীবাশ্মটি উদ্ধার করা হয়েছে সেই মেসেল গর্তের নামে- মাসিলাই। প্রথমে একে দেখতে বর্তমান লেমুরের খুব কাছাকাছি মনে হয়েছিল যদিও পরবর্তীকালে লেমুরসহ সকল প্রোসিমিয়ানদের সাথে তার বেশ কিছু বৈসাদৃশ্যও চিহ্নিত করা হয়।[৩][৪]

জীবাশ্ম সম্পর্কিত গবেষণাপত্রের লেখকরা ডারউইনিয়াস গণকে প্রাইমেট বর্গের Notharctidae পরিবার এবং Cercamoniinae[৩] উপপরিবারের অন্তর্ভুক্ত করেন যা থেকে বোঝা যায়, তারা মনে করছেন জীবাশ্মটিতে প্রোসিমিয়ান এবং সিমিয়ান (বা অ্যানথ্রোপয়েড) উভয়ের বৈশিষ্ট্যের এক ধরনের সংমিশ্রণ আছে। সে হিসেবে একে মানব বিবর্তনের ইতিহাসে একটি অবস্থান্তরকালীন জীবাশ্ম হিসেবে চিহ্নিত করা যায় যাকে সাধারণ্যে অনেক সময় মিসিং লিংক বলে যাকা হয়, যদিও বিজ্ঞানীরা 'মিসিং লিংক' শব্দটির ব্যবহারকে নিরুৎসাহিত করেন।[৫] অনেক বিজ্ঞানী অবশ্য ইডাকে মানুষের সরাসরি পূর্বপুরুষ হিসেবে চিহ্নিত করাকে সমর্থন করেননি।[৬][৭][৮]

জীবাশ্মটিকে পুঙ্খানুপুঙ্খ ভাবে গবেষণা না করেই অতিরিক্ত প্রচার করায় অসন্তোষ জ্ঞাপন করেছেন অনেক বিজ্ঞানী। তাদের মতে মিডিয়ায় এতো ফলাওভাবে প্রচার করার আগে বিজ্ঞানীদের আরও সূক্ষ্ণ বিশ্লেষণ ও আলোচনার প্রয়োজন ছিল।[৪]

তথ্যসূত্র[সম্পাদনা]

  1. Mertz, D.F., Renne, P.R. (2005): A numerical age for the Messel fossil deposit (UNESCO World Heritage Site) derived from 40Ar/39Ar dating on a basaltic rock fragment. Courier Forschungsinstitut Senckenberg no 255: pp 7–75.
  2. Randerson, James (মে ২০, ২০০৯)। "Deal in Hamburg bar led scientist to Ida fossil, the 'eighth wonder of the world'"। London: The Guardian। সংগ্রহের তারিখ ২০০৯-০৫-২০ 
  3. দৃষ্টি আকর্ষণ: এই টেমপ্লেটি ({{cite doi}}) অবচিত। doi দ্বারা চিহ্নিত প্রকাশনা উদ্ধৃত করার জন্য: 10.1371/journal.pone.0005723, এর পরিবর্তে দয়া করে |doi= 10.1371/journal.pone.0005723 সহ {{সাময়িকী উদ্ধৃতি}} ব্যবহার করুন।
  4. Christine McGourty (১৯ মে ২০০৯)। "Science & Environment; Scientists hail stunning fossil"। BBC News। সংগ্রহের তারিখ ২০০৯-০৫-২০ 
  5. Wilford, John Noble (মে ১৬, ২০০৯)। "Analysis Shows German Fossil to Be Early Primate"New York Times 
  6. Chris Beard (মে ২১, ২০০৯)। "Why Ida fossil is not the missing link"New ScientistReed Business Information। সংগ্রহের তারিখ ২০০৯-০৫-২২ 
  7. Fossil primate challenges Ida's place Nature 461, 1040 (2009)
  8. "'Missing link' primate isn't a link after all"। অক্টোবর ২১, ২০০৯। 

বহিঃসংযোগ[সম্পাদনা]